শিরোনাম কি দিব ভেবে পাচ্ছি না । লেখাটা পড়ে আপনারাই বলুন কি দেওয়া যায় এর শিরোনাম ?
লিখেছেন লিখেছেন সত্যকণ্ঠ ০৬ আগস্ট, ২০১৪, ০২:৩৫:৩১ দুপুর
আজ ৬ ই আগষ্ট।মানবসভ্যতার ইতিহাসে একটি বর্বরোচিত দিন।বিশ্ব মানবতার স্বঘোষিত রক্ষক আমেরিকার হাতে বিশ্ব সভ্যতার ধর্ষিত হওয়ার দিন।
২য় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ১৯৪৫সালের ৬ ই আগষ্ট ।কিছুদিন আগেই জাপানী বাহিনী হামলা করেছিল মার্কিন নৌ ঘাঁটি পার্ল হারবারে।ক্ষমতার মোহে উন্মাদ মার্কিনীরা ক্রোধে পশু হয়ে ওঠে।সেদিন প্রশান্ত মহাসাগরের তিনিয়ান দ্বীপে অবস্থিত মার্কিন নৌঘাঁটি থেকে উড়ে আসে "এনোলা গে"নামের বোমারু বিমান বি-২৯।টোকিওর ৬৮০কি.মি.দক্ষিন-পশ্চিমে অবস্থিত হিরোশিমা শহরে উক্ত বিমান থেকে নিক্ষিপ্ত হয় পৃথিবীর প্রথম পারমানবিক বোমা "লিটল বয়"!এ বোমাটি ছিল দৈর্ঘ্যে প্রায় ৯.৮৪ফুট,প্রস্থে ২৮ইঞ্চি।এর ওজন ছিল প্রায় ৪০০০কেজি।সেদিন প্রায় ২০০০ফুট উপরে থাকা অবস্থায়ই বোমাটি বিস্ফোরিত হয়।এর বিস্ফোরন মাত্রা ছিল ১৩কিলোটন TNTএর সমান।পরমানু অভিশাপে মূহুর্তে বিরানভূমিতে পরিনত হয় হিরোশিমা।প্রাণের অস্তিত্ব মুছে গিয়ে হিরোশিমা পরিনত হয় মৃত্যুশহরে।তাত্ক্ষনিকভাবে মারা যায় প্রায় ৬৬হাজার মানুষ।আহত হয় আরো ৬৯হাজার।প্রায় আড়াই লাখ লোকের বসবাস ছিল শহরটিতে।পরবর্তীতে ১৯৪৫সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এ মৃত্যুধারা অব্যাহত থাকে।মোটমাট প্রায় দু লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়।অর্থাত্ পুরো শহরের চারভাগের সাড়ে তিনভাগ মানুষই মারা যায়।বাকীরা আহত ।ধ্বসে যায় গোটা শহর।এরপরেও আরো অনেকদিন সেই অভিশাপ বয়ে চলে হিরোশিমার অনাগত প্রজন্ম।
সভ্যতার এই কালো দিবস স্মরনে হিরোশিমায় অনেক স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হয়েছে।এগুলোর মধ্যে হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল পার্ক এবং হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অন্যতম। আজও সেই বিষাক্ত বোমার প্রভাব রয়ে গেছে হিরোশিমার বাতাসে।
সভ্যতার নিকৃষ্ট শত্রু আমেরিকা পরবর্তীতে যুক্তি দেয় যে,যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে আরো বেশী প্রাণহানি হত,তাই তাড়াতাড়ি যুদ্ধ শেষ করতে তারা এটা করেছে।মানবতার শত্রুদের এ যুক্তি অনেকে মেনেও নিয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পারমানবিক অস্ত্রবিস্তার রোধ চুক্তি বা NPTস্বাক্ষরের জন্য উন্মুক্ত হয় ১৯৬৮সালে।সত্তরে তা কার্যকর হয়।ভারত,পাকিস্তান,ইজরাইল আর দঃসুদান ছাড়া ১৯০টি দেশ এতে স্বাক্ষর করে।ইজরায়েল আর ভারতকে কিছু না বললেও পাকিস্তান,ইরাককে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে এই পারমানবিকের অজুহাতে।অথচ আমেরিকা আর তার দোসররা কিন্তু কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
মূলত জাতিসংঘ বা কুত্তাসংঘ হলো বিশ্বের ওপর পশ্চিমা প্রভাব বহাল রাখার তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান। জাতিসংঘ যতোদিন তার যথাযথ ভূমিকায় থাকবে ,ততোদিন বিশ্ব মানবতার মুক্তি আসবে না,আসা সম্ভব না।সভ্যতা ও মানবতার শত্রুরাই যখন মানবতার রক্ষক হয় আর তাদের দেয়া সংগায় যখন মানবতা সংগায়িত হয়,তখন বাংলাদেশসহ সবকটি ঔপনিবেশী দেশে ব্যাঙের ছাতার মত মানবতাবাদী গজিয়ে ওঠে।তখন হামাস বা গাজা হয় সন্ত্রাসী,ইজরায়েল আত্মরক্ষাকারী।তখন শাপলা চত্বরের কালোরাত ঢেকে যায় জঘন্য মিথ্যাচারে।তখন মানবতা আত্মহত্যা করে পৃথিবীর প্রতিটি আক্রান্ত জনপদে।অভিধানের পাতায় রক্তাক্ত হয়ে থাকে "অসংগায়িত মানবতা"
বিষয়: বিবিধ
১৪৪৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পৃথিবীতে একমাত্র তারাই কারও উপর সরাসরি এটম বোম মেরেছে । সুতরাং এদের চেয়ে কি ইরান ভয়ংকর যারা এখনও কোন বোমাই বানাতে পারেন নি ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন