ইয়া আল্লাহ তত্ববধায়ক সরকারের রুপকার ভাষা সৈনিক গোলাম আযম শহীদ হিসাবে কবুল করে জান্নাতবাসী করুন আমিন ছুম্মা আমিন

লিখেছেন লিখেছেন মোশারোফ ২৩ অক্টোবর, ২০১৪, ১১:০০:২১ রাত

তত্ববধায়ক সরকারের রুপকার ভাষা সৈনিক গোলাম আযম

বাংলাদেশের রাজনীতির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এক পরিচিত নাম অধ্যাপক গোলাম আযম। জীবনের প্রথম দিকে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত হিসেবে স্মরণীয় হলেও শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য সৃষ্ট যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নামের ক্যাঙ্গারু কোর্টের রায়ে একজন যুদ্ধাপরাধী হিসেবে কারাদণ্ড ভোগ করেছেন।

১৯২২ সালের ৭ নভেম্বর (বাংলা ১৩২৯ সালের ৫ই অগ্রহায়ন) সালে ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের শাহ সাহেব বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন গোলাম আযম। তাঁর নানা শাহ সৈয়দ আব্দুল মোনায়েম শাহ সাহেব নামে পরিচিত ছিলেন।

গোলাম কবির ও সৈয়দা আশরাফুন্নিসার সন্তান গোলাম আযমের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবী নগর উপজেলার বিরগাঁও গ্রামে। তবে ঢাকার বড় মগবাজারের কাজী অফিস লেনের বাড়িতেই দীর্ঘ দিন ধরে তারা স্থায়ীভাবে বসবাস করেছেন।

তাঁর পূর্বপুরুষ শায়খ জাকি (র.) মধ্যপ্রাচ্য থেকে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশে বাংলাদেশে আসেন এবং ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় বসবাস করেন। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করা গোলাম আযম বিরগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয় লেখাপড়া শুরু করলেও একটি মাদ্রাসা থেকে অষ্টম শ্রেণী পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকার সরকারি ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমান কবি নজরুল কলেজ) থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ ও এমএ পাস করেন।

বৃটিশ উপনিবেশের বিদায়লঘ্নে সংস্কৃতি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পূর্ব বাংলার জাতীয় জীবনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় জড়িয়ে পড়া অধ্যাপক গোলাম আযম ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বা ডাকসু'র জিএস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তখন ভাষা আন্দোলনে অসামান্য অবদান রাখায় সবার উপরে নিজের স্থান করে নিয়েছিলেন তিনি।পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা "বাংলা" দাবিতে প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানকে দেয়া স্মারকলিপি পাঠ করে ভাষা সৈনিক হিসেবে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেন গোলাম আযম।

১৯৫১ সালে রংপুরের কারমাইকেল কলেজে শিক্ষকতা শুরু করার পর থেকে তাবলীগ জামায়াতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে বিভিন্ন মসজিদে গিয়ে বক্তব্য তুলে ধরতেন গোলাম আযম। ১৯৫৪ সালে সৈয়দ আবুল আলা মওদুদী দ্বারা প্রভাবিত হয়ে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন।

ইসলাম প্রচার, ইসলামী রাজনীতি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করা গোলাম আযম ১৯৫৫ সালে গ্রেফতার হন। ১৯৬৪ সালে আইয়ুব খান মৌলবাদী ধর্মীয় কাজকর্মের জন্য জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ও গোলাম আযম দ্বিতীয়বার গ্রেফতার হন। তাকে আট মাস আটক করে রাখা হয়। ১৯৬৯ সালে তিনি তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর আমীর (সভাপতি) পদে অধিষ্ঠিত হন।

গোলাম আযম দীর্ঘদিন পশ্চিম পাকিস্তানী সামরিক শাসক চক্রের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিলেও ৭১ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানে বিশ্বাসী ছিলেন। তিন দিক থেকে বাংলাদেশকে ঘিরে থাকা ভারতের শাসক গোষ্ঠীর ভূমিকার কারণে তিনি পাকিস্তান বিভক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ সৃষ্টিতে এ অঞ্চলের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ভারতের করায়ত্ব হবে বলে আশংকা করতেন।

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নামের আওয়ামী আদালত মুক্তিযুদ্ধকালীন কোনো অপরাধে গোলাম আযম সরাসরি জড়িত নয় বলে স্বীকার করলেও 'সুপ্রিম কমান্ড রেসপনসিবিলিট'র দায়ে তাকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল।

তিনি বিএসএমএমইউ হাসপাতালের প্রিজন সেলে দণ্ড ভোগকালে সেখানেই শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। ২০১১ সালের ১২ ডিসেম্বর গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই তিনি এখানে বন্দি ছিলেন।

১৯৭১ সালের নভেম্বর থেকে গোলাম আযম পাকিস্তানে থাকলেও ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশে ফেরেন। জেনারেল এরশাদের সময় দেশে রাজনৈতিক দৈন্য-দশা দেখা দিলে নির্দলীয় তত্ববধায়ক সরকারের রুপরেখা দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে তাকে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমীর ঘোষণা করা হলে দেশে ব্যাপক আন্দোলন দেখা দেয়। তবুও ২০০০ সাল পর্যন্ত এই পদে আসীন ছিলেন। রাজনীতির বাইরে শতাধিক বইও লিখেছেন গোলাম আযম।

বিষয়: বিবিধ

১২৯১ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

277623
২৩ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১১:০৫
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : আমিন , আমিন , আমিন।
277643
২৩ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১১:৩৪
আবু জারীর লিখেছেন : হে রব! তুমি তোমার গোলাম অধ্যাপক গোলাম আযমকে মাফ করে দাও। তাকে তোমার জান্নাতের মেহমান বানাও। সারা জীবন যারা তাকে জন্ত্রনা দিয়েছে, অপবাদ দিয়েছে, জেল খাটিয়েছে, ভবিষ্যতে যারা তাকে অপবাদ দিবে তুমি তাদের সকলকে তোমার কঠিন আজাবে নিপতিত কর। তাকে যারা ভালোবাসে, ভালোবেসেছিল এবং ভবিষ্যতেও ভালোবাসবে তুমি তাদের সকলকে হেদায়েতের উপর অটল রেখ। মরহুমের রেখে যাওয়া অসমপ্ত কাজকে সফলতার সাথে আঞ্জাম দেয়ার জন্য তার উত্তরসূরিদের হিম্মত দাও। তার আজীবনের লালীত স্বপ্ন বাংলাদেশে তোমার দীন প্রতিষ্ঠিত করে জান্নাতে তার বিদেহী আত্মাকে পরিতৃপ্ত কর। হে রব তুমি আমাদের দুয়া কবুল কর।
২৪ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৩০
221769
মোশারোফ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
২৪ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৩০
221770
মোশারোফ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
277712
২৪ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৪:১৭
কাহাফ লিখেছেন :
আমিন ইয়া রাব্বাল আলামিন, উনাকে জন্নাতের প্রিয় মেহমান করে নাও........।
২৪ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৩০
221771
মোশারোফ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
277902
২৪ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:২৯
মোশারোফ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File