ভুলের উপর বসে থাকার দম্ভ শেষ হোক! ✔✔✔ আব্দুর রহিম
লিখেছেন লিখেছেন নুর আয়শা আব্দুর রহিম ২৯ এপ্রিল, ২০১৬, ০৪:১০:০২ বিকাল
ছোট্ট এই জীবনের অভিঙ্গতা থেকে বুঝেছি যে হুট করে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তা দির্ঘ্যস্থায়ী হয়না, তাই ভেবে বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত!
প্রায় বছর খানেক আগে আমার অঘনিষ্ঠ বন্ধু একটি জায়গায় পরাজিত হয়ে জীবনে কখনো বিয়ে করবেনা বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়...! এবং সিদ্ধান্তটি তার পরিবার ও বন্ধু মহলে প্রকাশ করে দেয়। সেই প্রকাশ থেকে কথা গুলো তার পরিচিত অপরিচিত বেশিরভাগ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। সে যেদিকে যায় তাকে লোকজন চিনে কারণ তিনি একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে সবাইকে জানিয়েছে।
সিদ্ধান্ত নেয়ার মাস দেড়েক পরে অঘনিষ্ঠ বন্ধুটির সাথে আমার দেখা হয়...!
প্রথমে সে আমাকে সালাম দিলো আমি সালামের উত্তর দিলাম, কৌশল বিনিময়ের পরে আমার গন্তব্যে আমি যাচ্ছি..... সে পিছু থেকে আব্দুর রহিম ভাই? -জ্বী বলুন, আপনার সাথে একটি কথা শেয়ার করতে চাচ্ছি....
কি কথা?
আসলে আপনার সাথে আগে তেমন কোন আলাপ হয়নি কিভাবে যে কথা গুলো বলি....! আমি বললাম টেনশন নিবেননা আমি শুনবো ফ্রিলি বলতে পারেন।
ভাই আমি একটি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের ভেতরে নিজে জ্বলে পুড়ে মরছি! কি সিদ্ধান্ত? সে ঘটনা শুনালো।
আমি বললাম আপনি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা বুঝতে পেরেছেন এটাতো অত্যন্ত সুভাগ্যের বিষয় ভুল বুঝতে পেরেছেন এখন ভুল সুধরাবেন সমস্যা কোথায়?
সমস্যা এখন হাজার জায়গায়!
কি বলেন?
আমি বিয়ে করবোনা এটা প্রচার হয়ে গেছে সবার মুখে মুখে হয়ে গেছে, বিয়ে করলে লোকে আমাকে হাজারো কথা শুনাবে, লজ্জা পাওয়া থেকে মরন ভালো....!!
ভাই আমি তেমন জ্ঞানী কোন ব্যক্তিত্ব নয় আপনি অন্য কারো কাছে আপনার সমস্যা গুলো বলুন, আমি আপনাকে সমাধান দিতে পারবেনা!
লোকটি আমার কথা শুনে থমকে গেলো এবং হতাশ হলো! হতাশার ছাপ চেহারায় প্রকাশ পাচ্ছে....
ওনার চেহারা দেখে মায়া হলো, বললাম ভুল মানুষই করে সংশোধনও মানুষ করবে.... ইতিহাসে সংশোধনের হাজারো ঘটনা আছে । আমি আপনাকে একজন যুদ্ধার কথা শুনাবো! আপনি হয়তো চিনেন ইসলামের ৪ খলিফার মধ্যে একজনের নাম ছিলো ওমর (র) তিনি ছিলেন অমুসলিমদের পক্ষের দূর্দান্ত ও বিশ্বাস্থ একজন যুদ্ধা।
ধরতে গেলে ঐসময়ে ইসলামের বিরোধীরাই সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ছিলো এবং ওদের জনবল অনেক বেশি ছিলো।
সেই সময়ে মোহাম্মদ (সাঃ) এই পক্ষে মানে ইসলামের পক্ষের লোক ছিলো মাত্র কয়েকজন। অথচ ওমর (র) সত্য কি তা জেনে ভুল পথের যুদ্ধ ত্যাগ করে সঠিক পথে এসেছিল। অসত্যের পথে তার নেতৃত্ব ছিলো সে ছিলো প্রথম শারির যুদ্ধা, তার ভিতরেও ছিলো লজ্জা, ছিলো সামাজিক দায়বদ্ধতা। সে সেইদিন সত্যকে মেনে নিয়ে লজ্জা ও সামাজিক দায়বদ্ধতাকে পাশ কাটিয়ে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন।
যদিও আপনার সাথে যুদ্ধার জীবনীর সাথে বেশ অমিল কিন্তু শিক্ষা নেয়ার মত যতেষ্ট দিকনির্দেশনা আছে। আপনি যে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই সিদ্ধান্তের উপর আপনার স্থির থাকা সম্ভব নয় এবং স্থির থাকা উচিতও নয়, ভুল সংশোধন কারীকে আল্লাহ ভালোবাসেন এবং যারা ভুলের উপর স্থির থাকেন তাদেরকে শয়তান ভালোবাসেন। আমাদের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করা, আল্লাহর ভালোবাসা অর্জন করতে পারলেই জান্নাতে পাব সুখের বাসস্থান।
সুতরাং মানুষের সামনে লজ্জা পাবার ভয় মাথায় নিয়ে বিবাহ থেকে বিরত থাকার মানে হয়না। সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে গেলে আল্লাহ আপনাকে মাফ করবেন এটাই আমার বিশ্বাস।
শুনেছি সে তার ভুল সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল, আমার দুর্ভাগ্য লোকটির সাথে পরে আর দেখা হয়নি কথাও হয়নি।
আজকে এই ঘটনা লিখার কারণ হলো আমাদের গ্রামের এক ভাই তার ভুল বুঝতে পেরে সংশোধনের পথে আসার অঙ্গীকার করেছেন। এবং সবাইকে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সরনাপন্ন হবার আহবান জানিয়েছেন। ওনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
@@@@@@@@@@@@
আশা করছি আমরা আমাদের দেশের
মানুষ গুলোকে পাব সংশোধনের মানসিকতায়,
আশা করছি আমাদের গ্রামের
মানুষ গুলো খুঁজবে সত্য এবং ন্যায়। (আমি সহ)
ভুল গুলোকে ভুল মেনে নিতে
দূর হোক মনের দৃধাদন্ধ,
সমাজে পরিবারে ফিরে আসুক
আন্তরিকতা ও ভালোবাসার ছন্দ।
ভুল করে ভুলের উপর বসে
থাকার দম্ভ শেষ হোক শেষ হোক,
বাংলাদেশে প্রতিদিনই জনে জনে
ঈদ হোক ঈদ হোক।
আমাদের অন্তর চক্ষু যেন থাকে
হাসি খুশির জীবনের খোঁজে,
অন্যের উপর বোঝা চাপিয়ে দিতে
গিয়ে আমাদের মন যেন কাঁদে লাজে।
নিজের বোঝা নিজে বহন করার মানসিকতায়
এগিয়ে চলুক ব্যক্তিত্বের পরিচয়,
তবেই কেটে যাবে আগামীর পথে
অন্যের উপর নির্ভরতার ভয়।
স্বনির্ভর হতে সৎপথের জন্য
অঙ্গীকারাবদ্ধ হোক অন্তর,
জান্নাত যেন আমাদেরকে করে আপন
যেন না করে আমাদেরকে পর।
আমরা যেন হতে পারি পরকালে
জান্নাতের অংশীদার,
আমাদের হাত উম্মুক্ত হোক
নামাজে ও নীতিতে মহান আল্লাহর।
বিষয়: বিবিধ
১৪০৯ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
থাকার দম্ভ শেষ হোক শেষ হোক,
বাংলাদেশে প্রতিদিনই জনে জনে
ঈদ হোক ঈদ হোক।
জাজাকাল্লাহ
পড়ে ভালো লাগল,ধন্যবাদ।
অনেকেই শুধু মানুষের কথা শুনতে হবে এই জন্য ভুলের উপর রয়ে যায়।
ব্যস সমস্যা সমাধান। আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশি সবাই জানতো, ও বাধ্য হয়ে বিয়ে করছে, না হয় ও বিবাহের পক্ষে ছিল না।
লজ্জা থেকেও বাঁচতো, বিবাহও হয়ে যেত। আসলে সমাজে এমন বন্ধুদের বড়ই অভাব।
ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন