''শি'আদের মৌলিক বিশ্বাসসমূহ-২য় পর্ব:একজন শি'আ কর্তৃক লিখিত,কারো কাছ থেকে সংগৃহীত নয়,অতএব সত্যটা জানুন"

লিখেছেন লিখেছেন শিআনে আলী আলাইহিস সালাম ২১ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:৫৭:৩৮ দুপুর

১) আমরা বিশ্বাস করি যে, আল্লাহ আমাদেরকে চিন্তাশক্তি দিয়েছেন এবং দিয়েছেন বুদ্বিশক্তি।আর এ কারনেই তিনি আমাদেরকে তার এ কারনেই তিনি আমাদেরকে তার সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করতে এবং গভীর অনুসন্ধান করতে আদেশ দিয়েছেন।বুদ্বিবৃত্তি ও চিন্তা না করে, বিচার বিশ্লেষন না করে কাউকেঅনুসরন করা আমাদের জন্যসঠিক নয় যদিও বাতার জ্ঞান অভূতপূর্ব হয়। পবিত্র কোরআনে আমাদেরকে চিন্তা করতে ও জ্ঞান অর্জন করতে আদেশ দেওয়ার কারন হলো সৃষ্টিপ্রকরনগত স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা। মানুষ স্বীয় বিশ্বাসের ক্ষেত্রে বুদ্বিভিত্তিক অনুসন্ধান ও বিচার বিশ্লেষন ব্যাতিত কোন ব্যাক্তি বা শিক্ষককে অনুসরন করা সঠিক নয়।ধর্মের মৌলিক বিষয়সমূহের ক্ষেত্রে যে পূর্ব পুরুষের অন্ধ অনুসরন করে কিন্তু জ্ঞান ভিত্তিক অনুসন্ধান করে না সে মিখ্যায় আবিষ্ট হবে এবং এ ক্ষেত্রে তার কোন অজুহাত গ্রহনযোগ্য নয়।

মৌলিক বিয়সমূহ বিচার বিশ্লেষন ও অনুধাবন করা আবশ্যক।

২) দ্বীনের শাখাগত বিষয়সমূহের ক্ষেত্রে সকলের জন্য বুদ্বিভিত্তিক পর্যালোচনা ও গবেষনা আবশ্যক নয়, তবে করা উচিত।কিন্তু এ ক্ষেত্রে আবশ্যক হলো (আবশ্যক বিষয়সমূহ ব্যতিরেকে-যেমন: নামাজ,রোজা) নিম্নোক্ত তরিকাত্রযের যে কোন একটিকে অবলম্বন করা-

(ক) যোগ্যতা থাকলে গবেষনা (ইজতিহাদ) করা এবং আহকামের দলিলগুলোকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা।

(খ) যে কোন আমলের ক্ষেত্রে যোগ্যতা অনুযায়ী এহতিয়াত বা সাবধানতা অবলম্বন করা।

(গ) অনুমোদিত বা সুস্পষ্ট যেগ্যতার অধিকারী এমন কাউকে অনুসরন করতে হবে যিনি জ্ঞানী ও কামেল।

৩) যেসকল ব্যাক্তি ইজতিহাদ করার ক্ষমতা রাখেন না তাদের জন্য কোন না কোন মজতাহিদের অনুসরন করা বা তকলীদ করা আবশ্যক,তবে মৃত মুজতাহিদের তকলীদ গ্রহনযোগ্য নয়।

৪)আমরা বিশ্বাস করি যে, সকল ইপ্সিত শর্তপূরনকারী মুজতাহিদ হলেন ইমামে যামানার (যিনি বর্তমান ও শেষ ইামাম ও যিনি বর্তমানে অদৃশ্যে আছেন) অবর্তমানে তার প্রতিনিধি।সুতরাং মুজতাহিদগণ সকল প্রকার ফতোয়া দান ও মসলিম মিল্লাতের অভিভাবক ও পরিচালক ও বিচারক ও সার্বজনীন ক্ষমতার অধিকারী।তার আদেশ ব্যাতিত কোন নির্দেশনা ও আদেশ গ্রহনযোগ্য নয়।

৫) আমরা রাজ’আত বা পুনর্গমনে বিশ্বাসী,এটা হলো ঐ বিশ্বাস যা মহানবী (সাঃ)ও তার আল রা বর্ণনা করে গেছেন যে,- ইমাম মাহদরি আগমনের পর মহান আল্লাহ একদল মৃত ব্যাক্তিকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনবেন পূর্বে ঠিক যে অবস্থায় তারা ছিল।তখন মহান আর্লাহ একদলকেসম্মানীত করবেন ও আরেক দলকে লাঞ্ছিত করবেন। আর এখানে তাদেরকই পুনরাবর্তিত করা হবে যারা ঈমানের চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছেচে কিংবা অনাচারের নিকৃষ্টতম তলানীতে তলিয়ে গেছে।এরপর তারা পুনরায় মৃত্যুবরন করবে।

এর বর্ণনা মহা গ্রন্থ কোরআনে সূরা মূমিন-১১নং আয়াতে উল্লেখিত আছে।

আর উল্লেখ্য যে রাজআত হলো দৈহিক পুনরুথ্থান প্রকরন,সবার বেলায় ঘটবেনা এবং যে অবস্থায় প্রথম মৃত্যু হয়েছেসে অবস্থায় পুনর্গমন হবে- সুতরাং এটা পুনর্জন্মবাদ না যা দেহ পাল্টায়।

৬)আমরা তাকিয়্যায় বিশ্বাসী। যে কেউতার বিশ্বাস প্রকাশিত হলে তার জান মালের ক্ষতি আশঙ্খা করে তাকে বাধ্য হয়েই নিজ বিশ্বাস গোপনের অনুমতি রয়েছে।ক্ষতির আশঙ্খা প্রকরনে তাকিয়্যা কখনো আবশ্যক কখনো অনাবশ্যক।যদি সত্য প্রকাশকরা দ্বীনের জন্য সহায়ক ও দ্বীনের খেদমতহয় কংবা জিহাদ বলে পরিগনিত হয় তখন তাকিয়্যা অনাবশ্যক।আর যদি তাকিয়্যার কারনে কোন মহাত্মা মৃত্যুমুকে পতিত হয় মিথ্যা বিস্তৃত হয়, দ্বীনে ফাসাদ সৃষ্টি হয় তবেব তাকিয়্যা করা নিষেধ। তাকিয়্যা মানে শত্রুদের কাছ থেকে আত্মরক্ষা করা ও বিপদ থেকে রক্মা লাভ করা, দ্বীনের আহকাম ও দ্বীন লুকানো নয়।

এ সম্পর্কে কোরাআনের আয়াত-“সে নয় যে বাধ্য হয় অথচ তার হৃদয়ে রয়েছে দৃঢ় ঈমন”- সূর-নাহল,১০৬।

এছাড়াও সূরা-মূমিন,২৮ ও সূরা ইমরান,২৮।

যেমন: নাজ্জাসী ঈমান গ্রহন করেও পরিস্থতির বিবেচনায় তাকিয়্যা করতেছে।বর্তমা যে সব দেশে মুসলিমরা নির্যাতিতহচ্ছে তারা তাকিয়্যা করতেছে।বাংলাদেশে ছাত্র শিবিরের কে/জা শাখাও একটি তাকিয়্যা,মিশরে ব্রাদারহুড তাকিয়্যা করে টিকে আছে।

৭)আমর দো’আয় বিশ্বাসী। আমরা নামাজের ভিতরে এবং শেষে দো’আ করে থাকি।দো’আ আমাদের নিকট ফরজ,ওয়াজীব ও সুন্নাত আমলের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।

৮)ভাগ্য সম্পর্কে আমাদের বিশ্বাস হলো আল্লাহ আমাদেরকে আমলের (যে আমলের উপর জান্নাতজাহান্নামের ফায়সালা হবে) ক্ষেত্রে স্বধীনতা দিয়েছেন।নাফসের পবিত্রতা ও নাফসের খেয়ানত দু’টোই মানুষের বিবেকের ক্ষমতার ফসল।আল্লাহ আমাদের বিবেককে পাপ আর পুণের জ্ঞান প্রদান করে পাপ-পুণ্য করার ব্যাপারে স্বাধীনতা দিয়েছেন। আর বাকী সকল ব্যাপার আল্লাহ নির্ধারন করে দিয়ছেন,ঐগুলোতে বান্দা স্বাধীন না।আর বান্দার দো’অ বান্দাকে পাপপচারের পথ থেকে রক্ষা পেতে সাহা্য্য করে।

এ সম্পর্কে কোরআনের বানী-সূর শামস,৭-১০।

৯)শি’আরা কবর যিয়ারতের প্রতি, কবরের উপর সৌধ নির্মানের উপর বিশেষ মনোযোগী ও তাদের ঐতিহ্য।ফরজ,ওয়াজীব,সুন্নাত ও নফল ইবাদাতসমূহের পর আমরা কবর যিয়ারতে বেশী অনুপ্রানিত।আমরা কবর যিয়ারত ও সৌধ নির্মানের ব্যাপারে মহানবী (সাঃ) ও তার পবিত্র আলদের নির্দেশের বাহিরের কিছুতে বিশ্বাসী না।আমরা বিশ্বাস করি,পবিত্র রাসূল (সাঃ) ও ইমামদের কবর আল্লাহর কাছে দো’আ কবুলের সর্বাধক পবিত্র স্থান।আমরা দো’আ কবুলের জন্য আল্লাহর রাসূল (সাঃ)ও ইমামদের ওসীলা হিসেবে নেই।আমরামনে করি,কবর যিয়ারত হলো রাসূল (সাঃ) ও ইমামদের প্রতি অনুসারিদের বিশেষ দায়িত্ব পালন।আমরা আল্লাহর ওলীদের কবরের যিয়ারত শেষেআল্লাহর দরবারে দো’আ করার নিয়্যতে নামায পড়ি।আমরা তাদেরকে কখনোই সিজদা করি না।সিজদা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য।আমরা কবরের ইবাদত করি না,কবর যিয়রিাত করি।কবরের নিকট আমাদের আদবও কর্মকান্ড তাদের প্রতি যাতে বেআদবী না হয় তার জন্য ও তাদের প্রতি শ্রদ্বা নিবেন্।আমরা তাদের নৈকট্য নয় আল্লাহর নৈকট্য কামনা করি,তাদেরকে শুধুমাত্র ওসীলা মানিকারন তারা আল্লাহর প্রিয় বান্দা।

১০)আমরা কি’আমাত দিবসে বিশ্বাসী।আমমরা বিশ্বাস করি যে, মহান আল্লাহ আমাদেরকে মৃত্যুর পর কি’আমাত দিবসে নতুন করে জীবিত করবেন এবং সৎকর্মকারীদেরকে পুরুস্কৃত করবেন আর পাপীকে শাস্তি দিবেন।

পরবর্তীতে আরো ছোট-খাট কিছু আকিদা তুলে ধরবো, তারপর থেকে খেলাপত ও ইমামাতের আলোচনা করবো।

‌''আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ ওআলেমুহাম্মাদ"

বিষয়: বিবিধ

১৪০৬ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

256788
২১ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৩
সেলিম জাহাঙ্গীর লিখেছেন : লেখন আপনি বলেছেন: আমরা আল্লাহর ওলীদের কবরের যিয়ারত শেষে আল্লাহর দরবারে দো’আ করার নিয়্যতে নামায পড়ি। আমরা তাদেরকে কখনোই সিজদা করি না। সিজদা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য।

আমরা(আদমকে)তাদেরকে কখনোই যেন সিজদা না করি। আপনার এই কথায় সেই সুর প্রতিফলিত হলো আজাজিল এই একই কথা বলেছিলো। সে বলেছিলো আমি কেবল খোদাকে সেজদা করবো মানুষকে নয়। একারণে সে হয়ে গেলো শয়তান। আপনিও তায় বললেন, বেশ ভালো।
256789
২১ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৪
স্বপন২ লিখেছেন : (১)আমি দেখেছি, কোমে অনেক বাংলাদেশী শিয়া হয়ে গেছে। কবরের মাটি এনে ব্লক বানিয়ে সেজদার সময় মাথার নিচে রাখে।
(২) কোমের মসজিদের ভিতরে ওদের অনেক
আয়াতুুল্লার কবর।
(৩) অনেকেই আলী খোদা মমানেে।
(৪) ওদের মূতা বিয়ে চালু হয়েছে,ডেনমার্কে মূতা বিয়ে ব্যবস্থা রয়েছে।
আর আপনি যদি শিয়া হন চালিয়ে যান।
২১ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৪
200417
সেলিম জাহাঙ্গীর লিখেছেন : শিয়ারা বলে সুন্নিদের কোন ভিত্তি নাই আর সুন্নিরা বলে শিয়াদের কোন ভিত্তি নাই। আসলে কোনটা ঠিক, এটা মাপার যন্ত্র কোনটি? উভয়ের কাছেই নিজের গোত্র সঠিক প্রমানে স্ব-স্ব কিতাব রয়েছে? আমরা দেখতে থাকি গ্যারালীতে আছি।
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:৫৭
200481
শিআনে আলী আলাইহিস সালাম লিখেছেন : ১) মাটি বিষয়ে পরবর্তী লেখায় লিখবো
২)মসজিদে নববীতেও কবর আছে,কবর থাকাটা সমস্যা না
৩)আমরা কেউই আলীকে খোদা মানি না,নবীও না। যে এরূপ বিশ্বাস করবে সে কাফের।
৪)জি, হ্যাঁ মুতা বিয়ে চালু আছে,আমরা মুতা বিয়েকে হালাল মানি,পরবর্তী লেখায় এ ব্যাপারে লিখবো।
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:৫৭
200482
শিআনে আলী আলাইহিস সালাম লিখেছেন : ১) মাটি বিষয়ে পরবর্তী লেখায় লিখবো
২)মসজিদে নববীতেও কবর আছে,কবর থাকাটা সমস্যা না
৩)আমরা কেউই আলীকে খোদা মানি না,নবীও না। যে এরূপ বিশ্বাস করবে সে কাফের।
৪)জি, হ্যাঁ মুতা বিয়ে চালু আছে,আমরা মুতা বিয়েকে হালাল মানি,পরবর্তী লেখায় এ ব্যাপারে লিখবো।
256826
২১ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪১
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ১ থেকে ৩ পর্যন্ত মনে হয় সুন্নীদেরও বিশ্বাস;

৪ এর ব্যাপারে জিজ্ঞাস্য বর্তমানে কি ইমামের কোন প্রতিনিফহি আছেন? থাকলে উনি কে?

৫ নিয়ে মনে হয় সুন্নীদের ভিন্ন বিশ্বাস;

৬ এর ব্যাপারে শুনেছিলাম, রেফার করা আয়াতের শাব্দিক ব্যাখ্যায় মনে হয় ঠিক আছে ব্যাপারটা, ফির’আউনের পরিষদেরও কেউ একজন হয়তো এভাবে ঈমান গোপন রেখেছিলো;

৭ সুন্নীদের অনেকের মতেই ঠিক আছে;

৮ ও ঠিক আছে;

৯ এর ক্ষেত্রে সুন্নীদের মধ্যেও একাংশের একই বিশ্বাস রয়েছে, বাকীদের ভিন্ন

১০ ও ঠিক আছে।

ঈমামদের ব্যাপারে পরের পোষ্টে কিছু হাদীস উদ্ধৃত করবেন আশা করি এবং ৪ নং পয়েন্টের ব্যাপারেও।

ধন্যবাদ আপনার লেখার জন্য।
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:০১
200483
শিআনে আলী আলাইহিস সালাম লিখেছেন : প্রত্যেক মুজতাহিদ ইমামের প্রতিনিধি।তবে,সব আয়াতুল্লাদের সম্মতিতে ইমাম খোমেনি সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা।
256870
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:৪৫
ইমরান ভাই লিখেছেন : আপনি কি কেমানিক?? আমার সন্দেহ হচ্ছে!! শিয়ারা তো কাফের আপনি আবার কোন শিয়া??
আল বিদিয়া ওয়ান নিহায়া পড়েছেন??

শিয়ারা কাফের তাই আপনাকে কাফের বলাযায় সন্দেহ ছারা।
২১ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৫৯
200565
শিআনে আলী আলাইহিস সালাম লিখেছেন : আপনাকে সালাম।আপনার মিথ্যাচার আপনার উপর,নিশ্চয় আল্লাহ প্রকৃত সত্য জানেন।
২২ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৭:৫৬
200649
ইমরান ভাই লিখেছেন : নিচে অনেক গুলো লিংক দিছি সেগুলা পড়েন কাজে লাগবে।
শিয়ারাই হচ্ছে এই উম্মতের প্রথম ফিরকা এবং বাতিল এটা সকল আহলে ইলম দের মত।

আল্লাহ আপনাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনুন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File