“এতো বড় পোষ্ট” ও খিলাফাহীনতা
লিখেছেন লিখেছেন বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ ২৪ নভেম্বর, ২০১৫, ০৬:২২:৪৯ সন্ধ্যা
ধরুন শয়তান এর জ্ঞানের ডিগ্রী পিএইচডি পর্যন্ত আর আপনি এইট পাশ করতেই হাপিয়ে উঠছেন। আপনার এই হাপানো জ্ঞান দিয়ে কি শয়তানের সাথে পেড়ে উঠা সম্ভব কস্মিনকালেও?!! আপনি মোটামুটি লেভেলের বলদ হলে বলবেন আল্লাহ আমাদের দেবেই!! এইটা হইল মূসা তুমি আর তোমার রব গিয়ে যুদ্ধ করো অবস্থা আর আমরা এইখানেই বসে রইলাম। আল্লাহ এভাবে বণি ইজরাঈলদেরকে দাস হিসেবে অনেক কষ্টে রেখেছিলেন তাদের এই অবস্থার কারণে।
আবার খৃষ্টানদের থেকে কেন আল্লাহ নবুওয়াত ছিনিয়ে এনে মিল্লাতে ইব্রাহীমের মুহাম্মাদের কাছে দিলেন? আশা করি সূরা বাকারায় অনেকবার পেয়েছেন “তোমরা চিন্তা করো না কেন?”, “তবুও কি তোমরা বুদ্ধি খাটাবে না?” ইত্যাদি ইত্যাদি (আর নবী-রাসূলদের হত্যা তো আছেই)। এই জ্ঞানহীনতার কারণেই আল্লাহ তাদেরকে বারবার আকল খাটাতে বলেছে। যেই আকল না খাটানোর জন্য তারা পথভ্রষ্ট হয়ে জাহান্নামে চলে যায়, সেই একই রোগ আমাদেরও ধরেছে – অত বড় পোষ্ট!!! পড়া সম্ভব না, ছোট হলে ভালো হইত, কয়েক পর্বে দিলে ভালো হতো। শয়তান জয়ী, সে পিএইচডি পাশ আর আমরা ক্লাস এইট পাশেই হাপানো!! আমাদের আকল বা বুদ্ধির অভাব, সেই খৃষ্টানদের মতই পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত হবো।
ভালোভাবে লক্ষ্য করলে বুঝবেন আল্লাহ কিন্তু সূরা ফাতিহায় ইহুদি আর খৃষ্টানদেরকে গজবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্ট বললেও তাদেরকে উল্লেখ করে নি। কারণ? কারণ আমরাও যদি তাদের মত করি তবে আমরাও ঐসব গজবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবো…। তাহলে আমাদের যেই জ্ঞানহীনতার রোগ চলতেছে, সেটা আদতেই কিন্তু ঐ পথভ্রষ্টদের রোগ!!
সুতরাং “এত বড় পোষ্ট” রোগীরা একটু সাবধান হউন…। আল্লাহ আমাদের মত এই সব জ্ঞানহীন রোগীদের খিলাফা দেবে এই কথা মুখে আনাও পাপ।
“নিশ্চয় আমার বান্দাদের মাঝে তারাই আমাকে ভয় করে যারা আলেম(জ্ঞানী)” (আল-কোরআন)।
যেই কুরআন আসছে “ইকরা” দিয়ে, সেই কুরআনের লোকেরাই যখন কুরআন পড়তে চায় না এত বড় বলে, তাফসীর পড়তে চায় না, কুরআন নিয়ে বড় বড় আর্টিকেল দেখলে আতকে উঠে…সেই বলদ জ্ঞানহীন আদম সন্তানদের কেন আল্লাহ খিলাফা দেবেন? আদমের খিলাফা ও শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি-ইতো ‘জ্ঞান’ ছিল; সেখানে “এতো বড় পোষ্ট” রোগীদের কেন খিলাফা দেবেন? এরচেয়ে মার জ্ঞানীদের মার খাওয়াই কি এদের ভাগ্যের কাজ নয়? …যতদিন না জ্ঞানের অন্ধত্ব, জ্ঞানহীনতা ও অজ্ঞানতা না ছাড়বে।
সূরা মূলকের ১০ নম্বর আয়াতে জাহান্নামে যাওয়ার একটা কারণ বলা হয়েছে “মনোযোগ দিয়ে না শোনা ও আকল (বুদ্ধি ) না খাটানো”… আর আমরা মনোযোগ দিয়ে শুনবো কি, পড়বোই বা কি…আর বুদ্ধি খাটানো? একটু চিন্তা করা? --- এতো বড় পোষ্ট!!!!!!! সম্ভব না।
আমরাই নাকি কুরআন প্রেমিক? আমরাই নাকি জ্ঞানের জাতি!! প্রেমিক মানে কি জানেন তো? যে তার প্রিয়ার প্রতি পাগল…প্রিয়ার সবই তার ভালো লাগে…এতে এতো বড় পোষ্টের মত বলে না প্রিয়া…এতো কথা বলো কেন? কারণ এই প্রেমিক জানে যে আল্লাহর কথা(প্রিয়া) তার কাছে মধুর…আল্লাহর বাণীতেই হিদায়াত, খিলাফার চূড়ান্ততা। আল্লাহ যেন আমাদের মুনাফিকদের এই অলস রোগ থেকে মুক্ত করেন…।
জ্ঞানের জাতি আজ জ্ঞানকে ভয় পায়, খিলাফা কি মানুষ দিয়ে চলবে নাকি বুদ্ধি দিয়ে?
আদমের শ্রেষ্টত্ব ও খিলাফা কি জ্ঞানের কারণে নাকি জ্ঞানহীনতার কারণে? …তাইলে আমরা কোন বলদের বেটা যে জ্ঞানকে ভয় পেয়ে খিলাফা খিলাফা বলে চিল্লাই?
জ্ঞানহীন পথে আল্লাহ মুক্তি লিক্ষে রাখেন নাই…যদি থাকতোই তবে আল্লাহ “ইকরা” দিয়ে কুরআন নাযিল না করে আল্লাহ অন্য কিছু দিতো।
আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইলমান নাফিয়ান।
উৎসর্গ ঃ আমাদের সেইসব মুসলিম ভাই ও বোনদের যারা ফেইসবুকের ভালো একটা বড় নোট, স্ট্যাটাস, স্কলার বা দাঈদের বড় একটা সিরিজ লেকচার বা আর্টিকেল বা ব্লগের কোনো বড় লেখা দেখে আতকে উঠেন “বড় পোষ্ট” এর রোগী হিসেবে কিন্তু খিলাফা চান, মুসলিমদের মুক্তি চান কিন্তু জ্ঞানহীনতার রাজ্যে থেকেই!!
বিষয়: বিবিধ
১৭২৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমি কিন্তু নাসিহা দেই নাই ভাই। নাসিহার ভাষাও প্রয়োগ করি না। সেটাকে নাসিহা মনে করলে ভুল করবেন ভাই। আমি সাটায়ার লিখেছি, না বুঝলে আমার কিছু করার নাই ভাই।
আর হ্যা, আমার পোষ্ট পড়া নিয়ে ছিলো না, পোষ্ট বা ফেইসবুকের নোটের নীচের কমেন্টে বড় পোষ্টের প্রতি অমোনযোগিতা নিয়ে ছিল। আশা করি আপনার বা আমার পোষ্টের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি নিয়ে নয়।
এরপরেও যদি খারাপ লাগে যে আমি আপনার পোষ্টে আসি নাই কেন - তাহলে বলতে হবে আমি এই ব্লগের কোনো ভালো লেখাই বাদ দেই না। মান সম্মত কি না সেটা দেখে প্রায় প্রত্যেকটা পোষ্টই পড়ি। আপনার যদি একটা লেখা থাকে কুরআন নিয়ে, সেখানে যদি একজন স্কলারের লেখা পাই একই বিষয়ে, তবে আপনার লেখা আমি পড়ব কেন?
আর আমি এমন কমন বিষয় নিয়ে লেখার চেষ্টা করি না যা এভেইলেবল আছে; কারণ সেটা লেখার দরকার পড়ে না।
ধন্যবাদ ভাই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন