“পাবার মতো চাইলে পাওয়া যায়” ৩৫পর্ব
লিখেছেন লিখেছেন কিশোর কারুণিক ৩০ আগস্ট, ২০১৫, ০৭:৪১:৪১ সকাল
“পাবার মতো চাইলে পাওয়া যায়”
কিশোর কারুণিক
উপন্যাস-৩৫পর্ব
“তাই।” বলে শ্রাবস্তীও যেন মনে মনে হাসল। মুখটা পূর্ণিমা চাঁদের মত উজ্জ্বল হয়ে উঠল। ওর প্রতি এখন একটুও রাগ নেই আমার । ব্যথা কোথায় গেল বুঝতে পারছি না। ওর হাতের স্পর্শে ব্যথা যেন হারিয়ে গেছে।
বললাম, “হাতটা ধুয়ে আসুন।”
“হ্যাঁ,যাই এবার।” বলে শ্রাবস্তী বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেল। আমি অপরিচিত এক ছেলে হওয়া সত্ত্বেও শ্রাবস্তী যেমন ব্যবহার বা শিষ্টাচার দেখাল নিশ্চয় ওর আপন ঘনিষ্ট জন কেউ হলে এর চেয়ে বেশি করত। কেন জানি মনে হচ্ছে শ্রাবস্তীর মনটা খুব ভার। আসলে আমি খুব বেশি-বেশি ভাবছি ওর সম্মন্ধে।
এদিকে তনয় বাইরে চলে গেল। কখন আসবে কে জানে। কমলালেবু আর বাদামগুলো ডাইনিং টেবিলের উপর। এক কাজ করি শ্রাবস্তী ফিরে আসার আগেই কমলালেবুর খোসা ছাড়িয়ে প্লেটের উপর রাখি। ডাইনিং টেবিলের কাছে গিয়ে এক চেয়ারে বসে আমি কমলালেবুর খোসা ছাড়ানো শুরু করলাম। চারটা লেবুর খোসা ছাড়ানো হলো। শ্রাবস্তী বাথরুম থেকে এসে আমার পেছনে দাঁড়িয়ে বললো, “বাহ! আপনি তো ভালোই খোসা ছাড়াতে পারেন।”
মৃদু হাসলাম। বসুন বলে বাদামের প্যাকেটটা ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। শ্রাবস্তী বসল চেয়ারে। মুচকি এক গাল হাসি দিয়ে বলল, “আমাকে দেন, বাকিগুলো আমি ছাড়াই।”
চোখে চোখ পড়ল। আমারও একটু হাসি পেল।
“আপনি বাদামগুলোর খোসা ছাড়ানÑ”বলে বাদামের প্যাকেটে দৃষ্টি দিলাম। শ্রাবস্তী বাদামের প্যাকেটটা নিয়ে দু’হাত দিয়ে মচমচ শব্দ কওে বাদামগুলো খোসা থেকে আলাদা করতে লাগল।
২/১ মিনিট চুপচাপ কেটে গেল। এর মধ্যে দুই-তিনবার দু’জন-দু’জনের দিকে তাকিয়েছি। প্রায় চোখে চোখ পড়েছে। মৃদু হাসি ভর করল দু’জনেরই মুখে। ও কী বলতে যেয়েও বলা হলো না। শ্রাবস্তীর বাদামের খোসা ছাড়ানো প্রায় অর্ধেক শেষ?। শ্রাবস্তী হাত দিয়ে ইশারা করল। ও যেন কী বলবে। আমি ঘাড় একটু বাঁকা করে তাকালাম।
লজ্জাশীল ভঙ্গিমায় শ্রাবস্তী বললো, “বলছিলাম মানে..”
“বলেন, লজ্জা পাবার কোন কারণ নেই।”
“বলছেন!”
আমি নিঃসংশয় ভাব দেখিয়ে বললাম, “হ্যাঁ।”
“মানে আমরা এতক্ষণ এক সাথে আছি, কিন্তু পরিচয় তো..”
আমি বললাম, “হলো না, তাই তো?”
“হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন।”
বিষয়: সাহিত্য
৯৮৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন