বিয়ের পরঃ আরেফার ব্যথা কাতর মনের খবর কেউ জানলোনা...! ✔✔✔আব্দুর রহিম
লিখেছেন লিখেছেন নুর আয়শা আব্দুর রহিম ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১২:৪৯:০৯ দুপুর
আরেফার বিয়ে হয়েছে আজ প্রায় ১ বছর ২ মাস, এর মধ্যে তার কোল জুড়ে এসেছে একটি ফুটফুটে মেয়ে সন্তান। এখনো সন্তানের নাম রাখা হয়নি! এখনো প্রস্রাব বেদনা কমেনি তার, মাত্র ৪ দিন হলো তার মেয়েটির বয়স। আরেফা ব্যথায় কাতরাচ্ছে....!
আরেফার মা তাকে দেখতে এসেছে, দেখতে আসার সুযোগ পেয়েছে প্রায় ৭ মাস পর!! তাও আরেফার সন্তান হবার অযুহাতে....! ৭ মাস ধরে আরেফা তার বাবার বাড়ি যাবার সুযোগ পাইনি! আরেফা বিবাহ বসার পর কিছু দেয়া নেয়া ও অতিথি আসা যাওয়ার বিষয় নিয়ে চাহিদা মত মেহমানদারী হওয়া না হওয়া নিয়ে মন মালিন্য..... এর পর বাকবিতণ্ডা আসা যাওয়া বন্ধ!!
ঘটনা ১. আরেফার স্বামীর নাম (শাহাদাত) শাহাদাত আরেফার বাড়িতে আসা যাওয়া করত বিয়ের আগে! ((আসা যাওয়ার অবশ্যই উদ্দেশ্য আরেফা ছিলো কিনা তা জানা যাইনি)) আরেফার বাবা এক জন সৌদি প্রবাসী, আরেফার বাবার জমিজমা সংক্রান্ত কিছু জটিলতায় শাহাদাত এর সহযোগিতা পাই, যেমনঃ বুদ্ধি, পরামর্শ, কাগজ পত্র নিয়ে দৌড়াদৌড়ি ইত্যাদি! এসব কর্ম সহযোগিতার কারনে আরেফাদের বাড়িতে মোটামুটি প্রিয়ব্যক্তিত্বে পরিনত হয় শাহাদাত। প্রিয় ব্যক্তিত্বের যেমনটি হয় তার ব্যতিক্রম হয়নি......! আরেফার বাবা সৌদি প্রবাসী হওয়ায় টাকা পয়সার অভাব নেই। শাহাদাত প্রিয় ব্যক্তিত্বের সুযোগ বুঝে টাকা দার সহ বিভিন্ন লেনদেন করে
লেনদেন হলে মানুষকে বুঝা যায় বলে সমাজে প্রবাদ আছে। শাহাদাতও তার ব্যক্তিত্ব পরিচয় তুলে ধরে সুকৌশলে চলতে এমনেতেই.....!
ঘটনা ২. আসা যাওয়া চলতেই থাকে সময় যেতে যেতে শাহাদাত এর আসা যাওয়ার বয়স প্রায় বছর দেডেক হয়, স্বামী প্রবাসে থাকলে স্বামীর অনুপুস্থিতিতে বাইরের কেউ প্রবাসীর ঘরে আসা যাওয়া করলে সমাজের মানুষ বিভিন্ন রকম কথা বলা বলি করে......!
এখানেও তার ব্যতিক্রম নয়, আরেফার পরিবারে শাহাদাত হঠাৎ করেই আরেফাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় ...! বিয়ের প্রস্তাব শুনে পরিবারের সবাই হতভম্ব!!! বিয়ে দেয়া যাবনা বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়ে দেয় আরেফার পরিবার, (শাহাদাত নাছাড় বান্দাহ) সে আরেফাকে বিয়ে করবেই.....!
আরেফার নানার বাড়ির লোকজনের দারস্থ হয় শাহাদাত! আরেফাকে বিয়ে করতে চাই....! এ বিষয়ে আলাপ আলোচনা করতে করতে এক পর্যায়ে আরেফার নানার বাড়ির লোকজন রাজি হয়।
আরেফার নানার বাড়ির লোকজনকে দিয়ে আরেফার বাবাকে রাজি করানোর চেষ্টা চালাতে থাকে, চেষ্টা করতে করতে এক পর্যায়ে কিছু শর্তের ভিত্তিতে আরেফার বাবা আরেফাকে শাহাদাত এর হাতে তুলে দিতে রাজি হয়! !!
প্রধান দুটি শর্ত ঘটনা ৩. শর্ত গুলো উল্লেখ করা দরকার!
প্রধান দুটি শর্ত!!!
শর্ত (ক) তোমাদের পরিবার বড় তাই এত গুলো লোকের খাবার তৈরী করতে পারবে নাহ্ আমার মেয়ে।
শর্ত (খ) তোমাদের খেতের ধান মড়াই ও শুকনো আমার মেয়ের দ্বারা হবেনা।
পরিবারের নরমাল কাজ ছাড়া বাইরের কোন . করবেনা।
শর্তে একমত হয়ে তারা বিবাহ অনুষ্ঠান করার জন্য রাজি হয়। আরেফার বাবা সৌদিতে ভিসা জটিলতার কারনে বিয়েতা উপস্থিত হতে পারেনি। মোটামোটি ধুমধাম করে বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
ঘটনা ৪. লোক মুখে বিভিন্ন কটাক্ষ ও কটু কথা অব্যাহত আছে.... মেয়ের মার দুর্নাম ডেকে দেয়ার জন্যই মেয়ের বিয়ে দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি.!!!!
দুর্নামের বোঝা মাথায় নিয়ে শুরু হয় আরেফার সংসার জীবন, চলতে দুই থেকে আডাই মাস গেল মোটামুটি শান্তিতে তার পর শুরু বিতর্ক বাকবিতণ্ডা কারনঃ
কয়েকটি করন আছে তার মধ্যে প্রধান কারন হচ্ছে মেহমান আসা যাওয়ার মাঝে উপযুক্ত মেহমানদারী না হওয়া.....। আরেফার একটু আদটু ভুলত্রুটি।
ঘটনাক্রমে আরেফার বাবার বাড়ি থেকে কোন কিছু আনলে আরেফার শশুর বাড়ির লোকজন তা গ্রহণ করবেনা! একদিন খালি আসতে ভালো লাগছেনা তাই কয়েক পদের নাস্তা নিয়ে আরেফার মা আরেফাকে দেখতে আসে........।
শাহাদাত এর ব্যবহার দেখে আরেফার মা হতবাক হয়ে যায়, শাহাদাত স্পষ্ট করে বলে দেয় এসব এখানে রাখা হবেনা, যেভাবে এনেছেন সেভাবে নিয়ে যান! ! আরেফার মা দুঃখ অপমান মাথায় নিয়ে চলে আসে।
(অনুরোধ) এই পরিস্থিতিতে উভয়পক্ষের কি উদ্যোগ নেয়া দরকার তা জানিয়ে পরামর্শ মুলক মন্তব্য করলে উভয়পক্ষ উপকৃত হবার সম্ভাবনা আছে........।
বিঃদ্রঃ লেখাটি বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে তৈরি! !
বিষয়: বিবিধ
২৫২৫ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আরেফা কি তার মা বাবা সাথে যোগাযোগ রাখে না?আর হঠাৎ শাহাদত কেন আরেফাকে বিয়ে প্রস্তাব দিল?
আর লোক সমাজ শাহাদতের আসা যাওয়া নিয়ে যা বলতো তার সত্যতা কতখানি?
ঘটনার মূল সূত্র মেহমান আসা যাওয়া নিয়ে মনমালিন্য থেকে.....
যেমনঃ আপনার আর আমার পরিবেশ এক নয় শাহাদাতের পক্ষ থেকে আরেফার বাড়িতে মেহমান গেলে শাহাদাতের পছন্দ অনুযায়ী মেহমাদারী হয়নি এটাই অযুহাত।
এর পর থেকে আরেফাকে তার বাবার বাড়িতে যেতে দেয়া হয়নি।
ইউরোপ হলে বলতাম সংসার ভেংগে দিয়ে মেয়েকে অন্য কথাও বিয়ে দিতে।।।। বাংলাদেশের খত্রে আরিফার বাবা কে বলব শাহাদাত কে তার মেয়ের হাতে সকল চাবিকাঠি রেখে প্রতিস্টিত করে দিতে।।।।। মেয়েকে ভাল রাখার জন্য।।।শুধু এইটুকু ভেবে আমি অর্থ দিয়ে আমার মেয়ের সুখ কিনে দিয়েছি।।।।
এখানে শাহাদাত ছিল লোভী। সে যা আশা করেছিল তা মনমত পায়নি, তাই সে রূঢ় আচরণ শুরু করেছে যাতে কর কন্যার পিতা-মাতা এসব বুঝে কিছু করে।
কৃষক পরিবারে ছোট খাট এমন বহু ধরনের কাজ থাকে, যা একজন প্রবাসীর কণ্যার পক্ষে জানা সম্ভব নয়। প্রবাসীর কন্যার জন্য আরেক প্রবাসীর ছেলে হলে হয়ত ভাল হত।
কথা হল, লোভী মানুষের হৃদয়-মন কখনও কোনদিন সন্তুষ্ট হয়না। তাই শাহাদাত নামের ব্যক্তিকেও সন্তুষ্ট করা যাবেনা। বিয়ের শুরুতে দুই পক্ষ্ই দোষ করেছে এখন বালিকাটি কষ্ট পাচ্ছে। হয়ত শেষ মেষ নারী নির্যাতন আদালতে যেতে হবে এবং পরিবার ভাঙ্গবে কেননা যার সাথে পরিবার তার সাথেই সমস্যা। অনেক ধন্যবাদ
যতদূর জানি আরেফার অভিভাবকগণ তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে... মেয়ের জন্য পত্র নির্বাচনে!!!
আপনার সিদ্ধান্ত মুলক মন্তব্যটি ভালো লাগলো তবে তা শেষ উপায় হিসাবে!!
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
কল্পনা ও বাস্তবতার মাঝে আকাশ জমিন ব্যবধান!
পিটুনি দিলে সর্বপ্রথম সংসারটা ভেঙে যাবে। সংসার ভেঙে পেলতে চাইলে পিটুনির দরকার কি আরো অনেক পথ আছে।
কম কথায় সুন্দর পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।
আরেফার কি কোন ভাই বোন নেই? আরেফার বাবা দেশে থাকলে ওনার উচিত সরাসরি যেয়ে কথা বলা......। মেয়েটাকে এভাবে আর কতদিন কস্টে রাখবে ?
আসলে পৃথিবীটাই এমন, মেয়েরা মায়ের জাতি হওয়ায় সবাই তাদের প্রতি অতি তাড়াতাড়ি দুর্বল হয়ে যায়।
অথচ বাস্তবতা আগে জানা দরকার।
আমাদের প্রতিবেশী এক চাচীর ঘটনা প্রায় এ ধরনের, ছেলেটা শিক্ষিত, সুশ্রী হওয়াতে চাচীমা তার হাতে নিজের মেয়েকে তুলে দেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে যান, মেয়েও কিন্তু সুন্দরে ও ফেইসে ফাটাফাটি। তবুও মায়ের মন বলে কথা। ছেলেটিকে অনেক লোভ দেখিয়ে রাজি করানো হয়েছে। চাচাতো প্রবাসে থাকে, চাচী তাকেও রাজি করে নিল।
বিয়ের পর ১০ বছর পার হয়ে গেল কিন্তু আজও সেই জামাই শশুর বাড়িতে আসে না। মাঝে মাঝে তার স্ত্রীকে বেড়ানোর জন্য শশুর বাড়ির দরজায় রেখে চলে যায়, আবার নেওয়ার সময়ও বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে নিয়ে যায়।
সমাজে এধরনের ঘটনা অহরহ, এতে দু'পক্ষেরই দোষ থাকে।
লম্বা হয়ে যাচ্ছে, এখানেই থাক।
আপনার অভিঙ্গতা পূর্ণ কথা গুলো ঘটনার গভীরে যাওয়ার জন্য ঔষধি কাজ করবে। ধন্যবাদ।
সমাজে কেউ কারো উপকার করলে ভিতরে ঠিক নিজ স্বার্থটিকে জিইয়ে রাখে! শাহাদাত উপকার করেছে বিনিময়ে সে জোর খাটিয়ে মেয়েটিকে বিয়ে করেছে!আসলেই নিস্বার্থভাবে উপকার কেউ করবে সেই দিন, মানুষ এবং সময় কোনটাই নেই!
সমাজের একটি করুণ চিত্র তুলে ধরেছেন। আমাদের সমাজে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাত্রীপক্ষ কিছুটা নমনীয় থাকে আর বিয়ের পরে পাত্রপক্ষ গায়ের জোড়, অর্থের জোড়, অমানষিক ব্যবহারের জোড় দেখাতে আর খাটাতে কার্পন্য করে না!
সংসারের এই দ্বন্দ হোক বন্ধ এই শুভকামনা রইলো!
জাযাকাল্লাহু খাইর!
মন্তব্য করতে লগইন করুন