ইসলামিস্টদের মাঝে পাপ বেড়ে যাচ্ছে...অনেক বেশি পরিমানে...অথচ আমরা?
লিখেছেন লিখেছেন বুদ্ধিবৃত্তিক সঞ্চারণ ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৯:৫৩:২৫ সকাল
বিসমিল্লাহীর রাহমানির রাহীম
আজকের ইসলামিস্টদের মাঝে পাপ অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে আগের তুলনায়। কারণ আমাদের বিবেকবোধ ও জ্ঞানহীনতা এবং আমালের যথেষ্ট পরিমাণে অভাব হচ্ছে। এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে।
সূরা ইউসুফ এ – ইউসুফ (আ), ইয়াকুব(আ) এর ঘটনাকে সর্বোত্তম বলে বর্ণনা করেছেন। এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এর মাঝে যদি একটিকে আনি তবে বলতে হবে
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যখন ইউসুফ(আ) এবং ইয়াকুব (আ) কে সহায়তা করেছেন “তখন তারা সর্বদা ও সর্ব প্রথম আল্লাহর কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা করেছেন”। আরেকবার নতুন করে সূরা ইউসুফ পড়ে দেখবেন কি?
আর আমরা? – আমরা যদি কিছু অর্জন করি সেখানে আল্লাহর প্রশংসা না করে নিজেদের কর্মকে জাহির করতে চাই-এভাবে অহংকার বৃদ্ধি করছি আমরা। নিজেদের কর্মকে অন্যদের উপর জাহির করার প্রবণতা প্রায় প্রত্যেকটা ইসলামী সংগঠনের মাঝেই দেখেছি।অথচ যেখানে আরো বেশি আল্লাহর কৃতজ্ঞতা ও দোয়া করার কথা ছিল সেখানেই তারা ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয়। এটা জ্ঞানের ও স্কলারদের সাথে দূরত্বের অভাবেই হয়, হয় বেশি আমালের অভাবে।
এই তো দুই একদিন আগে দেখলাম একজন লিখেছে – তারা যা বুঝেন তা অন্যান্নরা ৫০ বছর পর বুঝেন- এটা অহংকারমূলক উক্তি আমরা ভাবতেই পারি। কিন্তু এখানে সমস্যা কার বলতে পারন?- যিনি বলেছেন এটা তাঁর সমস্যা প্রথমে নয়। এটা তাঁর সংগঠনের সমস্যা, তাদের সিলেবাসের অপর্যাপ্ততা ও আধুনিকায়ন না করার সমস্যা, সমস্যা অধিক পরিমাণে নিজেদের কাজে মনোযোগ না দেওয়া এবং আরো অধিক ভালো কাজের খুজ না করা। অথচ ইনারা যদি বৈশ্বিক ইসলামী আন্দোলনসমূহ, তাদের পরিকল্পনা, কাজ ইত্যাদি দেখতেন সেখানেই বুঝতে পারতেন তারা শত বছর পিছিয়ে আছে তাদের থেকে এবং যুগের সাথে চলা তো দূরের কথা তারা যুগের অনেক পেছনে চলছে। এটাই তাদের জ্ঞানের অভাবের কারণে হয়েছে।
এধরণের আরো উদাহরণ দেওয়া যায়- আমার দেখা মতে এরকম প্রচূর ইসলামী ছেলে রয়েছে যারা ইসলামী আন্দোলনের সাথে খুব ঘনিষ্টভাবেই জড়িতে – এদের অনেকে ফেসবুকের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে প্রচূর পরিমাণে অন্য ইসলামী দলের নামে শুধু গীবত করে বললে ভূল হবে , চরম অপবাদ এবং মিথ্যাও বলে। এদের অনেকের সাথে যখন চলি তাদের দেখা যায় গীবৎ করার সময় আমার থামিয়ে দিতে হয় অথচ কথা ছিল উলটা হওয়ার। কারণ আগেরগুলো –
সিলেবাসের আধুনিকায়ন নেই,
নেই কোরারের ভালো ব্যাখ্যা পড়ার সুযোগ,(আমার প্রিয় ব্লগ দুটি দেখতে পারেন এক্ষত্রে – আলহামদুলিল্লাহ অসাধারণ কাজ দিবে)
অতি মাত্রায় একমুখিতা
গীবত, ও বুহতানের প্রচুরতা,
অতি মাত্রায় সাংগঠনিক কাজ, যা নিজেকে আমালের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য হাসিলের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়,
অন্যান্ন ইসলামী দলের লোকদের সাথে মেশার অভাব, অনেকে তো মেশা হারাম ই মনে করে!
সংগঠনের স্কলারদের অভাব,
অভাব ইসলামী চরিত্র গঠনের জন্য সামগ্রিক ও বিস্তর সিলেবাসের(যার কারণ মানুষ জাহান্নামে যাবে আবার জান্নাতেও যাবে)
--- এসব পাপের কারণে বিবাহ করার পর, চাকরি পাওয়ার পর তারা আর ইসলামের কাজে মনোযোগ দিতে পারে না, আর পারলেও ফলপ্রসু হয় না- কারণ পাপ-আল্লাহর অবাধ্যতায় আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ভালো হয় না।
আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন, জানার ও মানার তাওফিক দিন।
নীচের বইটি পড়লে আশা করি জীবনের অনেক উন্নতি হবে- একটু আমাল করার চেষ্টা করেই দেখি না...কত আশ্চর্যরকম উন্নতি হয় আমাদের।
জিভের আপদ- আব্দুল হামীদ ফায়যী - http://www.mediafire.com/view/?ktc8aclzg2h72ep
একটা উদাহরণ দিয়ে শেষ করি - মুরাবিত আল হাজ্জ, মৌরতানিয়ার একজন উচ্চ মানের স্কলার। তিনি একবার হাদিস পড়াচ্ছিলে- যেখানে একটি পাবিহীন ঘোড়ার কথা আসে। ছাত্র বলে ফেলে অমুকের ঘোড়ার মত? – তখন মুরাবিত আল হাজ্জ বলেন – গীবত করতে চাইলে আমার কাছে আর পড়তে আসবে না ! সুবহানাল্লাহ !!
আল্লাহর রাসূল সা এর একটি হাদিসে অক্ষম বা ডিজাবল ঘোড়া আসছে কিন্তু সেটা অমুকেরটার মত ডিজাবল বলবে কেন?, তাঁর ঘোড়ার গীবত করবে কেন?
...
পশু পাখিরও গীবত হয় – কি চমৎকার তাদের ইসলাম আর আমরা ইসলাম পালন করি, ইসলামী দল করি কিন্তু আমাদের অবস্থান কোথায়? একটু ভেবে দেখেছি কি?
বিষয়: বিবিধ
১১৩৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ পাক সকলকে এই বিষয়টি বুঝে আমল করার তৌফিক দান করুন- আমীন।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন