জোনাকি তোমাকে বলেছিলাম অফিসে যাবার সময় আমাকে অন্তত একটি চুম্বন দিতে..১৮+ ✔✔✔আব্দুর রহিম
লিখেছেন লিখেছেন নুর আয়শা আব্দুর রহিম ২৯ জুলাই, ২০১৫, ০৪:১১:৪২ বিকাল
ইমরান লাজুক টাইপের একজন মানুষ, তার মনটা লজ্জায় ভরা থাকার কারনে প্রয়োজনীয় কথা গুলো তিনি তার কাছের বন্ধু বা স্ত্রীকে বলতে পারেনা...!
ইমরান বারবার চেষ্টা করেছে যে তার লাজুকতা গুলো দূর করতে... কিন্তু পারেনি তার ব্যর্থতা দৃশ্যমান হতে চলেছে.... (এতদিন লজ্জা নিজের ভেতর হজম করতে পারলেও এখন সে লজ্জাময় মন নিয়ে বিব্রত! !
কারন তিনি এখন আর একা নন, তার সহচর জোনাকি আছে....। ইমরানের চিন্তা শক্তি কিন্তু দারুন তবে প্রকাশ করতে যত বাঁধা!
ইমরান আজ নিরিবিলি বসে বসে ভাবছে বিয়ে করার সময় নিলজ্জরা মেয়ে বাড়ি থেকে কত কিছুই নিচ্ছে....
যেমনঃ- টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মিশিন, মোটরসাইকেল, ডাইনিং টেবিল চেয়ার সেট সহ... আরো কত কিছু....।
ইমরান নিজের ভেতরে ভেতর ভাবতে থাকে যৌতুক আমার চাই... চাইই....! লজ্জাকে আমি কবর দেব, যে ভাবেই হোক যৌতুক আদায় করতেই হবে। ইমরান ভাবে বিয়ের আগে যৌতুকের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে এনেছিলাম, কিন্তু এখন আমি যৌতুক ছাড়া বাঁচাতে পারবোনাহ্!
ইমরানের যৌতুকের লিস্টি অনেক লম্বা....! স্বতঃপ্রণোদিত না হলে ইমরানের যৌতুক গুলো পুরণ করা প্রায় অসম্ভব; পাঠক নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে হচ্ছে ইমরানের যৌতুকের লিস্ট......
তা হলে শুরু করা যাক....
ইমরানঃ জোনাকি... জোনাকি.... জ্বি... এদিকে এসো আমি অফিসে যাব আমাকে রেডি করে দাও....
জোনাকিঃ ওসব রেডি মেটি আমি করতে পারবোনা, তোমার কাজ তুমি করে অফিসে চলে যাও।
ইমরানঃ এইযে এদিকে এসো মেরুন কালারের জুতো আছেনা এই জুতোর সাথে মেসিং করা যে মৌজা ছিলো তা খুঁজে পাচ্ছিনাহ্, খূঁজে দেখোতো.....।
জোনাকিঃ কেন এসব ময়লা আবর্জনা আমাকে খোঁজতে হবে কেন? রাখার সময় খেয়াল করে রাখতে পারেনা...? গ্যান গ্যান করতে করতে.... চোখ কানা চোখে দেখেনা... এই নাও....মৌজা।
ইমরানঃ জোনাকি আছ বাড়িতে? অফিসের কাজে বাইরে দৌড়তে দৌড়তে আজ ক্লান্ত হয়ে গেছি... লেবুর রস দিয়ে এক গ্লাস শরবত বানিয়ে দাওতো...! দেখ ভেতরের সুতির গেন্জিটা পর্যন্ত ভিজে গেছে...।
জোনাকিঃ হ..হ... মানুষ আর চাকরি বাকরি করেনা..... ঘরে এসেই অর্ডার আর অর্ডার!! যাও..যাও... টেবিলে গ্লাস দোয়া আছে... লেবুও কদ্দুর আছে বানিয়ে খাও...।
ইমরানঃ জোনাকি তোমাকে কতবার বলেছি অফিসে যাবার সময় কাছে এসো আমি কয়েকটি চুমু দেয়ার পর হলেও একটি চু.... দিয়ে যেও...।
জোনাকিঃব্য ব্য... মহাব্বত উতলাইয়া পড়তেছে....! কতবার বলেছি বিয়েতে ছোট্ট একটা হার দিয়েছিলা.... পড়তেই ইচ্ছা হয়না... লোক চোখের সামনে শরম লাগে.... কতবার বলেছি হার এর কথা, কই বড় হারতো কিনে দিলানা.....!!!
ইমরানঃ জোনাকি আজ ইলিশ আর কচুর ছড়া দিয়ে যা রান্না করেছোনা! দারুণ মজা হয়েছে, যা রেধেছ খাবার পরও মনে হচ্ছে জিভে লেগে আছে! তোমাকে অনেক....ধন্যবাদ।
জোনাকিঃ এতো হাওয়া দিতে হবেনা...! আমার বাপের বাড়ির সবার হাতের সব রান্নাই এ রকম মজা হয়! তোমরা মজা বুঝনাতো তোমাদের বুঝিয়ে আর কি হবে?
ইমরানঃ জোনাকি..... জোনাকি..... দেখতো দেখ অফিসে যাবার সময় দেখে গেলাম ঘরে মুরগী এসে বিষ্টা ছেড়ে গেছে....! এখন অফিস থেকে এসেও সেই বিষ্টা..!!! তোমার কোন দিকে কোন খেয়ালই নেই... সারাদিন কি কর? স্টার জলসা...আর.....!!! আমার মা থাকলে এমন পরিস্থিতি দেখতে হতোনা।
জোনাকিঃ আ....হা....হা.......! আদরী রে মা আদরী.....! কেন সংসার কি শুধু আমার? সকালে মুরগীর বিষ্টা দেখে চলে গেল... যাবার সময় এটা পেলে দিয়ে গেলেইতো হয়। আমার সাথে ঝগড়া করার জন্য......।
বিঃদ্রঃ আরও আছে তবে পাঠকের পড়ার ধৈর্যের কথা বিবেচনা করে এখানে শেষ করছি।
পাঠক উপরের প্রশ্নোত্তর পর্বে ইমরান এর যৌতুক ভাবনা গুলো প্রকাশ পেয়েছে... তিনি এই যৌতুকের জন্য লজ্জা শরম ত্যাগ করতে চাই এবং জোনাকির দেয়া একটি জবাবও ইমরানের পছন্দ হয়নি!!! জোনাকির কাছে বলা যৌতুক গুলো তার চাই...চা...ই...ই। জোনাকি এই যৌতুক আদায় করতে পারলেই ইমরান+জোনাকি এর সংসার নামের সাগরে ভালোবাসার স্রোতের পর স্রোত এসে ঢেউয়ে পরিনত হবে। বুঝতে হবে ভালোবাসাময় ঢেউ ছাড়া সংসার জীবন অর্থহীন! !!
কোরআনে বলা আছে স্বামী স্ত্রী একজন অন্য জনের পোশাক এর মত.....।
কোন কিছুই তাদের মধ্যে আড়াল নয়, স্বামী স্ত্রী একে অন্যের সহযোগী যে যার অবস্থান থেকে।
সহযোগীর আচরণ যদি ইমরান ও জোনাকির মত হয় তাহলে সংসারে সুখ শান্তি থাকার কথা নয় । ইমরান যৌতুকের জন্য পাগলের মত হয়ে আছে... ইমরান যৌতুক আদায়ের জন্য ছুটাছুটি করছে তার সব কিছুই আছে কিন্তু সংসারে ভালোবাসার অভাব, যৌতুকের অভাব! ! এ অভাব বহন করে জীবন অতিবাহিত করা তার পক্ষে সম্ভব নয়, ইমরানের এই যৌতুক শূন্যতা পুরন করতে হবেই। জোনাকিকে তার সাধ্যমত বুঝতে এবং বুঝাতে চেষ্টা করেছে.... কিন্তু জোনাকির পরিবর্তন নেই বললেই চলে।
জোনাকির পরিবর্তন না দেখে ইমরান ২ সাপ্তাহের ছুটি নেয় অফিস থেকে! ! ছুটি নিয়ে ঘরে এসে অযুক্তিক একটি কথা বলে জোনাকির সাথে তর্ক সৃষ্টি করে....! তর্কের এক পর্যায়ে ইমরান বলে তোমার মত বউ আমার দরকার নেই আমি যাচ্ছি.....!! জোনাকি বলে যাও যাও... হু...দাম কত দাম দেখাচ্ছে...দাম যাও.. দাম দেখাতে হবেনাহ্।
ইমরান মুটোফোন আর কিছু টাকা ও কাপড় নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যাই ঘর থেকে দূরে।ইমরানের অবশ্যই বাইরে থাকার অভ্যাস আছে চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় তাকে থাকতে হয়েছে। যদিও বিয়ের পর এই প্রথম তিনি বাড়ির বাইরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে!
ইমরান কক্সবাজার গিয়ে একটি বাসা নেয় ১৫ দিনের জন্য, কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত বাসায় আসা যাওয়ার মাঝে ২/৩ দিন কাটিয়ে দিলো। ইমরানের মন এমন শূন্যতায় আগে কখনো পড়েনি মনে হচ্ছে যেন তার সব কিছুই হারিয়ে গেছে জীবন থেকে.....। শূন্যতাকে নিজের ভিতরে দমন করে সিদ্ধান্ত নেয় ১৫ দিনের আগে নতুন কোন সিদ্ধান্ত নয়।
এদিকে জোনাকি ইমরানের শূন্যতা একটু একটু অনুভব করতে শুরু করেছে....! যদিও জোনাকি নিজে থেকে কোন উদ্যোগ নিতে রাজি নয়। এভাবে সময় যেতে যেতে ৮ দিন পেরিয়ে গেলো.... ৯ দিনের মাথায় রাতে জোনাকি কি যেন এক স্বপ্ন দেখে ভয় পেয়ে ইমরান... ইমরান... বলে ডাকতে থাকে! !
ঘরের লাইট অন করে দেখে ঘরে ইমরান নেই, জোনাকির মনের ভিতরে কি এক কান্নার অবয়ব! ! জোনাকি ভাবে মানুষটি কি সত্যিই আমাকে ছেড়ে চলে গেলো? আমি কি এত খারাপ আচরণ করেছি ইমরানের সাথে...... ৭....৫ ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে জোনাকি।
পরের দিন সকালে জোনাকির নাস্তা পর্যন্ত খেতে ইচ্ছে করছেনা, মুঠোফোন হতে নিয়ে কল দেবে ভাবছে ইমরানকে..... কিন্তু মনের অহংকার কল দিতে বারণ করছে! কয়েকববার ডায়েল করে কেটে দেয়, অবশেষে কল দেয় ৩/৪ বার কল দেবার পর ইমরান কল রিসিভ করে...
জোনাকিঃ হ্যালো... ইমরানঃহ্যালো.... ২জন কেউ কাউকে কোন কথায় বলতে পারছেনা! ২জন দুপ্রান্তে আবেগ স্রোতমোহ অতিক্রম করছে।
ফোনআলাপের বিস্তারিত আমি উল্লেখ করতে চাইনাহ্, পাঠকেরা নিজেদের ইচ্ছেমত ভেবে নিন ইমরান ও জোনকির মধ্যে কি কথা হয়েছে....! ফোনে কথা বলার পর ইমরান বাড়িতে ফিরে এলো, এবং ইমরান তার যৌতুক আদায় করে সুখে শান্তিতে সংসার করিতে লাগিলো।
ভালোবাসাময় যৌতুক দেয়া নেয়া নিয়ে সুখ শান্তিতে ভরে উঠুক প্রতিটি সংসার, আল্লাহর কাছে এটাই কামনা করি। সবাই সময় মত বিয়ে করুন সুখে জীবনজাপন করুন ভালো থাকুক সুস্থ থাকুন।
কৃতজ্ঞতায় ব্লগার "এবেলা ওবেলা" এর প্রতি! আজকের এই লেখাটি আমার পোস্টে ওনার একটি মন্তব্যের সূত্র থেকে তৈরী....
]
বিষয়: বিবিধ
১৮৫৭ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মনঃপুত না হলে তো স্বামীর সাথে সেক্স করার পর ধর্ষন বলবে সেটাকে ।
তাহলে স্বামীর ইচ্ছার বাইরে যদি স্ত্রী তাকে দিয়ে খরচ করায় সেটাকে কি ডাকাতি বলা ভুল হবে ?
পুরুষ মানুষ যে বিয়ে করে সেটা কি শুধুই স্ত্রীকে ভরন পোষন আর তোয়াজের জন্যই ?
বিয়ে করে নিজের যদি বিন্দুমাত্র লাভ না হয় তাহলে সেটার দরকারই বা কি ?
মাংশ ও দুধ যদি বাজারেই কিনতে পাওয়া যায় তাহলে কে আর কষ্ট করে গরু পালতে যাবে ?
পুরুষ মানুষের জন্য বিয়ে আর আত্মমর্যাদা এক সাথে চলতে পারে না কখনই ।
প্রথম মন্তব্যের জন্য লাল গোলাপ শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন।
আসলে ভালবাসা কখনো যৌতুক হতে পারেনা, এখানে যৌতুক নামে অবহিত করার করন হচ্ছে ব্লগার এবেলা ওবেলা এর মন্তব্য...!! লেখাটি যেহেতু ওনার মন্তব্যের উপর বৃত্তি করে লেখা হয়েছে সেহেতু যৌতুক শব্দটি প্রতীকি ব্যবহার করা হয়েছে।
অনেক মেয়ে আছে স্বামীর সাথে সেক্স করাকে ব্লেকমেইল হিসেবে ব্যবহার করে!! যা কোন ভাবে সমর্থন যোগ্য নয়।
স্বামীর ইচ্ছের বাইরে খরচের যে টাকা খরচ করা হয় সেটাকে অনেকে ডাকাতি বলে চালিয়ে দেয়!! এ ক্ষেত্রে স্বামী একটু নমনীয় হলেই হয় সংসার যেহেতু দুজনের সমন্বয়ে করতে হয়।
পুরুষ মানুষ বিয়ে করে শুধু স্ত্রীর ভরন পোষনের জন্য নয় সাথে আদর ভালবাসাও কাম্য থাকে।
বিয়ে করে বিন্দুমাত্র লাভ হচ্ছেনা দেখলে অবশ্যই লাভের জন্য পন্থা অবলম্বন করতে হবে.... যেমনটি করেছেন আজকের পোস্টের নায়ক "ইমরান"
দুধ গোস্ত বাজারে পাওয়া গেলেও গরু পালন করার বিষয় উদ্দেশ্য থাকে....।উদ্দেশ্য থেকেই পালন করা হয় বলে ধরে নিতে হবে।
পুরুষ মানুষের জন্য বিয়ে আর আত্মমর্যাদা এক সাথে চলতে পারেনা, কথাটি ভুল! ভালো মেয়ে যদি আপনার নসিব হয় সংসার সুমিস্ট সুমধুর। মন্তব্যয়ের জন্য ধন্যবাদ।
বপ্রে এতত চিন্তা মাথা থেকে কেমন কোরে আসে
আয়েশা ভাবী কই ইদানিং একটু বেশিই ভালোবাসা হচ্ছে
প্রথম ছবিটি চেঞ্জ করুন। তাহলে পোস্টের সৈন্দয্য বাড়বে।
ভালোবাসা ছাড়া জীবন অর্থহীন ভালোবাসা সুতরাং ভালোবাসা হতেই হবে।
ধন্যবাদ দিমুনাহ্। পরে দিমু... একটি বস্তা নিয়ে আইসেন পরে দিয়ে দিমু।
আমি ডেনমার্কে যেতে চাই কোন পথ থাকলে বলুন
বাহ! আইডিয়াটা দারুন তো....
কল্পনার জগৎ থেকে দারুন ও চমৎকার সমাধান মূলক পোষ্ট লিখেছেন, সত্যিই অনেকের উপকারে আসবে। ইমরানের সমাধানটি সত্যিই মনে রাখার মতো। স্ত্রীর ভালবাসা না পেলে আসলে জীবনটাই বৃথা।
সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া। জাযাকাল্লাহ খাইর
বাস্তব জীবন সুন্দর শান্তিময় হোক এটাই প্রত্যাশা।
কথা গুলো পড়ে যদি কারো মন নাড়া দিয়ে উঠে তা হলেই আমার লেখার সার্থকতা....।
কিছু কিছু সংসারে সুখ বলতে কিছুই নেই, একজন অন্য জনের কথা শুনেনাহ্..... আন্তরিকতা বলতে কিছুই নেই লেখাটি পড়লে হয়তো তারা উপকৃত হবে।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
স্ত্রীর প্রকৃত ভালবাসা পাওয়াই হল সব চেয়ে বড় যৌতুক! এটার পিছনে সময় দিলেই অনেক ঝামেলা এড়ানো যায়!
মন্তব্য করতে লগইন করুন