তানযীম ও তারবিয়াত
লিখেছেন লিখেছেন দিয়া বৃষ্টি ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১১:১৪:৩৩ রাত
------০০ তানযীম ও তারবিয়াত ০০----
জামায়াতে ইসলামীর দ্বিতীয়
দফা কর্মসূচি হলো তানযীম (সংগঠন) ও
তারবিয়াত (প্রশিক্ষণ বা ট্রেনিং) ।
এ বিষয়ে জামায়াতের
কর্মনীতি সুস্পষ্ট ।
সংগঠন করার কর্মনীতিঃ
দ্বীনের দাওয়াত যারা কবুল করে,
তাদেরকে সংগঠনের শামিল
করা দাওয়াতের স্বাভাবিক দাবী ।
যারা জনগণকে সংগঠিত করার গুরুত্ব
বুঝে না তারা যত যোগ্যতার সাথেই
ওয়ায করুক
বিনা সংগঠনে দ্বীনকে বিজয়ী করার
কল্পনাও করা যায় না । প্রকৃত কথা এই
যে, যারা সংগঠন করেন না,
তারা দ্বীনের যত খেদমতই করুক,
তারা দ্বীনকে কায়েমের কোন
পরিকল্পনা রাখেন না ।
সাধারণত সমাজের
প্রভাবশালী লোকদেরকে পদের
লোভ দেখিয়ে হলেও সংগঠনভুক্ত
করার
প্রথা রাজনীতিতে ব্যাপকভাবে চালু
থাকলেও ইকামাতে দ্বীনের
উদ্দেশ্যে কোন সংগঠন এ
প্রথা মেনে নিতে পারে না ।
যারা ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে দল গঠন
করে তাদের কথা আলাদা ।
যারা দ্বীন কায়েমের মহান
উদ্দেশ্যে মানুষকে সংগঠিত
করতে চায়, তারা দ্বীনের
ভিত্তিতেই সংগঠনে লোক
ভর্তি করে । ডিগ্রী, রাজনৈতিক
অভিজ্ঞতা, সামাজিক মর্যাদা,
আর্থিক সঙ্গতি ইত্যাদির
ভিত্তিতে দ্বীনী সংগঠনে লোক
ভর্তি করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক । এ
জাতীয় লোক সংগঠনে ঢুকান
হলে দ্বীনের বিজয়ের পথে বাধাই
সৃষ্টি করবে । অবশ্য এ মানের লোক
যদি দ্বীনের মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ
হন, তাহলে সোনায় সোহাগা । এ
কারণে নবীগণ সমাজের
নেতৃস্থানীয় লোকদের নিকটই
পয়লা দাওয়াত পৌঁছানোর
চেষ্টা করেছেন । কিন্তু
দুএকটি ব্যতিক্রম ছাড়া কোন নবীর
আমলেই এ জাতীয় লোকেরা দ্বীন
কবুল করেনি ।
তারা কায়েমী স্বার্থের ধারক
বলেই এ পথে এগিয়ে আসেনি । তবুও
তাদের নিকট দাওয়াত দেয়ার গুরুত্ব
রয়েছে । তারা দাওয়াত কবুল
না করলেও তাদের নিকট দাওয়াত
দেয়ার প্রতিক্রিয়ায়
তারা যে বিরোধিতা করে এর
ফলে দাওয়াত জনগণের নিকট সহজেই
পৌঁছে ।
সমাজে যারা মৌলিক মানবীয়
গুণের অধিকারী এবং যারা সৎ
থাকার বা হবার আগ্রহ রাখে,
তাদেরকে ইসলামী সংগঠনভুক্ত
করা দাওয়াতে দ্বীনের প্রধান লক্ষ্য
হওয়াই স্বাভাবিক । এ জাতীয়
লোকদের মযবুত সংগঠন
ছাড়া দ্বীনকে বিজয়ী করার কোন
বিকল্প নেই ।
এ কারণেই রাসূল (সা.)
দোয়া করছিলেন যে, উমর বিন
খাত্তাব ও উমর বিন হেশাম (আবু
জেহেল) এ দু’জনের অন্তত একজন যেন
মুসলিম জামায়াতে শামিল হন
যাতে ইসলামী সংগঠন
শক্তিশালী হয় ।
সমাজের নেক লোকদেরকে যোগ্য
বানানোর জন্য এবং যোগ্য
লোকগুলোকে নেক বানানোর
উদ্দেশ্যে তাদেরকে ব্যাপকভাবে সংগঠনভুক্ত
করার উপর বিশেষ গুরুত্ব
দেয়া ইসলামী আন্দোলনের
একটি বিশেষ কর্মনীতি । তাই
জামায়াত গুরুত্ব সহকারে এ
কর্মনীতি পালন করে ।
তারবিয়াতের কর্মনীতিঃ
যারা ইকামাতে দ্বীনের দাওয়াত
কবুল করে ইসলামী সংগঠনের শামিল
হয়, তাদের গড়ে তুলবার কাজটিই হল
তারবিয়াত । তাদের ঈমান-
আকীদা মযবুত করা, তাদের জন্য
দ্বীনের সঠিক ইলম হাসিল করার
ব্যবস্থা করা । তাদের আমল-
আখলাককে ইসলামী আদর্শে গড়ে তোলা,
আল্লাহ্র পথে জান ও মাল
দ্বারা জ্বিহাদ করার জন্য তাদের
মনে খালেস জযবা পয়দা করা,
বাতিল শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রামের
জন্য তাদেরকে প্রস্তুত করা, জেল
ফাঁসি ও মৃত্যুর ভয় তাদের অন্তর
থেকে দূর করা । মোটকথা আল্লাহ্র
আইন ও সৎলোকের শাসন কায়েমের
জন্য জান, মাল, সময়, শ্রম, আরাম, আয়েশ
কুরবানী দেয়ার
উদ্দেশ্যে তাদেরকে পূর্ণরূপে তৈরি করাই
এ তারবিয়াতের উদ্দেশ্য ।
---০০ জামায়াতে ইসলামীর
কর্মনীতি ।। অধ্যাপক গোলাম আযম
০০---
বিষয়: সাহিত্য
১৮১৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন