" মন্ত্রী আ,লতিফ সিদ্দীকির ইসলামবিদ্বেষী গাজাখোরী বক্তব্য ও আমাদের কথা " মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক
লিখেছেন লিখেছেন গোলামুল্লাহ ০২ অক্টোবর, ২০১৪, ০৪:৩৭:২৮ রাত
বর্তমান সরকারের ডাক ও আব্দুল লতিফ সিদ্দীকি বলেছেন- "হজ্বের জন্য বিশ লাখ লোক সৌদিআরব গিয়েছে, এদের কোন কাম নাই, এদের কোন Production নাই ৷ ………আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ চিন্তা করল, এই জাযীরাতুল আরবের লোকেরা কীভাবে চলবে,তারা ছিল ডাকাত ৷ তখন একটা ব্যবস্থা করল যে, আমার অনুসারীরা প্রতি বছর একবার একসাথে মিলিত হবে ,এর মধ্য দিয়ে একটা আয় ইনকামের ব্যবস্থা হবে "
আ,লতিফ সিদ্দীকির পবিত্র হজ্ব নিয়ে করা জঘণ্য ও ঘৃণ্য কটুক্তিটি প্রচার মাধ্যমের কল্যাণে ইতিমধ্যে সব মহলে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে ৷ যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জ্যাকসন হাইটসের হোটেলে অনুষ্ঠিত এক সভায়দেয়া মন্ত্রীর উক্ত বক্তব্যটি মনযোগ দিয়ে পাঠ করলে অনুসন্ধিৎসু পাঠক নিশ্চিতভাবেই যে সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন তা হল,
ক,
আব্দুল লতিফ সিদ্দীকি নামক এই লোকটি নামে মুসলমান হলেও প্রকৃত ঈমান তার মধ্যে নেই ৷
খ,
ইতিহাস সম্পর্কে সাধারণ ধারনাও তার নেই ৷
গ,
সমাজ বিজ্ঞান ও অর্থনীতির সাধারণ সূত্রের ব্যপারেও সি নিতান্ত এক মূর্খ ছাড়া কিছু নয় ৷
তার ঈমান নিয়ে প্রশ্ন এজন্য যে, পবিত্র কুরআনে ঘোষিত আল্লাহর সুস্পষ্ট বিধান নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর কারো ঈমান অবশিষ্ট থাকার প্রশ্নই আসেনা ৷ আল্লাহ বলেছেন
ولله علي الناس حج البيت من استطاع اليه سبيلا
" আর যারা সামর্থবান তাদের উপর আল্লাহর পক্ষ থেকে বায়তুল্লাহর হজ্ব করার বিধান আবশ্যকীয় ৷ "
এ ছাড়াও কুরআনের আরো বহু আয়াত ও অনেক হাদীসের দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে হজ্বের আবশ্যকীয়তা ও উপকারিতা সুপ্রমাণিত ৷
মন্ত্রীর ইতিহাস বিষয়ে জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন এজন্য যে, সে বলেছে-
হজ্ব নাকি পৃথিবীতে মুহাম্মাদ সঃ চালু করেছেন আরবের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য ৷ অথচ হজ্বের বিধান মুহাম্মাদ সঃএর কয়েক হাজার বছর আগে হযরত ইবরাহীম আঃএর কন্ঠে ঘোষিত হয়েছে মর্মে স্বয়ং কুরআনেই বলা হয়েছে এবং প্রায় সকল ধর্মাবলম্বীদেরও বিশ্বাস ৷ আল কুরআন বলছে,
واذن في الناس بالحج ياتوك رجالاوعلي كل ضامر ياتين من كل فج عميق
"(হে ইবরাহীম) আপনি মানুষের মাঝে হজ্বের ঘোষনা করুন ৷ আপনার ডাকে সাড়া দিয়ে পদব্রজে ও প্রতিকূল অবস্থায়ও প্রতিটি দূর প্রান্ত থেকে মানুষ আসবে "
কাজেই এটি প্রমাণিত যে, হজ্বের ঘোষনা দেয়ার বিধান জারি করেছেন স্বয়ং আল্লাহ জাল্লাশানুহূ ৷ কাজেই হজ্বের বিধান মুহাম্মাদ সঃ বা ইবরাহীম আঃএর নয়, বরং স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার ৷ মন্ত্রী নামক এই গন্ড মূর্খটাকে সে কথা বোঝাবে কে?
হজ্বে যাওয়া আর তাবলীগে যাওয়া অর্থাৎ ধর্মীয় কাজে সময় ব্যয় করাকে এই ব্যটা Unproductive (অনুৎপাদনশীল) কাজ বলে আখ্যায়িত করতে চেয়েছে ৷ এই মূূর্খের কথায় মনে হয় যে, production (উৎপাদন) মানে শুধু গরু ছাগল মুরগির বাচ্চা ফুটানো আর ক্ষেতখামারে ফসল ফলানো ৷
অথচ আজকের আধুনিক অর্থনীতিতেও Human resource development বা মানব সম্পদ উন্নয়নের যে গুরুত্ব তা সবারই জানা ৷ তা ছাড়া production মানেই তো More goods & services সুতরাং Service যদি Production হয়ে থাকে তবে হজ্ব ও তাবলীগের কাজের মাধ্যমে Service sector এ কী পরিমান Development অর্জন হয় তা Anti corruption department এর লোকেরাই ভালো বলতে পারবে ৷ Honesty is the best policy মানলেও তো ধর্মীয় জীবনের গুরুত্ব বুঝবার কথা ৷ আজকের পৃথিবী কাঁপানো Aids এর সর্বোত্তম সমাধান তো ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা ৷ তা ছাড়া অর্থনীতির মূল লক্ষ্যই তো হল More satisfaction এই লক্ষ্য অন্যের কোন ক্ষতিসাধন ছাড়া যত বেশি অর্জন হবে ততই বেশি Development হয়েছে ধরা হবে ৷ হজ্বে ও ইসলামী কাজে কী পরিমাণ Satisfaction আছে তা কোন বেঈমানের পক্ষে উপলব্ধি করা অসম্ভব ৷
হজ্ব ও তাবলীগ যদি রাজনৈতিক ও সামাজিক ভন্ডামীমুক্তভাবে করা হয় তবে নিঃসন্দেহে তা মানুষের মাঝে অনেক বেশি Spiritual development এবং Responsibility আনয়ন করে ,যা সমাজের Cultural lag দূর করে এবং Social & Economical development এর ক্ষেত্রে অসামান্য ভূমিকা পালন করে ৷ Honest labour force আর Dishonest labour force এর productivity নিয়ে Comparatively অনুসন্ধান করলেও বের হয়ে আসবে কত বড় গাজাখোর হলে হজ্ব ও ইসলামী জীবন নিয়ে এমন অমূলক মন্তব্য করা যায় ৷
আসল কথা হল, মানুষ যখন জীবনের মূল সূত্রে ভুল করে তখন তার সব ক্ষেত্রেই ভুল হওয়া অনিবার্য হয়ে দাড়ায় ৷ ঈমানদার হওয়ার দাবি করা আবার সমাজ,রাজনীতি,অর্থনীতির বিষয়ে ইসলাম মানতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা এমন এক ভন্ডামী যা প্রতি পদে পদে মানুষকে গোঁজামিল দিয়ে চলতে বাধ্য করে ৷ স্বচ্ছ কোন পথ তার সামনে খোলা থাকেনা ৷ যেখান থেকে দুটি পথ দুদিকে গেছে, একটি ইসলামের পথ যা জীবনের সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আনুগত্যকে বাধ্য করে ৷ অপর পথটি হলো এমন পথ যেখানে আল্লাহর হুকুম মানার বাধ্যবাধকতা নেই ৷ প্রথম পথটি চলে গেছে শান্তি ও জান্নাতের দিকে ৷ অপরটি গেছে শয়তান ও জাহান্নামের দিকে ৷
কুরআন বলছে
وهديناه النجدين
"আর আমি মানুষের সামনে দুটি চলার পথ দিয়েছি "
ভুল রাস্তায় চললে তো গোঁজামিল লাগবেই ৷ আ,লতিফ সিদ্দীকীসহ যারা মুসলিম পরিচয় দিয়েও ইসলাম বিদ্বেষী রাজনীতি করে তাদের প্রতি পদে পদেই এমন ঝামেলা লাগবে ৷
তাই বলি,আসুন ইসলামের মধ্যে পরিপূর্ণ প্রবেশ করার সদিচ্ছা নিয়ে ৷ স্বচ্ছ সুন্দর জীবন পাবেন ৷
يا ايها الذين امنوا ادخلوا في السلم كافة
"হে ঈমানদারগণ, পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর "
বিষয়: বিবিধ
১২৮২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন