হামজা নামের একজন ব্লগার এর পোস্টে আমার মন্তব্যটি.....✔✔✔ আব্দুর রহিম
লিখেছেন লিখেছেন নুর আয়শা আব্দুর রহিম ১৪ জুলাই, ২০১৫, ০৬:১৭:৫৬ সকাল
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রোজা রাখা শুরু এবং ঈদ অনুষ্ঠান যুক্তিক! এক দেশে চাঁদ দেখলে অন্য সব গুলো দেশে রোজা রাখা বা ঈদ করা অযুক্তিক...!
পৃথিবী গোল হবার কারনে পৃথিবী সব দেশের সময় এক নয়, জাপানে যখন রাত হয় ঠিক তখন বাংলাদেশে দিন, দিন রাতের ব্যবধানটা মাথায় রাখা উচিত। যেমন নামাজের সময় আমরা যখন বাংলা দেশে ফজরের নামাজ পড়ি ঠিক তখন সৌদি আরবে রাত ২টা প্রায় ৩ঘন্টা সময়ের ব্যবধান!!
এতটুকু ব্যবধান নামাজের বেলায় মানা হলে রোজা এবং ঈদ নিয়ে বিতর্ক কেন?
মনে রাখতে হবে চাঁদের দিক নির্দেশনা হলো সময় নির্ধারন করা.... মাস-বছর গননার জন্য, সময় নির্ধারণের জন্য যেখানে চাঁদ সেখানে আপনি অন্য দেশের চাঁদ দেখার উপর ভর করে ঈদ করবেন কেন?
সূর্যও তেমনি সময়ও দিকনির্দেশনা দেয়। আমরা জানি সূর্য কখনো ডুবেনাহ্ পৃথিবী গুরার কারনে বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আলো দেয়!
পৃথিবীর সব দেশের নামাজের সময় যেমন এক করা কখনোই সম্ভব নয়, ঠিক তেমনি এক দেশে চাঁদ দেখে অন্য দেশে চাঁদের হিসেবে রোজা শুরু করা অথবা ঈদ করা মোটেও যুক্তিক নয়।
একটি দেশের ক্ষেত্রে হয়তো এই নিয়ম মানা যেতে পারে! যেমনঃ ঢাকায় চাঁদ দেখা গেল চট্টগ্রামে দেখা গেলো নাহ্! তখন হিসাব করা যেতে পারে রোজা শুরু করা ও ঈদ করা.... কারন ঢাকা চট্টগ্রাম সময়ের খুব বেশি ব্যবধান নয়।
সময়ের খুব বেশি ব্যবধান হলে আপন দেশের আকাশে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে রোজা শুরু করা বা ঈদ করা যেতে পারে.....।
বিষয়: বিবিধ
২০৮৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
(১) বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সমূহের ( যেমন সৌদি আরব, ইয়েমেন, ওমান, ইরাক, কুয়েত, জর্দান ইত্যাদি দেশের ) একদিন পরে সিয়াম / রোজা শুরু করলে, বা বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরে ঈদ করলে এই অবস্হা হয়: বাংলাদেশ থেকে কেউ রোযা শুরু করে রমযান মাসের যে কোন দিন মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে সেখানে ঈদ করলে তার রোযা ২৮ বা ২৯ টি হয় অর্থাৎ অন্যদের চেয়ে একটি কম হয়, আবার মধ্যপ্রাচ্য থেকে কেউ রোযা শুরু করে রমযান মাসের যে কোন দিন বাংলাদেশে এসে ঈদ করলে তার রোযা ৩০ বা ৩১ টি হয় অর্থাৎ অন্যদের চেয়ে একটি বেশি হয়। অথচ ২৮ বা ৩১ রোজার বিধান ইসলামে নাই। হাদীস শরীফে বলা হয়েছে আরবী মাস ২৯-এর কম হবেনা এবং ৩০-এর বেশী হবেনা। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য ঈদের দিন রোযা রাখা হারাম। ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে রোযা ও ঈদ মেনে নিলে এই ২৮ বা ৩১ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
(২) ঠিক একই ভাবে আরও কিছু প্রশ্ন এসে যায়, যেমন মধ্যপ্রাচ্যে কেউ ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজ আদায় করে ঐদিন বাংলাদেশে এসে দেখল (স্হানীয়ভাবে আলাদা চাঁদ দেখে আমলের কারনে) বাংলাদেশের মানুষ রোজা করছে। তাহলে সে দিনের বাকী সময় পানাহার করতে পারবে কিনা? একইভাবে, আফগানিস্তানে কেউ ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজ আদায় করে ঐদিন (মানুষের তৈরী হারাম জাতীয়তাবাদী সীমান্ত পার হয়ে) একেবারে পাশের দেশ পাকিস্তানে এসে দেখল (স্হানীয়ভাবে আলাদা চাঁদ দেখে আমলের কারনে) মানুষ রোজা করছে। তাহলে সে দিনের বাকী সময় পানাহার করতে পারবে কিনা?
আবার বাংলাদেশে কেউ স্হানীয়ভাবে আলাদা চাঁদ দেখে শাবানের হিসাব করে শাবানের শেষ দিন দিনের বেলা খাওয়া-দাওয়া করে ঐদিন মধ্যপ্রাচ্যে যেয়ে দেখল মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ রমজানের রোজা করছে। তাহলে সে দিনের বাকী সময় পানাহার করতে পারবে কিনা? একইভাবে, পাকিস্তানে কেউ স্হানীয়ভাবে আলাদা চাঁদ দেখে শাবানের হিসাব করে শাবানের শেষ দিন দিনের বেলা খাওয়া-দাওয়া করে ঐদিন (মানুষের তৈরী হারাম জাতীয়তাবাদী সীমান্ত পার হয়ে) একেবারে পাশের দেশ আফগানিস্তানে যেয়ে দেখল আফগানিস্তানের মানুষ রমজানের রোজা করছে। তাহলে সে দিনের বাকী সময় পানাহার করতে পারবে কিনা? এইসকল সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়না।
(৩) লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশদিনের বিজোড় রাত্রে যেমন ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ এমন বিজোড় রাত্রে খোঁজ করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরে রোজা শুরু করলে, মধ্যপ্রাচ্যে যেদিন বিজোড় রাত হয় বাংলাদেশে সেদিন জোড় রাত হয়, আবার বাংলাদেশে যেদিন বিজোড় রাত হয় মধ্যপ্রাচ্যে সেদিন জোড় রাত হয়। তাহলে শবে কদর কি মধ্যপ্রাচ্যের বিজোড় রাত অনুযায়ী হবে নাকি বাংলাদেশের বিজোড় রাত অনুযায়ী হবে নাকি দুই রাত্রেই হবে? যেমন উদাহরন স্বরূপ মধ্যপ্রাচ্যে যদি সোমবার দিনগত মঙ্গলবার রাতটি রমজানের শেষ দশদিনের একটি বিজোড় রাত ও কদরের রাত হয় তাহলে বাংলাদেশে (মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরে রোজা শুরু করার কারনে এলাকা ভিত্তিক হিসেবে) মঙ্গলবার দিনগত বুধবার রাতটি বিজোড় রাত ও কদরের রাত হবে। তাহলে উপরোক্ত উদাহরনে আসল কদরের রাত কি সোমবার দিনগত মঙ্গলবার রাত, নাকি মঙ্গলবার দিনগত বুধবার রাত, নাকি দুই রাতই? সূরা কদর অনুযায়ী কুরআন যে রাতে নাযিল হয়েছিল সেটাই কদরের রাত। কদরের রাতে সমগ্র কুরআন একত্রে লওহে মাহফুজ থেকে বায়তুল ইজ্জাহ বা প্রথম আসমানে নাযিল করা হয়েছে। উপরোল্লিখিত উদাহরন স্বরূপ যদি ধরে নেই, মধ্যপ্রাচ্যের জন্য মঙ্গলবার রাত্রে ৩০ পারা কুরআন একত্রে নাযিল হয়েছে, তাহলে বাংলাদেশের জন্য ৩০ পারা কুরআন একত্রে কি বুধবার রাত্রে আরেকবার নাযিল হয়েছে??? মঙ্গলবার রাত আর বুধবার রাত কি কখনো একই রাত হতে পারে??? ৩০ পারা কুরআন একত্রে কয় রাতে নাযিল হয়েছে? কদরের রাত কি একটা নাকি দুইটা? একই বছর একই মাসে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় লাইলাতুল কদর কেন ভিন্ন ভিন্ন বারে (যেমন মঙ্গল, বুধ, ইত্যাদি) হবে? ৩০ পারা কুরআন কি মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এক রাতে আর বাংলাদেশের জন্য তার পরের রাতে অর্থাৎ দুই রাতে নাযিল হয়েছে?
(৪) হযরত আবু হুরাইয়রা রদিআল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম এরশাদ করেছেন, “যখন পবিত্র রমযান মাস এসে যায় তখন জান্নাতের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয়” [(সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৪০-২৪১, হাদীস নং ১৭৭৭) অথবা (সহীহ বুখারী, ইংরেজী অনুবাদ - ড. মুহসীন খান, সৌদি আরব, খন্ড ৩, অধ্যায় ৩০, পৃষ্ঠা ৮২, হাদীস নং ১৮৯৮)]
হযরত আবু হুরাইয়রা রদিআল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম এরশাদ করেছেন, “যখন পবিত্র রমযান মাস এসে যায় তখন আসমানের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা সমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানকে শৃংখলাবদ্ধ করা হয়।” [(সহীহ বুখারী, খন্ড ৩, হাদীস নং ১২৩ অথবা খন্ড ৩, অধ্যায় - সাওম, হাদীস নং ৯, অথবা খন্ড ৩, অধ্যায় ৩১, হাদীস নং ১২৩) অথবা (সহীহ বুখারী, ইংরেজী অনুবাদ - ড. মুহসীন খান, সৌদি আরব, খন্ড ৩, অধ্যায় ৩০, পৃষ্ঠা ৮২, হাদীস নং ১৮৯৯) অথবা (সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৪১, হাদীস নং ১৭৭৮,)]
উদাহরন স্বরূপ ধরে নেই মধ্যপ্রাচ্যে যদি বুধবার দিনগত বৃহস্পতিবার রাত্রে রমযান মাস শুরু হয় তাহলে বাংলাদেশে এলাকা ভিত্তিক চাঁদের হিসেব করলে মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরে রোজা শুরু করার কারনে বৃহস্পতিবার দিনগত শুক্রবার রাত্রে রমযান মাস শুরু হবে। জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা, মূল শয়তানকে বন্দি করা এগুলি কি মধ্যপ্রাচ্যের রমজান শুরুর রাত্রে অর্থাৎ উপরোল্লিখিত উদাহরন অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত্রে নাকি পরদিন বাংলাদেশের রমজান শুরুর রাত্রে অর্থাৎ শুক্রবার রাত্রে হবে নাকি দুই রাত্রে দুই বার হবে? ইবলিস আযাযিল শয়তান তো একটাই। তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য শয়তান বৃহস্পতিবার বেঁধে বাংলাদেশের জন্য শুক্রবার কি আরেকটা শয়তানকে বাঁধা হবে??? জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা, মূল শয়তানকে বন্দি করা এগুলি দুই দিনে দুই বার নয় বরং এক দিনে এক বারই হয়ে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে রোযা ও ঈদ মেনে নিলে এগুলি একাধিক বার হয় বলে মেনে নিতে হয় যা বিবেকগ্রাহ্য নয়।
(৫) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে, “আরাফার দিনে রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর নিকট আশা রাখি, তা পূর্ববর্তী বছর এবং পরবর্তী বছরের গুনাহ্ মুছে দিবে (বা ঐ দিনের রোযার বিনিময়ে আল্লাহ পাক রোযাদারের পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেন)”। [(মুসলিম শরীফ, অধ্যায় সাওম, হাদীস নং ২৬০২ ও ২৬০৩, অথবা অধ্যায় ৬, হাদীস নং ২৬০২ ও ২৬০৩) অথবা (মুসলিম শরীফ, অনুবাদ – আ.স.ম. নুরুজ্জামান, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ১১১ - ১১২, অধ্যায় ১৪ - কিতাবুস সাওম, হাদীস নং ২৬১২ ও ২৬১৩)]
আরাফার দিন হচ্ছে সেটাই যেদিন হাজীগন আরাফার মাঠে থাকেন। ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে রোযা ও ঈদ মেনে নিলে আরাফার দিন দুটি হয়ে যায় অথচ আরাফার দিন একটাই।
(৬) চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতা অনুযায়ী নিশ্চিতভাবে সঠিক স্হায়ী সীমানা নির্ধারন করা যায়না। কারন উদয় স্থল সর্বদা একই রকম থাকেনা। যে কোন বছরে যে কোন মাসের চাঁদ পৃথিবীতে প্রথম উদিত হলে যে এলাকাসমূহ তার আওতাভূক্ত থাকে তার সীমানা প্রতিমাসে একরকম থাকেনা, প্রতি বছরেও একরকম হয়না। তারপরেও যদি চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতার ভিত্তিতে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার সীমানা নির্ধারন করে একই দিনে সেই সীমানার এক পাশে রোযা অন্য পাশে ঈদ হয়, তবে সেই সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ কি রোযা করবে নাকি ঈদ করবে এর কোন সমাধান পাওয়া যায়না।
(৭) চাঁদ দেখার সংবাদ যদি নিকটবর্তি এলাকায় গ্রহণ করা হয় আর দূরবর্তি এলাকায় গ্রহণ না করা হয় তাহলে যে এলাকাকে সর্বশেষ নিকটবর্তি এলাকা মনে করে সংবাদ গ্রহণ করা হচ্ছে আর তার একেবারে পাশের এলাকাকেও দূরবর্তি মনে করে সংবাদ গ্রহন করা হচ্ছে না, এই দুই এলাকার সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ সংবাদ গ্রহণ করবে কিনা এর কোন সমাধান পাওয়া যায়না।
(৮) “চাঁদ দেখার নির্ভরযোগ্য সংবাদ সর্বোচ্চ কতদূরত্বের মধ্য থেকে আসলে তা গ্রহনযোগ্য হবে” অথবা “সর্বনিম্ন কতটুকু দূরত্বের বাইরের চাঁদ দেখার নির্ভরযোগ্য সংবাদ গ্রহনযোগ্য হবে না” তার নির্ধারিত কোন পরিমান কুরআনের আয়াত বা রাসূল (সাঃ) এর হাদীসে পাওয়া যায় কি??? (এই দূরত্বের সঠিক পরিমানের কথা উল্লেখ আছে এমন কোনো কুরআনের আয়াত বা রাসূল (সাঃ) এর হাদীস অধম লেখকের ক্ষুদ্রতম জ্ঞানে জানা নাই। সম্মানিত পাঠক, এমন কোনো কুরআনের আয়াত বা রাসূল (সাঃ) এর হাদীস পেলে, অধম লেখককে জানানোর বিনীত অনুরোধ রইল।)
(৯) হারাম জাতিয়তাবাদী বর্ডার বা দেশের সীমারেখা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দিনে রোযা শুরু বা ভিন্ন ভিন্ন দিনে ঈদ মুসলিমরা কেন করবে? দেশে দেশে এই সীমান্ত তো মানুষের তৈরী, আল্লাহর দেয়া নয়, তাহলে ব্রিটিশের দেয়া বর্ডার অনুযায়ী কেন মুসলিমরা ভিন্ন ভিন্ন বারেরোযা শুরু করবে, আর কেনইবা ভিন্ন ভিন্ন বারে ঈদ করবে?? আফগানিস্তান ও পাকিস্তান একেবারে পাশাপাশি এবং একটাই মুসলিম ভূমি। অথচ আফগানিস্তানের সরকারী ঘোষনা অনুযায়ী যেদিন ঈদুল ফিতর হয়, সাধারনত পাকিস্তানের সরকারী ঘোষনা অনুযায়ী তার পরদিন ঈদুল ফিতর হয়। আফগানিস্তান ও পাকিস্তান একটাই মুসলিম ভূমি হওয়া স্বত্তেও হারাম জাতিয়তাবাদী বর্ডার বা দেশের সীমারেখার কারনে সরকারী ঘোষনা অনুযায়ী আফগানিস্তানে যেদিন ঈদুল ফিতর হচ্ছে পাকিস্তানে সেদিন রোজা হচ্ছে। অথচ ঈদের দিন রোযা রাখা হারাম।
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, “রসূলুল্লাহ্ (দ.) ঈদুল ফিতরের দিন এবং কুরবানীর দিন সওম (রোজা) রাখতে নিষেধ করেছেন”। [বুখারী, অধ্যায়ঃ ৩০, কিতাবুস্ স্বওম, অনুচ্ছেদঃ ৬৬, ঈদুল ফিতরের দিনে স্বওম রাখা, হাদিস # ১৯৯০, ১৯৯১, অনুচ্ছেদঃ ৬৭, কুরবানীর দিনে স্বওম, হাদিস # ১৯৯৩, ১৯৯৪, ১৯৯৫, অধ্যায়ঃ ৭৩, কুরবানী, অনুচ্ছেদঃ ১৬, কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু খাওয়া যাবে অথবা কতটুকু সঞ্চয় করে রাখা যাবে, হাদিস # ৫৫৭১, মুসলিম, অধ্যায়ঃ ১৩, কিতাবুস্ স্বিয়াম, অনুচ্ছেদঃ ২২, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাতে স্বওম পালন না করা, হাদিস # ১৩৮/১১৩৭, -১৩৯,১৪০,১৪১/১১৩৮, -১৪২/১১৩৯, -১৪৩/১১৪০, আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায়ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বিয়াম, অনুচ্ছেদঃ ৪৮, দুই ঈদের দিন স্বওম পালন, হাদিস # ২৪১৬, ২৪১৭, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ্, অধ্যায়ঃ ৭, স্বিয়াম, অনুচ্ছেদঃ ৩৬, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে স্বওম রাখা নিষেধ, হাদিস # ১৭২১, ১৭২২, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), স্বহীহ্, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ স্বওম, অনুচ্ছেদঃ ৭৫, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে স্বওম না রাখা, হাদিস # ৮২৪৮, ৮২৪৯, ৮২৫০, দারিমী, স্বহীহ্, অধ্যায়ঃ ৪, কিতাবুস্ স্বওম, অনুচ্ছেদঃ ৪৩, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে স্বওম রাখা নিষেধ, হাদিস # ১৭৫৩ (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)]
বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন দিনে ঈদ করলে দেখা যাবে একটি অঞ্চলে যেদিন ঈদ, অন্য অঞ্চলে সেদিন রোজা অথচ ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম কি আশ্চর্য্য! একই ভূমিতে একই মুসলিম জাতি একই দিনে সরকারী ঘোষনা মানতে গিয়ে ব্রিটিশের দেয়া বর্ডার বা সীমান্ত অনুযায়ী সীমান্তের এক পাশে ঈদ আর অন্য পাশে রোজা করতে বাধ্য হচ্ছে!! হায়রে মুসলিমদের অবস্হা!! পৃথিবীর সমস্ত মুসলিম একই জাতি হওয়াস্বত্তেও ব্রিটিশের ভাগ করা সীমান্ত, আলাদা আলাদা হারাম জাতিয়তাবাদী পতাকা, হারাম জাতিয়তাবাদী দালাল সরকার এইসবের কারনে ৫৭ টুকরায় বিভক্ত হয়ে আছে, এমনকি রোযা ঈদ পর্যন্তও এগুলি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে!! বৃটিশরা দাগ টেনেছে মাটিতে, আর কিছু মুসলিম সেই দাগ আকাশেও টেনে বলছে, আমার দাগের ভিতরে চাঁদ আসলে এটা আমার চাঁদ, তোমার দাগের ভিতরে আসলে তোমার চাঁদ! কি ভয়ংকর জাতিয়তাবাদ!!
রাসূল (সঃ) বলেন, “সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয় যে জাতিয়তাবাদের দিকে আহবান করে, জাতিয়তাবাদের জন্য যুদ্ধ করে বা জাতিয়তাবাদের জন্য মারা যায়” [(আবু দাউদ)]
রাসূল (সঃ) আরও বলেন, “যে আসাবিয়্যার (অর্থাৎ জাতীয়তাবাদের) জাহেলী আহবানের দিকে মানুষকে ডাকে সে যেন তার পিতার লজ্জাস্হান কামড়ে ধরে পড়ে আছে (তাকে ছাড়তে চাইছে না) । (এরপর রাসূল সাঃ বলেন) এবং একথাটি লুকিয়ে রেখোনা (অর্থাৎ বলার ক্ষেত্রে কোনো লজ্জা বা অস্বস্তি বোধ করোনা)”। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ২১২৩৩]
সুতরাং কোনো জাতি রাষ্ট্রের সীমানা অনুযায়ী মুসলিম উম্মত বিভক্ত হওয়া হারাম। শরীয়তের দৃষ্টিতে প্রত্যেক মুসলিম পরস্পর ভাই ভাই এবং তাদের ভূমিগুলো একই ভূমি হিসেবে বিবেচিত হয়।
এই প্রশ্নে দুটি দিক রয়েছে।
(১) “একই সময়ে” আর “একই দিনে” এর তুলনা করা হয়েছে।
(২) নামাজের ওয়াক্তের সাথে রমজান মাস শুরুর তুলনা করা হয়েছে
নিম্নে এ দুইটি বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
একই সময়ে আর একই দিনে কথাটির পার্থক্য
এখানে “একই সময়” আর “একই দিনে” কথাটির পার্থক্য বুঝতে হবে। “একই সময়” অর্থ একইসেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা । আর “একই দিনে” অর্থ “একই বারে” যেমন শনিবার, রবিবার, সোমবার। আমরা কখনোই বলিনি সারা পৃথিবীতে রোজা “একই সময়ে” রাখতে হবে । আমরা বলেছি সারা পৃথিবীতে রোজা “একই দিনে” রাখতে হবে।
সারা পৃথিবীতে নামাজ যেমন “একই সময়ে” (সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা) পড়া যায়না, সারা পৃথিবীতে রোজাও তেমনি “একই সময়ে” রাখা যাবে না।
কিন্তু সারা পৃথিবীতে নামাজ “একই দিনে” পড়তে হয়। যেমন জুম্মার নামাজ সারা পৃথিবীতে একই দিনে (শুক্রবারে) পড়তে হয়। ঠিক তেমনিভাবে সারা পৃথিবীতে রোজা “একই দিনে” রাখতে হবে।
সারা পৃথিবীতে একই সময়ে নামাজ পড়া যায়না
সারা পৃথিবীতে একই সময়ে রোজা রাখা যায়না বা সাহরী করা যায়না
সারা পৃথিবীতে একই সময়ে ইফতার করা যায়না
কিন্তু
সারা পৃথিবীতে
একই দিনে নামাজ পড়তে হয় যেমন জুম্মার নামাজ শুক্রবারে পড়তে হয়
সারা পৃথিবীতে একই দিনে রোজা রাখতে হয়
সারা পৃথিবীতে একই দিনে ঈদ করতে হয়
সারা পৃথিবীতে জুম্মার নামাজের ওয়াক্ত যেমন একই সময়ে হয়না, সারা পৃথিবীতে ঈদের নামাজের ওয়াক্তও একই সময়ে হয়না।
সারা পৃথিবীতে জুম্মার নামাজের ওয়াক্তের বা সময়ের পার্থক্য বজায় রেখেই জুম্মার নামাজ যেমন একই দিনে আদায় করতে হয় তেমনি সারা পৃথিবীতে ঈদের নামাজের ওয়াক্তের পার্থক্য বজায় রেখেই ঈদের নামাজ ও একই দিনে বা বারে (যেমন শুক্র শনি রবি -----বৃহঃ) আদায় করতে হবে।
নামাজের ওয়াক্তের সাথে রমজান মাস শুরুর তুলনা সঠিক নয়
নামাজের ওয়াক্ত, সাহরী এবং ইফতার সূর্যের সাথে সম্পর্কিত, চাঁদের সাথে নয়। যেমন ইফতার করতে হয় সূর্য ডোবার পর, চাঁদ ডোবার পর নয়। একইভাবে মাগরিব পড়তে হয় সূর্য ডোবার পর, চাঁদ ডোবার পর নয়। জুম্মার ওয়াক্ত যেমন সূর্য অনুযায়ী হয় ঈদের নামাজের ওয়াক্তও তেমনি সূর্য অনুযায়ী হয়। সাহরী, ইফতার ও নামাজের ওয়াক্ত চাঁদ অনুযায়ী হয়না, চাঁদের সাথে এগুলির আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই। সুতরাং সাহরী, ইফতার ও নামাজের ওয়াক্ত হয় সূর্য অনুযায়ী।
কিন্তু প্রতি আরবী মাসের প্রথম তারিখ নির্ধারিত হয় চাঁদ অনুযায়ী। রমজান মাসের প্রথম তারিখ নির্ধারণ সূর্য উঠার দ্বারা হয় না বরং রমজানের চাঁদ দেখার দ্বারা হয়। তেমনি শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখ বা ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণ ও সূর্য উঠার দ্বারা হয়না বরং ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখার দ্বারা হয়। রমজান মাস কবে থেকে শুরু হবে তার সাথে সূর্যের কোনো সম্পর্ক নেই। সুতরাং রমজান মাস শুরু হওয়া চাঁদের সাথে সম্পর্কিত, ঈদ হওয়াটাও চাঁদের সাথে সম্পর্কিত ।
কাজেই সূর্যের সাথে সম্পর্কিত নামাজের ওয়াক্ত আর চাঁদের সাথে সম্পর্কিত রমজান মাস শুরু হওয়া এই দুইটির তুলনা যুক্তিযুক্ত নয়। সূর্য ও চাঁদের হিসাব আলাদাএতটুকু ব্যবধান নামাজের বেলায় মানা হলে রোজা এবং ঈদ নিয়ে বিতর্ক কেন?#
একটি প্রশ্ন অনেকেই করে থাকে, "সারা পৃথিবীতে একই সময়ে নামাজের ওয়াক্ত হয়না তাহলে একই দিনে রমজান মাস শুরু হবে কিভাবে?"
এই প্রশ্নে দুটি দিক রয়েছে।
(১) “একই সময়ে” আর “একই দিনে” এর তুলনা করা হয়েছে।
(২) নামাজের ওয়াক্তের সাথে রমজান মাস শুরুর তুলনা করা হয়েছে
নিম্নে এ দুইটি বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
একই সময়ে আর একই দিনে কথাটির পার্থক্য
এখানে “একই সময়” আর “একই দিনে” কথাটির পার্থক্য বুঝতে হবে। “একই সময়” অর্থ একইসেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা । আর “একই দিনে” অর্থ “একই বারে” যেমন শনিবার, রবিবার, সোমবার। আমরা কখনোই বলিনি সারা পৃথিবীতে রোজা “একই সময়ে” রাখতে হবে । আমরা বলেছি সারা পৃথিবীতে রোজা “একই দিনে” রাখতে হবে।
সারা পৃথিবীতে নামাজ যেমন “একই সময়ে” (সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা) পড়া যায়না, সারা পৃথিবীতে রোজাও তেমনি “একই সময়ে” রাখা যাবে না।
কিন্তু সারা পৃথিবীতে নামাজ “একই দিনে” পড়তে হয়। যেমন জুম্মার নামাজ সারা পৃথিবীতে একই দিনে (শুক্রবারে) পড়তে হয়। ঠিক তেমনিভাবে সারা পৃথিবীতে রোজা “একই দিনে” রাখতে হবে।
সারা পৃথিবীতে একই সময়ে নামাজ পড়া যায়না
সারা পৃথিবীতে একই সময়ে রোজা রাখা যায়না বা সাহরী করা যায়না
সারা পৃথিবীতে একই সময়ে ইফতার করা যায়না
কিন্তু
সারা পৃথিবীতে
একই দিনে নামাজ পড়তে হয় যেমন জুম্মার নামাজ শুক্রবারে পড়তে হয়
সারা পৃথিবীতে একই দিনে রোজা রাখতে হয়
সারা পৃথিবীতে একই দিনে ঈদ করতে হয়
সারা পৃথিবীতে জুম্মার নামাজের ওয়াক্ত যেমন একই সময়ে হয়না, সারা পৃথিবীতে ঈদের নামাজের ওয়াক্তও একই সময়ে হয়না।
সারা পৃথিবীতে জুম্মার নামাজের ওয়াক্তের বা সময়ের পার্থক্য বজায় রেখেই জুম্মার নামাজ যেমন একই দিনে আদায় করতে হয় তেমনি সারা পৃথিবীতে ঈদের নামাজের ওয়াক্তের পার্থক্য বজায় রেখেই ঈদের নামাজ ও একই দিনে বা বারে (যেমন শুক্র শনি রবি -----বৃহঃ) আদায় করতে হবে।
নামাজের ওয়াক্তের সাথে রমজান মাস শুরুর তুলনা সঠিক নয়
নামাজের ওয়াক্ত, সাহরী এবং ইফতার সূর্যের সাথে সম্পর্কিত, চাঁদের সাথে নয়। যেমন ইফতার করতে হয় সূর্য ডোবার পর, চাঁদ ডোবার পর নয়। একইভাবে মাগরিব পড়তে হয় সূর্য ডোবার পর, চাঁদ ডোবার পর নয়। জুম্মার ওয়াক্ত যেমন সূর্য অনুযায়ী হয় ঈদের নামাজের ওয়াক্তও তেমনি সূর্য অনুযায়ী হয়। সাহরী, ইফতার ও নামাজের ওয়াক্ত চাঁদ অনুযায়ী হয়না, চাঁদের সাথে এগুলির আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই। সুতরাং সাহরী, ইফতার ও নামাজের ওয়াক্ত হয় সূর্য অনুযায়ী।
কিন্তু প্রতি আরবী মাসের প্রথম তারিখ নির্ধারিত হয় চাঁদ অনুযায়ী। রমজান মাসের প্রথম তারিখ নির্ধারণ সূর্য উঠার দ্বারা হয় না বরং রমজানের চাঁদ দেখার দ্বারা হয়। তেমনি শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখ বা ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণ ও সূর্য উঠার দ্বারা হয়না বরং ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখার দ্বারা হয়। রমজান মাস কবে থেকে শুরু হবে তার সাথে সূর্যের কোনো সম্পর্ক নেই। সুতরাং রমজান মাস শুরু হওয়া চাঁদের সাথে সম্পর্কিত, ঈদ হওয়াটাও চাঁদের সাথে সম্পর্কিত ।
কাজেই সূর্যের সাথে সম্পর্কিত নামাজের ওয়াক্ত আর চাঁদের সাথে সম্পর্কিত রমজান মাস শুরু হওয়া এই দুইটির তুলনা যুক্তিযুক্ত নয়। সূর্য ও চাঁদের হিসাব আলাদা
১ম অংশ: কিছু প্রশ্ন http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/48800
২য় অংশ: পবিত্র কুরআনের বক্তব্য http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/48868
৩য় অংশ: হাদীস শরীফের বক্তব্য http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/48879
৪র্থ অংশ: ফিকাহ এর সিদ্ধান্ত http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/48891
৫ম অংশ: ও, আই, সি (OIC) - এর সিদ্ধান্ত http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/48895
৬ষ্ঠ অংশ: বৃটেন ও কানাডার সমস্যা এবং মুফতি বৃন্দের ফাতওয়া http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/48901
৭ম অংশ: ভৌগোলিক জ্ঞান সংশ্লিষ্ট কিছু প্রশ্ন এবং তার জবাব http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/48916
৮ম অংশ: সারা পৃথিবীতে একই সময়ে নামাজের ওয়াক্ত হয়না তাহলে একই দিনে রমজান মাস শুরু হবে কিভাবে? http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/48934
৯ম অংশ: যারা নিজ নিজ দেশের চাঁদ অনুযায়ী রোজা ও ঈদ পালন করে থাকেন তাদের দলীল ও তাঁর জবাব http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/49494
১০মঅংশ: আহবান http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/9430/Hamza/49520
সম্পূর্ণ লেখা http://moonsighting.ucoz.com/Global_Moon_Sighting_by_Amir_Hamza_.pdf
আপনার মোবাইল নম্বর কি পেতে পারি । দয়া করে আমার ফেসবুকের ইনবক্সে মোবাইল নম্বরটা দিন ।
যার যেভাবে মন চায় ঐভাবে করুক, এ নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যথা নেই। ধন্যবাদ
রাষ্ট্র ভিত্তিক হিজরী ক্যালেন্ডার তৈরী এবং সে অনুযায়ী দিন নির্ধারন করাতে অনুশাসনগত কিছু সুবিধা আছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় সীমানায় হিজরী ক্যালেন্ডার তৈরী করে ইবাদতের দিন ঠিক করতে বিদ্যমান সমস্যা অনেক। ধর্মীয় মৌলিক সিদ্ধান্ত রাষ্ট্র কাঠামোতে আবদ্ধ থাকায় এমনটা হয়ে থাকে। এ রকম কয়েকটি সমস্যা নিম্নে সন্নিবেশিত হলঃ
১। রমজান: আবদুল্লাহ ইবনে ওমর(রাঃ) থেকে বর্ণিত - "চাঁদ দেখে রোজা রেখো এবং চাঁদ দেখে রোজা ভাংগো এবং মেঘের কারনে চাঁদ দেখা না গেলে শাবান মাসের ৩০ পূর্ণ কর" - হাদিসটি কোন দেশের ভৌগলিক সীমারেখায় বদ্ধ করার সুযোগ নেই। তারপরও রাষ্ট্র কাঠামোতে একে আবদ্ধ করা হচ্ছে। ফলে দুনিয়ার সব মুসলমান একই দিন জুমা পড়লেও একই দিনে রোজা রাখে না। কেউ কেউ বিভিন্ন স্থানের সময়ের ব্যবধানকে এর কারন হিসেবে দেখেন। এক্ষেত্রে উল্লেক্ষ্য যে, একসময় ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একই রাষ্ট্র ছিল। তখন ভারতের আকাশে চাঁদ দেখা গেলেই রোযা ও ঈদ পালন করা হতো । ৪৭ এর পর পাক-ভারত আলাদা হয়ে যায়। তখন থেকে দু’দেশের আকাশও আলাদা হয়ে গেল । ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশ’ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তখন থেকে ‘বাংলাদেশের আকাশ’ নামে একটি আকাশেরও জন্ম হয়েছে। মহান আল্লাহ কি এভাবে পৃথক পৃথক রাষ্ট্রের জন্য পৃথক আকাশ তৈরি করেছেন? পাকিস্তান আমলের কথা যাদের স্মরণে আছে তারা জানেন যে, পিন্ডি বা বেলুচে চাঁদ দেখে পূর্ব পাকিস্তানে রোজা রাখা হতো। অথচ পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে সময়ের ব্যবধান একঘন্টা। আবার একই জনপদ দুই রাষ্ট্রে ভাগ হয়ে গেলে (যেমন, দিনাজপুর বাংলাদেশ ও ভারতে বিভক্ত হয়ে আছে) সময়ের ব্যবধান না থাকা সত্বেও রোজা শুরু হয় ভিন্ন দিন। এ বিষয়টিও বিবেচনার দাবী রাখে। তাই সময়ের ব্যবধানের জন্য তারিখ ব্যবধান সঠিক কিনা তা নিজের অন্তরকে জিজ্ঞেস করে উত্তর পেতে হবে। রাষ্ট্রীয় সীমানায় হিজরী ক্যালেন্ডার তৈরী করে কেবল ক্ষমতার কুক্ষিগত অবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা যেতে পারে, সার্বজনীন ইসলাম কায়েম হওয়া সম্ভব নয়।
২। লাইলাতুল কদর: মহিমান্বিত এ রাতে কুরআন নাজিল হয়। তাই লাইলাতুল কদর পেতে হলে কুরআন নাজিলের রাতকে খোঁজ করা দরকার। এর সাথে সম্পর্কিত রয়েছে নাজিলের স্থান। তাছাড়া সেই মহিমান্বিত রজনীতে জিব্রাইল (আঃ) অবতীর্ণ হয়ে রহমত মেলে ধরবেন বলে জানা যায়। জিব্রাইল (আঃ) তো অবতীর্ণ হবেন কেবল এক রাতে। সেই রাতটি সমগ্র দুনিয়ার জন্যই প্রযোজ্য। এক এক দেশের আলাদা আলাদা রাতে নয়। হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, রমযানের শেষ দশ তারিখের বেজোড় রাতসমুহে লাইলাতুল কদরকে তালাশ কর [সূত্রঃ সহিহ আল বুখারী ২/২৮৪ হাদিস নং ১৮৭৪]। হাদিস মোতাবেক রমযানের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতে সেই লাইলাতুল কদর তালাশ করতে কোন হিসেব গন্য হবে? কেননা রাষ্ট্রীয় সীমানায় হিজরী ক্যালেন্ডার তৈরী করে প্রায় বছরই যখন মক্কায় জোড় রাত তখন বাংলাদেশে বেজোড় রাত তালাশ করা হয়।
৩। ঈদ: ঈদের দিনে রোজা রাখা হারাম। হযরত আবু উবাইদা (রাঃ) বলেন, আমি হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) এর সাথে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। তিনি বলছেন, এ দুই দিনের রোজা রাখা থেকে নবী (সাঃ) নিষেধ করেছেন। প্রথম দিন হলো, যখন তোমরা রোযা শেষ কর, আর দ্বিতীয় দিন হলো, যখন তোমরা কোরবানীর গোস্ত খাবে [সহিহ আল বুখারী ২/২৭২ হাদিস নং ১৮৫১]। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্নীত, রাসুল (সাঃ)রোজার ঈদের দিন এবং কুরবানীর ঈদের দিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন [সূত্র: সহীহ সহীহ বুখারী ৩য় খন্ড/১৮৬৭, ১৮৬৮ ও সহীহ মুসলিম ৩য় খন্ড/২৫৩৭-২৫৪২]। রাষ্ট্রীয় সীমানার বিবেচনায় হিজরী ক্যালেন্ডার তৈরী করে যখন মক্কায় ঈদ তখন বাংলাদেশে রোজা। শুধু পশ্চিমের মক্কায় কেন আমাদের পূর্ব দিকের দেশ জাপান, ইন্দোনেসিয়া ইত্যাদি দেশের মানুষ ঐদিন ঈদ পালন করছে। তখন আমরা রোজা রেখে হারাম কাজ করছি কিনা তা নিখুতভাবে নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। আল্লাহ রহমানুর রাহিম বিধায় আমাদেরকে মাফ করে দিতে পরেন। তারপরও ভয়তো ঠিকই থেকে যায়।
৪। হজ্ব: হিজরী ৯ই জিলহজ্ব সারা দুনিয়া থেকে মুসলমানরা এসে আরফাত ময়দানে হাজির হন। এদিনে রোজা রাখার গুরুত্ব ও সওয়াব অনেক। কিন্তু বাংলাদেশের ৯ই জিলহজ্ব আরফাত ময়দানে কেউ অবস্থান করে না। কেননা মক্কার হিসেবে সেদিন ১০ই জিলহজ্ব। ঐ তারিখে আমরা রোজা রেখে আসলে কাদের সাথে একাত্মতা করছি? তাছাড়া মীনার দিবস অর্থ্যাৎ ০৮ জিলহজ্ব ফজর থেকে ১৩ জিলহজ্ব আসর পর্যন্ত সমগ্র দুনিয়ার মুমিনগন তাকবীরে তাসরীক (আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু-আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, ওয়ালিল্লাহিল হামদ) পাঠ করে থাকেন। রাষ্ট্রীয় বিবেচনায় হিজরী ক্যালেন্ডার তৈরী করার ফলে তা হতেও বঞ্চিত হন অনেক মুমিন।
৫। আশুরা: ঐতিহাসিকভাবে এ দিবসে আল্লাহর কুদরতের হাজার নিদর্শন রয়েছে। যেমন, মুসা (আঃ) লোহিত সাগর পাড় হন, নুহ (আঃ) এর নৌকা মহাপ্লাবন শেষে পাহাড়ে মাটির নাগাল পায়, ইউনুস (আঃ) মাছের পেট থেকে বের হন, ইউসুফ (আঃ) কুয়ার ভেতর থেকে উদ্ধার হন। হযরত আবু কাতাদাহ থেকে বর্নীত, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, আরাফার রোযা আগের পরের দু’বৎসরের গুনাহ মাফ করে দেয় এবং আশুরার রোযা বিগত এক বৎসরের গুনাহ সমুহ ক্ষমা করে দেয় [আহমাদ, আবুদাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, মুসলিম শরীফ]। সেজন্য আশুরার রোজা রাখার ব্যাপারে যথেষ্ট তগিদ রয়েছে। কিস্তু রাষ্ট্রীয় হিজরী ক্যালেন্ডারের কারনে তা হারিয়ে ফেলি। আশুরার রোজা রাখি ভিন্ন দিনে।
৬। কিয়ামতঃ হাদীস থেকে যতদুর জানা যায় কিয়ামত হতে পারে মহররম মাসের ১০ তারিখ। রাষ্ট্রীয় সীমানার হিজরী ক্যালেন্ডার অনুযায়ী এ তারিখটিও বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে আসবে। তাহলে কী এক এক দেশে কিয়ামত এক এক দিন হবে?
৭। মাসের দিন সংখ্যাঃ কোন একটি দেশে ২৯ বা ৩০ দিনে মাস শেষ, আবার অন্য দেশে আর ১ দিন বা ২ দিন পরে মাস শেষ হয়। অর্থাৎ উক্ত দুই দেশ একত্র করলে মাসের দিন হয় ৩১ বা ৩২ যা শরীয়ায় কোন দলিলে পাওয়া যায় না। সর্বজন স্বীকৃত যে, আরবী মাস ২৯ বা ৩০ দিনে হবে। চান্দ্র মাস ৩০ দিনের বেশী হওয়া বাস্তব সম্মত নয়।
চাঁদ অনুযায়ী আরবী মাস শুরু হয়। চাঁদ অনুযায়ী শাবান মাস, রমজান মাস, শাওয়াল মাস এইসব মাসের প্রথম তারিখ নির্ধারিত হয়। কিন্তু সাহরীর সময়, ইফতারির সময় চাঁদ অনুযায়ী নির্ধারিত হয়না। আবার, সূর্য অনুযায়ী কখনোই আরবী মাস শুরু হয়না। রমজানের প্রথম তারিখ যেমন সূর্য অনুযায়ী হয়না, ঈদও সূর্য অনুযায়ী হয়না।
একটি প্রশ্ন অনেকেই করে থাকে, "সারা পৃথিবীতে একই সময়ে নামাজের ওয়াক্ত হয়না তাহলে একই দিনে রমজান মাস শুরু হবে কিভাবে?"
এই প্রশ্নে দুটি দিক রয়েছে।
(১) “একই সময়ে” আর “একই দিনে” এর তুলনা করা হয়েছে।
(২) নামাজের ওয়াক্তের সাথে রমজান মাস শুরুর তুলনা করা হয়েছে
নিম্নে এ দুইটি বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
একই সময়ে আর একই দিনে কথাটির পার্থক্য
এখানে “একই সময়” আর “একই দিনে” কথাটির পার্থক্য বুঝতে হবে। “একই সময়” অর্থ একইসেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা । আর “একই দিনে” অর্থ “একই বারে” যেমন শনিবার, রবিবার, সোমবার। আমরা কখনোই বলিনি সারা পৃথিবীতে রোজা “একই সময়ে” রাখতে হবে । আমরা বলেছি সারা পৃথিবীতে রোজা “একই দিনে” রাখতে হবে।
সারা পৃথিবীতে নামাজ যেমন “একই সময়ে” (সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা) পড়া যায়না, সারা পৃথিবীতে রোজাও তেমনি “একই সময়ে” রাখা যাবে না।
কিন্তু সারা পৃথিবীতে নামাজ “একই দিনে” পড়তে হয়। যেমন জুম্মার নামাজ সারা পৃথিবীতে একই দিনে (শুক্রবারে) পড়তে হয়। ঠিক তেমনিভাবে সারা পৃথিবীতে রোজা “একই দিনে” রাখতে হবে।
সারা পৃথিবীতে একই সময়ে নামাজ পড়া যায়না
সারা পৃথিবীতে একই সময়ে রোজা রাখা যায়না বা সাহরী করা যায়না
সারা পৃথিবীতে একই সময়ে ইফতার করা যায়না
কিন্তু
সারা পৃথিবীতে
একই দিনে নামাজ পড়তে হয় যেমন জুম্মার নামাজ শুক্রবারে পড়তে হয়
সারা পৃথিবীতে একই দিনে রোজা রাখতে হয়
সারা পৃথিবীতে একই দিনে ঈদ করতে হয়
সারা পৃথিবীতে জুম্মার নামাজের ওয়াক্ত যেমন একই সময়ে হয়না, সারা পৃথিবীতে ঈদের নামাজের ওয়াক্তও একই সময়ে হয়না।
সারা পৃথিবীতে জুম্মার নামাজের ওয়াক্তের বা সময়ের পার্থক্য বজায় রেখেই জুম্মার নামাজ যেমন একই দিনে আদায় করতে হয় তেমনি সারা পৃথিবীতে ঈদের নামাজের ওয়াক্তের পার্থক্য বজায় রেখেই ঈদের নামাজ ও একই দিনে বা বারে (যেমন শুক্র শনি রবি -----বৃহঃ) আদায় করতে হবে।
নামাজের ওয়াক্তের সাথে রমজান মাস শুরুর তুলনা সঠিক নয়
নামাজের ওয়াক্ত, সাহরী এবং ইফতার সূর্যের সাথে সম্পর্কিত, চাঁদের সাথে নয়। যেমন ইফতার করতে হয় সূর্য ডোবার পর, চাঁদ ডোবার পর নয়। একইভাবে মাগরিব পড়তে হয় সূর্য ডোবার পর, চাঁদ ডোবার পর নয়। জুম্মার ওয়াক্ত যেমন সূর্য অনুযায়ী হয় ঈদের নামাজের ওয়াক্তও তেমনি সূর্য অনুযায়ী হয়। সাহরী, ইফতার ও নামাজের ওয়াক্ত চাঁদ অনুযায়ী হয়না, চাঁদের সাথে এগুলির আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই। সুতরাং সাহরী, ইফতার ও নামাজের ওয়াক্ত হয় সূর্য অনুযায়ী।
কিন্তু প্রতি আরবী মাসের প্রথম তারিখ নির্ধারিত হয় চাঁদ অনুযায়ী। রমজান মাসের প্রথম তারিখ নির্ধারণ সূর্য উঠার দ্বারা হয় না বরং রমজানের চাঁদ দেখার দ্বারা হয়। তেমনি শাওয়াল মাসের প্রথম তারিখ বা ঈদুল ফিতরের তারিখ নির্ধারণ ও সূর্য উঠার দ্বারা হয়না বরং ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখার দ্বারা হয়। রমজান মাস কবে থেকে শুরু হবে তার সাথে সূর্যের কোনো সম্পর্ক নেই। সুতরাং রমজান মাস শুরু হওয়া চাঁদের সাথে সম্পর্কিত, ঈদ হওয়াটাও চাঁদের সাথে সম্পর্কিত ।
কাজেই সূর্যের সাথে সম্পর্কিত নামাজের ওয়াক্ত আর চাঁদের সাথে সম্পর্কিত রমজান মাস শুরু হওয়া এই দুইটির তুলনা যুক্তিযুক্ত নয়। সূর্য ও চাঁদের হিসাব আলাদা
মন্তব্য করতে লগইন করুন