শিক্ষনীয় গল্প-১১
লিখেছেন লিখেছেন ইঞ্জিনিয়ার মুবিন ২১ আগস্ট, ২০১৪, ০৯:০৯:৪৪ রাত
এক লোকের ছিল দুই বউ । বউ দুজনের
মধ্যে সারাক্ষন ঝগড়া লেগে থাকত।
লোকটার ছিল শরীর টিপানোর অভ্যাস।
দুই বউ এক সাথে লোকটার শরীর টিপতো।
সেখানেও
তারা ঝগড়া করতো কে শরীরের কোন
অংগ টিপবে। প্রতিদিন এই নিয়ে দুজনের
ঝগড়া দেখে , লোকটা একদিন
দুজনকে তার শরীরের অংশ ভাগ করে দিল
কে কোথায় টিপবে। বড় বউকে দিল ডান
হাত, ডান পা। ছোট বউকে দিল বাম হাত,
বাম পা।
যাই হোক কিছুদিন ভাল ভাবে সব চলল।
একদিন বড় বউ শরীর টিপার জন্য তেলের
বাটি(কাসার বাটি)
হাতে নিয়ে লোকটার বাম দিক
দিয়ে ডান দিকে যাওয়ার সময় হটাৎ তার
হাত থেকে কাসার বাটিটা লোকটার
বাম পায়ের উপর পড়ে গেল।
ভারী বাটিটা গরম তেলসহ লোকটার বাম
পায়ের উপর পড়া মাত্রই লোকটা চিৎকার
করে উঠল। লোকটার চিৎকার শুনে ছোট বউ
দৌড়ে এল।
এসে ঘটনা জানতে পেরে স্বামি ব্যাথার
প্রতি সহানুভূতী দেখানোর বদলে বড়
বউয়ের সাথে ঝগড়া শুরু করে দিল।
"কি ব্যাপার আপনি আমার ভাগের
পায়ের উপর কেন বাটি ফেললেন?"
এই বলে সে তার হাতের ভারী কাসার
বাটিটা লোকটির ডান পায়ের উপর
ফেলল। এবার ডান পায়ের উপর
বাটিটা পড়া মাত্র লোকটা আবার মরন
চিৎকার দিয়ে উঠল। বড় বউ ছোট বউয়ের
কান্ড
দেখে দৌড়ে একটা লাঠি নিয়ে এল।
"তোকে বললাম হঠাৎ পড়ে গেছে তারপরও
তুই আমার ভাগের পায়ের উপর
বাটি ফেললি, তবে এই দেখ এবার
ইছ্ছে করে মারলাম ।"
এই বলে হাতের লাঠি উচিয়ে লোকটার
বাম হাতে দিল এক বাড়ি । গেল
লোকটার বাম হাতটা ভেংগে।
লোকটার এখন মরন দশা। দুই বউয়ের এসব
দেখার সময় নাই। ভাগের বাম হাত
ভাংগতে ছোট বউ হুশ হারা হয়ে গেল।
সেও এবার
দৌড়ে একটা লাঠি নিয়ে এল। মৃত প্রায়
লোকটার ডান হাতে মারল এক বাড়ি।
এভাবে জিতাজিতি করে মারতে মারতে এক
সময় দুই বউয়ে তাদের স্বামিকে মেরেই
ফেলল। দুজনে বিধবা হয়ে গেল।
তারপরও ওদের ঝগড়া থামেনি পরস্পর
পরস্পরকে দোষারোপ করছে আর
বলছে তোর কারনে স্বামীটা মরল।
...
পাঠক আমাদের দেশটাও কি আজ এই
লোকটার মত নয় কি?দলের
কোন্দলে অর্থনীতি মৃতপ্রায়।
চারদিকে সন্ত্রাস দূর্নীতি রাহাজানি ,
হত্যা, খুন, গুম এইসবে দেশের জনগনের
নাভিশ্বাস । দলীয় ভাষনে দেশের
উন্নতিই শুনতে পাই বাস্তবে তার
দেখা পাই না। শস্য শ্যামলা এই ঊর্বর
ভূমিতে কিসের অভাব? নদী ভরা মাছ
পৃথিবীর কয়টা দেশে আছে? তারপরও আজ
আমরা তৃতী্য বিশ্বের কাতারে। কেন? এর
কোন জবাব আছে কি?
এভাবে আমাদের
রাজনীতিকরা একটি বড় রাজনৈতিক
বিভ্রান্তিতে যেন হাবুডুবু খাচ্ছেন।
গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হয়ে,
অন্ধকার পথে হেঁটে, কঠিন
দলতন্ত্রে বন্দি হয়ে দেশ ও জাতিকেই
যেন সংকটে ফেলেছেন।
এভাবে নিজেরাও কম সংকটে পড়েননি।
তারপরও কথায় ও আচরণে মনে হয়
না জনগণকে অস্পৃশ্য ভাবার প্রবণতা এতটুকু
কমেছে। আমরা অনুরোধ করব,
ক্ষমান্ধতা কমিয়ে সব পক্ষই বাস্তবতার
উঠোনে নেমে আসুন। জনগণের শক্তির
প্রতি আস্থাশীল না হতে পারা পর্যন্ত
বিভ্রান্তি কাটবে বলে মনে হয় না।
...
বিষয়: বিবিধ
৩০২৩ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন