নাগাল্যান্ডের ভাই ফরিদের কাছে কী জবাব উম্মতে মুসলিমার? -মুহাম্মাদ মামুনুল হক
লিখেছেন লিখেছেন গোলামুল্লাহ ১২ মার্চ, ২০১৫, ০৩:১০:৪০ দুপুর
স্থানীয় এক হিন্দু নারীকে ধর্ষণের বানোয়াট অভিযোগে ঘৃণ্য পৈশাচিক কায়দায় খুন করা হয়েছে ফরিদ আহমদ নামক এক মুসলিম যুবককে ৷ আসামের বাঙ্গালী পরিবারের এই মুসলিম সন্তানের খুনের ঘটনায় তার জন্মভূমি আসাম ও নাগাল্যান্ডসহ গোটা ভারত এখন অগ্নিগর্ভা ৷ শুধু ভারত নয়, মিডিয়া ও ইন্টারনেটের কল্যাণে এই দুঃসহ দুঃসংবাদ সারা পৃথিবী জুড়েই তোলপাড় সৃষ্টি করেছে ৷
পৈশাচিক হিংস্রতার যে বিভৎস তান্ডব ঘটে গেল নাগাল্যান্ডে তার বিবরণ দেয়ার ভাষা কি তাবৎ ভাষার ভান্ডারে মজুদ আছে? জেলখানা ভেঙ্গে, পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে একজন বন্দিকে ছিনিয়ে নেয়া হবে ৷ অতপর শহরময় এমন তান্ডবের কাহিনী চলবে ঘন্টাজুড়ে, এ কোন আদিম বর্বরতার যুগ !
লক্ষনীয় কিছু বিশেষ বিষয় প্রকাশ পেয়েছে এই ঘটনার, যা একচোখা মিডিয়া আর ইসলাম বিদ্বেষী মহলের স্বরূপ উন্মোচন করে দিয়েছে ৷
এক,
ঘটনার পর মেডিকেল ডি এন এ টেষ্টে কথিত ধর্ষিতা নারীর ধর্ষনের কোনো আলামত মেলেনি ৷ সুতরাং প্রমাণ হয়ে গেছে ধর্ষণের দাবী স্রেফ মিথ্যা অভিযোগ ছাড়া কিছুই না ৷
দুই,
নাগা হিন্দুদের উত্তেজিত করার জন্য দুটি তথ্য প্রচার হয়েছিল ৷ একজন মুসলিম কর্তৃক হিন্দু নারী ধর্ষিতা হওয়া আর সেই মুসলিম বাংলাদেশের নাগরিক ও বাংলাদেশ থেকে ভারতে গমনকারী হিসাবে প্রচার পাওয়া ৷ অর্থাৎ নরপিশাচ খুনিদের নিকট বাংলাদেশী মুসলিম পরিচয়টাই ছিল বড় অপরাধ ৷
এই জাতীয় ঘটনা যদি পৃথিবীর কোথাও মুসলিম সম্প্রদায় কর্তৃক সংগঠিত হতো তাহলে নিঃসন্দেহে সারা দুনিয়ার মিডিয়া এটাকে ইসলামী উগ্রবাদ বলে প্রচারে আদা-জল খেয়ে নেমে পড়তো ৷ আর এখন সংগঠিত এই ঘটনাকে চিত্রিত করা হবে, "ধর্মীয় উগ্রবাদ নামে" ৷ এরপর বিশ্ব মোড়লরা ধর্মীয় উগ্রবাদ প্রতিহত করার নামে ইসলামী জাগরণের বিরুদ্ধেই স্বোচ্চার হবে ৷ মুসলিমরা অন্যায় করলে সেটা হয় ইসলামী উগ্রবাদ ৷ আর হিন্দু-বৌদ্ধরা করলে সেটা হিন্দুবাদী বা জঙ্গিবাদী না হয়ে হয় স্রেফ ধর্মীয় উগ্রবাদ ৷
ইসলামী আদর্শের পতাকাবাহী কোনো মুসলিম সংগঠনের ইতিহাসে নাগাল্যান্ডের এই পৈশাচিক বর্বরতার নযীর খুঁজে পাওয়া যাবে?
একজন মুসলিম হিসাবে, অতপর একজন বাংলাদেশী হিসাবে নিজেকে বড় অপরাধী মনে হচ্ছে ৷ আর মনে পড়ছে ইমামুদ্দীন নামক সেই মুসলিম যুবকের কথা, গৌর গোবিন্দের অযাচিত নির্যাতনে যার নিহত শিশু সন্তানের হত্যার বদলা নিয়েছিলেন হযরত শাহজালাল ইয়ামানী রহঃ ৷
ব্যথিত হৃদয়ে বারবার একটি প্রশ্নই আজ ঘুরপাক খাচ্ছে, একজন অত্যাচারী হাজ্জাজ বিন ইউসুফও কি মুসলিম দুনিয়াতে নেই, অত্যাচারী রাজা দাহিরের জিন্দান খানায় বন্দিনী এক মুসলিম নারীকে মুক্ত করতে সিন্ধু দেশে মুহাম্মাদ বিন কাসিমের সেনা দল প্রেরণ করেছিলেন যিনি ৷
ন্যুনতম একজন শায়খুল হাদীসও কি নেই, যিনি লংমার্চ ঘোষনার মতো করে বর্বর পৈশাচিকতার বিরুদ্ধে দারাজ কন্ঠে প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতীয় দুতাবাস ঘেরাও করবে?
কাপুরুষের মতো স্বদেশের সংখ্যালঘুর উপর নির্যাতন কিংবা কুখ্যাত তসলিমানাসরিনের মতো সংখ্যালঘু নির্যাতনের কল্পিত কাহিনী রটানো নয়, আজ আমাদের জোর গলায় একথা বলার সময় এসেছে, আমরা মুসলমান ৷ আমরা মিয়ানমারের বৌদ্ধদের মতো, নাগাল্যান্ডের হিন্দুদের মতো কিংবা ইসরাইলের ইহুদিদের মতো হিংস্র নই ৷
পৃথিবীতে যত দিন ইসলামী খেলাফতের সত্যিকার প্রতিষ্ঠা না হবে, জুলুমের এই শৃংখল থেকে উম্মাতে মুসলিমার মুক্তি নেই ৷ আমাদের ফরিদ আহমদরা মার খাবে ৷ মিথ্যা বনোয়াট অভিযোগে তাদের শরীর থেকে ইজ্জতের আবরণ খুলে নিবে অসভ্য দানবের দল ৷ অতপর নির্মমভাবে খুন করবে হিংস্র হায়েনারা ৷
কোনো জবাব নেই শহিদ ভাই ফরিদ আহমদের কাছে আদর্শচ্যুত মুসলিম শাসকবর্গের ৷ এটাই আজকের নির্মম বাস্তবতা ৷
হে আল্লাহ তুমি ভাই ফরিদ আহমদকে শাহাদাতের মর্যাদা নসীব কর ৷ নির্মমতার এ কষাঘাতে সম্বিত ফিরিয়ে দাও মুসলিম শাসকদের ৷ আমীন ইয়া রাব্বাল আলামীন
বিষয়: বিবিধ
১১৩৯ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন