বিশ্বব্যাপী একই দিনে রোযা শুরু ও একই দিনে ঈদ করা সম্পর্কে হানাফী ফিকহের কিছু কিতাবের বক্তব্য:

লিখেছেন লিখেছেন হামজা ১৬ জুলাই, ২০১৫, ০১:১১:১৯ রাত

(১) হিজরী সপ্তম শতকের বিখ্যাত ফিকাহবিদ ইমাম আল্লামা তাহির ইবনে আহমদ ইবনে আবদুর রশীদ আলবুখারী রাহ. ( জন্ম ৪৮১ বা ৪৮২ হিজরীতে আর মৃত্যু ৫৪২ হিজরীতে) তার কিতাব ‘খুলাসাতুল ফাতাওয়া’ এ লিখেছেন

“চাঁদের উদয়স্থলের ভিন্নতা ধর্তব্য নয়, জাহিরুর রিওয়ায়াহ (প্রধানত শক্তিশালী মত) অনুসারে। এরই উপর ফকীহ আবুল লাইছ (মৃত্যু ৩৭৩ হিজরীতে) এর ফতোয়া। আর এরই ফতোয়া দিতেন শামসুল আইম্মা হালওয়ানী (মৃত্যু ৪৪৮ হিজরী)। তিনি বলেন, পশ্চিমের অধিবাসীগণ যদি রমযানের চাঁদ দেখে তাহলে পূবের অধিবাসীদের উপর রোযা ওয়াজিব হয়”। [(খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৪৯)]

এই বিষয়ে সম্মানিত পাঠকবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি হিজরী চতুর্থ শতকের প্রখ্যাত ফিকাহবিদ ইমাম আবু বকর জাসসাস আররাযী (৩০৫ - ৩৭০হিজরী) এর কিতাব ‘আহকামুল কুরআন’ (খ. ১ পৃ. ২২০-২২২) এর বিবরণ (http://babel.hathitrust.org/cgi/pt?id=mdp.39015039442887;view=1up;seq=224 ), এবং হিজরী চতুর্থ শতকের আর একজন বিখ্যাত ফিকাহবিদ ইমাম আবুল লাইছ সমরকন্দী রহ. (মৃত্যু ৩৭৩ হিজরীতে) এর ফাতওয়া এবং হিজরী পঞ্চম শতকের শামসুল আইম্মা হালওয়ানী রহঃ (মৃত্যু ৪৪৮ হিজরী) এর ফাতওয়ার দিকে।

(২)হিজরী ৬ষ্ঠ শতকের কিতাব “ফাতওয়া-ই-কাযীখান”-এ আল্লামা হাসান বিন মানসূর কাযী খান রাহ. (মৃত্যু ৫৯২ হিজরী) লিখেছেন

“ফিক্‌হের সুপ্রতিষ্ঠিত মতানুসারে চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতা গ্রহণীয় নয়। শামসুল আইম্মা হালওয়ানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি এমতই উল্লেখ করেছেন”। (ফাতওয়া-ই-কাযীখানের উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(কাযীখান, খন্ড-১, পৃঃ-৯৫) অথবা (আল খানিয়া ১/১৯৮, ফাতাওয়া আলমগীরীর সাথে মুদ্রিত নুসখা)]

(৩) বিশ্ব বিখ্যাত গ্রন্থ “তাবয়ীনুল হাকায়েক”-এ ইমাম আল হাফিয আল যাইলী (মৃত্যু ৭৪৭ হিজরী) লিখেছেন-

“অত্র গ্রন্থের প্রণেতা (রঃ) বলছেন যে, চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতা গ্রহণীয় নয়। যদিও কেউ কেউ চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতা গ্রহণীয় হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন। ‘ভিন্নতা গ্রহণীয় নয়’ এর অর্থ হচ্ছে যদি এক দেশের অধিবাসীরা নুতন চাঁদ দেখেন এবং অন্য দেশের অধিবাসীরা না দেখেন তবে প্রথম দেশবাসীর দেখা দ্বারাই অন্য দেশবাসীদের জন্য রোযা রাখা ফরয হবে। অধিকাংশ মাশাইখ-ই এমত পোষণ করেছেন। এমনকি এক দেশের মানুষ ৩০টি রোযা রাখল, অন্য দেশের মানুষ রোযা রাখল ২৯টি, তাহলে অন্যদেরকে একটি রোযা কাযা করতে হবে”। (তাবয়ীনুল হাকায়েকের উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(তাবয়ীনুল হাকায়েক, খন্ড-২, পৃঃ-১৬৪/১৬৫)]

(৪) হানাফি ফিকহের বিশ্ব বিখ্যাত ও সর্বজন বিদিত ফিকহ্ গ্রন্থ “ফতহুল কাদির”-এ ইমাম কামালুদ্দীন ইবনে আল হুম্মাম আল হানাফী রঃ (৭৮৮ - ৮৬১ হিজরী) লিখেছেন-

"যখন কোন শহরে চাঁদ দেখা প্রমাণিত হবে, তখন সকল মানুষের উপর রোযা রাখা ফরয হবে। ফিকহের প্রতিষ্ঠিত মাযহাব অনুযায়ী পাশ্চাত্য বাসীর বা পশ্চিমের অধিবাসীদের চাঁদ দেখার দ্বারা প্রাচ্য বাসীর বা পূর্বের অধিবাসীদের জন্য রোযা রাখা ফরয হবে।" (ইমাম ইবনে আল হুম্মামের কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(ফতহুল কাদির, খন্ড-২, পৃঃ-৩১৮, ৩১৩) অথবা (ফতহুল কাদির, খন্ড-৪, পৃঃ-২১৬)]

(৫) হানাফি ফিকহের বিশ্ব বিখ্যাত গ্রন্থ “বাহরুর রায়েক”-এ ইমাম যাইনুদ্দীন ইবনে ইব্রাহীম ইবনে নুজাইম (মৃত্যু ১৫৬৩ ইংরেজি খ্রিষ্টাব্দ) এর ভাষ্য হচ্ছে

“চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতা গ্রহণীয় নয়। অতএব যখন এক দেশের মানুষ চাঁদ দেখবে, তখন অন্য দেশের মানুষের জন্য রোযা রাখা ফরয হবে, যদিও তারা চাঁদ দেখেনি। যদি তাদের নিকট গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌঁছে যায়। অতএব পাশ্চাত্যবাসীর দেখার দ্বারা প্রাচ্যবাসীর জন্য রোযা রাখা অত্যাবশ্যক হবে। যদিও কেউ কেউ বলেন উদয় স্থলের বিভিন্নতা গ্রহণযোগ্য, একের দেখা অন্যের জন্য প্রযোজ্য নয়। তবে ফিকহের প্রতিষ্ঠিত সিদ্ধান্ত হচ্ছে প্রথমটি।এমনটাই লেখা হয়েছে ফতহুল কাদির গ্রন্থে। সেখানে বলা হয়েছে এটাই প্রকাশ্য মতামত এবং এর উপরই ফাতওয়া। খোলাছা নামক কিতাবের ভাষ্যও তাই”। (বাহরুর রায়েকের উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(বাহরুর রায়েক, খন্ড-২, পৃঃ-৪৭১)]

(৬)বিশ্ব বিখ্যাত গ্রন্থ “হাশিয়া-ই-তাহতাবী” শরীফের ভাষ্য-

“ঈদুল আযহাসহ সকল মাসের চাঁদের হুকুম শাওয়ালের চাঁদের হুকুমের মতোই। কোন উদয় স্থলে চাঁদ দেখা গেলে দুনিয়ার সকল স্থানের মানুষের উপরই আমল জরুরী হবে। যদি চাঁদ উদয়ের সংবাদ পৌঁছে দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্যে, অথবা কাযীর ফয়সালার উপরে দুইজন সাক্ষ্য দেন, অথবা উদয়ের সংবাদটি ব্যাপক প্রসিদ্ধি লাভ করে”। (হাশিয়া-ই-তাহতাবীর উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(হাশিয়া-ই-তাহতাবী শরীফ, পৃঃ-৩৫৯)]

(৭) মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব (১০২৭ – ১১১৮ হিজরী) এর নির্দেশে লেখা হয় হানাফি ফিকহের কিতাব ফাতওয়া-ই- আলমগিরী। আওরঙ্গজেব ৫০০ জন ফিকাহবিদ আলেম একত্রিত করেছিলেন যাদের মধ্যে ৩০০ জন ছিলেন দক্ষিন এশিয়া থেকে, ১০০ জন ইরাক থেকে, আর ১০০ জন হিজাজ (সৌদি আরব) থেকে। হানাফি ফিকহের প্রসিদ্ধ কিতাব ফাতওয়া-ই- আলমগিরীর সিদ্ধান্ত হলো:

"ফিকহের প্রতিষ্ঠিত বর্ণনানুযায়ী চাঁদ ঊদয়ের বিভিন্নতা গ্রহণীয় নয় । ফতুয়াই কাযী খানের ফাতওয়াও অনুরুপ। ফকীহ আবু লাইছও এমনটাই বলেছেন । শামছুল আইম্মা হালওয়ানী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, যদি পশ্চিমের অধিবাসীগন রমযানের চাঁদ দেখে তবে সে দেখার দ্বারা পূর্বের অধিবাসীদের জন্য রোযা ওয়াজিব হবে । এমনটাই আছে খোলাছা নামক কিতাবে-" (ফাতওয়া-ই- আলমগিরীর উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(ফাতওয়া-ই-আলমগিরী, খন্ড-১, পৃঃ-১৯৮, ২১১,) অথবা (ফাতওয়া-ই-আলমগিরী, খন্ড-৫, পৃঃ-২১৬)]

(৮) হানাফি ফিকহের বিশ্ব বিখ্যাত ফিকহ গ্রন্থ ফাতওয়া-ই-শামী-এ আল্লামা সাইয়্যেদ মুহাম্মাদ আমীন ইবনে আবেদিন আশ শামী (১১৯৮ – ১২৫২ হিজরী বা ১৭৮৩ – ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দ) লিখেছেন-

“চাঁদের উদয়স্থলের ভিন্নতা গ্রহণীয় হবে কিনা? এ ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। এ ভাবে যে, প্রত্যেক দেশের মানুষ নিজ নিজ দেখার ভিত্তিতে আমল করবে? না কি উদয়স্থলের ভিন্নতা গ্রহণযোগ্য হবে না বরং সর্ব প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সকলের জন্য আমল করা জরুরী হবে? এমনকি প্রাচ্যে যদি জুমার রাতে চাঁদ দেখা যায় আর পাশ্চাত্যে শনিবার রাতে চাঁদ দেখা যায় তবে পাশ্চাত্যের অধিবাসীদের উপর প্রাচ্যের দেখা অনুযায়ী আমল করা ওয়াজিব? এবিষয়ে কেউ কেউ প্রথম মতটি গ্রহণ করেছেন (অর্থাৎ এক দেশের চাঁদ দেখা অন্য দেশের মানুষের জন্য গ্রহনীয় নয়)। ইমাম যায়লায়ী ও ফয়েজ গ্রন্থের প্রণেতা এ মতটি গ্রহণ করেছেন। শাফেয়ী ফিকহের মতও এটা। তাদের যুক্তি হল চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে প্রত্যেক দেশীয় লোক নামাযের ওয়াক্তের মতই নিজ এলাকা বিশেষে সম্বোধিত। যেমন যে অঞ্চলে এশা ও বিতরের ওয়াক্ত হয়না সেখানে এশা ও বিতর নামায আদায় করতে হয়না। আর সুপ্রতিষ্ঠিত মত হচ্ছে দ্বিতীয়টি অর্থাৎ চাঁদ দেখার ভিন্নতা গ্রহনীয় নয়। বরং প্রথম দিনের দেখার দ্বারাই সমগ্র পৃথিবীতে এক কেন্দ্রিক তারিখ গণনা করে, একই দিনে একই তারিখে আমল করতে হবে। এটাই আমাদের হানাফী ফিকহের সিদ্ধান্ত। মালেকী এবং হাম্বলী ফিকহের মতও এটা। তাদের দলীল হচ্ছে আয়াত ও হাদীসে চাঁদ দেখার সম্বোধন সকলের জন্য আম বা সার্বজনীন যা নামাজের ওয়াক্তের সম্বোধন থেকে আলাদা”। (ফাতওয়া-ই-শামীর উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(ফাতওয়া-ই-শামী, খন্ড-২, পৃঃ-১০৫ অথবা ফাতওয়া-ই-শামী, খন্ড-২, পৃঃ-৪৩২)]

(৯) “মায়ারিফুস্‌ সুনান”-এর ভাষ্য হচ্ছে-

আমাদের ফিকহের কিতাব সমূহের উপর ভিত্তি করে আমরা লিখেছি যে, এক দেশের চাঁদ দেখা অন্য দেশে গ্রহণীয় হবে। যদিও দেশ দুটির মধ্যে পশ্চিম ও পূর্বের দূরত্ব হয়। আর এ মাসয়ালা ফকীহ্‌গণের এ নীতিমালার উপর ভিত্তি করে যে চাঁদ উদয়স্থলের ভিন্নতা গ্রহণীয় হবে না। তবে ফকিহগণ সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যে, নামায ও ইফতারের ওয়াক্ত সমূহের ভিন্নতা গ্রহণীয় হবে এবং যার যার স্থানীয় সময় অনুযায়ী নামায পড়বে ও ইফতার করবে”। (মায়ারিফুস্‌ সুনানের উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(মায়ারিফুস্‌ সুনান, খন্ড-৫, পৃঃ-৩৩৭)]

(১০) দারুল উলুম দেওবন্দ এর প্রখ্যাত হানাফী আলেম আল্লামা রশীদ আহমদ গোংগুহী (রহঃ) (১২৪৪ – ১৩২৩ হিজরী অথবা ১৮২৯ – ১৯০৫ ইংরেজি খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন দেওবন্দ মাদ্রাসা কেন্দ্রিক দেওবন্দি ভাবধারার ইসলামি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।

মুহাম্মদ কাসেম নানুতুবির মৃত্যুর পর তিনি দেওবন্দ মাদ্রাসার প্রধান নিযুক্ত হন। রশীদ আহমদ গোংগুহী (রহঃ) এর ভাষ্য নিম্নরূপ-

“ফিকহের প্রতিষ্ঠিত মতানুসারে রোযা রাখা ও ঈদ করার ব্যাপারে চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতা গ্রহণীয় নয়”। (রশীদ আহমদ গোংগুহীর (রহঃ) কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(ফাতওয়া-ই-রশিদিয়া, পৃঃ-৪৩৭)]

আল্লামা রশীদ আহমদ গোংগুহী (রহঃ) আরও বলেন,

যদি কোলকাতার মানুষ শুক্রবার চাঁদ দেখে, অথচ মক্কায় তা দেখা গিয়েছে বৃহস্পতিবার, কিন্তু কোলকাতার মানুষ তা জানতে পারেনি, তাহলে যখন তারা জানতে পারবে, তাদের জন্য মক্কার মানুষের সাথে ঈদ করা জরুরী হবে এবং প্রথম রোযা কাযা করতে হবে”। (রশীদ আহমদ গোংগুহীর (রহঃ) কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(শরহে তিরমিযি, কাউকাব উন দুররী, পৃষ্ঠা-৩৩৬ উর্দু সংস্করণ)]

(১১) উপমহাদেশের প্রখ্যাত হানাফী আলেম ও গবেষক আল্লামা আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) (১২৮০ – ১৩৬২ হিজরী অথবা ১৮৬৩ – ১৯৪৩ ইংরেজি খ্রিষ্টাব্দ) বেহেশতী- জেওর এ লিখছেন,

"এক শহরের চাঁদ দেখা অন্য সকল শহর বাসীদের জন্য গ্রহণীয় হবে। ঐ শহরগুলোর সঙ্গে চাঁদ দেখা শহরের যত দুরত্বই হোকনা কেন। এমনকি সর্ব পশ্চিমের চাঁদ দেখার সংবাদ সর্ব পূর্বের মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে পৌছলে ঐ দিনই তাদের উপর রোযা রাখা ফরয হবে”। (আশরাফ আলী থানভীর (রহঃ) কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(বেহেশতী- জেওর, খন্ড-১১, পৃঃ-৫১০) অথবা (Behishti Zewar, Section 11, pg 104, part 4) {Referenced from ‘Behr Al Raqeeq, pg 270, vol.2; Fatwa Alamghiri pg 97, vol1}].

এছাড়াও আশরাফ আলী থানভী (রহঃ) ইমদাদুল ফাতওয়ায় এক প্রশ্নোত্তরে লিখেছেন,

প্রশ্ন (#১৬৩): এক শহর থেকে অন্যশহরের দূরত্ব কতটুকু হলে চাঁদ দেখার সংবাদ (গ্রহনযোগ্য বলে) বিবেচিত হবে? এ ব্যাপারে ফিকাহবিদগনের মাঝে মতভেদ আছে কিনা? ইসলামী বিধানের হানাফি ফিকাহ মতে এ ব্যপারে ফাতওয়া কি?

উত্তর: দুর্রুল মুখতার এ লিখিত হয়েছে, ‘ইসলামী বিধানের এই (হানাফি) ফিকাহ এর অধিকতর শক্তিশালী মত হচ্ছে উদয়স্হলের ভিন্নতা বিবেচ্য নয়। ফাতওয়াও এই অনুযায়ী।খুলাছা থকে বাহরুর রায়েক এর উদ্ধৃতি দিয়ে “পূর্বের মানুষের জন্য বাধ্যতামূলক পশ্চিমের চাঁদ দেখাকে বিবেচনা করা যদি সেইসব মানুষের দেখা আইনানুসারে নির্ভযোগ্য পদ্ধতিতে প্রতিয়মান হয়”। কামাল ইবনে হুম্মাম বলেন, “অধিকতর শক্তিশালী মত কে গ্রহন করাই অধিক সতর্কতা”।(খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১৫৪, ১৫৫)। এথেকে এটা সুস্পষ্ট যে, ফতোয়া মূলত এটার উপরেই যে উদয়স্হলের ভিন্নতা বিবেচ্য নয়। ২৫ রমজান ১৩৩৩ হিজরী। (তাতিম্মাহ ছালিছাহ, পৃষ্ঠা ৮২ ) (আশরাফ আলী থানভীর (রহঃ) ফাতওয়ার উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(হাকিমুল উম্মাত শাইখ আশরাফ আলী থানভী, ইমদাদুল ফাতাওয়া খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১৩৮)]

(১২) উপমহাদেশের অন্যতম ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্র “দারুল উলুম দেওবন্দ”-এর গ্রান্ড মুফতি আযিযুর রহমান সাহেব ফতোয়া-ই-দারুল উলুম দেওবন্দ-এ লিখেছেন-

“হানাফী ফিকাহ মতে চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতা গ্রহনীয় নয়। যদি কোন স্থানে শা’বান মাসের ২৯ তারিখে রমযানের চাঁদ দেখা যায় এবং শরয়ীভাবে তা প্রমাণিত হয় তখন ঐ হিসেবেই সকল স্থানে রোযা রাখা অপরিহার্য হয়ে যাবে। যে স্থানের লোকেরা সংবাদ পরে পাওয়ার কারণে শা’বান মাস ৩০ দিন পূর্ণ করে রোযা শুরু করেছে তারাও প্রথমদের সঙ্গে ঈদ করবে এবং প্রথমের একটি রোযা কাযা করবে”। (আযিযুর রহমান সাহেবের ফাতওয়ার উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(ফাতওয়া-ই-দারুল উলুম দেওবন্দ, খন্ড-৬, পৃঃ-৩৯৮)]

ফাতওয়া দারুল উলুম দেওবন্দে আরও লিখিত রয়েছে,

“যেখানেই চাঁদ দেখা প্রমানিত হয়, সেখান থেকে যত দূরত্বই হোক, এমনকি যদি হাজার মাইল দূরত্বও হয় সেখানকার জনগনকে তা মেনে নিতে হবে”। (দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়ার উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(ফাতওয়া দারুল উলুম দেওবন্দ, খন্ড-৬, পৃষ্ঠা-৩৮০, উর্দু সংস্করণ)]

(১৩) একই কথা লিখেছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম ও মুফতি আব্দুল কাবী মুলতানী (রহঃ) তার রচিত ছিহাহ ছিত্তা এর ব্যাখ্যা গ্রন্থ “মিফতাহুন্‌ নাজ্‌জাহ্” কিতাবে। যার ভাষ্য নিম্নরূপ-

“(ফিকাহ শাস্ত্রের ইমাম) ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক, ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল, ইমাম লাইছ ইবনু সা’দ আল মিশরী, অধিকাংশ ফকিহগণ এবং ইমাম শাফেয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার এক মতে রমযানের রোযার ক্ষেত্রে এই রায় দিয়েছেন যে, যখন কোন এক জনপদে চাঁদ দেখা প্রমাণিত হবে তখন দুনিয়ার অন্য সকল জনপদে ঐ দেখা গ্রহণীয় হবে। এমনকি পাশ্চাত্য অধিবাসীগণ চাঁদ দেখলে প্রাচ্যের অধিবাসীদের জন্যে ঐ দেখা দলীল হবে। এ সকল মহামান্য ইমামগণের নিকট রমযানের রোযার ক্ষেত্রে চাঁদ উদয় স্থলের ভিন্নতা মোটেই গ্রহণীয় নয়। বরং সমস্ত পৃথিবী এবং সকল উদয় স্থল এক উদয় স্থল হিসেবে গণ্য হবে। এবং সমগ্র পৃথিবী একটি দেশের মতই গন্য হবে। যেখানেই প্রথম চাঁদ দেখা যাবে উক্ত দেখা শরয়ী পদ্ধতিতে অন্যদের নিকট পৌঁছলে তার ভিত্তিতে সকলের জন্য আমল করা জরুরী হবে। উক্ত দুই দেশের মধ্যে যতই দূরত্ব হোকনা কেন। এমন কি যদি অষ্ট্রেলিয়া বা আমেরিকার অধিবাসীগণ চাঁদ দেখেন তাহলে ঐ দেখার দ্বারা পাকিস্তান এবং দূর প্রাচ্যবাসীর উপর রোযা রাখা জরুরী হবে”।(আব্দুল কাবী মুলতানীর (রহঃ) কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(মিফতাহুন্‌ নাজ্‌জাহ, খন্ড-১, পৃঃ-৪৩২)]

(১৪) একই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রাচীন ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হাট হাজারী মাদরাসার শাইখুল হাদীস আল্লামা হাফেজ আবুল হাসান সাহেব তার রচিত মিশকাত শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ ‘তানযীমুল আশ্তাত’ এ, যার ভাষ্য নিম্নে উদৃত হল-

“চাঁদের উদয় স্থলের ভিন্নতা (ফিকাহ শাস্ত্রের ইমাম) ইমাম আবু হানিফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি-এর নিকট গ্রহণীয় নয়। শামী কিতাবে এমনটাই রয়েছে। এটাই আমাদের (হানাফীদের) রায়। মালেকী ও হাম্বলী ফিকহের মতও এটা। অতএব, কোন স্থানে চাঁদ দেখা প্রমাণিত হলে সর্বত্রই আমল অত্যাবশ্যকীয় হবে”। (আবুল হাসান সাহেবের কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(তানযীমুল আশ্‌তাত, খন্ড-১, পৃঃ-৪১)]

(১৫) জামে তিরমিজি শরীফের মুকাদ্দামায় লেখা হয়েছে-

“প্রত্যেক দেশের মানুষ নিজ নিজ দেশের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আমল করবে কিনা? এ প্রসংগে ইমাম আবু হানিফা (রঃ) থেকে তিনটি মত বর্নিত হয়েছে। ১) এক দেশের চাঁদ দেখা অন্য দেশে গ্রহনীয় হবেনা। ২) এক দেশের চাঁদ দেখা অন্য দেশে গ্রহনীয় হবে। ৩) বিশেষ সতর্কতা, যেমন- রোযা রেখে ইবাদতে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে গ্রহনীয় হবে, অন্যথায় গ্রহনীয় হবেনা। কিন্তু এ তিনটি মতের মধ্যে প্রসিদ্ধমত হলো ২য়টি এবং এমতের উপর-ই হানাফী ফিকহ প্রতিষ্ঠিত”। (তিরমিজি শরীফের মুকাদ্দামার উদ্ধৃতি এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(তিরমিজি শরীফ মুকাদ্দামা-২২পৃষ্ঠা)]

(১৬) বর্তমান বিশ্বের বিশ্ব বরেণ্য আলেম মুফতি তাক্বি উসমানী সাহেব (দাঃবাঃ) লিখেছেন,

“(ফিকাহ শাস্ত্রের ইমাম) ইমাম আবু হানিফা (রঃ) এর মতে চাঁদের উদয়স্হলের ভিন্নতা বিবেচ্য নয়। এর অর্থ হচ্ছে যদি এক এলাকায় চাঁদ দেখা সঠিকভাবে প্রমানিত হয় তবে তা অন্য এলাকার জন্য গ্রহনীয় হবে। এই কারনেই হানাফি ফিকাহবিদগন বলে থাকেন যদি পশ্চিমের অধিবাসীগন নতুন চাঁদ দেখে তবে সেটা পূর্বের অধিবাসীদের জন্যও (চাঁদ দেখার) প্রমান।

হানাফি ফিকাহবিদগনের ‘প্রধানত শক্তিশালী মতামত’ (জাহির রিওয়ায়াত predominantly stronger opinion) একেবারে পরিষ্কার।যদি বিশ্বের যে কোন স্হানে চাঁদ দেখা যায় এবং অন্য যে কোন এলাকায় তা শরীয়তসম্মতভাবে বিশ্বাসযোগ্য হয় তবে এই এলাকার জন্যও চাঁদ দেখা প্রতিষ্ঠিত হবে।”। (তাক্বি উসমানী (দাঃবাঃ) সাহেবের কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(ইমামুল বারী শরহে সহীহ বুখারী, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ৪৮৯)]

মুফতি তাক্বি উসমানী সাহেব এই বিষয়টি সম্পর্কে প্রকৃত বাস্তবতার নিরীখে অত্যন্ত সহজভাবে বুঝিয়ে লিখেছেন,

“মানুষ মনে করে থাকে দূরবর্তী স্হান হলেই চাঁদের উদয়স্হল(horizon) ভিন্ন হয় আর নিকটবর্তী স্হান হলে উদয়স্হল (horizon) একই হয়। কিন্তু এটা সত্য নয়। বাস্তবতা হচ্ছে যারা চাঁদ দেখতে পায় তারা এটা আলোকরশ্মি হিসেবে দেখতে পায়, যারা এই আলোকরশ্মির আওতায় থাকে তারাই এটাকে দেখতে পায়, যারা এই আলোকরশ্মির আওতার বাহিরে থাকে তারা এটাকে দেখতে পায় না। উদাহরন স্বরূপ ধরে নেই চাঁদ উদিত হল এবং একটি টেবিলের উপরিভাগ হচ্ছে এর আলোকরশ্মির সীমা, এই পরিসীমার মধ্যে চাঁদ দেখা যাবে।যদি একজন ব্যক্তি টেবিলের একপ্রান্তে থাকে এবং অপরজন টেবিলের অপর প্রান্তে থাকে তবে তাদের মাঝে হাজার মাইল দূরত্ব হলেও তাদের জন্য উদয়স্হল (horijon) একই। কারন তারা দুইজনই আলোকরশ্মির আওতার মধ্যে এবং উভয়েই চাঁদ দেখতে পাচ্ছে। পক্ষান্তরে আরেকজন ব্যক্তি যদি আলোকরশ্মির আওতার মধ্যে না থাকে তবে সে আলোকরশ্মির আওতার মধ্যে থাকা ব্যক্তির খুব কাছে থাকলেও তার উদয়স্হল (horijon) ভিন্ন। আসুন একটি দৃশ্যমান উদাহরন নেই এটাকে বুঝার জন্য। মনে করুন দারুল ঊলুমের (মাদ্রাসার) বাহিরে একটি উচুঁ পানির ট্যাংকি আছে। যদি আপনি এর চার দিক দিয়ে ঘুরতে থাকেন আর এটাকে দেখতে থাকেন এটা আপনি অনেক দূর থেকে দেখতে পাবেন। (বেশ কিছুদূর যাওয়ার পর) একটা পর্যায়ে এটা আর দেখা যাবেনা। (যে কোন দিকে যেখানে এটা সর্বশেষ দেখা যায় সেই শেষ প্রান্ত থেকে) বিপরীত দিকে (শেষ প্রান্তে) সেখানেও এই ট্যাংকিটি দেখা যাবে। এই দুই স্হানের দূরত্ব চার বা পাঁচ মাইল হলেও তাদের উদয়স্হল একই। পক্ষান্তরে একটি শেষ প্রান্ত থেকে খুব কাছের কোনো একটি জায়গা যেখান থেকে এটা দেখা যায়না সেই জায়গা( ঐ শেষ প্রান্তের খুব কাছে হওয়া স্বত্তেও) এর উদয়স্হল (horijon) ভিন্ন। সুতরাং উদয় স্হলের ভিন্নতা বা একতা নির্ভর করে দূরত্বের উপর নয় বরং দেখা যাওয়ার উপর।

যদি চাঁদের আলোকরশ্মির সীমা প্রতিবার চাঁদ উদয়ের সময় একই থাকত তাহলে এর উপর ভিত্তি করে পৃথিবীকে দুই ভাগে ভাগ করা সম্ভব হত (এভাবে যে) চাঁদ পৃথিবীর এই অংশে দেখা গেছে এবং এই অংশে দেখা যায়নি। তখন পুরো ব্যাপারটি সহজ হতো এটা গবেষণা করে যে এই এলাকাগুলি আলোকরশ্মির সীমার মধ্যে এবং ওই এলাকাগুলি আলোকরশ্মির সীমার মধ্যে নয়। আর তখন আলোকরশ্মির সীমার সকল এলাকাগুলিকে একটি উদয়স্হল (horijon) এবং বাকি অংশকে আলাদা উদয়স্হল (horijon) গণ্য করা হতো। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যা ঘটে তা হচ্ছে প্রতিবার চাঁদ উদয়ের সময় এটা পৃথিবীতে নতুন আলোকরশ্মির সীমা তৈরী করে।অর্থাৎ আগের মাসে যে সমস্ত এলাকা আলোকরশ্মির সীমার অন্তর্ভূক্ত ছিল পরবর্তী মাসে তার সবটুকু অন্তর্ভূক্ত থাকেনা নতুন কিছু এলাকা আলোকরশ্মির সীমার অন্তর্ভূক্ত হয়। সুতরাং প্রত্যেক মাসেই আলোকরশ্মির সীমা পরিবর্তিত হয়। সুতরাং এমন কোন সূত্র নেই যা প্রতিষ্ঠিত করবে যে করাচী এবং হায়দারাবাদের উদয়স্হল একই অথবা করাচী ও লাহোরের উদয়স্হল আলাদা। প্রতি মাসেই এটা একটা নতুন অবস্হা। এখন যদি আমরা চাঁদের উদয়স্হলের ভিন্নতা চিন্তা করি তবে এর খুবই সম্ভাবনা রয়েছে যে, চাঁদ কোরাঙ্গি (একটি জায়গার নাম কোরাঙ্গি ) তে দেখা যেতে পারে এবং সদর (কোরাঙ্গি থেকে খুব কাছেই আর একটি জায়গার নাম সদর) এ দেখা নাও যেতে পারে। তখন কোরাঙ্গি ও সদর এর উদয়স্হল ভিন্ন হয়ে যাবে। এই কারনে (এলাকা ভিত্তিক চাঁদ দেখে আলাদা দিনে রোজা শুরু ও আলাদা দিনে ঈদ করার নীতি গ্রহন করলে ) ‘কোরাঙ্গি’ এর চাঁদ দেখা ‘সদর’ এর জন্য গ্রহনযোগ্য হয় না বা বিপরীতভাবে (সদর এর চাঁদ দেখা কোরাঙ্গি এর জন্য গ্রহনযোগ্য হয় না)। (সুতরাং) চাঁদের উদয়স্হলের ভিন্নতা (অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন দিনে আমল করার নীতি) কে গ্রহন করলে একই এলাকার সাক্ষ্য একে অপরের জন্য গ্রহনযোগ্য হয় না। এটা পরিষ্কারভাবে রাসূল (সঃ) এর আমল ও নির্দেশের বিপরীত।

আমরা দেখতে পাই আবু দাউদ শরীফে বর্ণিত একটি হাদিসের ঘটনায়, রসূলুল্লাহ (সঃ) মদীনায় চাঁদ খোঁজ করেছিলেন কিন্তু তিনি এটা দেখতে না পাওয়ার ফলে ঘোষনা করেছিলেন আজ চাঁদ দেখা যায়নি। পরের দিন আছরের পরে একটি কাফেলা এসে পৌঁছাল এবং এই কাফেলার লোকেরা বলল আমরা গতকাল মাগরিবের সময় চাঁদ দেখেছি। তাহলে তারা প্রায় চব্বিশ ঘন্টা অর্থাৎ চাঁদ দেখার পর চব্বিশ ঘন্টা পথ অতিক্রম করেছিল। তাহলে এই ভ্রমন ছিল এক মারহালা এবং এক মারহালা হচ্ছে ষোল থেকে বিশ মাইল। রাসূল (সঃ) এই চাঁদ দেখাকে মদীনার জন্য প্রমান হিসেবে গ্রহন করেছেন। এ থেকে বুঝা যায় চাঁদের উদয়স্হলের ভিন্নতা বিবেচ্য নয় বলে যে মত হানাফি ফিকাহবিদগন দিয়েছেন, তা যথার্থ এবং এটাই ‘প্রধানত শক্তিশালী মতামত’ (জাহির রিওয়ায়াত predominantly stronger opinion)।

নিকটবর্তী ও দূরবর্তী শহর বলে যে পার্থক্য পরবর্তী হানাফি উলামাগন করেছেন তা চাঁদের উদয়স্হলের ভিন্নতার বাস্তবতার বিরুদ্ধে যায় কারন (চাঁদ দেখার ভিত্তিতে) নিকটবর্তী ও দূরবর্তী শহরের প্রকৃত (বা নির্ধারিত) কোন দূরত্ব নাই। সুতরাং হানাফি ফিকাহবিদগনের ‘প্রধানত শক্তিশালী মতামত’ (জাহির রিওয়ায়াত predominantly stronger opinion) হচ্ছে যদি বিশ্বের যে কোন স্হানে চাঁদ দেখা যায় তবে তা বাকি পৃথিবীর জন্যও প্রমান হিসেবে সাব্যস্ত হবে এই শর্তে যে সংবাদ শরীয়তসম্মতভাবে বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। আজ যদি সকল দেশ এই নীতির উপর ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে আর ২৮ ও ৩১ দিনের সুযোগ থাকবে না। এতে বিভিন্ন দেশে (চাঁদ দেখার) সংঘর্ষেরও অবসান হবে”। (তাক্বি উসমানী সাহেবের (দাঃবাঃ) কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(ইমাম আল বারী শরহে সহীহ বুখারী, খন্ড ৫, পৃষ্ঠা ৪৮৯ )]

বিষয়: বিবিধ

৩৩৭৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

330154
১৬ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:৩৭
আবু জারীর লিখেছেন : একই দিনে রোযা শুরু ও ঈদ ক র তে সারা দুনিয়ার মুসলমানদের ঐক্য এখন সময়ের দাবী।
১৬ জুলাই ২০১৫ রাত ০২:৪৭
272375
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

আমি এতে জোর সমর্থন জানাই
330207
১৬ জুলাই ২০১৫ সকাল ১০:০১
সত্যের লিখেছেন : জানা-বুঝার পর না মানলে হারাম হবে
একই দিনে সিয়াম-ঈদ নিয়ে আলোচনা করলেন শায়েখ যাকারিয়া মাদানী ও ডা. মাহবুবুর রহমান বললেন-
“সারা ওয়াল্ডের সাথে রোজা রাখলে, ওটা হল সহীহ মাসয়ালা, ওটিই গ্রহণযোগ্য ।
মাসয়ালা জানার পরে, বুঝার পরে, আজকে আরাফার দিনে হজ্জ্ব হচ্ছে, কালকে ঈদ যদি কেউ জানা বুঝার পরে, যদি নিজের মতকে চাপাইয়া দিয়ে করে (এক সাথে সিয়াম-ঈদ না করে) তবে হারাম হবে”
Vedio- https://www.facebook.com/539232086216386/videos/vb.539232086216386/581534135319514/?type=2&theater; (pls click & listen)
330223
১৬ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:৪৫
ইসলামী দুনিয়া লিখেছেন : গোটা বিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন করার বিপ্লব শুরু হয়েছে।
330225
১৬ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:৫০
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : এ ধরনের আরো ব্যাপক গবেষণা দরকার। আপনাকে ধন্যবাদ জানাই একটি সময়োপযোগী পোস্টের জন্য..
330257
১৬ জুলাই ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৬
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : অনেক ধন্যবা ভালো লাগলো

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File