সংকটে শিক্ষাব্যবস্থা ও বর্তমান পরিস্থিতি
লিখেছেন লিখেছেন সুজন মাহমুদ ১৮ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:৩২:৪৮ সন্ধ্যা
আমরা জানী,“Education is the backbone of a nation”যে জাতি যত বেশী শিক্ষিত সে জাতি তত বেশী সংস্কৃতিবান, মার্জিত, উন্নত ও আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা সিলেবাস সর্বস্ব চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা দিয়ে মানুষকে যে দিকে পরিচালিত করানো যায় সে দিকে পরিচালিত হয় । প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মানুষকে অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন করতে পারে না। এর জন্য প্রয়োজন হয় প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব চিন্তা, বিচার-বিশ্লেষণ ও গবেষণা। স্বাভাবিক ভাবে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সমকালীন শাসকদের দ্বারা প্রণীত,পরিচালিত, ও নিয়ন্ত্রিত হয়। এই সময়ই শাসক চাইলে শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তাদের ইচ্ছা মত শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে পারে অথবা জাতিকে আত্মমর্যাদা সম্পন্ন জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে পারে ।
এক সময় বাংলাদেশী সমাজের আধ্যাত্মিকতা, নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধ, ও নিজস্ব সংস্কৃতি ছিল অনেক সমৃদ্ধশালী । এখানে মানুষের চিন্তাচেতনা, সততা, পরশ্রীকাতরতা, সহানুভুতিশীলতা ছিল আদর্শকেন্দ্রিক । এদেশে যুগে যুগে অনেক পর্যটক ভ্রমন করতে এসে দেখেছেন বাংলার রূপ, মাটি ও মানুষ এবং দেখেছেন মানুষের সহজ সরল জীবন যাপন পদ্ধতি । সব কিছুতে বিমুগ্ধ হয়ে তারা তাদের নিজ দেশে ফিরে গেছেন যে গুলি তাদের ভ্রমন কাহিনীতে বর্ণিত হয়েছে । শিক্ষা ও সংস্কৃতি একটা জাতির প্রাণ । যায়হোক, আজ আমাদের বাংলাদেশের সমাজ শ্রীহীন, লক্ষ্যচ্যুত, হীনমন্যতার পেছনে কতগুলো যৌক্তিক কারন বিদ্যমান রয়েছে । তার খানিকটা ব্রিটিশদের উপনিবেশ প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে প্রভাবিত হয়েছে । বাঙালি জাতি ও জাতিসত্তা বিনষ্ট করা ও সম্পদের উপর ব্রিটিশদের সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব লুকায়িত ছিল । তার জলন্ত নজীর হচ্ছে বাংলাদেশে তাদের প্রনীত শিক্ষানীতি চালুর প্রভাষক লর্ড মেকলের ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রদত্ত বক্তৃতায় । লর্ড মেকলে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বলেছিলেন যে- আমি উপমহাদেশে আনাচে কানাচে পরিভ্রমন করেছি কোথাও কোন চোর দেখিনি। পাইনি কোন মিথ্যাবাদী। দেশটি এত সমৃদ্ধ ও দেশবাসীর মূল্যবোধ এত উঁচু জনগণ এত প্রভাবশালী যে এদেশকে বশীভুত করতে হলে এদেশের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক মেরুদণ্ডে আঘাত হানতে হবে । তার জন্য প্রয়োজন তাদের শিক্ষাব্যবস্থা ও সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তন ঘটানো । যদি বাংলাদেশের মনে এ ধারণা প্রতিষ্ঠিত করা যায় যে-যা কিছু বিদেশী ও ইংরেজী তার সবকিছুই তাদের থেকে তখনই তারা তাদের আত্মসম্মান ও নিজস্ব সংস্কৃতির উপর আস্থা হারিয়ে সত্যিকারের পরাধীন জাতিতে পরিণত হবে এবং আমরাও যথাযথ ভাবে তাদের উপর আমাদের শাসন কায়েম করতে সমর্থ হব । ( আমার দেশঃ ৪ নভেম্বর ২০১০) লর্ড মেকলের এ ধরনের বক্তৃতা প্রদানের পর ব্রিটিশ শাসক শ্রেণী তার বক্তৃতায় প্রভাবিত হয়ে গেল এবং সে অনুযায়ী তারা বাংলাদেশের শিক্ষানীতি প্রনয়ন করে ফেলল। সে সময় এক দল ব্রিটিশপন্থী বুদ্ধিজীবীরা তাদের প্রণীত শিক্ষানীতিতে সমর্থন দিতে থাকে । একটা জাতিকে কিভাবে বশে এনে তাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করা যায় এধরনের ডিসকোর্স ছিল তাদের প্রণীত শিক্ষাব্যবস্থায়। তাই আজ এদেশের মানুষের মনে মগজে আজ দাসত্বের ছাপ প্রতিফলিত হচ্ছে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী জাতি আজ ঠিকই মনে করছে যে পশ্চিমারাই উন্নত। তাদের ভাষা তাদের সংস্কৃতি আধুনিকতার সঙ্গে মানানসই । আর আমরা অনুন্নত অর্থাৎ তৃতীয় বিশ্বের মানুষ । যদিও প্রথম বিশ্ব সুসজ্জিত হয়েছে এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকায় জুলুম,অত্যাচার,শোষণ ও লুণ্ঠনের ফলে। তবে কি উন্নয়নতত্ত্ব (Theory of Progress)পরিবর্তন হয়ে আর্থিক উন্নয়নই অগ্রাধিকার পাচ্ছে । যেখানে মানবতা ভূলুণ্ঠিত। দৈহিক চাহিদা যেখানে মুখ্য আত্মিক চাহিদা উপেক্ষিত। তবে কি পশু ও মানুষের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকবে যেখানে পশুর চাহিদাও শুধুমাত্র দৈহিক। যদিও পশ্চিমাদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই । এদেশের মানুষ ভুলে গেছে তাদের আত্মিক চাহিদার কথা। সেই জায়গাটি দখল করে নিয়েছে পশ্চিমা শিক্ষা ও সংস্কৃতি। ভোগের নেশায় মত্ত হয়ে ভুলে গেছে মানুষ হিসেবে মানুষের প্রতি সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি তার কি দায়িত্ব। আজ এদেশের শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সকল শ্রেণী মানুষ মনে করে যে জীবনের সফলতা হচ্ছে পড়াশুনা করে একটা চাকরি পাওয়ার মধ্যে। কেউ যদি পড়াশুনা করে একটা চাকরি পাই তাহলেই সে সফল। তারা চিন্তা করে না যে পড়াশুনা জীবন গঠনের সাথে সম্পর্কিত । যতটা সময় তারা ব্যয় করে শুধু একটা চাকরি পাওয়ার জন্য ততটা সময় ব্যয় করেনা অর্থপূর্ণ জীবন গঠনের জন্য ।
আজকাল পত্রিকায় মাঝে মধ্যে দেখা যায় একদল তরুণ মেধাবীর যখন সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় যদি তাদের কে প্রশ্ন করা হয় যে তোমার জীবনের লক্ষ্য কি ? তখন বলতে শুনা যায় - প্রকৌশলী হওয়া, সফটওয়ার প্রকৌশলী হওয়া, ডাক্তার হওয়া, সফল ব্যবসায়ী হওয়া, ব্যারিস্টার হওয়া। কারন এধরনের পেশায় টাকা বেশী। টাকাই এখানে মুখ্য। আজকাল উচ্চশিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতেও মার্কেট ওরিয়েন্টেড কোর্স গুলোকে প্রথম শ্রেনীতে রাখা হয়। সমাজবিজ্ঞান,রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও দর্শনের মত কোর্স গুলোকে পরের সারিতে রাখা হয়। অথচ পশ্চিমা ও পারস্যের মত দেশ গুলোতে এই কোর্স গুলো এলিট কোর্স হিসেবে গণ্য করা হয়। এদেশের তরুন সমাজও এই বিষয় গুলোতে পড়াশুনা করতে আগ্রহী না । এছাড়া প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সমাজ, রাষ্ট্র সম্পর্কিত বিষয়গুলি একেবারেই উপেক্ষিত শুধুমাত্র মার্কেট ওরিয়েন্টেড বিষয়গুলো পড়ানো হয়। প্রফেশনাল কোর্স গুলো নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। উদ্দেশ্য হচ্ছে কর্পোরেট ফার্ম অথবা বহুজাতিক ফার্ম গুলোর চাহিদা পুরনের জন্য একদল বস্তুবাদী গ্র্যাজুয়েট তৈরি করা। এখন প্রশ্ন হচ্ছে প্রতিটি মানুষ কি সামাজিক ও রাষ্ট্রিক জীব নয় ? তাহলে কেন তারা উচ্চ শিক্ষায় সমাজ বিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও দর্শনের মত বিষয় গুলো পড়বে না ? প্রত্যক শিক্ষিতদের মৌলিক সমাজবিজ্ঞান,রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও দর্শন সম্পর্কে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। কেন শিক্ষিতদের সমাজচিন্তা- রাষ্ট্রচিন্তা থেকে দূরে রাখা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে বর্তমান উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও আমাদের দেশ সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসনে ভীষণভাবে কবলিত। এর মাধ্যমে মানুষকে ব্যাক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ (Individualism) শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। ভোগবাদী পাশ্চাত্য সংস্কৃতির আদর্শে সৃষ্ট শিক্ষা ব্যক্তিকে তার আত্মকেন্দ্রিক লক্ষের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। একমাত্র ভোগই তার জীবনের ব্রত। ব্যক্তি তাৎক্ষণিক সুখ-ভোগ (Instant Gratification) চায়। ভোগের নেশায় মত্ত থেকে ব্যক্তি ভনভন করে ঘুরতে থাকে কিভাবে ভোগ উপকরণ সংগ্রহ করা যায়। সে কারনে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি প্রবেশ করেছে । ক্ষমতাসীন সরকার দলীয় উপদেষ্টা, এমপি, মন্ত্রী ও আমলারাসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ের কর্মচারী পর্যন্ত সকল সরকারী বেসরকারী অফিস আদালতে দুর্নীতি , লুটপাট চলছে অহরহ। শকুনেরা যখন কোন শিকার করতে পারলে একেকটা শকুন টেনে হিঁচড়ে শিকারটিকে ভক্ষন করে। তেমনি এদেশের অফিস আদালত গুলোতে শকুনের দল জাতীয় সম্পদ যে যেভাবে সিস্টেম করতে পারছে সে ভাবে ভক্ষন করছে। সর্বত্রই এধরনের শকুনের উড়াউড়ি। নেকড়ে–হায়েনার দল সংসদে বসে বুলি আওড়াচ্ছে যে তারা গনমানুষের মধ্যে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠাকারী ও জাতীয় সম্পদ রক্ষাকারী। অথচ এই হায়েনার দল প্রকৃতপক্ষে ভক্ষণকারী। রক্ষকই যখন ভক্ষক তখন কে কিভাবে প্রতিরোধ করবে? উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা কি অভাবের কারনে দুর্নীতি করে নাকি অধিক ভোগ করার জন্য দুর্নীতি করে । তারা কোন ধরনের শিক্ষিত যে জাতীয় সম্পদ ভক্ষন করতে তাদের বিবেকে বাঁধা দেয় না। অন্যের সম্পদ দখল করতে তাদের ভ্রুকুঞ্চিত হয় না। তারা লজ্জার মাথা খেয়ে মানবিক মূল্যবোধটুকুও বিসর্জন দিয়ে থাকে।
আমাদের সমাজে অনেক শিক্ষিত,অশিক্ষিত ও স্বল্পশিক্ষিত মা আছেন যারা শহরে অথবা গ্রামে সন্তানকে স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে মনে করেন যে আমার সন্তান উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মানুষের মত মানুষ হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এদেশের প্রধান মন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ কি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত নয়। যারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। যারা নিজের পরিবারের সুখের জন্য জাতীয় সুখ বিনষ্ট করতে দ্বিধাবোধ করে না। যারা বিদেশী প্রভুদের দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছে এবং এই ঋণের টাকা সুদে আসলে পরিশোধ করতে গিয়ে গনমানুষের উপর ডিজেল,অকটেন,গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো সহ অন্যান্য করের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। বিভিন্ন ভাবে চেতনা হীন এই জাতিকে মজলুম করে রেখেছে এই সকল অত্যাচারী শাসক শ্রেণী। আজ শাসকেরাই জোঁকের ন্যায় গন মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে। এদেরকে মানুষ বলা কোন বিবেকবানের কাজ হবে ? কেন তারা মানুষ নই যেহেতু তারা উচ্চ শিক্ষিত ? শিক্ষা ব্যবস্থায় কিসের সংকট যে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও প্রকৃত মানুষ হচ্ছে না ?
আমাদের বাংলাদেশের সমাজে পিতামাতার সমতুল্য একজন শিক্ষককে গণ্য করা হত। শিক্ষাগুরুর মর্যাদা ছিল অনেক উচু। আগেকার সমাজের ছাত্ররা শিক্ষাগুরুকে দেখলে বিনম্র স্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন করত। শিক্ষাগুরুর সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়াত । কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি এমন যে সম্মান তো দুরের কথা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের গড়া ছাত্ররাই শিক্ষকদের গায়ে হাত উঠাচ্ছে প্রতিনিয়ত। পরীক্ষার হলে ছাত্রের কোন প্রকার দুর্নীতিতে বাধা দিলে শিক্ষককে ছুরিকাঘাত করতে দ্বিধাবোধ করে না । রাজনৈতিক অথবা অন্য কোন কারনে এক বিদ্যার্থী আরেক বিদ্যার্থীকে অস্র দিয়ে কুপিয়ে তার আলোর প্রদীপ নিভিয়ে দিচ্ছে । যে পাঠশালা থেকে বের হওয়ার কথা ছিল একদল সমাজ সেবকের সেই পাঠশালা থেকে বের হচ্ছে একদল সন্ত্রাস ও দুর্নীতিবাজ। ব্রিটিশদের কাছে প্রাপ্ত শিক্ষায় ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী তৈরি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু মানুষ হচ্ছে কয়জন ?
বর্তমান প্রযুক্তি বিকাশের আগে এদেশের নারী জাতির এরকম অধঃপতন ছিল না। তারা শালীনতাবোধ বজায় রেখে সমাজে বসবাস করত। বর্তমানে আধুনিকতার নামে নারীদের হিজাব থেকে বের করে এনে বাণিজ্যিক পণ্যে রুপান্তর করা হচ্ছে । পর্যটন কেন্দ্র গুলোতে অবাধে চলছে নারীদের দেহ বাণিজ্য । কোন কোন মহল থেকে নারীদের যৌন বাণিজ্যকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চলছে । নারীদের মালিকানা এখন শুধু তার স্বামীর নয় কর্পোরেট ফার্ম গুলোও নারীদের অর্ধেক মালিকানা দখল করেছে । গনমাধ্যমে নারীদের অশালীন পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করিয়ে আকর্ষণীয় করে প্রদর্শন করছে । তাদের যতই উন্মুক্ত করা হচ্ছে ততই শ্লীলতাহানি, ইভটিজিং, ধর্ষণ ও এসিড নিক্ষেপের মত ঘটনা গুলো প্রতিনিয়ত বাড়ছে । বিবাহপূর্ব যুগল সম্পর্ককে আধুনিকতার নাম দিয়ে এই শিক্ষিত সমাজে অবাধে চলছে ব্যভিচার । আজকাল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও তাদের ছাত্র ছাত্রীদের রোমান্টিক ভালবাসায় জড়িয়ে পরার জন্য উৎসাহিত করে থাকে যাহা পাশ্চাত্য সভ্যতার নগ্ন অনুকরন ।
যদিও প্রগতিবাদীরা বলে থাকে যে মানুষ নিজেই নিজের মূল্যবোধ তৈরি করবে। মানুষ নৈতিক শিক্ষা পরিবার থেকে গ্রহন করবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নয় । এখন প্রশ্ন হচ্ছে সমাজের দুর্নীতিবাজ ও দুশ্চরিত্রের মানুষ গুলোও তো কোন না কোন সন্তানের পিতা মাতা তারা কিভাবে তাদের সন্তানদের নৈতিক শিক্ষা দেবে ? যেহেতু তারা নিজেরাই নৈতিকটা সম্পন্ন নয়। বর্তমান আধুনিক কালের সমাজ নাকি সভ্য (Civilized) হয়েছে । আগে মানুষ অসভ্য ছিল । এখন সামান্য অর্থ সম্পদের লোভে মানুষ মানুষ কে হত্যা করছে । গরিবের দারিদ্রকে পুঁজি করে চলছে শ্রম শোষণ । ইন্দ্রিয়ের সুখের জন্য চলছে অমানবিক নির্যাতন ও ধর্ষণ । এইসব কি কোন বর্বরতা নয়? সুতরাং বাঙ্গালী জাতির মেরুদণ্ডে ব্রিটিশ শাসক শ্রেণী শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে যে জায়গাটিতে আঘাত করেছিল। সেই জায়গাটি পুনর্বহাল করতে হবে ।তা না হলে সমাজে কোন উন্নতি আসবে না। উন্নয়নশীল সমাজে আধুনিকতাকে স্বাগত কিন্তু প্রাচীন গৌরবময় নিজস্ব ভাষা,সংস্কৃতি,মূল্যবোধ ও স্বাতন্ত্র্যতা ছাড়া জাতি বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৬ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই সব এ জন্য মারবে
তবে সত্য বলতে বর্তমানের অসামাজিকতার জন্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশই দায়ী।
মন্তব্য করতে লগইন করুন