সুসংবাদ! সুসংবাদ! সুসংবাদ! চাঁদ দেখা গেছে! শুক্রবার বাংলাদেশ সহ সারা পৃথিবীতে ঈদুল ফিতর!!
লিখেছেন লিখেছেন হামজা ১৭ জুলাই, ২০১৫, ১২:১৯:৫০ রাত
তাকাব্বাল আল্লাহ্, মিন্না ওয়া মিনকুম।
আলহামদুলিল্লাহ্ #সউদি আরব থেকে চাঁদ দেখার সংবাদ এসেছে। শুক্রবার বাংলাদেশ সহ সারা পৃথিবীতে পবিত্র ঈদ উল ফিতর। ঢাকায় ঈদ এর প্রধান জামাত পান্থ পথে,
#সামুরাই কমিউনিটি সেন্টার (বসুন্ধরা মার্কেটের অপজিটে)
প্রথম জামাত সকাল #পৌনে আঁটটায়। দ্বিতীয় জামাত সকাল পৌনে নয়টায়।
মেয়েদের জন্য ব্যবস্থা রয়েছে
বিষয়: বিবিধ
৩৬২৫ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার এই লেখায় বিস্তারিত তথ্য দিয়েছি :
http://www.monitor-bd.net/blog/blogdetail/detail/1864/fakhrul/67199
আপনার পোস্টটা আরো আগে দেওয়া উচিত ছিল ।
জাজাকাল্লাহ ।
তারা রোজা মনে কইরা ঘুমাইয়া পড়িছে অলরেডি তারা এহনও ঘুমে। সকালে সেহেরী খাইয়া তারা সিদ্ধান্ত নিবে রোজা কন্টিনিউ করিবে নাকি রোজা ভাংগিয়া ইদ করিবে।
আমনেরেও ইদ মোবারক
জবাব: এই প্রশ্নের জবাবটি পুরোপুরি ভৌগলিক জ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত। তাই এ প্রশ্নের জবাব জানার পূর্বে ভৌগলিক কিছু ধারণা অর্জন একান্তই দরকার। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই জানা প্রয়োজন, প্রতি চান্দ্র মাসের নতুন চাঁদ সকল সময় পৃথিবীর কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলে দৃষ্টি গোচর হবে? না কি বিভিন্ন মাসের চাঁদ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দেখো যাবে?
নুতন চাঁদ পৃথিবীর কোন অঞ্চলে সর্বপ্রথম দেখা যাবে আমাদেরকে সর্বাগ্রে সে ব্যাপারে যথাযথ জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এ বিষয়ে ভৌগলিক গবেষণার ফলাফল হলো প্রতি চান্দ্র মাসের ১ তারিখের চাঁদ সব সময়ই সর্বপ্রথম মধ্য প্রাচ্যের কোন না কোন দেশে দৃষ্টিগোচর হবে। কারণ চান্দ্র মাসের প্রথম দিনে চাঁদ এবং সূর্য প্রায় একই সময়ে পূর্ব দিগন্তে (জাপানে) উদিত হয়। এবং উদয় স্থলের পূর্ণ বিপরীত মেরুতে (দক্ষিণ-পশ্চিম আটলান্টিকে) সূর্য অস্ত যাওয়ার প্রায় ৪৯ মিনিট পরে চাঁদ অস্ত যায়। অর্থাৎ সর্ব পশ্চিম দিগন্তে প্রথম তারিখের চাঁদ সূর্য অস্ত যাওয়ার পরেও প্রায় ৪৯ মিনিট আকাশে থাকে। এ সময় সূর্যাস্তের পর দিগন্তে চাঁদের যে কিঞ্চিত অংশটুকু সূর্যের আলোয় প্রতিফলিত হয় তাকেই আমরা নুতন চাঁদ হিসেবে দেখি। প্রথম দিনের চাঁদ সূর্যের ৪৯ মিনিট পরে অস্ত যায় বলেই ২য় দিনের চাঁদ সূর্য উদয়ের ৪৯ মিনিট বিলম্বে পূর্বাকাশে উদিত হয়। কারণ আকাশের যে দিগন্ত রেখা আটলান্টিকের জন্য অস্তস্থল, আবার সে দিগন্ত রেখাই জাপানের জন্য উদয়স্থল। এভাবে প্রতি দিনই উদয়ের বিলম্বতায় ৪৯ মিনিট করে যুক্ত হতে থাকে। একারণেই ২৯ দিনে চাঁদকে ২৯টি স্থানে উদয় হতে দেখা যায়। আবার সাড়ে ২৯ দিন পরে চাঁদ ২৪ ঘন্টা ঘুরে এসে পরবর্তী চন্দ্র মাসের ১ তারিখে আবার নুতন করে সূর্যের সঙ্গে প্রায় একই সময় উদিত হয়। গবেষণালব্ধ আলোচিত তথ্যগুলোকে সঠিক প্রমাণিত করছে এ হিসেবটি।
প্রতি দিনের চাঁদ উদয়ে বিলম্ব ঘটে ৪৯ মিনিট। প্রতি চান্দ্র মাসের পরিধি হচ্ছে সাড়ে ২৯ দিন ৬০ মিনিট = ১ ঘন্টা। সুতরাং (৪৯ X ২৯১/২ দিন / ৬০ মিনিট) = ২৪ ঘন্টা। এভাবেই প্রতি সাড়ে ২৯ দিনে চাঁদ ২৪ ঘন্টা সময় অতিক্রম করে পরবর্তী চান্দ্র মাসের ১ তারিখে আবার পূর্বের স্থানে সূর্য উদয়ের সমান সময়ে উদিত হয়।
সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, জাপান ও আটলান্টিকের মধ্যকার ১৮০ ডিগ্রী পথ অতিক্রম করতে সূর্য ও চাঁদ অস্ত যাওয়ার মধ্যে ব্যবধান হয় ৪৯ মিনিট।
ভৌগলিক ভাবে প্রমাণিত যে, গ্রীনিচমান সময়ের (GMT) দিক থেকে পৃথিবীর সর্ব প্রথম সূর্য উদয়ের দেশ জাপান। যার ভৌগলিক অবস্থান ১৪২ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং ৩৭.৫ ডিগ্রী উত্তর অক্ষাংশ। এ উদয় স্থল হিসেবে পূর্ণ বিপরীত মেরুর অস্তস্থল হল দক্ষিণ পশ্চিম আটলান্টিক মহাসাগর। যার ভৌগলিক অবস্থান ৩৮ ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমাংশ এবং ৩৭.৫ দক্ষিণ অক্ষাংশ। এ উদয় ও অস্ত স্থলের মধ্যে সময়ের ব্যবধান ১২ ঘন্টা এবং অবস্থানগত দূরত্ব ১৮০ ডিগ্রী। কারণ প্রতি ১ ডিগ্রীতে সময়ের ব্যবধান ৪ মিনিট।
চান্দ্র মাসের ১ তারিখে চাঁদ ও সূর্য প্রায় একই সময়ে জাপানে উদিত হয়ে ১৮০ ডিগ্রী পথ অতিক্রম করে সন্ধ্যায় সূর্য যখন আটলান্টিকে অস্ত যায়, চাঁদ তার পরেও আটলান্টিকের আকাশে থাকে প্রায় ৪৯ মিনিট। ১৮০ ডিগ্রী পথ অতিক্রম করতে যদি সূর্য ও চাঁদের অস্ত যাওয়ার মধ্যে সময়ের ব্যবধান হয় ৪৯ মিনিট তাহলে এর অর্ধেক পথ অর্থাৎ ৯০ ডিগ্রী পথ অতিক্রম করতে সূর্য ও চাঁদের অস্ত যাওয়ার মধ্যে সময়ের ব্যবধান হবে সাড়ে ২৪ মিনিট। মধ্য প্রাচ্যের (ইয়েমেন, রিয়াদ ও বাগদাদ) অবস্থান ৪৫ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে হওয়ায় উদয় স্থল জাপান ও অস্ত স্থল আটলান্টিকের সঙ্গে মধ্য প্রাচ্যের ভৌগলিক অবস্থানের ব্যবধান ৯০ ডিগ্রী। যে কারণে মধ্য প্রাচ্যে যখন সূর্যাস্ত হয় তার পরেও চান্দ্র মাসের ১ তারিখের চাঁদ মধ্য প্রাচ্যের আকাশে থাকে ২০ থেকে ২৫ মিনিট। ফলে চান্দ্র মাসের ১ তারিখের চাঁদ সকল সময়ে সর্বপ্রথম মধ্য প্রাচ্যেই দৃষ্টি গোচর হবে। এবং ক্রমান্বয়ে পশ্চিমাঞ্চলীয় দেশ সমূহে সূর্যাস্তের পরে চাঁদের স্থায়িত্ব আকাশে বেশি সময় থাকবে। যার ফলে চান্দ্র মাসের ১ তারিখে ঐ সকল পশ্চিমাঞ্চলীয় দেশে চাঁদ ক্রমান্বয়ে বেশী সময় ধরে দেখা যাবে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্য থেকে পূর্বাঞ্চলীয় দেশসমূহ ক্রমান্বয়ে উদয় স্থলের নিকটবর্তী হওয়ায় সূর্যাস্তের পরে এখানকার আকাশে ১ তারিখের চাঁদের স্থায়িত্ব কম সময় থাকে এবং চাঁদ দিগন্তে আকাশে কম উঁচুতে থাকে বলেই উদয়স্থলের নিকটবর্তী দেশ সমূহ পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, চীন বা জাপানে কখনই চান্দ্র মাসের ১ তারিখের চাঁদ দেখা যাবে না।
উল্লেখিত ভৌগলিক গবেষণার আলোচনায় প্রমাণিত যে, প্রতি চান্দ্র মাসের ১ তারিখের চাঁদ সব সময় সর্বপ্রথম মধ্যপ্রাচ্যের কোন না কোন দেশে দেখা যাবে।
আর তারপরেও যদি অন্য কোথাও চাঁদ দেখা যায় অর্থাৎ বিশ্বের যেখানেই আগে চাঁদ দেখা যাক না কেন সেই অনুযায়ী সারা বিশ্ব বাসীকে একই বারে/দিনে আমল করতে হবে, যা আমরা আগে আলোচনা করেছি।
যেহেতু প্রমাণিত যে, নুতন চাঁদ সকল সময়ই মধ্য প্রাচ্যের যে কোন দেশে সর্ব প্রথম দৃষ্টি গোচর হবে। তাই মধ্যপ্রাচ্যের স্থানীয় সময়ের সবচেয়ে বেশী অগ্রগামী সময়ের দেশ জাপানবাসীর জন্য ১ম তারিখের রোযা রাখার সম্ভাব্যতা সর্বাধিক প্রশ্ন সাপেক্ষ। কিন্তু গবেষণায় সুপ্রমাণিত যে, ঐ দিন জাপানবাসীর জন্যও রোযা রাখা সম্ভব। যেমন বছরের সবচেয়ে ছোট রাত জুলাই মাসকেও যদি আলোচনায় আনা হয় তবে দেখা যাবে, জুলাই মাসে সর্ব শেষ সূর্যাস্ত হয় ৬টা ৫৫ মিনিটে। তাহলে মধ্য প্রাচ্যে সূর্যাস্তের পর পর সন্ধ্যা ৭টায় নুতন চাঁদ দেখা গেল। ঐ সময় পৃথিবীর সর্বপূর্ব স্থান জাপানে রাত ১টা ২৮ মিনিট। কারণ মধ্যপ্রাচ্য ও জাপানের মধ্যে অবস্থানগত দূরত্ব ৯৭ ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। ফলে স্থানীয় সময় মধ্য প্রাচ্যের স্থানীয় সময়ের চেয়ে ৬ঘন্টা ২৮মিনিট অগ্রগামী। তাহলে ফলাফল দাড়াল মধ্য প্রাচ্যে সন্ধ্যা ৭টায় চাঁদ দেখা গেলে জাপানে সে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছতেছে রাত ১টা ২৮ মিনিটে। অথচ জুলাই মাসে সাহরী খাওয়ার সর্বনিম্ন সময় হলো ৩টা ৪৩ মিনিট। তাহলে জাপানবাসী চাঁদ উদয়ে সংবাদ পাওয়ার পরেও রোযা রাখতে সাহরী খাওয়ার জন্য সময় পাচ্ছেন প্রায় ২ ঘন্টা ১৫ মিনিট। যা সাহরীর জন্য কোন বিবেচনায়-ই অপ্রতুল নয়। উপরন্ত ঐ সময়ের মধ্যে তারাবীর নামায আদায় করাও সম্ভব। আর পশ্চিমাঞ্চলীয় দেশের জন্য আমল করা কোন ভাবেই কষ্টকর নয়। কারণ যত পশ্চিমাঞ্চলীয় দেশের দিকে আসা হবে তারা চাঁদ উদয়ের সংবাদের পরে সাহরী খাওয়ার জন্য ততবেশী সময় পাবে।
(২) যদি প্রশ্ন করা হয়, আমরা বাংলাদেশে যখন ইফতার করি তখন আমেরিকায় ভোর, আবার আমরা যখন সাহরী খাই তখন আমেরিকায় বিকাল, তাহলে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যে একই দিনে আমল করা কি করে সম্ভব?
জবাব: অত্র পশ্নের উত্তর বুঝার জন্য দু’টি মৌলিক বিষয় গভীর ভাবে স্মরণ রাখতে হবে। এক: চাঁদের তারিখ সংশ্লিষ্ট আমলগুলো সমগ্র পৃথিবীতে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবেনা। বরং একই দিনে (অর্থাৎ শুক্র, শনি, রবি----------বুধ বা বৃহস্পতিবারে) এবং একই তারিখে অনুষ্ঠিত হবে। দুই: যেহেতু সব সময়েই মধ্যপ্রাচ্যের কোন না কোন দেশে সর্বপ্রথম নুতন চাঁদ দেখা যাবে তাই চাঁদের তারিখ নির্ভর সকল ইবাদাত পালনের ক্ষেত্রে পৃথিবীর যে কোন দেশের সময়ের হিসেব মধ্যপ্রাচ্যের স্থানীয় সময়ের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। বাংলাদেশ বা অন্য কোন দেশের সময়ের সঙ্গে নয়।
তাহলে মনে করা যাক, বৃহস্পতিবার দিবাগত সন্ধ্যা ৭টায় মধ্য প্রাচ্যে পবিত্র রমযানের চাঁদ দেখা গেল এবং প্রমাণিত হল শুক্রবার পহেলা রমযান। এখন সমগ্র বিশ্বে পহেলা রমযান হিসেবে শুক্রবারে প্রথম রোযা রাখা যায় কিনা এটাই মূল বিবেচনার বিষয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় যখন মধ্য প্রাচ্যে চাঁদ দেখা গেল তখন ঐ চাঁদ দেখার সংবাদ ১৪২ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত সর্বপ্রথম সূর্যোদয়ের দেশ জাপানে পৌঁছবে জাপানের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ২৮মিনিটে। অথচ সাহরীর সর্বশেষ সময় সীমা কখনই ৩টা ৪৩মিনিটের নিম্নে আসেনা। তাহলে জাপানবাসী বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে চাঁদ উদয়ের সংবাদ শুনে শুক্রবারে রোযা রাখার জন্য সাহরী খেতে সময় পাচ্ছেন (৩:৪৩মিঃ - ১:২৮মিঃ) ২ঘন্টা ১৫মিনিট। এমনিভাবে ১২০ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ ইন্দোনেশিয়ার সুমবা, ফ্লোরেস, ফিলিপাইন, তাইওয়ান, চীনের শেংইয়াং, হাইলার, ইনহো, রাশিয়ার টালুমা, খরিনটস্কি, সুখানা এবং অলিনেক অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টায়। ফলে বছরের সব চেয়ে ছোট রাতেও চাঁদ উদয়ের সংবাদ পাবার পরে শুক্রবার পহেলা রমযানের রোযা রাখতে সাহরী খাওয়ার জন্যে তারা সময় পাবে ৩ ঘন্টা ৪৩ মিনিট। অতএব তাদের জন্যে শুক্রবার রোযা রাখা সম্ভব। এরপরে ১০৫ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ তেলাকবেটং, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, লাওস, চীনের ইপিং, চেংটু, মোঙ্গলিয়া এবং রাশিয়ার মধ্য সাইবেরিয়ান অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টায়। ফলে তারাবীহ ও সাহরীর জন্যে তারা সময় পাবে ৪ ঘন্টা ৪৩ মিনিট। তারপরে ৯০ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ বাংলাদেশ, ভুটান, চীনের লাসা, টুরপান, ফাইয়ুন, রাশিয়ার আবাজা অচিনিস্ক, নগিনস্কি অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১০টায়। ফলে তারাবীহ ও সাহরীর জন্যে তারা সময় পাবে ৫ ঘন্টা ৪৩ মিনিট এভাবে ৭৫ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত দেশ ভারতের দিল্লী, কাশ্মীর, কিরগিজিয়া, পূর্বপাকিস্তানে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে ঐরাত ৯টায় এবং ৬০ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত দেশ পাকিস্তানের করাচী, আফগানিস্তান, পূর্ব ইরান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তানে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে ওখানকার স্থানীয় সময় রাত ৮টায়। তাহলে প্রমাণিত হল মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে জাপান পর্যন্ত পূর্ব গোলার্ধের সকল দেশে শুক্রবার রমজান মাসের প্রথম রোযা বা পহেলা রমযানের রোযা রাখা সম্পূর্ণ সম্ভব।
এবার পশ্চিমাঞ্চলীয় দেশ নিয়ে আলোচনা করা যাক। ৪৫ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্যে যখন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় রমযানের চাঁদ দেখা গেল তখন ৩০ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ দক্ষিন আফ্রিকার ডারবান, জিম্বাবুই, জাম্বিয়ার বেলা, তানজানিয়ার বরুনডি, সুদান, মিসর, তুরস্কের বুরসা, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার লেলিন গ্রাদ ইত্যাদি অঞ্চলে উক্ত চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে ঐ অঞ্চল সমূহের স্থানীয় সময় বিকাল ৬টায়। ফলে চাঁদ উদয়ের সংবাদ পাবার পরে শুক্রবার ১ লা রমযানের প্রথম রোযা রাখতে তারা সময় পাবেন ৯ ঘন্টা ৪৩ মিনিট। এমনি ভাবে ১৫ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ সমূহে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায়। ০ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ টগো, মালি, আলজেরিয়ার রেগান, ওরান, স্পেনের ভ্যালেনসিয়া, ফ্রান্সের বদৌস ও প্যারিস এবং লন্ডন অঞ্চল সমূহে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায়। আরো পশ্চিমে ১৫ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ সেনেগাল, মৌরতানিয়ার নৌয়াকচট, পশ্চিম সাহারা, পূর্ব আইসল্যান্ড ইত্যাদি অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায়। এমনি করে ৩০ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমায় দুপুর ২টায়, ৪৫ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমায় দুপুর ১টায়, ৬০ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমাংশে পূর্ব আর্জেটিনায়, প্যারাগুয়ে, মধ্য ব্রাজিলে, পূর্ব ভেনিজুয়েলায়, পূর্ব কানাডায় এবং পশ্চিম গ্রীনল্যান্ডে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায়। এমনি করে ৭৫ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমায় সংবাদ পৌঁছবে বেলা ১১টায়। ৯০ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমায় সংবাদ পৌঁছবে বেলা ১০টায়। ১০৫ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমার দেশ সমূহ মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্রের আলবুক্য়ার্ক, ডেনভার, সিয়েন, মাইলস্ সিটি এবং মধ্য কানাডীয় অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে এসব অঞ্চলের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায়। এমনি ভাবে সর্বশেষ ১৮০ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ, আলিউটিয়ান দ্বীপপুঞ্জে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে সেখানের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায়। এবং উল্লেখিত সকল দ্রাঘিমায় অবস্থিত দেশ সমূহের অধিবাসীরা জানবে যে, মধ্য প্রাচ্যে বৃহস্পতিবার দিবাগত সন্ধ্যা ৭টায় নুতন চাঁদ দেখার কারণে পহেলা রমযান হচ্ছে শুক্রবার।
অতএব মধ্যপ্রাচ্য থেকে পশ্চিম দ্রাঘিমার দেশগুলো যথাক্রমে বৃহস্পতিবার দিনের অংশ ও পূর্ণদিন অতিক্রমের পরে স্থানীয় ভাবে যে দেশে যখন শুক্রবার শুরু হবে সে দেশে তখন শুক্রবারে পহেলা রমজানের প্রথম রোযা পালন করবে। তাহলে প্রমাণিত হল মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে পশ্চিম গোলার্ধের সকল দেশে শুক্রবার রমজান মাসের প্রথম রোযা বা পহেলা রমজানের রোযা করা সম্পূর্ণ সম্ভব।
উল্লেখিত আলোচনার সারকথা হলো শুক্রবার দিবসটি জাপানে শুরু হবে মধ্যে প্রাচ্যের ৬ঘন্টা ২৮মিনিট পূর্বে এবং পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হবে মধ্য প্রাচ্যের স্থানীয় সময়ের ১৫ঘন্টা পরে। কিন্তু দিন একটিই তাহল শুক্রবার। তবে উভয় স্থানে দিন ও তারিখ হবে অভিন্ন। অতএব জাপানে শুক্রবারের রোযা শুরু হবে পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রের ২৩ঘন্টা পূর্বে। আবার পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে রোযা শুরু হবে জাপানের স্থানীয় সময়ের ২৩ঘন্টা পরে। যেমন আমাদের বাংলাদেশে আমরা রোযা রাখলাম শুক্রবার। কিন্তু পাবর্ত্য চট্টগ্রামে সাহরীর শেষ সময় যদি হয় ৪টা ৩০মিনিট, তবে রাজশাহীতে সাহরীর শেষ সময় হবে আরো ১৩ মিনিট পরে অর্থাৎ ৪টা ৫৩ মিনিট। তাহলে বাংলাদেশে শুক্রবারের রোযা পার্বত্য চট্টগ্রামে শুরু হল ১৩ মিনিট পূর্বে এবং রাজশাহীতে শুরু হল ১৩ মিনিট পরে। ঠিক তেমনি সমগ্র পৃথিবীতে রোযা শুরু ও শেষ হওয়ার সময় স্থানীয় সময় অনুপাতে আগ-পিছ হলেও রমজান মাসের রোযা শুরুর দিনের বার ও তারিখ হবে সারা পৃথিবীতে অভিন্ন বা একই। অতএব সমগ্র পৃথিবীতে একই বার ও তারিখে রমজান মাসের প্রথম রোযা শুরু করা সম্পূর্ণ সম্ভব।
এবার আসুন ঈদুল ফিতরের হিসাব করি। ঠিক একই ভাবে, মনে করা যাক, বৃহস্পতিবার দিবাগত সন্ধ্যা ৭টায় মধ্য প্রাচ্যে পবিত্র ঈদের চাঁদ দেখা গেল এবং প্রমাণিত হল শুক্রবার ঈদ। এখন সমগ্র বিশ্বে পহেলা শাওয়াল হিসেবে শুক্রবারে ঈদ করা যায় কিনা এটাই মূল বিবেচনার বিষয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় যখন মধ্য প্রাচ্যে চাঁদ দেখা গেল তখন ঐ চাঁদ দেখার সংবাদ ১৪২ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত সর্বপ্রথম সূর্যোদয়ের দেশ জাপানে পৌঁছবে জাপানের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ২৮মিনিটে। তাহলে জাপানবাসী বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে চাঁদ উদয়ের সংবাদ শুনে শুক্রবারে ঈদ করবে।
এমনিভাবে ১২০ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ ইন্দোনেশিয়ার সুমবা, ফ্লোরেস, ফিলিপাইন, তাইওয়ান, চীনের শেংইয়াং, হাইলার, ইনহো, রাশিয়ার টালুমা, খরিনটস্কি, সুখানা এবং অলিনেক অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টায়। ফলে বছরের সব চেয়ে ছোট রাতেও চাঁদ উদয়ের সংবাদ পাবার পরে শুক্রবার ঈদ করতে পারবে। অতএব তাদের জন্যে শুক্রবার ঈদ করা সম্ভব। এরপরে ১০৫ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ তেলাকবেটং, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, লাওস, চীনের ইপিং, চেংটু, মোঙ্গলিয়া এবং রাশিয়ার মধ্য সাইবেরিয়ান অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টায়। তারপরে ৯০ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ বাংলাদেশ, ভুটান, চীনের লাসা, টুরপান, ফাইয়ুন, রাশিয়ার আবাজা অচিনিস্ক, নগিনস্কি অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১০টায়। এভাবে ৭৫ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত দেশ ভারতের দিল্লী, কাশ্মীর, কিরগিজিয়া, পূর্বপাকিস্তানে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে ঐরাত ৯টায় এবং ৬০ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত দেশ পাকিস্তানের করাচী, আফগানিস্তান, পূর্ব ইরান, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তানে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে ওখানকার স্থানীয় সময় রাত ৮টায়। তাহলে প্রমাণিত হল মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে জাপান পর্যন্ত পূর্ব গোলার্ধের সকল দেশে শুক্রবার পহেলা শাওয়াল ঈদ করা সম্পূর্ণ সম্ভব।
এবার পশ্চিমাঞ্চলীয় দেশ নিয়ে আলোচনা করা যাক। ৪৫ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্যে যখন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় ঈদের চাঁদ দেখা গেল তখন ৩০ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ দক্ষিন আফ্রিকার ডারবান, জিম্বাবুই, জাম্বিয়ার বেলা, তানজানিয়ার বরুনডি, সুদান, মিসর, তুরস্কের বুরসা, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার লেলিন গ্রাদ ইত্যাদি অঞ্চলে উক্ত চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে ঐ অঞ্চল সমূহের স্থানীয় সময় বিকাল ৬টায়। ফলে চাঁদ উদয়ের সংবাদ পাবার পরে শুক্রবার ১ লা শাওয়াল ঈদ করবেন । এমনি ভাবে ১৫ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ সমূহে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায়। ০ডিগ্রী পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ টগো, মালি, আলজেরিয়ার রেগান, ওরান, স্পেনের ভ্যালেনসিয়া, ফ্রান্সের বদৌস ও প্যারিস এবং লন্ডন অঞ্চল সমূহে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায়। আরো পশ্চিমে ১৫ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ সেনেগাল, মৌরতানিয়ার নৌয়াকচট, পশ্চিম সাহারা, পূর্ব আইসল্যান্ড ইত্যাদি অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায়। এমনি করে ৩০ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমায় দুপুর ২টায়, ৪৫ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমায় দুপুর ১টায়, ৬০ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমাংশে পূর্ব আর্জেটিনায়, প্যারাগুয়ে, মধ্য ব্রাজিলে, পূর্ব ভেনিজুয়েলায়, পূর্ব কানাডায় এবং পশ্চিম গ্রীনল্যান্ডে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায়। এমনি করে ৭৫ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমায় সংবাদ পৌঁছবে বেলা ১১টায়। ৯০ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমায় সংবাদ পৌঁছবে বেলা ১০টায়। ১০৫ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমার দেশ সমূহ মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্রের আলবুক্য়ার্ক, ডেনভার, সিয়েন, মাইলস্ সিটি এবং মধ্য কানাডীয় অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে এসব অঞ্চলের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায়। এমনি ভাবে সর্বশেষ ১৮০ডিগ্রী পশ্চিম দ্রাঘিমার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ, আলিউটিয়ান দ্বীপপুঞ্জে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছবে সেখানের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায়। এবং উল্লেখিত সকল দ্রাঘিমায় অবস্থিত দেশ সমূহের অধিবাসীরা জানবে যে, মধ্য প্রাচ্যে বৃহস্পতিবার দিবাগত সন্ধ্যা ৭টায় নুতন চাঁদ দেখার কারণে পহেলা শাওয়াল ঈদ হচ্ছে শুক্রবার।
অতএব মধ্যপ্রাচ্য থেকে পশ্চিম দ্রাঘিমার দেশগুলো যথাক্রমে বৃহস্পতিবার দিনের অংশ ও পূর্ণদিন অতিক্রমের পরে স্থানীয় ভাবে যে দেশে যখন শুক্রবার শুরু হবে সে দেশে তখন শুক্রবারে পহেলা শাওয়াল ঈদ পালন করবে। তাহলে প্রমাণিত হল মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে পশ্চিম গোলার্ধের সকল দেশে শুক্রবার পহেলা শাওয়াল ঈদ করা সম্পূর্ণ সম্ভব।
উল্লেখিত আলোচনার সারকথা হলো শুক্রবার দিবসটি জাপানে শুরু হবে মধ্যে প্রাচ্যের ৬ঘন্টা ২৮মিনিট পূর্বে এবং পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হবে মধ্য প্রাচ্যের স্থানীয় সময়ের ১৫ঘন্টা পরে। কিন্তু দিন একটিই তাহল শুক্রবার। তবে উভয় স্থানে দিন ও তারিখ হবে অভিন্ন। অতএব জাপানে শুক্রবারের ঈদ শুরু হবে পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রের ২৩ঘন্টা পূর্বে। আবার পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে ঈদ শুরু হবে জাপানের স্থানীয় সময়ের ২৩ঘন্টা পরে। সমগ্র পৃথিবীতে ঈদ শুরু ও শেষ হওয়ার সময় স্থানীয় সময় অনুপাতে আগ-পিছ হলেও ঈদের দিনের বার ও তারিখ হবে সারা পৃথিবীতে একই। অতএব সমগ্র পৃথিবীতে একই বার ও তারিখে ঈদ করা সম্পূর্ণ সম্ভব।
(১) বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সমূহের ( যেমন সৌদি আরব, ইয়েমেন, ওমান, ইরাক, কুয়েত, জর্দান ইত্যাদি দেশের ) একদিন পরে সিয়াম / রোজা শুরু করলে, বা বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরে ঈদ করলে এই অবস্হা হয়: বাংলাদেশ থেকে কেউ রোযা শুরু করে রমযান মাসের যে কোন দিন মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে সেখানে ঈদ করলে তার রোযা ২৮ বা ২৯ টি হয় অর্থাৎ অন্যদের চেয়ে একটি কম হয়, আবার মধ্যপ্রাচ্য থেকে কেউ রোযা শুরু করে রমযান মাসের যে কোন দিন বাংলাদেশে এসে ঈদ করলে তার রোযা ৩০ বা ৩১ টি হয় অর্থাৎ অন্যদের চেয়ে একটি বেশি হয়। অথচ ২৮ বা ৩১ রোজার বিধান ইসলামে নাই। হাদীস শরীফে বলা হয়েছে আরবী মাস ২৯-এর কম হবেনা এবং ৩০-এর বেশী হবেনা। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য ঈদের দিন রোযা রাখা হারাম। ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে রোযা ও ঈদ মেনে নিলে এই ২৮ বা ৩১ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
(২) ঠিক একই ভাবে আরও কিছু প্রশ্ন এসে যায়, যেমন মধ্যপ্রাচ্যে কেউ ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজ আদায় করে ঐদিন বাংলাদেশে এসে দেখল (স্হানীয়ভাবে আলাদা চাঁদ দেখে আমলের কারনে) বাংলাদেশের মানুষ রোজা করছে। তাহলে সে দিনের বাকী সময় পানাহার করতে পারবে কিনা? একইভাবে, আফগানিস্তানে কেউ ঈদুল ফিতরের দিন ঈদের নামাজ আদায় করে ঐদিন (মানুষের তৈরী হারাম জাতীয়তাবাদী সীমান্ত পার হয়ে) একেবারে পাশের দেশ পাকিস্তানে এসে দেখল (স্হানীয়ভাবে আলাদা চাঁদ দেখে আমলের কারনে) মানুষ রোজা করছে। তাহলে সে দিনের বাকী সময় পানাহার করতে পারবে কিনা?
আবার বাংলাদেশে কেউ স্হানীয়ভাবে আলাদা চাঁদ দেখে শাবানের হিসাব করে শাবানের শেষ দিন দিনের বেলা খাওয়া-দাওয়া করে ঐদিন মধ্যপ্রাচ্যে যেয়ে দেখল মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ রমজানের রোজা করছে। তাহলে সে দিনের বাকী সময় পানাহার করতে পারবে কিনা? একইভাবে, পাকিস্তানে কেউ স্হানীয়ভাবে আলাদা চাঁদ দেখে শাবানের হিসাব করে শাবানের শেষ দিন দিনের বেলা খাওয়া-দাওয়া করে ঐদিন (মানুষের তৈরী হারাম জাতীয়তাবাদী সীমান্ত পার হয়ে) একেবারে পাশের দেশ আফগানিস্তানে যেয়ে দেখল আফগানিস্তানের মানুষ রমজানের রোজা করছে। তাহলে সে দিনের বাকী সময় পানাহার করতে পারবে কিনা? এইসকল সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়না।
(৩) লাইলাতুল কদর রমজানের শেষ দশদিনের বিজোড় রাত্রে যেমন ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ এমন বিজোড় রাত্রে খোঁজ করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরে রোজা শুরু করলে, মধ্যপ্রাচ্যে যেদিন বিজোড় রাত হয় বাংলাদেশে সেদিন জোড় রাত হয়, আবার বাংলাদেশে যেদিন বিজোড় রাত হয় মধ্যপ্রাচ্যে সেদিন জোড় রাত হয়। তাহলে শবে কদর কি মধ্যপ্রাচ্যের বিজোড় রাত অনুযায়ী হবে নাকি বাংলাদেশের বিজোড় রাত অনুযায়ী হবে নাকি দুই রাত্রেই হবে? যেমন উদাহরন স্বরূপ মধ্যপ্রাচ্যে যদি সোমবার দিনগত মঙ্গলবার রাতটি রমজানের শেষ দশদিনের একটি বিজোড় রাত ও কদরের রাত হয় তাহলে বাংলাদেশে (মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরে রোজা শুরু করার কারনে এলাকা ভিত্তিক হিসেবে) মঙ্গলবার দিনগত বুধবার রাতটি বিজোড় রাত ও কদরের রাত হবে। তাহলে উপরোক্ত উদাহরনে আসল কদরের রাত কি সোমবার দিনগত মঙ্গলবার রাত, নাকি মঙ্গলবার দিনগত বুধবার রাত, নাকি দুই রাতই? সূরা কদর অনুযায়ী কুরআন যে রাতে নাযিল হয়েছিল সেটাই কদরের রাত। কদরের রাতে সমগ্র কুরআন একত্রে লওহে মাহফুজ থেকে বায়তুল ইজ্জাহ বা প্রথম আসমানে নাযিল করা হয়েছে। উপরোল্লিখিত উদাহরন স্বরূপ যদি ধরে নেই, মধ্যপ্রাচ্যের জন্য মঙ্গলবার রাত্রে ৩০ পারা কুরআন একত্রে নাযিল হয়েছে, তাহলে বাংলাদেশের জন্য ৩০ পারা কুরআন একত্রে কি বুধবার রাত্রে আরেকবার নাযিল হয়েছে??? মঙ্গলবার রাত আর বুধবার রাত কি কখনো একই রাত হতে পারে??? ৩০ পারা কুরআন একত্রে কয় রাতে নাযিল হয়েছে? কদরের রাত কি একটা নাকি দুইটা? একই বছর একই মাসে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় লাইলাতুল কদর কেন ভিন্ন ভিন্ন বারে (যেমন মঙ্গল, বুধ, ইত্যাদি) হবে? ৩০ পারা কুরআন কি মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এক রাতে আর বাংলাদেশের জন্য তার পরের রাতে অর্থাৎ দুই রাতে নাযিল হয়েছে?
(৪) হযরত আবু হুরাইয়রা রদিআল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম এরশাদ করেছেন, “যখন পবিত্র রমযান মাস এসে যায় তখন জান্নাতের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয়” [(সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৪০-২৪১, হাদীস নং ১৭৭৭) অথবা (সহীহ বুখারী, ইংরেজী অনুবাদ - ড. মুহসীন খান, সৌদি আরব, খন্ড ৩, অধ্যায় ৩০, পৃষ্ঠা ৮২, হাদীস নং ১৮৯৮)]
হযরত আবু হুরাইয়রা রদিআল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম এরশাদ করেছেন, “যখন পবিত্র রমযান মাস এসে যায় তখন আসমানের দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয়, জাহান্নামের দরজা সমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং শয়তানকে শৃংখলাবদ্ধ করা হয়।” [(সহীহ বুখারী, খন্ড ৩, হাদীস নং ১২৩ অথবা খন্ড ৩, অধ্যায় - সাওম, হাদীস নং ৯, অথবা খন্ড ৩, অধ্যায় ৩১, হাদীস নং ১২৩) অথবা (সহীহ বুখারী, ইংরেজী অনুবাদ - ড. মুহসীন খান, সৌদি আরব, খন্ড ৩, অধ্যায় ৩০, পৃষ্ঠা ৮২, হাদীস নং ১৮৯৯) অথবা (সহীহ বুখারী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৪১, হাদীস নং ১৭৭৮,)]
উদাহরন স্বরূপ ধরে নেই মধ্যপ্রাচ্যে যদি বুধবার দিনগত বৃহস্পতিবার রাত্রে রমযান মাস শুরু হয় তাহলে বাংলাদেশে এলাকা ভিত্তিক চাঁদের হিসেব করলে মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পরে রোজা শুরু করার কারনে বৃহস্পতিবার দিনগত শুক্রবার রাত্রে রমযান মাস শুরু হবে। জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা, মূল শয়তানকে বন্দি করা এগুলি কি মধ্যপ্রাচ্যের রমজান শুরুর রাত্রে অর্থাৎ উপরোল্লিখিত উদাহরন অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত্রে নাকি পরদিন বাংলাদেশের রমজান শুরুর রাত্রে অর্থাৎ শুক্রবার রাত্রে হবে নাকি দুই রাত্রে দুই বার হবে? ইবলিস আযাযিল শয়তান তো একটাই। তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য শয়তান বৃহস্পতিবার বেঁধে বাংলাদেশের জন্য শুক্রবার কি আরেকটা শয়তানকে বাঁধা হবে??? জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা, মূল শয়তানকে বন্দি করা এগুলি দুই দিনে দুই বার নয় বরং এক দিনে এক বারই হয়ে থাকে। ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে রোযা ও ঈদ মেনে নিলে এগুলি একাধিক বার হয় বলে মেনে নিতে হয় যা বিবেকগ্রাহ্য নয়।
(৫) রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে, “আরাফার দিনে রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর নিকট আশা রাখি, তা পূর্ববর্তী বছর এবং পরবর্তী বছরের গুনাহ্ মুছে দিবে (বা ঐ দিনের রোযার বিনিময়ে আল্লাহ পাক রোযাদারের পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেন)”। [(মুসলিম শরীফ, অধ্যায় সাওম, হাদীস নং ২৬০২ ও ২৬০৩, অথবা অধ্যায় ৬, হাদীস নং ২৬০২ ও ২৬০৩) অথবা (মুসলিম শরীফ, অনুবাদ – আ.স.ম. নুরুজ্জামান, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, খন্ড ৪, পৃষ্ঠা ১১১ - ১১২, অধ্যায় ১৪ - কিতাবুস সাওম, হাদীস নং ২৬১২ ও ২৬১৩)]
আরাফার দিন হচ্ছে সেটাই যেদিন হাজীগন আরাফার মাঠে থাকেন। ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে রোযা ও ঈদ মেনে নিলে আরাফার দিন দুটি হয়ে যায় অথচ আরাফার দিন একটাই।
(৬) চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতা অনুযায়ী নিশ্চিতভাবে সঠিক স্হায়ী সীমানা নির্ধারন করা যায়না। কারন উদয় স্থল সর্বদা একই রকম থাকেনা। যে কোন বছরে যে কোন মাসের চাঁদ পৃথিবীতে প্রথম উদিত হলে যে এলাকাসমূহ তার আওতাভূক্ত থাকে তার সীমানা প্রতিমাসে একরকম থাকেনা, প্রতি বছরেও একরকম হয়না। তারপরেও যদি চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতার ভিত্তিতে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার সীমানা নির্ধারন করে একই দিনে সেই সীমানার এক পাশে রোযা অন্য পাশে ঈদ হয়, তবে সেই সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ কি রোযা করবে নাকি ঈদ করবে এর কোন সমাধান পাওয়া যায়না।
(৭) চাঁদ দেখার সংবাদ যদি নিকটবর্তি এলাকায় গ্রহণ করা হয় আর দূরবর্তি এলাকায় গ্রহণ না করা হয় তাহলে যে এলাকাকে সর্বশেষ নিকটবর্তি এলাকা মনে করে সংবাদ গ্রহণ করা হচ্ছে আর তার একেবারে পাশের এলাকাকেও দূরবর্তি মনে করে সংবাদ গ্রহন করা হচ্ছে না, এই দুই এলাকার সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ সংবাদ গ্রহণ করবে কিনা এর কোন সমাধান পাওয়া যায়না।
(৮) “চাঁদ দেখার নির্ভরযোগ্য সংবাদ সর্বোচ্চ কতদূরত্বের মধ্য থেকে আসলে তা গ্রহনযোগ্য হবে” অথবা “সর্বনিম্ন কতটুকু দূরত্বের বাইরের চাঁদ দেখার নির্ভরযোগ্য সংবাদ গ্রহনযোগ্য হবে না” তার নির্ধারিত কোন পরিমান কুরআনের আয়াত বা রাসূল (সাঃ) এর হাদীসে পাওয়া যায় কি??? (এই দূরত্বের সঠিক পরিমানের কথা উল্লেখ আছে এমন কোনো কুরআনের আয়াত বা রাসূল (সাঃ) এর হাদীস অধম লেখকের ক্ষুদ্রতম জ্ঞানে জানা নাই। সম্মানিত পাঠক, এমন কোনো কুরআনের আয়াত বা রাসূল (সাঃ) এর হাদীস পেলে, অধম লেখককে জানানোর বিনীত অনুরোধ রইল।)
(৯) হারাম জাতিয়তাবাদী বর্ডার বা দেশের সীমারেখা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দিনে রোযা শুরু বা ভিন্ন ভিন্ন দিনে ঈদ মুসলিমরা কেন করবে? দেশে দেশে এই সীমান্ত তো মানুষের তৈরী, আল্লাহর দেয়া নয়, তাহলে ব্রিটিশের দেয়া বর্ডার অনুযায়ী কেন মুসলিমরা ভিন্ন ভিন্ন বারেরোযা শুরু করবে, আর কেনইবা ভিন্ন ভিন্ন বারে ঈদ করবে?? আফগানিস্তান ও পাকিস্তান একেবারে পাশাপাশি এবং একটাই মুসলিম ভূমি। অথচ আফগানিস্তানের সরকারী ঘোষনা অনুযায়ী যেদিন ঈদুল ফিতর হয়, সাধারনত পাকিস্তানের সরকারী ঘোষনা অনুযায়ী তার পরদিন ঈদুল ফিতর হয়। আফগানিস্তান ও পাকিস্তান একটাই মুসলিম ভূমি হওয়া স্বত্তেও হারাম জাতিয়তাবাদী বর্ডার বা দেশের সীমারেখার কারনে সরকারী ঘোষনা অনুযায়ী আফগানিস্তানে যেদিন ঈদুল ফিতর হচ্ছে পাকিস্তানে সেদিন রোজা হচ্ছে। অথচ ঈদের দিন রোযা রাখা হারাম।
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, “রসূলুল্লাহ্ (দ.) ঈদুল ফিতরের দিন এবং কুরবানীর দিন সওম (রোজা) রাখতে নিষেধ করেছেন”। [বুখারী, অধ্যায়ঃ ৩০, কিতাবুস্ স্বওম, অনুচ্ছেদঃ ৬৬, ঈদুল ফিতরের দিনে স্বওম রাখা, হাদিস # ১৯৯০, ১৯৯১, অনুচ্ছেদঃ ৬৭, কুরবানীর দিনে স্বওম, হাদিস # ১৯৯৩, ১৯৯৪, ১৯৯৫, অধ্যায়ঃ ৭৩, কুরবানী, অনুচ্ছেদঃ ১৬, কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু খাওয়া যাবে অথবা কতটুকু সঞ্চয় করে রাখা যাবে, হাদিস # ৫৫৭১, মুসলিম, অধ্যায়ঃ ১৩, কিতাবুস্ স্বিয়াম, অনুচ্ছেদঃ ২২, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহাতে স্বওম পালন না করা, হাদিস # ১৩৮/১১৩৭, -১৩৯,১৪০,১৪১/১১৩৮, -১৪২/১১৩৯, -১৪৩/১১৪০, আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায়ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বিয়াম, অনুচ্ছেদঃ ৪৮, দুই ঈদের দিন স্বওম পালন, হাদিস # ২৪১৬, ২৪১৭, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ্, অধ্যায়ঃ ৭, স্বিয়াম, অনুচ্ছেদঃ ৩৬, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে স্বওম রাখা নিষেধ, হাদিস # ১৭২১, ১৭২২, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), স্বহীহ্, অধ্যায়ঃ কিতাবুস্ স্বওম, অনুচ্ছেদঃ ৭৫, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে স্বওম না রাখা, হাদিস # ৮২৪৮, ৮২৪৯, ৮২৫০, দারিমী, স্বহীহ্, অধ্যায়ঃ ৪, কিতাবুস্ স্বওম, অনুচ্ছেদঃ ৪৩, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিনে স্বওম রাখা নিষেধ, হাদিস # ১৭৫৩ (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)]
বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন দিনে ঈদ করলে দেখা যাবে একটি অঞ্চলে যেদিন ঈদ, অন্য অঞ্চলে সেদিন রোজা অথচ ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম কি আশ্চর্য্য! একই ভূমিতে একই মুসলিম জাতি একই দিনে সরকারী ঘোষনা মানতে গিয়ে ব্রিটিশের দেয়া বর্ডার বা সীমান্ত অনুযায়ী সীমান্তের এক পাশে ঈদ আর অন্য পাশে রোজা করতে বাধ্য হচ্ছে!! হায়রে মুসলিমদের অবস্হা!! পৃথিবীর সমস্ত মুসলিম একই জাতি হওয়াস্বত্তেও ব্রিটিশের ভাগ করা সীমান্ত, আলাদা আলাদা হারাম জাতিয়তাবাদী পতাকা, হারাম জাতিয়তাবাদী দালাল সরকার এইসবের কারনে ৫৭ টুকরায় বিভক্ত হয়ে আছে, এমনকি রোযা ঈদ পর্যন্তও এগুলি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে!! বৃটিশরা দাগ টেনেছে মাটিতে, আর কিছু মুসলিম সেই দাগ আকাশেও টেনে বলছে, আমার দাগের ভিতরে চাঁদ আসলে এটা আমার চাঁদ, তোমার দাগের ভিতরে আসলে তোমার চাঁদ! কি ভয়ংকর জাতিয়তাবাদ!!
রাসূল (সঃ) বলেন, “সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয় যে জাতিয়তাবাদের দিকে আহবান করে, জাতিয়তাবাদের জন্য যুদ্ধ করে বা জাতিয়তাবাদের জন্য মারা যায়” [(আবু দাউদ)]
রাসূল (সঃ) আরও বলেন, “যে আসাবিয়্যার (অর্থাৎ জাতীয়তাবাদের) জাহেলী আহবানের দিকে মানুষকে ডাকে সে যেন তার পিতার লজ্জাস্হান কামড়ে ধরে পড়ে আছে (তাকে ছাড়তে চাইছে না) । (এরপর রাসূল সাঃ বলেন) এবং একথাটি লুকিয়ে রেখোনা (অর্থাৎ বলার ক্ষেত্রে কোনো লজ্জা বা অস্বস্তি বোধ করোনা)”। [মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ২১২৩৩]
সুতরাং কোনো জাতি রাষ্ট্রের সীমানা অনুযায়ী মুসলিম উম্মত বিভক্ত হওয়া হারাম। শরীয়তের দৃষ্টিতে প্রত্যেক মুসলিম পরস্পর ভাই ভাই এবং তাদের ভূমিগুলো একই ভূমি হিসেবে বিবেচিত হয়।
সৌদি আরব যখন ইদের ঘোষনা দিল তখন মধ্য এশিয়ার রাত কত? সেইটা ভাবিলেন না! মধ্য এশিয়ার সরকার গুলো খবরটা পাইলেই যথেষ্ট মনে করেন! গ্রামাঞ্চলের ঘুমন্ত মানুষ গুলারে এই খবর পৌছানোর পদ্ধতি কেমুন হইবে, একটু চিন্তা করিছেন?
বিজ্ঞানের সমাধান সোজা হইলেও বাস্তব সমাধান অতডা সোজা না। গ্রামের মানুষ ঘুম থেইকা উইঠা আগে সেহেরী করব তারপর জিগাইব ভাই এই মুর্হর্তে রোজা চলিতেছে নাকি ইদ শুরু হইছে।
সেই জন্যই চৌদ্দশ বছর ধইরা পৃথক দিনে ইদ-কোরবানী চইলা আসিছে। মানেন না মানেন এই টাই হইল বাস্তবতা। বাস্তবতায় ধাক্কা খায় বইলাই ইজমা আর কেয়াসের আশ্রয় নিতে হয়।
অত্র হাদিসের ব্যাখ্যায় মিশকাত শরীফের উক্ত পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে-
“তারা ঈদের নামাজের জন্য ঈদগাহে সমাবেত হল। আল্লামা মাজহার বলেন যে ঐ বছর মদীনা শরীফে ২৯শে রমযান দিবাগত রাতে শাওয়ালের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে মদীনা বাসী ৩০ রমযানের রোযা রেখে ছিলেন। এমতাবস্থায় ঐ দিন দ্বিপ্রহরে একদল ছাওয়ারী দূর থেকে আসল এবং তারা সাক্ষ্য দিল যে, নিশ্চয়ই তারা ২৯ তারিখ দিবাগত রাতে নুতন চাঁদ দেখেছে। অতপর, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম তাদের এ সংবাদ গ্রহণ করে সকলকে রোযা ভঙ্গের নির্দেশ দিলেন এবং পরের দিন (২রা শাওয়াল) ঈদের নামায পড়ার নির্দেশ দিলেন।“ (মিশকাত শরীফের ব্যাখ্যা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(মিরকাতুল মাফাতিহ শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ ৫/১৫৩)]
রাসূলুল্লাহ (স) নিজেও বিলম্বে সংবাদ পাওয়ার কারনে প্রথমে রোযা থাকলেও পরে সংবাদ পেতেই তা ভেঙে ফেলেন ও ঈদ করেছেন।
আবু সাঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিত, “রসূলুল্লাহ্ (দ.) ঈদুল ফিতরের দিন এবং কুরবানীর দিন সওম (রোজা) রাখতে নিষেধ করেছেন”। [বুখারী, অধ্যায়ঃ ৩০, কিতাবুস্ স্বওম, অনুচ্ছেদঃ ৬৬, ঈদুল ফিতরের দিনে স্বওম রাখা, হাদিস # ১৯৯০, ১৯৯১]
বিভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন দিনে ঈদ করলে দেখা যাবে একটি অঞ্চলে যেদিন ঈদ, অন্য অঞ্চলে সেদিন রোজা অথচ ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম।
বেআক্কেল
মধ্য এশিয়ার মানচিত্র দিলাম । আমার লেখায় মধ্য এশিয়ার কয়েকটি দেশের নাম আছে যারা কাল ১৭ জুলাই ২০১৫ তারিখ শুক্রবার ঈদ করবে ।
উপরন্তু
১।মধ্য এশিয়ার দেশগুলো বাংলাদেশের আগে সৌদি আরবের ঈদ ঘোষনার খবর পেয়েছে । ২।এসব দেশ জ্যোর্তিবিজ্ঞানের হিসেবকে গুরুত্ব দেয় ।
৩।এসব দেশ সৌদি আরবের সাথেই ঈদ পালন করাকে বা সৌদি আরবের ঘোষনাকে গুরুত্ব দেয় । যেমন : আফগানিস্তান ।
৪।সারা বিশ্বের যে কোন দেশে নতুন চাদ দেখার খবর পেলেই বাকী দেশগুলোর লোকদের ঈদ ও রোজা পালন ওয়াজিব যা মাযহাবের ইমামগন বলে গেছেন । যদি তারা সকালে চাদ দেখার খবর পায় তাহলেও তাদের ঈদ পালন করতে হবে যা মাযহাবের ইমামগনের ফাতওয়া ।
৫। উপরন্তু জ্যোর্তিবিজ্ঞানের হিসেবের মাধ্যমেও নির্ভুলভাবে চাদের অবস্হান বা নতুন চাদ দেখার স্হান সম্পর্কে অাগেই জানা যায় । যেমন : এবার কোথায় কীভাবে নতুন চাদ দেখা যাবে তা এই চিত্রেই বলা আছে যা আমি চার পাচ মাস আগেই দেখেছি । আর যার কাছে এই প্রোগ্রাম আছে সে আগামী দশ বছর পরের ঈদের দিনটাও বের করতে পারবে ।
-----------------------------
চট্টগ্রাম, বরিশাল, ভোলা, সাতক্ষীরা, লক্ষ্মীপুর, মুন্সিগঞ্জ, চাঁদপুর, দিনাজপুরসহ অনেক জেলায় (প্রায় ২৬ টি) এই ঈদ উদযাপিত হয়েছে।
১। লক্ষ্মীপুর : রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও, জয়পুর, বিঘা, দক্ষিণ পাড়া, ও রায়পুর উপজেলার কলাকোপা, সদর উপজেলার বশিকপুর, পূর্ব পাঁচ পাড়া, ও মহাদেবপুরসহ নয়টি গ্রামে ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়েছে।
২। নোয়াখালী : জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউপির বসন্ত বাগ, ও জিরতলি ইউপির ফাজিলপুর গ্রামে এ ঈদ উৎসব হয়েছে।
৩। মুন্সীগঞ্জ: জেলার সাত গ্রামে ঈদ উদযাপন হয়েছে। গ্রামগুলো হচ্ছে- সদর উপজেলার আনন্দপুর, শিলই, নায়েবকান্দি, আধারা, মিজিকান্দি, কালিরচর ও বাঘাইকান্দির একাংশ। গ্রামগুলোর প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ ঈদ আনন্দে মেতে উঠেছে।
৪। চাঁদপুর : জেলার অর্ধশত গ্রামে উদযাপিত হয়েছে কোরবানির ঈদ। হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলীপুর, বলাখাল, মনিহার, ভোলাচোঁ, জাকিন, সোনাচোঁ, প্রতাপপুর ও বাসারা, ফরিদগঞ্জ উপজেলার উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাঁট, মূলপাড়া, বদরপর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচর, বালুথুবা, কাইতাপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, ষোলা, হাঁসা ও গোবিন্দপুর, মতলবের দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী এবং শাহরাস্তি এবং কচুয়ার কয়েকটি গ্রামে ঈদ উদযাপিত হয়েছে।
ইমাম আরিফ চৌধুরী জানান, ১৯২৮ সাল থেকে (প্রায় ৮৬ বছর ধরে ) "সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা শুরু ও সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ" এই অনুযায়ী এ এলাকায় ইসলামী অনুষ্ঠান পালন শুরু করেন।
৫। চট্টগ্রাম : দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রায় ৩০টি গ্রামে ঈদ উদযাপিত হয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনোয়ারাসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার লোকজন "সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা শুরু ও সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ" এই অনুযায়ী দীর্ঘদিন ধরেই একদিন আগে ঈদ পালন করে আসছেন।
৬। দিনাজপুর : জেলার চার উপজেলায় "সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা শুরু ও সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ" এই অনুযায়ী ঈদ উদযাপিত হয়েছে।
৭। নারায়ণগঞ্জ: ফতুল্লার লামাপাড়ায় ঈদের নামাজ হয়। তারা "সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা শুরু ও সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ" এই অনুযায়ী এদিন ঈদ করেছেন।
৭। রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) : লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক পরিবারে শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা পালিত হয়েছে। "সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা শুরু ও সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ" এই অনুযায়ী এসব পরিবারের সদস্যরা ৩৫ বছর ধরে সকল ইসলামী অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন। সকাল দশ টায় ঈদের জামায়ত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের নামাজ আদায় করার পর পশু কোরবানী করা হয়।
নোয়গাও ঈদগাও কমিটির সভাপতি নেছার আহম্মেদ ও বিঘা ঈদগাও কমিটির সভাপতি হারুন রশিদ জানান, "সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা শুরু ও সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ" এই অনুযায়ী সকলেরই উচিৎ পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করা।
৮। বরিশাল : বরিশাল বিভাগের প্রায় ২০ হাজার পরিবার শনিবার কোরবানির ঈদ উদযাপন করছে। মসজিদের ইমাম দোলোয়ার হোসেন জানান, বরিশাল বিভাগে এই তরিকার ৭৫টি মসজিদ রয়েছে। "সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা শুরু ও সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ" এই অনুযায়ী তারা ঈদ উদযাপন করে থাকেন।
৯। ভোলা : ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ৪টি, তজুমদ্দিনের ৩টি, লালমোহনের দুটি ও চরফ্যাশনের একটি সহ মোট ১০ গ্রামে ঈদ উদযাপন চলছে। এসব মানুষ প্রতি বছরই "সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা শুরু ও সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ" এই অনুযায়ী ঈদ উদযাপন করেন।
১০। সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সদর, তালা, কলারোয়া ও আশাশুনি উপজেলার ১০ গ্রামের মুসলমানরা ঈদুল আজহা উদযাপন করেছেন। সকালে সাতক্ষীরার শহীদ আবদুর রাজ্জাক পৌর মিলনায়তনে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
১১। মৌলভীবাজার: সকাল সোয়া ছয়টায় শহরের সার্কিট হাউস এলাকার একটি বাসার ছাদে অর্ধশতাধিক মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করেন। এ ছাড়া জেলার কুলাউড়া, বড়লেখা, শ্রীমঙ্গলসহ কয়েকটি স্থানে ঈদ উদযাপন করা হয়েছে।
১২। ঢাকাঃ কয়েক টি স্থানে
১৩। শরীয়তপুর
১৪। পটুয়াখালী
১৫। শেরপুর
১৬। লালমনিরহাটঃ
১৭। পাবনাঃ
১৮। চাপাইনবাবগঞ্জঃ গেলো বছর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শাহবাজপুর, মির্জাপুর, চাতরা ও নান্ধড়া গ্রামের বাসিন্দারা করে আসছেন।
১৯। কক্সবাজার
২০। ঝালকাঠী
২১। ঝিনাইদাহ
২২। মাদারীপুর
২৩। রাজশাহী : এই প্রথম রাজশাহী চারঘাট উপজেলার ২৯ রমজানে ঈদুল ফিতরের ঈদের নামাজ আদায় করেছে তিনটি গ্রামের তিন শতাধিক মুসল্লি। সকাল ৭টার দিকে অস্কারপুর আম বাগানে এই ঈদুল ফিতরের ঈদের জামায়াতে ইমামতি করেন উজ্জল হোসেন নামের এক ইমাম। চারঘাট অস্কারপুর, থানাপাড়া ও গোরশহরপুর গ্রামের ঈদের নামাজ আদায় করা মুসল্লিরা জানিয়েছে "সারা বিশ্বে একই দিনে রোযা শুরু ও সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ" এই অনুযায়ী তারা রোজা ও ঈদ পালন করেছেন। এর আগে ভোর থেকে মুসল্লিরা অস্কারপুর আম বাগানে আসতে শুরু করে। থানাপাড়া ও গোরশহরপুর গ্রামের মুসল্লিরা নসিমনযোগে সেখানে আসে।
২৪। মাগুরা
২৫। সিলেটঃ সিলেটেও শনিবার পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন করেছেন অর্ধশতাধিক মুসল্লি। সকাল ৯টায় দক্ষিণ সুরমার ইক্বরা একাডেমিতে তারা ঈদ জামাত আদায় করেন। এতে ইমামতি করেন মুফতি ইয়াহইয়া। আর খুতবা পাঠ করেন জুবায়ের আহমদ কুর্শি। শনিবার ঈদ পালনকারী জনৈক মুসল্লি জানান, গত কয়েক বছর ধরে তারা "সারা বিশ্বে একই দিনে ঈদ" এই অনুযায়ী ঈদ জামাত আদায় করছেন। এর আগের বুধবার তাদের পক্ষ থেকে ৬০ জন আলেম শুক্রবার পবিত্র আরাফাহ দিবস পালন করতে একটি বিবৃতি দেন।
-
মন্তব্যঃ
কয়েকটি পত্রিকা থেকে কপি করে, এডিট করে লিখা হয়েছে।
এর বাইরে যদি কারোর আর নাম জানা থাকে, দয়া করে কমেন্ট বক্স এ লিখে দেবেন
মন্তব্য করতে লগইন করুন