শিক্ষনীয় গল্প-৮
লিখেছেন লিখেছেন ইঞ্জিনিয়ার মুবিন ১৪ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:০১:৪৯ সন্ধ্যা
অনেক দিন আগে এক স্বার্থপর লোক
ছিলো।অন্যের সম্পদে ভাগ বসানোর
জন্যে সে সবসময় সুযোগ খুঁজতো। কিন্তু
সে তার নিজের সম্পদের এক আনাও
কারো সাথে শেয়ার
করতে রাজি ছিলো না-তার বন্ধুদের
সাথেও না,গরীবদের সাথেও না।
একদিন লোকটি রাস্তায় তার
ত্রিশটি স্বর্ণ মুদ্রা হারিয়ে ফেললো।
তার এক বন্ধু তার এই স্বর্নমুদ্রা হারানোর
কথা শুনলো।সে আবার ছিলো খুব দয়ালু
একজন মানুষ।
ঘটনাক্রমে বন্ধুটির মেয়ে রাস্তায় এই
ত্রিশটি স্বর্নমদ্রা কুড়িয়ে পেল।
সে বাড়িতে ফিরে এই
কথা জানালে তার
বাবা বলে যে এটা নিশ্চয় তার বন্ধুর
হারিয়ে যাওয়া সেই স্বর্নমদ্রা।তাই
সে লোকটির কাছে গেল
তাকে মুদ্রাগুলো ফিরিয়ে দিতে।
কিন্তু তার স্বার্থপর বন্ধুটি যখন
শুনলো যে তার মেয়ে এই
মুদ্রা কুড়িয়ে পেয়েছে তখন
সে বললো যে ‘আমার মোট চল্লিশটি স্বর্ণ
মুদ্রা ছিলো।তোমার মেয়ে নিশ্চয়ই
এখান থেকে দশটি মুদ্রা সরিয়েছে।
আমাকে তোমার চল্লিশটি মুদ্রাই
দিতে হবে।’
একথা শুনে লোকটি রেগে গেল
এবং মুদ্রাগুলো সেখানে রেখে চলে গেল।
কিন্তু স্বার্থপর
বন্ধুটি ছিলো নাছোরবান্দা। সে বিচার
নিয়ে আদালতে।
বিচারক তার অভিযোগ মন
দিয়ে শুনলো এবং সেই বাবা ও তার
মেয়েকে ডেকে পাঠালো।যখন তাদের
নিয়ে আসা হলো তখন
সে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস
করলো যে সে কতটি মুদ্রা পেয়েছিলো?
মেয়েটি
জানালো যে ত্রিশটি স্বর্ণমুদ্রা।বি
চারক আবার স্বার্থপর
লোকটিকে জিজ্ঞেস
করলো সে কতটি মুদ্রা হারিয়েছিল?
লোকটি জানালো যে ‘মোট
চল্লিশটি স্বণ মুদ্রা’।
বিচারক এবার
লোকটিকে জানালো যে মেয়েটি যে মুদ্রা কুড়িয়ে পেয়েছে সেগুলো তার
নয় কারন
মেয়েটি পেয়েছে ত্রিশটি মুদ্রা কিন্তু
সে হারিয়েছে চল্লিশটি মুদ্রা।
সে মেয়েটিকে এই মুদ্রাগুলো তার
সাথে নিয়ে চলে যেতে বললো এবং জানালো যে যদি কেউ
জানায়
যে ত্রিশটি মুদ্রা হারিয়েছে তবে তাকে আবার
ডেকে পাঠাবে।
বিচারক লোকটিকেও বললো যে কেউ
যদি খবর দেয়
যে সে চল্লিশটি স্বর্ণমুদ্রা পেয়েছে তবে তাকে ডেকে পাঠানো হবে।
তখন সাথে সাথে স্বার্থপর
লোকটি স্বীকার
করলো যে সে মিথ্যা বলেছিলো এবং আসলে সে ত্রিশটি স্বর্ণমুদ্রাই
হারিয়েছে।তাই
তাকে সেগুলো ফিরিয়ে দেয়া হোক।
বিচারক এবার তার মিথ্যা বলার
অপরাধে ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড
এবং মেয়েটির মান হানির জন্য একশত
স্বর্ণমুদ্রা জরিমানা ধার্য করলেন।
...
মিথ্যা একটি চারিত্রিক ব্যাধি। যার
মধ্যে মনুষ্য রুচিবোধ কিংবা সুস্থ
প্রকৃতি বিদ্যমান সে কোনক্রমেই এর
প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করতে পারে না। আর
না করাই হচ্ছে স্বাভাবিক মনুষ্য ধর্ম। সকল
ধর্মেই এর প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন
করা হয়েছে।
মূলত মিথ্যা বলার দোষে দুষ্ট হওয়ার অর্থ
হচ্ছে মানবতা থেকে বেরিয়ে যাওয়া।
কারণ, কথা বলা মানুষের একটি বৈশিষ্ট্য
আর কথা সত্য না হলে তার কোন অর্থই
থাকে না।
যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন সর্ত
সাপেক্ষে মিথ্যা কথা বলা জায়েজ
আছে। যেমন,
নির্দিষ্ট কয়েকটি ক্ষেত্র ব্যতীত
মিথ্যা বলার কোন অবকাশ নেই। এ মিথ্যার
মাধ্যমে কারো অধিকার হরণ
করা যাবে না,
কাউকে হত্যা করা যাবে না এবং কারো ইজ্জম
সম্মানে আঘাত হানা যাবে না।
বরং কাউকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করার
জন্য কিংবা দু’জনের মধ্যে ছিন্ন সম্পর্ক
পুনরায় স্থাপন করার জন্য অথবা স্বামী-
স্ত্রীর মধ্যে মিল-মহব্বত তৈরি করার জন্য এ
মিথ্যার আশ্রয় নেয়া যাবে, অন্যথায় নয়।
...
{গল্পটি ভাল লাগলে
বিষয়: বিবিধ
১৫৫০ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এটুকু বুঝলাম আমার ভিতর আরেকটা আমি আছে যে শিক্ষাটা ভুলিয়ে দেয়।
মন্তব্য করি আর না করি আপনি লিখে যান। আমি পড়ব।
আপনার তো অন্তত দায়িত্ব পালন হবে।
মিথ্যা কথা বলা বজন করি।
মিথ্যা কথা বলা বজন করি।
আল্লাহ্ আমাদের মিথ্যা থেকে হাজার কোটি হাত দূরে সড়িয়ে রাখুক ।
মিথ্যা কথা বলা বজন করি।
সমস্যা সমাধান করতে মিথ্যা ত্যাগ জরুরী।
মিথ্যা কথা বলা বজন করি।
মিথ্যা কথা বলা বজন করি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন