ইনকিলাবের জামাত ধর্ষণ(দর্শন) ও স্টালিন সরকারের ভারতীয় নায়িকা
লিখেছেন লিখেছেন আবু সাঈদ ১৬ আগস্ট, ২০১৪, ০৪:০৮:০৫ বিকাল
ফেবুতে যেতেই চোখ
পড়লো ইনকিলাব পত্রিকার
একটি শিরোনামের উপর।
শিরোনাম দেখেই লোভ
জাগলো ভেতরে গিয়ে পড়ে দেখার
যে, ভারতের সাবেক একজন
নায়িকার সাথে জামায়াতের
কি সম্পর্ক
খুঁজে পেলো ইনকিলাব।
লেখাটি আগাগোড়া সব
পড়ে বুঝতে পারলাম, এ আর এমন
কিছু না, পুরনো খাসলতের নতুন
সংযোজন ছাড়া। জামায়াতের
বিরুদ্ধে কিছু একটা লেখা দরকার
তাই একটু কলম নিয়ে আঁকাআঁকি।
ইনকিলাবের ঐ
কলামটি লিখেছেন স্ট্যালিন
সরকার
কলামটির মূল উদ্দেশ্য জামায়াত
ও আওয়ামী সম্পর্ক
মানুষকে কানে ধরে বুঝানোর
চেষ্টা। আর পাঠকের
দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ভারতের
সাবেক
অভিনেত্রী হেমা মালিনীর
প্রসংগ টেনে আনা। কতভাবেই
তো জামায়াতের
বিরুদ্ধে লেখালেখি হলো,
কোনো কিছুই দিয়েই তো আর এই
দলটাকে ধরা যাচ্ছেনা তাই একটু
ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লেখা ।
কলামটি আগাগোড়া পড়ে আমার
কাছে মনে হয়েছে এটা স্ট্যালিন
সরকারের জামায়াত
হেমা মালিনী দর্শন নয়,
এটা ইনকিলাবের জামায়াত
ধর্ষণ। এটা ইনকিলাব পত্রিকার
নতুন কিছু নয়, পুরনো খাসলতের নতুন
সংযোজন মাত্র।
এই
কলামটি পড়ে মনে হয়েছে লেখক
সাধারণ
মানুষকে কানে ধরে বুঝানোর
চেষ্টা করছেন যে জামায়াতের
সাথে আওয়ামীলীগের
একটা গোপন সম্পর্ক হয়েছে। তার
এই লেখায় আমার কিছু প্রশ্নের
সৃষ্টি হয়েছে যা আপনাদের
সাথে শেয়ার করতে চাই।
তিনি লিখেছেন,
জামায়াতের ওপর দিয়ে ক’বছর
সুনামি বয়ে গেছে। দলের
নেতাকর্মীদের জেল-জুলুম-
নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।
বর্তমান সময়ে তার কি ব্যতিক্রম
হয়েছে, একটু
কি তিনি ব্যাখ্যা করবেন। এখন
কি সেই জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য
করতে হচ্ছেনা ? এইতো মাত্র
সেদিন শিবিরের সাবেক
সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদ সহ
১৯ জন নেতা কর্মীকে গ্রেফতার
করা হলো। রিমান্ডের
নামে একজন আগামীর
বাংলাদেশের সম্ভাবনাময়
সাহসী যুবককে নির্যাতন
করে মেরে ফেলা হচ্ছে।
শিবিরের আরেক সাবেক
সভাপতি বর্তমান সিলেট মহানগর
জামায়াত আমীর এহসানুল মাহবুব
জোবায়েরকে গ্রেফতার
করা হলো। আমার প্রিয় বড়লেখার
কয়েকজনকে আদালতে হাজিরা দিতে গেলে গ্রেফতার
করে জেলে ঢুকানো হলো।
বিয়ের হাতের
মেহেদী শুকানোর
আগে গ্রেফতার
করা হলো সিলেট মহানগর
শিবিরের সাবেক
সভাপতি শফিকুল আলম মফিককে।
এগুলো কি নির্যাতন না ?
মগবাজারের দলের কেন্দ্রীয় সদর
দফতর, পল্টনের ঢাকা মহানগর
কার্যালয়সহ মাঠ পর্যায়ের অনেক
কার্যালয় বন্ধ
করে দেয়া হয়েছে।
ওগুলো কি এখন
খুলে দেয়া হয়েছে?
এখনোতো প্রায় সারা দেশেই
জামায়াত শিবিরের কার্যালয়
বন্ধ হয়ে আছে।
জামায়াত-শিবির দেখলেই
তেড়ে যেত আইন
শৃংখলা বাহিনী।
এখন কি তেড়ে আসা বন্দ
করেছে পুলিশ? এখনো জামায়াত
শিবির মিছিল করতে পারেনা।
তা কেন ?
এই দলটির কেন্দ্র থেকে শুরু
করে শেকড় পর্যায়ের অনেক
নেতা ছিলেন ফেরার।
ঐ ফেরার
নেতারা কি ঘরে ফিরেছেন ?
এখনো তো দেখি হাজার
হাজার
নেতা কর্মী পালিয়ে মানবেতর
জীবনযাপন করছেন। হাজার
হাজার নেতা কর্মী তাদের
প্রিয়
ক্যাম্পাসে ফিরে যেতে পারছেন
না। অসংখ্য ছাত্রের
শিক্ষাজীবন আজও হুমকির মুখে।
মানব চরিত্রই হলো কারো ওপর
অন্যায়ভাবে জুলুম-নির্যাতন
হলে তার প্রতি মানুষের
সহানুভূতির সৃষ্টি হয়। কিন্তু
জামায়াতের
ক্ষেত্রে দেখা গেল ব্যতিক্রম।
সুবিধাবাদী আর ধুরন্ধর
কৌশলী হওয়ায় দলটি মানুষের
সহানুভূতি আদায়
করতে পারেনি।
এটা শুধু আপনাদের পত্রিকার
পাতায় আর টিভি চ্যানেলের
চোখে। গত উপজেলা নির্বাচন
দেখেও যদি সাধারণ মানুষের
সহানুভুতির বিষয়ে আপনাদের
প্রশ্ন সৃষ্টি হয় তাহলে আপনাদের
বিবেক নিয়ে আমাদের প্রশ্ন
সৃষ্টি হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক নয়
কি? এক মিনিট
চিন্তা করে দেখুন যদি ঐ
নির্বাচনে বিএনপি বিশ্বাসঘাতকতা না করতো এবং আওয়ামীরা জোরপূর্বক
সবকিছু দখলে না নিত
তাহলে নিশ্চয় আপনি মানুষের
সহানুভূতি টের পেতেন।
শাপলা চত্বরে পুলিশের
সঙ্গে ফুল বিনিময়ের
মাধ্যমে এটা শুরু
হয়েছে বলে অনেকেই
মনে করছেন।
পুলিশের
সংগে গোলাগোলি হলে নিশ্চয়
খুশি হতেন ?
সে সময় হেমা গর্ব
করে বলেছিলেন, ‘আমি সঞ্জীব
কুমারের প্রেমিকা থাকবো;
কিন্তু ধর্মেন্দ্র’র সন্তানের ‘মা’
হবো। হেমা মালিনীর এ বক্তব্য
নিয়ে সিনে ম্যাগাজিনগুলো চুটিয়ে ব্যবসা করেছে কয়েক
মাস।
আপনারাও কি সেই একই
ব্যবসায়িক ধান্ধায় এরকম চটকদার
কলাম লিখছেন না ?
সাঈদী ইস্যুতে আন্দোলনে জামায়াত-
শিবিরের যারা প্রাণ
হারিয়েছেন তাদের
সহায়তা করলেও জামায়াতের
বাইরে যারা নিহত হন তাদের
খোঁজ নেয়নি দলটি।
এই ধরনের
একটি মিথ্যা আপনাদের কলম
দিয়ে আসাটাই সম্ভব।
ভুক্তভোগীরাই
জানে জামায়াত তাদের জন্য
কি করছে।
নির্বাচনের আগে দলটির
নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৩০ হাজার
মামলা হয়েছে। আর নির্বাচনের
পরে হয়েছে মাত্র ৫ হাজার।
নির্বাচনের আগে ৫০ হাজার
নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন।
আর নির্বাচনের পর এখন পর্যন্ত
মাত্র ১০ হাজার
নেতাকর্মী আটক হয়েছেন।
নির্বাচনের আগের সময়টা কতটুকু
তা তো বললেন না।
এটা কি নির্বাচনের পরের এই ৭
মাস, নাকি ৭ বছর।
তাছাড়া সরকার
নির্বিঘ্নে নির্বাচন করার
স্বার্থে যে ধড়পাকড়
করেছে এখনো কি সেই ধড়পাকড়
করবে? নাকি মনোকষ্টে আছেন ৫
হাজারের যায়গায় কেন ৫০
হাজার মামলা হলোনা? ১০
হাজারের যায়গায় কেন ১ লক্ষ
গ্রেফতার হলোনা।
সরকারের এক
মন্ত্রী লন্ডনে জামায়াতের
অন্যতম এক শীর্ষ নেতার
সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন
বলে মিডিয়ায় খবর
বেরিয়েছে।
এই ধরনের খবরের কোন
সত্যতা আছে কি ? আপনিই
তো বলছেন খবর বেরিয়েছে। আর
এ ধরনের খবর
আপনারা জামায়াতের
বিরুদ্ধে হরহামেশা করে থাকেন।
এতদিন
সামনে থেকে বিরোধী জোটের
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার
ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকলেও
এখন জামায়াত সুর বদল করেছে।
তারা এখন বিএনপির
পেছনে আন্দোলনের
মাঠে থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছে।
আন্দোলন ইস্যুতে বিএনপির
ডাকে আর আগের
মতো সাড়া দিচ্ছে না দলটি।
এতদিন সামনে থেকে আন্দোলন
করে জামায়াত
দেখেছে যে পেছনে আর কেও
থাকেনা, তাই হয়তো জামায়াত
এখন পেছনে আসার চিন্তা করছে।
আন্দোলনের
ডাকে সাড়া দিয়ে জামায়াত
দেখতে পেয়েছে যে আর কেউ
মাঠে থাকেনা, সবাই
খালেদা জিয়াকে বালুর
পাহাড়ে একা ফেলে রেখে শাড়ী আর
হাতে চুড়ি পড়ে ঘরে বসে আরাম
করেছেন। জামায়াতের কি দায়
পড়েছে যে আগে থেকে তারাই
মাঠে থাকবে, পুলিশের
গুলিতে মরবে, নির্যাতনের
শিকার হবে। আর
অন্যরা ঘরে বসে ক্ষমতায়
যাওয়ার এবং ক্ষমতায় যাওয়ার পর
ভাগবাটোয়ার হিসাব করবে।
সরকারের সঙ্গে জামায়াতের
সমঝোতার সন্দেহ আরো বাড়ছে।
এই সন্দেহ
বাড়ছে একদিকে সরকারের
কূটকৌশল অপরদিকে সরকার
আপনাদেরকে কিনে নিয়ে এই
ধরনের চটকদার কলাম লিখানোর
মাধ্যমে।
সত্যিকার অর্থে আপনারা এই
মুহূর্তে জামায়াতের
বিরুদ্ধে লেখার মত কিছু
খোঁজে পাচ্ছেন না মনে হয় তাই
এই অপকৌশল। জামায়াত
হয়তো বর্তমান
সময়ে কিছুটা কৌশলী হয়েছে।
তাদের নিজেদের
কর্মী সমর্থকের জানমালের
নিরাপত্তায় রাজনৈতিক
কর্মসূচী পালনে হয়তো তারা হয়তো কিছুটা কৌশল
অবলম্বন করছেন। এই কৌশল অবলম্বন
করাটা কি নাজায়েজ?
নাকি আপনাদের পেটব্যাথা শুরু
হয়েছে যে জামায়াত কেন
আগের মত মিছিল
মিটিং করছে না । হাজার
হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার
হচ্ছেনা । নিরীহ কর্মী সমর্থক
পুলিশের গুলিতে মরছে না।
আপনাদের
পেটব্যাথা বাড়ানোর জন্য
জামায়াতের
আরো কৌশলী হওয়া দরকার
বলে সাধারণ মানুষ মনে করে।
বিষয়: রাজনীতি
১১৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন