বেশ্যার পুরুষবাচক শব্দ কি?

লিখেছেন লিখেছেন মোশারোফ ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১০:৪৭:২৬ রাত

শুরু করার মতো শব্দ পাচ্ছি না। একদিকে দশম শ্রেণীর 'ধর্ম বই' পড়ে এক দল যে কাউকে 'মুমিন বা পরহেজগার' এর সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করছে; অন্যদিকে 'বিশেষ সুড়সুড়ি'র বশবর্তী হয়ে 'পুরুষ' নামে বলীয়ান অনেকে নারীকে বলছে 'বেশ্যা বা খানকি'।

কারণ হল 'নারী কেন শাড়ির উপর দিয়ে ব্লাউজ পড়ছে'। কাহিনী যাই হোক, আমি এই ভেবে শান্তি পাচ্ছি যে 'পোশাকের কাপড়'টা পাতলা ছিল না, তাইলে 'সমাজের সংস্কৃতির একমাত্র ধারক' পুরুষদের যে কি পরিমাণ সুড়সুড়ি লাগতো ভাবা যায়?

তবে আমাদের সমাজের উদার মানসিকতার নারী বা পুরুষরা কোন এক বেড়াজালে আটকে আছেন। সেটা হলো 'ধর্ম'। সকল ক্ষেত্রেই কেন জানি তারা ধর্মের গন্ধ পান। যিনিই রক্ষণশীল মন্তব্য করেন, তার নাম হয়ে যায় 'মুমিন বা ফতয়াবিদ'। সমস্যা কি? মুমিন কি তোমার বাড়ির পাশে থাকা চাচা? দাড়ি টুপি কপালের দাগ বা ইচ্ছে মতো ধর্মের দোহাই দেয়া সবাই কি মুমিন চাচা?

সমালোচক হও বা সমাজ সংস্কারক হও তোমার জন্য আমরা গর্বিত; তবে যে সংজ্ঞায় কাউকে সংজ্ঞায়িত করছ সেটা ভাল করে জেনে মন্তব্য করো। কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা যেমন 'Blog' কাকে বলে জানে না, তেমনি তুমিও মাধ্যমিকের ধর্ম বই পড়ে 'মুমিন' কাকে বলে জানো না বলেই আমি মনে করি।

এখন আসি 'বিশেষ ধর্মভীরু, সংস্কৃতিমনা'দের দিকে। এ ধরনের নোংরা মনের পুরুষ শ্রেণী ১৩০ কোটির ভারতেও আছে আবার ১৬ কোটির বাংলাদেশেও আছে। ওদের টাইমস অব ইন্ডিয়া মন্তব্য করে আবার আমাদের পাড়ার সিগারেট বিক্রেতাও মন্তব্য করে। ওদের আছে দীপিকা আর আমাদের নবাগতা কোন মডেল। তবে ওদের সাথে আমাদের পার্থক্য হলো- ওরা স্তনের ভাঁজ নিয়ে আলোচনা করে আর আমরা শাড়ির উপর ব্লাউজ নিয়া আলোচনা করি। আলোচনা না ঠিক, সুড়সুড়ি নেই। সমস্যাটা ব্লাউজ পরা নিয়ে নয়; সমস্যা হলো পোশাকে বিশেষ স্থান ঢেকে রাখায় সুড়সুড়ি বেশ জমছে না। না জমলে মেজাজ খারাপ তো হবেই, যার ফলে নিজের চরিত্রের স্ত্রীবাচক গালি দেয়া।

আর দেশীয় সংস্কৃতির জন্য হা-হুতাশ? আমাদের মতো নিকৃষ্ট মানসিকতার মানুষ নিয়ে যে সংস্কৃতি আর সমাজ টিকে আছে তাকে শাড়ির উপর ব্লাউজ কেন শাড়ি ব্লাউজ ছাড়া কিছুও শেষ করতে পারবে না। আর ধর্ম? ওটাকে যেভাবে বাপ-দাদার সম্পত্তি ভেবে 'ব্লাউজ-শাড়ি-বোরকা' পড়িয়ে রাখছ, তাতে কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না এখন শুধু দরকার তোমার নগ্ন মন-মানসিকতাকে শাড়ি ব্লাউজ পড়ানো।

বলো তো বেশ্যা খানকি বলছ কাকে? পোশাক দেখেই তুমি সব বুঝে গেলে? বেশ্যার পুরুষ বাচক শব্দ কি? তুমি পারবে না বলতে। তুমি পারবে আরেকটা পুরুষকে লজ্জায় ফেলতে। তুমি পারবে কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করে বিয়ের জন্য কুমারী মেয়ে খুঁজতে। তুমিই পারবে 'মা বোনের' অবয়ব ভেবে যৌন সুড়সুড়ি নিতে; ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে মোবাইলের ছোট পর্দায় 'প্রাপ্তবয়স্ক মুভি' দেখতে।

তুমি খোঁজ যৌনতা মেয়েদের প্রতিটি রূপে, স্কুল ড্রেসে-সাধারণ জীবনে, ঘরের স্বাচ্ছন্দ্যতায়-বিয়ের সাজে কিংবা ফ্যাশনের সৃষ্টিশীলতায়। তুমি সৌন্দর্য বোঝো না। যৌনতায় জীবনের মানে খোঁজ। খুঁজতে গিয়ে তোমার মাথা নিচু হয়ে গেছে, মাথা তুলে সৃষ্টিশীল কিছু দেখতে তুমি ভয় পাও।

দয়া করে আর লজ্জা দিও না। আমরা আমাদের মা-বোন-বান্ধবীদের সামনে দাড়াতে চাই। দয়া করো ভাই দয়া করো। ভাল থাক তুমি।

বিষয়: বিবিধ

১৭৩০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

266737
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:০৬
মু. মিজানুর রহমান মিজান (এম. আর. এম.) লিখেছেন : আপনার পোষ্টটি কেবল উলুবনে মুক্তো ছড়ানোর মত।
266746
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৩৭
নূর আল আমিন লিখেছেন : মিজানুর রহমান
মিজান (এম. আর. এম.)
লিখেছেন : আপনার
পোষ্টটি কেবল
উলুবনে মুক্তো
ছড়ানোর মত।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File