কিনছেন দেশি, আসলে বিদেশি! -------------------
লিখেছেন লিখেছেন মোশারোফ ২৫ আগস্ট, ২০১৪, ০৯:১৫:০১ রাত
মাংসের চাহিদা মেটাতে দেশে এখন ব্রয়লার মুরগীর বাণিজ্যিক চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তুলনামূলক সস্তা ও সহজলভ্য হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষ এই মুরগীই কেনে। তবে এসব মুরগীতে সবার রুচি হয় না। আর দেশি মুরগীর তুলনায় ব্রয়লারগুলোর স্বাদও কম। তাই সামর্থ্য থাকলে দেশি মুরগীই কিনতে চান সবাই।
তবে ঠিকঠাক না চেনার কারণে অনেকেই ঠকছেন। দেশি ভেবে বেশি দামে ফার্মের মুরগীই কিনে বাসা ফিরছেন কেউ। বাজারে ফার্মে পালিত লেয়ার, কক, ব্রয়লারসহ নানা জাতের মুরগী পাওয়া যায়। এর মধ্যে থেকে দেশি মুরগীটি চিনতে হলে অভিজ্ঞতা প্রয়োজন আছে না হলে নিশ্চিত ঠকবেন।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, দেশি মুরগী বলে যেসব বিক্রি করা হচ্ছে তা আদৌ দেশি নয়। বাজারে এখন পাকিস্তানি কক দেশি মুরগী বলে বিক্রি করা হচ্ছে। পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলে এই জাতের মুরগীগুলো চেনা দুষ্কর।
এমনকি দেখা গেছে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে দেশি চিকেন বলে চালানো হয় সেগুলোও পাকিস্তানি কক বা বিদেশি জাতেরই মুরগী। এসব মুরগী খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ‘কক’, ‘কককুড়া’ আর ‘সোনালি’ নামে। কিন্তু দেখতে হুবহু দেশি মুরগীর মতো বলে দামও চড়া। এতে ক্রেতারা ঠকছে প্রতি কেজি মুরগীতে ৭০-৮০ টাকা করে।
রাজধানীর বিভিন্ন কলোনি ও আবাসিক এলাকাগুলোয় এসব মুরগী ফেরিওয়ালাসহ কিছু ভাসমান খুচরা বিক্রেতা দেশি মুরগী বলে বিক্রি করছে।
হাতিরপুল বাজারের মুরগী ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, এসব মুরগী কিনে কোনো ক্রেতা এখন পর্যন্ত অভিযোগ করেনি। পাকিস্তানি ককের স্বাদ দেশী মুরগীর মতোই।
তবে এসব মুরগী দেশি বলে বিক্রি করার অভিযোগ অস্বীকার তিনি বলেন, ‘আমি বিদেশি মুরগীকে দেশি বলে বিক্রি করি না। আমাদের এখানে পাকিস্তানি কক ও দেশি মুরগী দু’টোই আছে।’
এসব মুরগী কোথা থেকে আসে জানতে চাইলে পলাশী বাজারের মুরগী বিক্রেতা রহিম বলেন, ‘আমরা এসব মুরগী কাওরান বাজার থেকে নিয়ে আসি। তবে দেশে আসে সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকা বিশেষ করে কুষ্টিয়া, যশোর, বগুড়া, কুমিল্লার লাকসাম প্রভৃতি এলাকা থেকে।’
দেশি মুরগীর মতো দেখতে এসব মুরগীর ওজন সাধারণত ৬শ থেকে ৮শ গ্রাম হয়। পাকিস্তানি কক বিভিন্ন রঙের পাওয়া যায়। দেখতে অনেকটা দেশি বিভিন্ন রঙের মুরগীর মতো।
এসব মুরগীর খুচরা মূল্য কেজিপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা যা দেশি মুরগীর সমান। যদিও বিদেশি হিসেবে বিক্রি হলে দাম হওয়ার কথা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।
পলাশী বাজারে মুরগী কিনতে আসা সরকারি চাকরিজীবী মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ফার্মের ব্রয়লার মুরগী খেতে তেমন একটা ভালো লাগে না। তাই দেশি মুরগী কিনি। কিন্তু দেশি মুরগীতেও আজকাল ভেজাল দেখা দিয়েছে। এজন্যে আগের মতো দেশি মুরগী কিনলে স্বাদ পাওয়া যায় না।’
এ ব্যাপারে পোলট্রি ব্রিডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সভাপতি আবু লুৎফি ফজলে রহিম খান বলেন, ‘এসব মুরগী শরীরের জন্য কোনো ক্ষতি করে না। মাংসের চাহিদা পূরণ করার জন্য এ ধরনের মুরগী উৎপাদন করা হয়। দেশি মুরগী ও বিদেশি মুরগীর মধ্যে স্বাদের পার্থক্য থাকলেও একই ধরনের আমিষ পাওয়া যায়। তবে দেশি মুরগী বলে বিক্রি করাটা এক ধরনের অনৈতিক ব্যবসা। আর এ ধরনের মুরগীর মূল্য দেশি মুরগীর তুলানায় কম।’
বিষয়: বিবিধ
১০৬৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের বাংলাদেশীদের ''এটা খাবো না , ওটা খাবো '' বিশেষ বিশেষ খাবারের প্রতি এলার্জি দোকানীদের সুযোগ এনে দেয় সে সব জিনিসের দাম আকাশচুম্বী করে দেবার ।
সব জিনিসে বিদেশী খোঁজা বাংলাদেশীরা মুরগির ব্যাপারে কেন এত দেশ প্রেমিক হয়ে গেল - ব্যাপারটা খুবই ফানি + স্ববিরোধী ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন