রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে এই দেশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা আছে কি?
লিখেছেন লিখেছেন আলোকিত আধারে ০৯ জুলাই, ২০১৪, ১১:০০:৩৮ রাত
বাংলাদেশের ৩৫তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সিরাজগঞ্জজেলার
শাহজাদপুরে প্রতিষ্ঠা পেতে যাচ্ছে
"রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়"। ভারত বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নে ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথের নামে এই দেশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা কতটুকু?
(১) "রবীন্দ্রনাথের দাদা দ্বারকানাথ ছিল
দেড়শ টাকা বেতনের ইংরেজ ট্রেভর প্লাউডেনের চাকর । দ্বারকানাথ
ধনী হয়েছিল অনৈতিক ব্যবসার দ্বারা। রবীন্দ্রনাথের দাদা দ্বারকানাথ ঠাকুরের তেতাল্লিশটা বেশ্যালয় ছিল কলকাতাতেই। ( তথ্যসূত্র: কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা,২৮শে কার্তিক,১৪০৬, রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়)"
"তাছাড়া মদ এবং আফিমের ব্যবসা ও ছিলো রবীন্দ্রনাথের দাদার।
(তথ্যসূত্র: গোলাম আহমাদ মোর্তজা রচিত ‘এ এক অন্য ইতিহাস’ গ্রন্থের ‘অসাধারণ
দ্বারকানাথ’ অধ্যায় )।"
(২) কয়েক পুরুষ ধরে প্রজাদের উপর
পীড়ন চালিয়েছেন জোড়াসাকোর এই
ঠাকুর পরিবারটি। রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর
ব্যতিক্রম ছিলেন না।
"১৮৯৪ সনে রবীন্দ্রনাথ চাষীদের
খাজনা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন,
খাজনা আদায়ও করেছিলেন [ তথ্যসূত্র: শচীন্দ্র অধিকারি, শিলাইদহ ও রবীন্দ্রনাথ
পৃঃ ১৮, ১১৭]।"
সব জমিদারা খাজনা আদায় করত একবার,কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এলাকার কৃষকদের থেকে খাজনা আদায় করত দুইবার। একবার জমির খাজনা দ্বিতীয় বার কালী পূজার সময় চাদার নামে খাজনা। ( তথ্যসূত্র: ইতিহাসের
নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত, লেখক
সরকার শাহাবুদ্দীন আহমেদ )
কর বৃদ্ধি করে বল প্রয়োগে করে খাজনা আদায়ের ফলে প্রজাবিদ্রোহ ঘটলে তাও
তিনি সাফল্যের সঙ্গে দমন করেন।
" শোষক রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে শিলাইদহের
ইসলাইল মোল্লার নেতৃত্বে দু’শঘর প্রজা
বিদ্রোহ করেন। [ তথ্যসূত্র: অমিতাভ
চৌধুরী, জমিদার রবীন্দ্রনাথ, দেশ
শারদীয়া, ১৩৮২।]"
(৩) রবীন্দ্রনাথ সহ সব হিন্দু কবি-সাহিত্যিকের ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িকতা ও চরম বিদ্বেষের শিকার হয়েছেন মুসলমানরা।
রবীন্দ্রনাথ উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে মুসলিম বিদ্বেষ হয়ে অনেক গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, কবিতা রচনা করেছে। রবীন্দ্রনাথ তার ‘রীতিমত নভেল’ নামক ছোট গল্পে মুসলিম চরিত্র হরণ করেছে ॥ রবীন্দ্রনাথ তার ‘সমস্যা’ ‘পুরান’, ‘দুরাশা’ ও ‘কাবুলীওয়ালা’ গল্পে মুসলমানদের জারজ, চোর, খুনি হিসেবে উপস্থাপন করেছে। 'ইংরেজ ও ভারতবাসী' ‘সুবিচারের অধিকার’, নামক প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ তার মুসলিম বিরোধী অবস্থা আরো স্পষ্ট করে। বিশেষ করে ‘দুরাশা’ গল্পের কাহিনীটি আরো স্পর্শকাতর। এখানে দেখানো হয়েছে, একজন মুসলিম নারীর হিন্দু ধর্ম তথা ব্রাহ্মণদের প্রতি কি দুর্নিবার আকর্ষণ এবং এই মুসলিম নারীর ব্রাহ্মণ হবার প্রাণান্তকর চিত্র।
রবীন্দ্রনাথ তার ‘কণ্ঠরোধ’ (ভারতী, বৈশাখ-১৩০৫) নামক প্রবন্ধে বলেন, "কিছুদিন হইল একদল ইতর শ্রেণীর অবিবেচক মুসলমান কলিকাতার রাজপথে লোষ্ট্রন্ড হস্তে উপদ্রবের চেষ্টা করিয়াছিল। তাহার মধ্যে বিস্ময়ের ব্যাপার এই যে- উপদ্রবের লক্ষ্যটা বিশেষ রূপে ইংরেজদেরই প্রতি। তাহাদের শাস্তিও যথেষ্ট হইয়াছিল। প্রবাদ আছে- ইটটি মারিলেই পাটকেলটি খাইতে হয়; কিন্তু মূঢ়গণ (মুসলমান) ইটটি মারিয়া পাটকেলের অপেক্ষা অনেক শক্ত শক্ত জিনিস খাইয়াছিল।"
বঙ্কিমচন্দ্রের মুসলিম বিদ্বেষপূর্ণ সাহিত্যের পক্ষে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, "মুসলমান বিদ্বেষ বলিয়া আমরা আমাদের জাতীয় সাহিত্য বিসর্জন দিতে পারি না। মুসলমানদের উচিত নিজেদের জাতীয় সাহিত্য নিজেরাই সৃষ্টি করা। (তথ্যসূত্র: ভারতী পত্রিকা, একশ বছরের রাজনীতি, লেখক,আবুল আসাদ )"
কবির মুসলিম বিদ্বেষের আরো একটি নমুনা হলো-
" মরহুম মোতাহার হোসেন চৌধুরী শান্তি নিকেতনে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনার লেখায় ইসলাম ও বিশ্বনবী সম্পর্কে কোনো কথা লেখা নেই কেন? উত্তরে কবি বলেছিলেন, ‘কোরআন পড়তে শুরু করেছিলুম কিন্তু বেশিদূর এগুতে পারিনি আর তোমাদের রসুলের জীবন চরিতও ভালো লাগেনি। [ তথ্যসূত্র: বিতণ্ডা,লেখক সৈয়দ মুজিবুল্লা, পৃ -২২৯ ]"
(৪) মুসলিম বিদ্বেষি রবীন্দ্রনাথ ছিলো ব্রিটিশদের দালাল।
" রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে আবু জাফর দৈনিক ইনকিলাবে ৭ জুন ২০০০ তারিখ শুক্রবার প্রকাশিত উপসম্পাদকীয় নিবন্ধে মন্তব্য করেন, “সর্ব-মানবিক প্রেম ছিল তার কবিতার উপজীব্য, কিন্তু কার্যত তিনি নিজে ছিলেন ব্রিটিশ রাজশক্তির অনুগত উপাসক।"
রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ইংরেজি লেখার কারিগর ছিলো সি. এফ অ্যানড্রুজ । রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের একজন প্রধান সহযোগী ছিল মি. অ্যানড্রুজ। রবীন্দ্র নাথ ঠাকুর যার নাম দিয়েছিল ‘দীনবন্ধু’। (তথ্যসূত্র: আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ-অখণ্ড সংস্করণ,দ্বিতীয় খণ্ড, কলকাতা, পৃষ্ঠা ১০৮)
এই রবীন্দ্রই ড.ডেভিসের মধ্যস্থতায় এন্ডারসনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ‘চার অধ্যায়’লেখে। শুধু তাই নয়, ‘ঘরে বাইরে’ও তাকে টাকা দিয়ে লেখানো হয়।” (তথ্যসূত্র: দৈনিক বাংলাবাজারে প্রকাশিত ড.আহমদ শরীফের সাক্ষাৎকার, তারিখ ০১/০৫/১৯৯৭ ইং )
" কালীপ্রসনড়ব বিদ্যাবিশারদ তার 'মিঠেকড়া'তে পরিষ্কার বলেই দিয়েছিলেন যে, রবীন্দ্রনাথ মোটেই লিখতে জানতেন না, স্রেফ টাকার জোরে ওর লেখার আদর হয়। পাঁচকড়ি বাবু একথাও বহুবার স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথের প্রায় যাবতীয় সৃষ্টিই নকল। বিদেশ থেকে ঋণ স্বীকার না করে অপহরণ। ( তথ্যসূত্র: জ্যোতির্ময় রবি,ও কালোমেঘের দল, লেখক : সুজিত কুমার সেনগুপ্ত, পৃ. ১১১)।"
রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছিল গীতাঞ্জলির জন্য নয়, বরং গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ 'Osong offerings'-এর জন্য। রবীন্দ্র হলো বাংলা ভাষী,ইংরেজিতে কবিতা লিখে নোবেল প্রাইজ পাওয়াটা তার মতো ব্যক্তির
পক্ষে একদমই অসম্ভব। কিন্তু এই অসম্ভবটাই সম্ভব হয়েছিল, কারণ পর্দার
আড়ালে থেকে কলম ধরেছিল সি. এফ.
অ্যানড্রুজ। ‘গীতাঞ্জলি’র ইংরেজি অনুবাদ কিন্তু বাংলা থেকে হুবহু অনুবাদ ছিল না,বরং তা ছিল ভাবানুবাদ। সেই ইংরেজি অনুবাদের ভাব সম্পূর্ণ মিলে গিয়েছিল খ্রিস্টানদের বাইবেল ও তাদের ধর্মীয় সাধকদের রচনার সাথে। যে প্রসঙ্গে গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদের ভূমিকার লেখক,কবি ইয়েটস বলেছিল ‘Yet we are not moved because of its strangeness, but because we
have met our own image’ অর্থাৎ
‘গীতাঞ্জলি’র ভাব ও ভাষার সাথে পশ্চিমাদের নিজস্ব মনোজগতে লালিত খ্রিস্টীয় ভাবধারা সম্পূর্ণ মিলে গিয়েছিল।
ইয়েটস তার বক্তব্যের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে সেন্ট বার্নার্ড, টমাস-এ- কেম্পিস ও সেন্ট জন অফ দি ক্রসের সাথে ‘গীতাঞ্জলি’র ইংরেজি অনুবাদের মিল উল্লেখ করেছিলেন। অন্যান্য পশ্চিমা সাহিত্য সমালোচকরাও ‘গীতাঞ্জলি’র
ইংরেজি অনুবাদের ২৬নং কবিতা ও
ইংরেজি বাইবেলের Songs of Solomon - এর ৫: ২-৬ নম্বর শ্লোক, তাছাড়া সেন্ট ফ্রান্সিসের রচিত খ্রিস্টীয় গান Canticle এবং ইংরেজি গীতাঞ্জলির
৮৬নং কবিতা এই দুটো পাশাপাশি রেখে তাদের মিল দেখিয়েছেন। (তথ্যসূত্র:
আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ -১ম খণ্ড ,পৃষ্ঠা ১৪৫)।
তাছাড়া রবীন্দ্রনাথ অনেক গান এবং কবিতা নকল পর্যন্ত করেছেন।
যেমন রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত "উর্বশী" নামের কবিতাটা নকল।
সেটার নিচের লাইনগুলো পুরোপুরি নকল -
"আদিম বসন্তপ্রাতে উঠেছিলে মন্থিত সাগরে,
ডান হাতে সুধাপাত্র বিষভাণ্ড
লয়ে বাম করে,
তরঙ্গিত মহাসিন্ধু মন্ত্রশান্ত ভুজঙ্গের
মতো
পড়েছিল পদপ্রান্তে উচ্ছ্বসিত ফণা লক্ষ
শত
করি অবনত।
কুন্দশুভ্র নগ্নকান্তি সুরেন্দ্রবন্দিতা,
তুমি অনিন্দিতা।"
চার্লস সুইনবার্নের একটি কবিতার কিছু
পংক্তি থেকে সম্পূর্ণ মেরে দিয়েছেন
রবীন্দ্রনাথ, কবিতাটার নাম
"আটালান্টা ইন ক্যালিডন "।
সেই পংক্তিগুলো হলো -
"For an evil blossom was born
Of sea-foam and the frothing of blood,
Blood-red and bitter of fruit,
And the seed of it laughter and tears,
And the leaves of it madness and scorn;
A bitter flower from the bud,
Sprung of the sea without root,
Sprung without graft from the year "
(৫) বঙ্গভঙ্গ রদের আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ সরাসরি জরিতো ছিলেন।
" বঙ্গভঙ্গ রদের আন্দোলন খুব জোরালো হতে পেরেছিল, এর একটি কারণ হিন্দু জমিদারেরা এই আন্দোলনের পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছিলেন।
( তথ্যসূত্র: কমিউনিস্ট নেতা মুজাফফর আহমদের, আমার জীবন ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি’ নামের বই (ঢাকা সংস্করণ ১৯৭২, পৃষ্ঠা ১০১১)।
"বঙ্গভঙ্গ রদের আন্দোলনের সাথে
রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক ছিল। ( তথ্যসূত্র: বাংলার বিপ্লববাদ, শ্রী নলিনী কিশোর গুহ, পৃ.৭৭, ৭৮)।"
১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ২৮ মার্চ
কলিকাতার গড়ের মাঠে এক বিরাট
সমাবেশ করা হয়। ঠিক তার দু’দিন পূর্বে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হয়েছিল।
সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, ঢাকায় ইউনিভার্সিটি হতে দেওয়া যাবে না। উক্ত উভয় সভার সভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ( তথ্যসূত্র: কলকাতা ইতিহাসের দিনলিপি, ড. নীরদ বরণ হাজরা, ২য় খণ্ড, ৪র্থ পর্ব)।
" ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার
বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে কলকাতার গড়ের মাঠে যে সভা হয়, তাতে সভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এসব বাধার কারণে ১৯১১সালে ঘোষণা দিলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবটি আঁতুর ঘরে পড়ে থেকে মৃত্যুর প্রহর গুনছিল।
অবশেষে নানা বিষয়ে সমঝোতা হয়,
যার মধ্যে ছিল মনোগ্রামে ‘সোয়াস্তিকা’ এবং ‘পদ্ম’ ফুলের প্রতীক থাকবে।
প্রতিবাদকারীরা খুশি হন। এরপর ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।" ( তথ্যসূত্র: ডক্টর কাজী জাকের হোসেন : দৈনিক ইনকিলাব, ১০ মার্চ, ২০০২)।"
১৯১২ সালের ২৮শে মার্চ কলিকাতা গড়ের মাঠে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের
সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিবাদে এক বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়। [ তথ্যসূত্র: আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতা এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা, লেখক,মেজর জেনারেল (অব.) এম এ মতিন (সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা)]
এতো কিছুর পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধী,ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে এই দেশে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার যৌক্তিকতা আছে কি?
বিষয়: বিবিধ
১৮২৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন