“পাবার মতো চাইলে পাওয়া”
লিখেছেন লিখেছেন কিশোর কারুণিক ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১০:২১:২১ রাত
“পাবার মতো চাইলে পাওয়া”
--কিশোর কারুণিক
উপন্যাস-৪পর্ব
“এই যে কলাওয়ালা, এই-যে।”
শ্রাবস্তী আবার কলাওয়ালাকে ডাকলো। কলাওয়ালা হয়তো পেছনের ডাক শুনতে পায়নি। আমি বাধ্য হয়েই কলাওয়ালাকে একটু উচ্চস্বরে ডাকলাম।
“এই যে-কলাওয়ালা ভাই, এই-যে।”
কলাওয়ালা আমার দিকে তাকালো। ইশারা করে দেখিয়ে দিলাম শ্রাবস্তীকে।
মনের ভিতর কেমন একটা ভাব জাগলো । কলাওয়ালা পেছন ফিরে শ্রাবস্তীর কাছে গেলো, দাম কষাকষি হচ্ছে কলওয়ালার সাথে শ্রাবস্তীর। কলাওয়ালা আমার দিকে তাকাচ্ছে। ও-কি আমার শ্রাবস্তীর আত্বীয় বলে ভাবছে? শ্রাবস্তীর মনের অজান্তে যেন আমার দিকে তাকাচ্ছে। চোখে চোখ পড়লে শ্রাবস্তী মুখ কলার ঝুড়ির পানে নিচু করে নিলো। আমি কলাওয়ালার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, “কলা কত করে হালি?”
“দশ টাকা।”
“দাম বেশি বলা হচ্ছে, আট টাকা করে হবে?”
“জ্বি-না।”
শ্রাবস্তী বললো, “আট টাকা করে দিলে আমি চার হালি নিতাম।” তবে কী , আমি দাম বলার আগে শ্রাবস্তীও কলা আট টাকা হালি বলেছে!
“না-আপা-আট টাকা করে দিতে পারলে কথা খরচ করতাম না।”
শ্রাবস্তী বললো, “ঠিক আছে দিন।”
কলাওয়ালা শ্রাবস্তীর হাতে চার হালি কলা দিলো। বোকার মত দঁিড়িয়ে কী করবো, আমিও সম্মান বাঁচাতে এক হালি কলা নিলাম।
শ্রাবস্তী ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে একশো টাকার নোট বের করে “দাম নিন” ব’লে কলাওয়ালা দিকে নোটটা বাড়িয়ে দিল।
কলাওয়ালা বলল, ভাঙতি যে নেই।”
আমি মানিব্যাগ বের করতেই কলাওয়লা বলল, “ভাই টাকাটা আপনার কাছে ভাঙতি হবে?”
মানিব্যাগ হাতড়িয়ে বললাম,“ না-হবে না।”
শ্রাবস্তী ও কলাওয়ালা যেন বিপদে পড়লো। আশে পাশে কোন দোকানও নেই। আমি পঞ্চাশ টাকাÍ একটা নোট বেত করে কলাওয়ালাকে দিলাম। শ্রাবস্তী সংকোচ বোধ করছিল। তাই বললাম, “আমি তো আপনার পাশেই বসে আছি। পরে ভাঙতি করে আমাকে দিয়ে দেবেন।”
এবার শ্রবস্তী কিছু বললো না। কলাওয়ালা চলে গেল। একটু আড়াল হয়ে কলা চারটি খাওয়া শেষ করাম। শ্রাবস্তীরও বুঝি খুব খুধে পেয়েছির। একের পার এক কলার খোসা জানালা দিয়ে বাইরে ফেলছিল । পকেট থেকে সানগ্লাসটা বের করে চোখে দিলাম।
ভালোই লাগছে দিকে-ওদিক তাকাতে। একটু সামনেই বড় একটা বটগাছ। দূরে দেখা যাচ্ছে কয়েকটা মাটির ঘর। মোবাইলটা পকেট থেকে বের করে শ্রাবস্তীর মোবাইল নম্বরে ডিজিট টিপলাম। মোবাইল কানে ধরতেই মিষ্টি সুন্দর এক কণ্ঠস্বর শুনলাম, “হ্যালো।”
চলবে
বিষয়: সাহিত্য
১১১৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ভালো লাগলো| ধন্যবাদ|
মন্তব্য করতে লগইন করুন