বিএনপি ব্যর্থ হলে জামায়াতের উত্থান হবে: পিয়াস করিম
লিখেছেন লিখেছেন দিয়া বৃষ্টি ২৬ জুলাই, ২০১৪, ০১:৫৭:৫২ রাত
লাস্টনিউজবিডি২৩জুলাই,ঢাকা: ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক পিয়াস করিম বলেছেন, দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা এবং সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপির ব্যর্থতায় রাজনীতিতে প্রধান শক্তি হিসেবে ভবিষ্যতে জামায়াতের উত্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও আমি তা চাই না। তবে চোখ বন্ধ রাখলেই তো মহাপ্রলয় ঠেকানো যাবে না, প্রলয় হবেই। তবে জামায়াত না হলে আরেকটি শক্তি (সেনাবাহিনী) দেশের ক্ষমতায় চলে আসবে।
গত সপ্তাহে ঢাকার একটি অনলাইন পত্রিকাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ড. পিয়াস করিম এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে দেশের রাজনৈতিক সংকট ও উত্তরণের উপায় নিয়েও খোলামেলা কথা বলেন তিনি।
পিয়াস করিম বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে খুন-গুম, অর্থনৈতিক জালিয়াতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দেশব্যাপী জনগণের ক্ষোভ রয়েছে। আন্দোলনের মাঠ তৈরিই আছে। এখন বিএনপির কাজ হলো জনগণের এ ক্ষোভকে ভাষা দিয়ে আন্দোলনে নামা। আর ঈদের পর আন্দোলনে নামার যে হুমকি দিচ্ছে, এটা তাদের জন্য শেষ সুযোগ। এক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে দেশের জনগণের কাছে অপ্রাসঙ্গিক ও ব্যর্থ দল হিসেবে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে বিএনপি।
ঈদের পর খালেদা জিয়ার সরকার পতনের আন্দোলন প্রসঙ্গে পিয়াস করিম বলেন, দল গুছানো এবং আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে তৃণমূলকে কোনো নির্দেশনা ছাড়া খালেদার আন্দোলনের ডাক অনেকেই হেসে উড়িয়ে দিলেও কেন তিনি বার বার হুমকি দিচ্ছেন তা ভেবে দেখতে হবে। তিনি অবশ্যই সাধারণ কেউ নন, তিন বারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। না জেনে-বুঝে তো তিনি এমন কথা বলবেন না। নিশ্চয়ই সে রকম প্রস্তুতি তার রয়েছে। আর এখনই তা বলে সরকারকে সজাগ করে দেওয়ার মত ভুলও তিনি করবেন না।
দেশের চলমান সংকট উত্তরণে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি, ফলে জনগণের পছন্দের সরকার ক্ষমতায় আসেনি। তাই সকল দলের অংশগ্রহণে অবিলম্বে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
তবে তিনি বলেন, এমন অক্ষম, অপদার্থ ও একচোখা নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা কখনই সম্ভব নয়।
ড. পিয়াস করিম বলেন, ’৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় পেলেও তাদের ক্ষমতায় যেতে দেওয়া হয়নি। এরপরই ’৭১ সালে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়। এ সময় ডা. মিলন, নূর হোসেনসহ অনেকেই জীবন দিয়েছেন। কিন্তু এই মুহূর্তে দেশে প্রতিনিধিত্বমূলক সেই গণতন্ত্র নেই। এখন লোকের মৃত্যু অন্য মানুষের কাছে কোনো ব্যাপারই না, সবাই এটা সাধারণভাবে নেয়।
পিয়াস করিম বলেন, বাংলাদেশের চলমান গণতন্ত্রের প্রতি সাধারণ মানুষসহ কারো আস্থা নেই। মানুষের প্রতিবাদী কথা বলার কোনো অধিকার নেই। তারপরও কিভাবে যে দেশে গণতন্ত্রের স্বর্ণযুগ চলছে তা আমার বোধগম্য নয়। তবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রধান দুই দলকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। রাজনীতিবিদরা যদি এ ব্যাপারে ভূমিকা পালন না করে এবং গণতন্ত্র নিয়ে এমন কথা বলতে থাকেন তবে মানুষ তাদের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলবে। অদূর ভবিষ্যতে কেউ এমন গণতন্ত্র আশা করবেন না।
পিয়াস করিম আরো বলেন, খালেদা জিয়া ঈদের পর যে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন অনেকেই এটাকে হেসে উড়িয়ে দিচ্ছেন। দল গুছানো এবং আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে তৃণমূলকে কোনো নির্দেশনা ছাড়া তিনি কেন বার বার সরকারকে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছেন তা ভেবে দেখার বিষয়। কারণ তিন বার নির্বাচিত একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয় না জেনে বুঝে কিছু বলবেন না। হয়তো হুমকি দেয়ার মত সে রকম প্রস্তুতি তার রয়েছে। আর এখনই তা বলে সরকারকে সজাগ করে দেওয়ার মত ভুলও তিনি করবেন না।
সরকারের বিরুদ্ধে খুন-গুম, অর্থনৈতিক জালিয়াতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দেশব্যাপী জনগণের ক্ষোভ রয়েছে। মাঠ তো তৈরিই আছে। এখন বিএনপির কাজ হলো জনগণের এ ক্ষোভকে ভাষা দিয়ে আন্দোলনে নামা। তা করতে না পারলে দেশের জনগণের কাছে অপ্রাসঙ্গিক ও ব্যর্থ দল হিসেবে বিএনপি ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৩৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন