বিয়ের আগের সময় গুলো..... এবং লজ্জা.... ✔✔✔আব্দুর রহিম (পর্ব ৭)
লিখেছেন লিখেছেন নুর আয়শা আব্দুর রহিম ০৫ এপ্রিল, ২০১৫, ০৭:৪৯:৪৫ সন্ধ্যা
মেয়েটির নাকি আগে একবার বিয়ে হয়েছিল, বিয়ের দুই মাস পর মেয়েটি বিধবা হয়!!!
শুনে আমিতো "থ" হয়ে গেলাম!!!!
এত বড় ঘটনা আমার কাজ থেকে লুকানো হলোঃ?? মনে কষ্ট হচ্ছে.....!!
কষ্ট চেপে রাখার জন্য যদি কোন মিশিন পেতাম হয়তো মিশিনটি শতভাগ ব্যবহার করতাম! খাবার গুলো পেট থেকে বেরিয়ে আসতে চাইতেছে.....!
মা আমাকে বোঝাতে চেষ্টা করতেছে, যেন আমি কোন চিন্তা না করি চিন্তা করলে নিজের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি...।
খাবারের প্লেট রেখে রুমে চলে এলাম, আমি নিজেকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছিনা বারবার নিজেকে তুচ্ছ মনে হচ্ছে! নিজেকে তুচ্ছ মনে করে নিজের ভিতরে শান্তি খূঁজে পাওয়া দুস্কর, নিজের কাছেই নিজের অসহায়ত্ব!! এই হচ্ছে অভাবহীন জীবনের অভাবের কষ্ট!
কি করব ভাবছি মাথায় অপমানবোধ ছাড়া কিছুই আসছেনা।
কষ্ট, যাতনা, বেদনা, যন্ত্রণায় কোন রকম দিনটি পার করলাম, পরের দিন সকালে মার্কেটে গেলাম ঘরের কিছু আসবাবপত্র কেনার জন্য, সব কিছু কিনার পর বাড়ির পথে রওনা দেব ভাবছি.... হঠাৎ মনে পড়লো মায়ের জন্য পান-সুপারি কেনা হয়নি...!
আসবাবপত্র ও কাচাঁ বাজার নিয়ে আমার পক্ষে সম্ভব নয় পান-সুপারির দোকানে যাওয়া তাই রিক্সা নিলাম.... রিক্সা ড্রাইভারকে বললাম আসবাবপত্র গুলো একটু যত্ন সহকারে তুলেন না হয় ভেঙ্গে যাব.....।
আসবাবপত্র নিয়ে পান-সুপারির দোকানে এলাম এসে পান-সুপারি কিনলাম, কিনে ফেরার জন্য রিক্সায় করে বাসস্ট্যান্ডে আসলাম। বাসের জন্য অপেক্ষা করতেছি, নির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় ৮ মিনিট বেশি হলো কিন্তু বাস ছাড়ার খবর নেই!! বাস সময় মত না ছাড়ার কারন হিসেবে যাত্রী কম হওয়াকে অযুহাত হিসাবে দাড় করাচ্ছে কর্তৃপক্ষ!!
বাস কতক্ষণ পর ছাড়বে? বাস হেলপার বলল আর ১২ মিনিট বাদে....! ১২ মিনিট সময়.... ভাবলাম এই সুযোগে একটি রং চা পান করে নিলে ভালো হয়।
সামান্য দূরে চায়ের দোকান গিয়ে এলাচি ও দারুচিনি দিয়ে একটি রং চা অর্ডার দিলাম, চা আনলো সাথে বিস্কুট সহ... বিস্কুট আদা খেলাম চা..তে ভিজিয়ে.... বাকি আদা বিস্কুট চা...তে ভিজাতে যাব..... এমন সময় চোখ পড়লো একটু দূরের চেয়ারে বসা সেই বিধবার পাড়ার একটি লোক!
তার সাথে সালাম বিনিময় করলাম, তার জন্য চা অর্ডার দিলাম দুজনে চা পান করতেছি, সে হঠাৎ অনাকাঙ্খিত প্রশ্ন করে বসল!! সে বলল শুনলাম অমুক মেয়েটির সাথে আপনার বিয়ের কথাবার্ত চলতেছে.....! আমি প্রতিউত্তর করার আগেই সে আরো বলল মেয়টি কিন্তু খুবই ভালো নম্র ভদ্র ধার্মিক ইত্যাদি ইত্যাদি..... ওনার মুখের প্রসংশা গুলো আমার কাছে বিষের মত লাগতেছে।
তবুও মুখ খুলে কিছুই বলিনি!! চা পর্ব শেষ করে বাস ধরব..... বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দেখি বাস ছেড়ে দিয়েছে!!! রাগে পায়ের তালু থেকে মাথা পর্যন্ত যিনযিন করতেছে....!!!
কি আর করা পরবর্তী বাসের জন্য অপেক্ষা.... বিরক্তিকর পরিস্তিতি কারে কয় হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি!
চায়ের দোকানে ঐ লোকের করা প্রসংশা গুলো ভাবতেছিলাম!
বামপাশে থাকতেই দেখি ঐ লোকটি....!
সে বলল বাস 'মিস' করেছন? হ্যাঁ সুচক জবাব দিলাম, সে বলল আমাদের দিকে নাকি সেও যাবে...!
আমাদের পাশের গ্রামে নাকি তাদের লিচু বাগান আছে এখন লিচু পাকার সময় লিচু পাড়বে বিক্রি করার জন্য। আমি বললাম ঠিক আছে তা হলে দুজন এক সাথে যাওয়া যাবে, দুজনই বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম, এবার দেখি বাস নিদিষ্ট সময়ের আগে ছেড়ে দিয়েছে সিটগুলো ভরে যাওয়াতে..... (নিয়ম গুলো বইয়ের পাতায় লেখা বাস্তবতা ভিন্ন)
অপেক্ষার ক্লান্তি দূর করে বসের সিটে বসলাম দুজন পাশাপশি!! কৌতুহল বসত বললাম আপনি মেয়েটার ব্যপারে আর কি জানেন?
লোকটি বলল না তেমন বেশি কিছু জানিনা তবে যতদূর জানি মেয়েটি খুবই ভালো মেয়েটি আমাদের সামনেইতো বড় হলো তকতুব থেকে মাদ্রাসা.......!
আমি বললাম আচ্ছা আপনিতো বেশি কিছু জানেননা.... আপনি কেন মেয়েটির ব্যপারে এত প্রসংশা করছেন? সে বলল প্রশংসা করাতে আপনার সন্দেহ হয়?
না মানে...
সন্দেহ হলে আপনি মেয়েটির গ্রামে গিয়ে খোঁজ খবর নেন।
প্রায় ৪০ মিনিটের বাস জার্নি শেষে বাড়ি ফিরলাম।
মাকে সদায় বুঝিয়ে দিয়ে রুমে গেলাম, প্রেশ হয়ে আসলাম মায়ের কাছে! মা বলল আজকে পান গুলো বড় বড় খু..উ...ব ভালো হয়েছে!!!
মা... জিঃ বল বাবা মেয়েটির গ্রামের একজনের সাথে দেখা হয়েছিল... ঘটনা খুলে বললাম।
মাকে বললাম, মা আমি একবার ওদের গ্রামে গিয়ে একটু জেনে আসব? মা বলল তোর আব্বু জানলে রাগ করবে....! মা তুমি বাবাকে না বললে বাবা কখনো জানবেনা আমি ওখানে গিয়েছি...!
আচ্ছা যা তবে খুব সতর্কতার সাথে খোঁজ খবর নিস, ঠিক আছে মা।
বিকেল ৪টার দিকে ওদের গ্রামে গেলাম! আগে একবার যাওয়াতে অনেকে আমাকে চেনে, একটু কৌশলে কথা জিজ্ঞেস করলাম অপরিচিত এক জনের কাছে.... শুনলাম অমুক পরিবারে নাকি বিয়ের উপযুক্ত মেয়ে আছে.... সে বলল হে আছে। তবে মেয়েটির বিয়ে ঠিক হয়েছে বলে শুনেছি....! কোথায় কার সাথে? সে বলল জানিনা তবে শুনেছি মেয়েটি খুব ভালো তবে দেখিনি কখনো। যদিও আমি একই গ্রামের!!
ভালো কিভাবে জানলেন? বিয়ের খবর শুনে অনেকেই বলছে গ্রামে মেয়ে ছিলো একটা সেটার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে....! সবাই মেয়েটির জন্য দোয়া করতেছে, মেয়েটির যেমন গ্রামে সুনাম ঠিক বিয়ের পর স্বামীর ঘরেও সুনাম বয়ে আনবে গ্রামবাসিরা আশাবাদী!!!
আমি বললাম মেয়েটির আগের স্বামী কি রোগে মৃত্যু বরন করেছিলেন? সে বলল কি বলেন এসব মেয়েটির আগে কোন বিয়ে হয়নি..... আমি বললাম আপনার বোধহয় ভুল হচ্ছে.... না মেয়েটির আগে কোন বিয়ে হয়নি.... হয়নি......
এ কি শুনলাম একই বিষয়ে {{{{শতভাগ হ্যাঁ শতভাগ না}}}}
বাকি অংশ আগামী পর্বে....
বিঃদ্রঃ প্রিয় পাঠক সত্য সব সময় সবার উপরে! আমার অভিযাত্রা সত্য উম্মোচন পথে গল্পের সাথে.....
৬ম পর্ব পড়তে এখনে ক্লিক করুন..... http://www.todaybd.net/blog/blogdetail/detail/9615/nor15/63558
বিষয়: বিবিধ
২২৬৭ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি অনেক পরিশ্রম করে এই পোস্ট সাজিয়েছেন তাই আবার ধন্যাবদ
শুধু পরামর্শের হিসাব কাজে লাগালে চলবে না বিয়ের দাওয়াত কিন্তু চাই চা...ই।
আপনি ব্লগে এসেছেন পড়েছেন এখানেই পরিশ্রম সার্থক! আপনােও ধন্যবাদ।
এক যে আছে মজার দেশ সব রকমের ভালো, রাত্রিতে বেজায় রোদ দিনে চাঁদের আলো!!!!!
আপনি তা হলে হাতে হেটে আমাদের ব্লগে এসেছেন.........?
পোস্ট নিয়ে কবে হাজির হচ্ছেন?
আপনার ভালোলাগা আমাদেরকে অনুপ্রেরণা যোগায়! মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
নূর আয়শা!!!!!
আমার আজকের ভাবীজান তাহলে সেই দিনের রটনার স্বীকার।
খাঁটি সোনা কি সবাই চিনতে পারে! শুধু রহিম ভাইয়ের মত বিচক্ষণ ব্যক্তিরাই চিনে।
কল্পনা বিলাসি হলে কিন্তু খবর আছে......
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
চমৎকার লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।
আমার ব্যপারেতো একজন বলেই এসেছিল, আমি নাকি সৌদি আরবে ছাগল চরাতাম।
ছাগল ছড়ানোর গল্প বানিয় বলেছিলো??? শেষ পর্যন্ত কি করলেন?
মন্তব্য করতে লগইন করুন