কি শিখছি? কি শিখাচ্ছি!!!!!

লিখেছেন লিখেছেন দিয়া বৃষ্টি ২৪ জুলাই, ২০১৪, ০৯:৫৮:০৬ সকাল

সতর্কতাঃ এই পোস্টটি শুধু মাত্র তাদেরই জন্য যারা ইতোমধ্যে অষ্টম শ্রেণীতে উঠেগেছেন বা পাশ করে ফেলেছেন।

সজিব ওয়াজেদ জয় অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। সময়ের আগে সে দ্রুতই অষ্টম শ্রেণীতে উঠেছে। তাই ক্লাস অনুপাতে তার মানসিক ও শারীরিক বিকাশ স্বাভাবিকভাবে হয়নি। পড়েন একটা সরকারি স্কুলে। সেই স্কুলে বিজ্ঞানের টিচার হচ্ছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। জয়ে বাসায় কোন হোন টিউটর নেই। হাসিনা নিজেই যত্নসহকারে তাকে পড়ান।

স্কুল থেকে ছাত্রছাত্রীদেরকে প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি বই বিতরণ করা হয়েছে, যা সরকার কতৃক সরবরাহকৃত। বইটির নাম ‘নিজেকে জানো’। গতক্লাসে নুরুল ইসলামি নাহিদ সেখান থেকে জয়দের ‘শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন’ অধ্যায়টা পড়িয়েছেন। বাকি টুকু হুম ওয়ার্ক করে নিয়ে আসতে বলেছেন।

জয় বাসায় পড়তে বসল। কিন্তু সে কিছুই বুঝতে পারছে না। নতুন বই, নতুন জগত নিয়ে আলোচনা। কিছুই তার মাথায় ঢুকে না। তাই সে হাসিনা থেকে জিজ্ঞেস করল।

জয়ঃ মা, যখন একটি মেয়ে ১০-১২ বছর বয়সে পৌঁছে তখন তার কি হয়? কিছুই বুঝতেছেই না?

জয়ের আধুনিক মা উত্তর দিলেন, তখন ১০-১২ বছর বয়সের মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তন শুরু হয়। যেমন, উচ্চতা বাড়ে, মাসিক শুরু হয়, স্তন বড় হয়, বগলে ও ... চুল বা লোম গজায়।

জয়ঃ মা, মাসিক কি? আমরা মাস শেষে স্কুলে যে বেতন দেই সেটা? নাকি যেটা দিয়ে চুলায় আগুন জ্বালাও সেটা?

এবার হাসিনা উত্তর দিতে পারে না। কিন্তু অবুঝ জয় থেমে থাকে না। সে এবার জিজ্ঞেস করে বসে, আচ্ছা মা, স্তন কি? এইটা আবার কেমনে বড় হয়? আমাদের চুলের মত বড় হয়???

হাসিনা কোন উত্তর দিতে পারেন। অতচ সে কিন্তু আধুনিক মা। ছেলের সাথে খুবই ফ্রেন্ডলি। জয় ধরে নিচে তার মা পারছে না। তা সে আরেকটা প্রশ্ন করে বসে, "আচ্ছা মা, ছেলেদের কি পরিবর্তন হয়?

হাসিনা লজ্জার মাথা খেয়ে বলে, "এ বয়সে ছেলেদের শরীরের শুক্রাণুযুক্ত রস মাঝে মাঝে মূত্রনালী দিয়ে বের হয়ে আসে, যাকে বীর্য বলা হয়।"

জয়ঃ রস!! এইটা আবার কি? এইটা কি খেজুরের রসের মত? এই রস দিয়ে কি ভাপা পিঠা খাওয়া যায়?? কিন্তু আমার যেটা বের হয় সেটাকে তো মুত বলি।

সেইদিন, জয়ের পড়া অসম্পূর্ণই রয়েগেল। তারপর দিন স্কুলে গেল। নাহিদ স্যার আরেকটা অধ্যায় পড়াচ্ছেন। বিষয়, ‘বন্ধুত্ব ও ভালবাসা’ ।

বইয়ে লিখা আছে, ‘প্রেম করলে কেন ছেলেমেয়েরা ধরাধরি করে?’

নাহিদ স্যার বই দেখেই উত্তর পড়াচ্ছেন, "প্রেম এমন একটি সম্পর্ক যেখানে প্রেমিক প্রেমিকা দু’জনের প্রতি প্রচণ্ড আকর্ষণ অনুভব করে, এ অনুভব হতেই তারা পরস্পরের খুব কাছাকাছি পেতে চায় এবং এ কারণেই অনেক সময় তারা পরস্পরকে স্পর্শ করে।"

এই কথা শুনে জয় লাফিয়ে উঠল। তা দেখে নাহিদ স্যার জয়কে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,

নাহিদঃ তোমার সমস্যা কি? হঠাৎ এমন করলে কেন?

জয়ঃ স্যা, আমার মা মনে হয় মৃণাল কাকুকে খুব ভালবাসেন।

নাহিদঃ কেন? কিভাবে বোঝলে?

জয়ঃ কারণ উনারা প্রায় একজন অন্যজনকে ধরাধরি করেন।

নাহিদঃ তোমার আব্বুর নাই?

জয়ঃ আছেন, আম্মু মনে হয় তাকে ভালবাসেন না। উনাদের কোন দিন ধরাধরি করতে দেখিনি।

সেই দিন ক্লাস শেষে জয় বাসায় ফিরল। রাতে মা পড়াতে বসাল। উক্ত বইয়ের একটা প্রশ্ন ‘পরিস্থিতির চাপে যদি দৈহিক মিলনের সম্ভাবনা দেখা দেয় তবে আমি সে অবস্থায় কী করবো?’

জয় উত্তর জানতে চাইল।

হাসিনা বই দেখেই উত্তর দিচ্ছে, 'বিয়ের আগে ছেলেমেয়েদের দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে কোনো ক্ষেত্রে মেয়েরা পরিস্থিতির চাপে এরকম অবস্থায় পড়তে পারে। পরিচয়ের একপর্যায়ে দৈহিন সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। যদি কারো মনে হয় যে তার প্রেমিক এ ধরনের সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী, তবে মেয়েটাকে এ প্রস্তাবে সায় না দিয়ে বড় কারো সাথে বিষয়টি আলোচনা করা ভালো। যদি তা না করা যায় আর দৈহিক সম্পর্ক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে গর্ভধারণ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য কোনো অস্থায়ী পদ্ধতি ব্যবহার করা জরুরি। এরপরও যদি কোনো সমস্যা হয় তবে উপদেশের জন্য তুমি কাছের কোনো ক্লিনিকে যেতে পারো।

এই কথা শুনে জয় পিক করে হেঁসে দিল। হাসিনা কড়মড় করে জিজ্ঞেস করল, "তু হাসলি কেন?"

আস্তে আস্তে বুদ্ধিমান হয়ে উঠা জয় উত্তর দিল, "তাইলে তোমার কোন রিস্ক নেই, কারণ তোমার বিয়ে হয়েগেছে। মৃণাল কাকু চাইলে তোমাকে এখন হাজারও বার ধরাধরি করতে পারে। আচ্ছা,মা তোমরা কি বইয়ে দেওয়া ক্লিনিকগুলোতে ফোন করে পরামর্শ নিয়েছিলে??

(বইটির শেষে বিভিন্ন এনজিও পরিচালিত বেশ কয়েকটি ক্লিনিক/সেবা সংস্থার তালিকা দেয়া রয়েছে এ সংক্রান্ত সেবা গ্রহণের জন্য)।

হাসিনা প্রসঙ্গ পাল্টাল। আরেকটি প্রশ্ন পড়াতে যাচ্ছে। কিন্তু কি পড়াবে সবই একই টাইপের প্রশ্ন। সেই বইয়ে লিখা আছে,

"ইচ্ছার বিরুদ্ধে বা অন্য কোনো কারণে দৈহিক মিলনের ফলে একটি মেয়ের পেটে কি বাচ্চা আসতে পারে?

উত্তরঃ হ্যাঁ, আসতে পারে। তাই বিয়ের আগে দৈহিক মিলন থেকে বিরত থাকা উচিত। যদি পেটে বাচ্চা এসে যায়, তবে দেরি না করে উপদেশের জন্য মা-বাবা অথবা কাছের কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। মা-বাবাকে যদি ব্যাপারটা বোঝানো না যায় আর মেয়েটিকে তারা গ্রহণ না করে, তাহলে কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তার বা আত্মীয়ের পরামর্শ নেয়া ভালো।

জয়ঃ মা, দৈহিক মিলন কি?

হাসিনাঃ নাহিদ্দার মাথা। (মনে মনে বলল।)

জয় তারপরের দিন স্কুলে আসল। নাহিদ স্যার "নিজেকে জানো" বইটির আরেকটি অধ্যায়ের নাম ‘দৈহিক সম্পর্ক’ । তা আজ জয়দের পড়াচ্ছেন। এ অধ্যায়ের শুরুতে লেখাটা তিনি পড়ে শুনাচ্ছেন, "নারী ও পুরুষের মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপন খুবই স্বাভাবিক। তবে এতে সামাজিক ও ধর্মীয় নিয়ম মেনে চলা অত্যাবশ্যক। অবৈধ যৌনমিলন তা যেকোনো বয়সেই হোক না কেন সেটা অনৈতিক ও সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। একমাত্র বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্কই বৈধ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য।"

জয়ঃ স্যার, আম্মু আর মৃণালের সম্পর্ক কি তাহলে অবৈধ? উনারা তো স্বামী স্ত্রী নন। আর স্যার, যৌন সম্পর্কই বা কি জিনিস?

উনি প্রসঙ্গটা পাল্টিয়ে আরেক প্রশ্নে চলে গেলেন ‘সতী পর্দা কি জানতে চাই?’

বিপ বিপ বিপ...এ বিষয়ে যে বিবরণ বইটিতে দেয়া হয়েছে তা প্রকাশযোগ্য নয়।

এ অধ্যায়ে আরেকটি প্রশ্ন ‘প্রথম মিলনে কি সব মহিলার রক্ত পড়বে?

বিপ বিপ বিপ... এই অংশের বর্ণনাও রীতিমতো রগরগে।

এবার জয়ের সত্যি সত্যি মাথে ঘুরে পরে গেল।

হাঁসপাতাল থেকে ঘুরে এসে, কয়েক দিন বিশ্রাম নিয়ে , হাসিনা তাকে আবার পড়াতে বসল। একই বইয়ের "দৈহিক সম্পর্ক' অধ্যায়ে একটি হলো ‘মায়ের পেট থেকে কিভাবে বাচ্চা বের হয়ে আসে ?’

এখানে সন্তান প্রসবের যে বিবরণ দেয়া হয়েছে তাও প্রকাশযোগ্য নয়।

‘বাচ্চা কিভাবে হয়?’

শিরোনামে লেখা হয়েছে কিভাবে মায়ের গর্ভে সন্তান আসে তার বর্ণনা।

কিন্তু জয় কিছুই বুঝতেছেন, তাই সে হাসিনাকে বল, "মা,এই সবের কি একটা ভিডিও দেখাতে পারবা? কিভাবে দৈহিক সম্পর্ক হয়, বাচ্চা পেতে আসে, বাচ্চা কিভাবে হয়। মনে হয় সব কিছু ক্লিয়ার হবে।"

জয়ের কথা শুনে এবার হাসিনা নিজেই মাথা ঘুরে পরেগেল।

পরের দিন জয় স্কুলে গেল। নাহিদ স্যার যথারীতি একই বিষয় নিয়ে পড়াচ্ছেন।

বইয়ে প্রশ্নটা লিখা আছেঃ ‘বিয়ের আগে কেউ কেউ কনডম বা খাবার বড়ি ব্যবহার করে। সেটা কি ঠিক?’

তিনি বই দেখেই উরত্তটা দিচ্ছেন, কনডম বা খাবার বড়ি এ দু’টি জন্ম নিরোধক ব্যবহারে প্রয়োজন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।

জয়ঃ স্যার, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আবার কি রকম? আপনি না গত ক্লাসে বললেন এটা ঠিক না। এখন আবার বলছেন কনডম বা খাবার বড়ি ব্যবহার করলে ঠিক, বুঝলাম না।

নাহিদ স্যার পাশ কাটিয়ে অন্য প্রশ্নে চলে গেলেন,‘অনেকের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে তা কি ক্ষতিকর?

এরকম হলে কিভাবে নিরাপদ থাকা যায়?’

এখানেও তিনি বই পড়েই বলছেন, অনেকের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে তা ক্ষতিকর। অনেকের সাথে দৈহিক সম্পর্ক থাকলে কনডম ব্যবহার খুবই জরুরি।

জয়ঃ আমি তো কিছুই বুঝতেছি না। আগের প্রশ্নগুলোর উত্তর পেলাম না। এইগুলো কিভাবে বুঝব? স্যার আগে বলুন, দৈহিক সম্পর্ক কি? কনডম কি?? এইটা কিভাবেই একটা মানুষকে নিরাপদ রাখে? স্যার এইটা কি আমি ব্যাবহার করতে পারব?

জয়ের কথা শুনে এবার নাহিদ স্যার নিজেই মাথা ঘুরে পরে গেলেন...

দুঃখিত এটা কোন চটিগল্পের কাহিনী না, বাচ্চাদের পাঠ্য বইয়েরই কাহিনী। । এর রচিয়তা আওয়ামিলীগ নাস্তিক গং।। এই বইটি আমাদের দেশের কোমল মতি শিশুদেরকে পাঠ্য বই হিসেবে পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে।সথর্কতাঃ এই পোস্টটি শুধু মাত্র তাদেরই জন্য যারা ইতোমধ্যে অষ্টম শ্রেণীতে উঠেগেছেন বা পাশ করে ফেলেছেন।

সজিব ওয়াজেদ জয় অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। সময়ের আগে সে দ্রুতই অষ্টম শ্রেণীতে উঠেছে। তাই ক্লাস অনুপাতে তার মানসিক ও শারীরিক বিকাশ স্বাভাবিকভাবে হয়নি। পড়েন একটা সরকারি স্কুলে। সেই স্কুলে বিজ্ঞানের টিচার হচ্ছেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। জয়ে বাসায় কোন হোন টিউটর নেই। হাসিনা নিজেই যত্নসহকারে তাকে পড়ান।

স্কুল থেকে ছাত্রছাত্রীদেরকে প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি বই বিতরণ করা হয়েছে, যা সরকার কতৃক সরবরাহকৃত। বইটির নাম ‘নিজেকে জানো’। গতক্লাসে নুরুল ইসলামি নাহিদ সেখান থেকে জয়দের ‘শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন’ অধ্যায়টা পড়িয়েছেন। বাকি টুকু হুম ওয়ার্ক করে নিয়ে আসতে বলেছেন।

জয় বাসায় পড়তে বসল। কিন্তু সে কিছুই বুঝতে পারছে না। নতুন বই, নতুন জগত নিয়ে আলোচনা। কিছুই তার মাথায় ঢুকে না। তাই সে হাসিনা থেকে জিজ্ঞেস করল।

জয়ঃ মা, যখন একটি মেয়ে ১০-১২ বছর বয়সে পৌঁছে তখন তার কি হয়? কিছুই বুঝতেছেই না?

জয়ের আধুনিক মা উত্তর দিলেন, তখন ১০-১২ বছর বয়সের মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তন শুরু হয়। যেমন, উচ্চতা বাড়ে, মাসিক শুরু হয়, স্তন বড় হয়, বগলে ও ... চুল বা লোম গজায়।

জয়ঃ মা, মাসিক কি? আমরা মাস শেষে স্কুলে যে বেতন দেই সেটা? নাকি যেটা দিয়ে চুলায় আগুন জ্বালাও সেটা?

এবার হাসিনা উত্তর দিতে পারে না। কিন্তু অবুঝ জয় থেমে থাকে না। সে এবার জিজ্ঞেস করে বসে, আচ্ছা মা, স্তন কি? এইটা আবার কেমনে বড় হয়? আমাদের চুলের মত বড় হয়???

হাসিনা কোন উত্তর দিতে পারেন। অতচ সে কিন্তু আধুনিক মা। ছেলের সাথে খুবই ফ্রেন্ডলি। জয় ধরে নিচে তার মা পারছে না। তা সে আরেকটা প্রশ্ন করে বসে, "আচ্ছা মা, ছেলেদের কি পরিবর্তন হয়?

হাসিনা লজ্জার মাথা খেয়ে বলে, "এ বয়সে ছেলেদের শরীরের শুক্রাণুযুক্ত রস মাঝে মাঝে মূত্রনালী দিয়ে বের হয়ে আসে, যাকে বীর্য বলা হয়।"

জয়ঃ রস!! এইটা আবার কি? এইটা কি খেজুরের রসের মত? এই রস দিয়ে কি ভাপা পিঠা খাওয়া যায়?? কিন্তু আমার যেটা বের হয় সেটাকে তো মুত বলি।

সেইদিন, জয়ের পড়া অসম্পূর্ণই রয়েগেল। তারপর দিন স্কুলে গেল। নাহিদ স্যার আরেকটা অধ্যায় পড়াচ্ছেন। বিষয়, ‘বন্ধুত্ব ও ভালবাসা’ ।

বইয়ে লিখা আছে, ‘প্রেম করলে কেন ছেলেমেয়েরা ধরাধরি করে?’

নাহিদ স্যার বই দেখেই উত্তর পড়াচ্ছেন, "প্রেম এমন একটি সম্পর্ক যেখানে প্রেমিক প্রেমিকা দু’জনের প্রতি প্রচণ্ড আকর্ষণ অনুভব করে, এ অনুভব হতেই তারা পরস্পরের খুব কাছাকাছি পেতে চায় এবং এ কারণেই অনেক সময় তারা পরস্পরকে স্পর্শ করে।"

এই কথা শুনে জয় লাফিয়ে উঠল। তা দেখে নাহিদ স্যার জয়কে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,

নাহিদঃ তোমার সমস্যা কি? হঠাৎ এমন করলে কেন?

জয়ঃ স্যা, আমার মা মনে হয় মৃণাল কাকুকে খুব ভালবাসেন।

নাহিদঃ কেন? কিভাবে বোঝলে?

জয়ঃ কারণ উনারা প্রায় একজন অন্যজনকে ধরাধরি করেন।

নাহিদঃ তোমার আব্বুর নাই?

জয়ঃ আছেন, আম্মু মনে হয় তাকে ভালবাসেন না। উনাদের কোন দিন ধরাধরি করতে দেখিনি।

সেই দিন ক্লাস শেষে জয় বাসায় ফিরল। রাতে মা পড়াতে বসাল। উক্ত বইয়ের একটা প্রশ্ন ‘পরিস্থিতির চাপে যদি দৈহিক মিলনের সম্ভাবনা দেখা দেয় তবে আমি সে অবস্থায় কী করবো?’

জয় উত্তর জানতে চাইল।

হাসিনা বই দেখেই উত্তর দিচ্ছে, 'বিয়ের আগে ছেলেমেয়েদের দৈহিক সম্পর্ক স্থাপন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে কোনো ক্ষেত্রে মেয়েরা পরিস্থিতির চাপে এরকম অবস্থায় পড়তে পারে। পরিচয়ের একপর্যায়ে দৈহিন সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। যদি কারো মনে হয় যে তার প্রেমিক এ ধরনের সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী, তবে মেয়েটাকে এ প্রস্তাবে সায় না দিয়ে বড় কারো সাথে বিষয়টি আলোচনা করা ভালো। যদি তা না করা যায় আর দৈহিক সম্পর্ক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তবে গর্ভধারণ থেকে নিরাপদ থাকার জন্য কোনো অস্থায়ী পদ্ধতি ব্যবহার করা জরুরি। এরপরও যদি কোনো সমস্যা হয় তবে উপদেশের জন্য তুমি কাছের কোনো ক্লিনিকে যেতে পারো।

এই কথা শুনে জয় পিক করে হেঁসে দিল। হাসিনা কড়মড় করে জিজ্ঞেস করল, "তু হাসলি কেন?"

আস্তে আস্তে বুদ্ধিমান হয়ে উঠা জয় উত্তর দিল, "তাইলে তোমার কোন রিস্ক নেই, কারণ তোমার বিয়ে হয়েগেছে। মৃণাল কাকু চাইলে তোমাকে এখন হাজারও বার ধরাধরি করতে পারে। আচ্ছা,মা তোমরা কি বইয়ে দেওয়া ক্লিনিকগুলোতে ফোন করে পরামর্শ নিয়েছিলে??

(বইটির শেষে বিভিন্ন এনজিও পরিচালিত বেশ কয়েকটি ক্লিনিক/সেবা সংস্থার তালিকা দেয়া রয়েছে এ সংক্রান্ত সেবা গ্রহণের জন্য)।

হাসিনা প্রসঙ্গ পাল্টাল। আরেকটি প্রশ্ন পড়াতে যাচ্ছে। কিন্তু কি পড়াবে সবই একই টাইপের প্রশ্ন। সেই বইয়ে লিখা আছে,

"ইচ্ছার বিরুদ্ধে বা অন্য কোনো কারণে দৈহিক মিলনের ফলে একটি মেয়ের পেটে কি বাচ্চা আসতে পারে?

উত্তরঃ হ্যাঁ, আসতে পারে। তাই বিয়ের আগে দৈহিক মিলন থেকে বিরত থাকা উচিত। যদি পেটে বাচ্চা এসে যায়, তবে দেরি না করে উপদেশের জন্য মা-বাবা অথবা কাছের কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। মা-বাবাকে যদি ব্যাপারটা বোঝানো না যায় আর মেয়েটিকে তারা গ্রহণ না করে, তাহলে কোনো অভিজ্ঞ ডাক্তার বা আত্মীয়ের পরামর্শ নেয়া ভালো।

জয়ঃ মা, দৈহিক মিলন কি?

হাসিনাঃ নাহিদ্দার মাথা। (মনে মনে বলল।)

জয় তারপরের দিন স্কুলে আসল। নাহিদ স্যার "নিজেকে জানো" বইটির আরেকটি অধ্যায়ের নাম ‘দৈহিক সম্পর্ক’ । তা আজ জয়দের পড়াচ্ছেন। এ অধ্যায়ের শুরুতে লেখাটা তিনি পড়ে শুনাচ্ছেন, "নারী ও পুরুষের মধ্যে যৌন সম্পর্ক স্থাপন খুবই স্বাভাবিক। তবে এতে সামাজিক ও ধর্মীয় নিয়ম মেনে চলা অত্যাবশ্যক। অবৈধ যৌনমিলন তা যেকোনো বয়সেই হোক না কেন সেটা অনৈতিক ও সমাজে গ্রহণযোগ্য নয়। একমাত্র বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্কই বৈধ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য।"

জয়ঃ স্যার, আম্মু আর মৃণালের সম্পর্ক কি তাহলে অবৈধ? উনারা তো স্বামী স্ত্রী নন। আর স্যার, যৌন সম্পর্কই বা কি জিনিস?

উনি প্রসঙ্গটা পাল্টিয়ে আরেক প্রশ্নে চলে গেলেন ‘সতী পর্দা কি জানতে চাই?’

বিপ বিপ বিপ...এ বিষয়ে যে বিবরণ বইটিতে দেয়া হয়েছে তা প্রকাশযোগ্য নয়।

এ অধ্যায়ে আরেকটি প্রশ্ন ‘প্রথম মিলনে কি সব মহিলার রক্ত পড়বে?

বিপ বিপ বিপ... এই অংশের বর্ণনাও রীতিমতো রগরগে।

এবার জয়ের সত্যি সত্যি মাথে ঘুরে পরে গেল।

হাঁসপাতাল থেকে ঘুরে এসে, কয়েক দিন বিশ্রাম নিয়ে , হাসিনা তাকে আবার পড়াতে বসল। একই বইয়ের "দৈহিক সম্পর্ক' অধ্যায়ে একটি হলো ‘মায়ের পেট থেকে কিভাবে বাচ্চা বের হয়ে আসে ?’

এখানে সন্তান প্রসবের যে বিবরণ দেয়া হয়েছে তাও প্রকাশযোগ্য নয়।

‘বাচ্চা কিভাবে হয়?’

শিরোনামে লেখা হয়েছে কিভাবে মায়ের গর্ভে সন্তান আসে তার বর্ণনা।

কিন্তু জয় কিছুই বুঝতেছেন, তাই সে হাসিনাকে বল, "মা,এই সবের কি একটা ভিডিও দেখাতে পারবা? কিভাবে দৈহিক সম্পর্ক হয়, বাচ্চা পেতে আসে, বাচ্চা কিভাবে হয়। মনে হয় সব কিছু ক্লিয়ার হবে।"

জয়ের কথা শুনে এবার হাসিনা নিজেই মাথা ঘুরে পরেগেল।

পরের দিন জয় স্কুলে গেল। নাহিদ স্যার যথারীতি একই বিষয় নিয়ে পড়াচ্ছেন।

বইয়ে প্রশ্নটা লিখা আছেঃ ‘বিয়ের আগে কেউ কেউ কনডম বা খাবার বড়ি ব্যবহার করে। সেটা কি ঠিক?’

তিনি বই দেখেই উরত্তটা দিচ্ছেন, কনডম বা খাবার বড়ি এ দু’টি জন্ম নিরোধক ব্যবহারে প্রয়োজন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে।

জয়ঃ স্যার, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আবার কি রকম? আপনি না গত ক্লাসে বললেন এটা ঠিক না। এখন আবার বলছেন কনডম বা খাবার বড়ি ব্যবহার করলে ঠিক, বুঝলাম না।

নাহিদ স্যার পাশ কাটিয়ে অন্য প্রশ্নে চলে গেলেন,‘অনেকের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে তা কি ক্ষতিকর?

এরকম হলে কিভাবে নিরাপদ থাকা যায়?’

এখানেও তিনি বই পড়েই বলছেন, অনেকের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠলে তা ক্ষতিকর। অনেকের সাথে দৈহিক সম্পর্ক থাকলে কনডম ব্যবহার খুবই জরুরি।

জয়ঃ আমি তো কিছুই বুঝতেছি না। আগের প্রশ্নগুলোর উত্তর পেলাম না। এইগুলো কিভাবে বুঝব? স্যার আগে বলুন, দৈহিক সম্পর্ক কি? কনডম কি?? এইটা কিভাবেই একটা মানুষকে নিরাপদ রাখে? স্যার এইটা কি আমি ব্যাবহার করতে পারব?

জয়ের কথা শুনে এবার নাহিদ স্যার নিজেই মাথা ঘুরে পরে গেলেন...

দুঃখিত এটা কোন চটিগল্পের কাহিনী না, বাচ্চাদের পাঠ্য বইয়েরই কাহিনী। । এর রচিয়তা আওয়ামিলীগ নাস্তিক গং।। এই বইটি আমাদের দেশের কোমল মতি শিশুদেরকে পাঠ্য বই হিসেবে পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে।

বিষয়: বিবিধ

৩৯৫২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

247992
২৫ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৬:২২
শেখের পোলা লিখেছেন : ব্যাপারটা বাস্তবে ঘটলেই উচিৎ শিক্ষা হত৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File