৭১ টেলিভিশনে কোনো ভদ্রলোক আসতে পারে না : অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী

লিখেছেন লিখেছেন মোশারোফ ২৪ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:৪৮:২৬ সন্ধ্যা

রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ হবে? এমন প্রশ্ন নিয়ে ৭১ সংযোগ লাইভ অনুষ্ঠান শুরু হবার পর সেখান থেকে উঠে চলে গেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী। যাবার আগে তিনি বলেন, উপস্থাপকের ভূমিকা অনুষ্ঠান মডারেট করা..

অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ২১’শে আগষ্টের ঘটনায় প্রকাশ্যে জনসভায় আপনি ১৬টি গ্রেনেড মারলেন, তারমধ্যে দুটি ফোটে নাই। সে দুটি গ্রেনেড নষ্ট করে ফেললেন। জেলখানার ভেতরে গ্রেনেড পাওয়া গেল। আপনার ওসমানি উদ্যানের ভেতর গ্রেনেড পাওয়া গেল। এ সবকটি গ্রেনেডকে আপনি নষ্ট করে ফেলা হল। এ পর্যায়ে দিলারা চৌধুরী বলেন, এসব ঘটনার তদন্ত হওয়া দরকার। শ্যামল দত্ত, দিলারা চৌধুরীর সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, তদন্ত হওয়া দরকার, আনফরচুনেটলি তদন্ত হয়নি। আপনি জজ মিয়া বের করলেন। ৭৫’এর খুনিদের চাকরি দিলেন বিভিন্ন মিশনে। এ পর্যায়ে দিলারা বলেন, কে দিয়েছে মোশতাক, শ্যামল দত্ত বলেন, মোশতাক দিয়েছে। দিলারা প্রশ্ন তোলেন, মোশতাক আওয়ামী লীগ না? শ্যামল দত্ত বলেন, এবং এই চাকরি কন্টিনিউ করেছেন বেগম জিয়া পর্যন্ত। মোশতাক মীরজাফর বেঈমান।

এ পর্যায়ে দিলারা জামান, শ্যামল দত্তকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি এমন এক সময়ে এ কথা তুললেন যারা এখনো ক্ষমতায় আছেন এবং তারা মোশতাকের ক্যাবিনেটের সদস্য ছিলেন। তাদের কথা বলেন, যে তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে, পারবেন তাদের নাম বলতে? শ্যামল বলেন, অবশ্যই আছে। দিলারা ফের তাকে তাদের নাম বলতে বললে শ্যামল দত্ত হেসে বলেন, আমিতো ইয়াহিয়া ক্যাবিনেটে যারা ছিলেন তাদেরো নাম বলব আপা..দিলারা জামান বলেন, হ্যা নাম বলেন। ওই ক্যাবিনেটে আমার হাজবেন্ট ছিল। শ্যামল এপর্যায়ে বলেন, ইয়েস। দিলারা বলেন, যদি ইতিহাস ঘাটতে হয় তাহলে আমার হাজবেন্ডের বই পড়ে দেখবেন। আপনার হাজবেন্ড’এর বই পড়ে দেখেছি ম্যাডাম। দিলারা বলেন, আমি এখানে আমার হাজবেন্ডকে রিপ্রেজেন্ট করতে আসিনি। আমিতো বলিনি যে আমার হাজবেন্ডের কাসুন্দি ঘাটেন। আমি বলেছি মোশতাকের ক্যাবিনেটে যারা ছিল তাদের নাম বলেন। তার সঙ্গে ইয়াহিয়া ক্যাবিনেটের সদস্যদের নাম বলার কি যোগাযোগ আছে। আপনি কি বলেন, এটা বলে পারসোনালি হিউমিলেট করতে পারবেন আমাকে ? এসময় তুমুল বিতর্ক শুরু হয় অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের মধ্যে। শ্যামল দত্ত এক পর্যায়ে বলেন, ইয়াহিয়া ক্যাবিনেটে আপনার হাজবেন্ড ছিল একথা তো বলিনি আমি। দিলারা বলেন, তাহলে আপনি হাসি দিয়ে কেন বললেন যে তাহলে আমাকে ইয়াহিয়া ক্যাবিনেট মেম্বারদের নাম বলতে হবে। শ্যামল দত্ত বলেন, যুগে যুগে বিভিন্ন ক্যাবিনেটে বেঈমানরা ছিল। ইয়াহিয়ার ক্যাবিনেটেও ছিল, মুজিবের ক্যাবিনেটেও ছিল।

দিলারা এ সময় শ্যামল দত্তকে বলেন, তাহলে সেই বেঈমানরা যারা এখন পাওয়ারে চলে আসছে তাদের নাম বলেন। কোনো সদুত্তর না পেয়ে দিলারা চৌধুরী এসময় বলেন, আমার বক্তব্য শেষ হয়নি। আমি বলতে চাচ্ছি অন রেকর্ড ৭১ টেলিভিশনে কোনো ভদ্রলোক, কোনো একাডেমিশিয়ান এখানে কোনো আলোচনায় অংশ নিতে আসতে পারে না। এ পর্যায়ে অনএয়ারে দিলারা চৌধুরী উঠে দাঁড়ান এবং স্টুডিও ত্যাগ করতে উদ্যত হন। এ পর্যায়ে অধ্যাপক মেজবাহ কামাল বলেন, আচ্ছা ঠিক আছে অনুষ্ঠান আমাদের শুরু করতে হচ্ছে। যাবার আগে উপস্থাপক শাকিল আহমেদ, দিলারা চৌধুরীকে বসতে বললে তিনি বলেন, অপ্রয়োজনীয় ভাবে কথা উঠালে আমি বসব না। শাকিল আহমেদ জানান, সে দায় ৭১ টেলিভিশন কিভাবে নেবে? জবাবে দিলারা চৌধুরী বলেন, ৭১ টেলিভিশনের উপস্থাপকের যে রোল, সে রোলটা হবে মডারেট করা। মডারেট করতে যেয়ে অনেককে অনেক কিছু চান্স দিয়ে ফেলছেন। অনুষ্ঠানে শ্যামল চৌধুরী ও অধ্যাপক মেজবাহ কামালকে লক্ষ্য করে দিলারা বলেন, আমি এখানে বসে বসে অতীতে আপনার কোথায় ছিলেন, কোনখান থেকে জাম্প করে এখানে এসেছেন এগুলো বের করি? এ পর্যায়ে স্টুডিও থেকে দিলারা চৌধুরী বের হয়ে গেলে উপস্থাপক শাকিল আহমেদ বলেন, আমার মনে হয় বিরতিতে যাওয়া ছাড়া .. ধন্যবাদ আমরা একটা বিরতির পর ফিরে আসছি। বিরতির পর উপস্থাপক শাকিল আহমেদ দিলারা চৌধুরীকে ছাড়াই বাকি দুই অতিথি শ্যামল দত্ত ও অধ্যাপক মেজবাহ কামালকে নিয়ে অনুষ্ঠান চালিয়ে যান।

এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেন, শুধু ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নয় এর পরবর্তী সময়ে উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হয়ে যে ভূমিকা নিয়েছে তাতে আমি লজ্জিত হয়েছি। ৪২ টি দলের মধ্যে ৮/৯টি দলের অংশ গ্রহণে যে নির্বাচন হয়েছে তা অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক। তিনি বলেন, যেখানে সাংবিধানিক পথ বন্ধ হয়ে যায় সেখানে রাজনৈতিক সহিংসতা হবে এটাই স্বাভাবিক। দাবি না মানলে সহিংসতা হবেই। সহিংসতা শুধু একটি দলই করে না, সহিংসতা আওয়ামী লীগও করে। কিন্তু সহিংসতা কারোই কাম্য নয়। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে জামায়াত ও হেফাজতের সহিংসতার কথা বললে তার নিন্দা করবো। কিন্তু সাংবিধানিক সংকট থেকে উত্তরণের জন্য যে আন্দোলন হয়েছে তার নিন্দা করবো না। দুই পক্ষই একে অপরের প্রতি চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে।

বিষয়: বিবিধ

৮৫৬ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

257839
২৪ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৮
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : ৭১ টিভিতে মডারেটরা একপক্ষনীতি অবলম্বন করে এটাতো সবার জানা।
257852
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:২৯
ফেরারী মন লিখেছেন : হুম
257883
২৪ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:০৭
মু. মিজানুর রহমান মিজান (এম. আর. এম.) লিখেছেন : আজকাল এইরকম অনেক ঘটনাই ঘটে। বিদেশে এদেশের চ্যানেল দেখালে শুধুই থুথু মারত। যাইহোক, আমাদের নৈতিকতার অভাব প্রচন্ড ভাবে লক্ষ্যনীয়। ধন্যবাদ।
258001
২৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:১৮
চোরাবালি লিখেছেন : ৭১টিভিতে যতগুলি নিউজ বা টকশো দেখেছি আমার মনে হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রচারে আছেন। বিশেষ করে নিউজ নবনিতা; ৭১এর নবনিতা
258021
২৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:৪২
হতভাগা লিখেছেন : টক শো গুলোতে এখন ঝগড়াঝাটিকে উসকে দেওয়া হচ্ছে । পরে হাতাহাতি হবে । এবং এটার রেশ ধরে টক শো বন্ধের একটা অজুহাত পাওয়া যাবে ।

তবে আমি টক শোতে শুধু গলাবাজি না দেখে WWE এর মত ''হামতাম follwed by মারামারি'' দেখার অপেক্ষায় আছি।
258045
২৫ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:১১
ইয়াফি লিখেছেন : দেশে এখন আওয়ামী চাটুকারদের স্বর্ণযুগ চলছে। যত অপমান, অপবাদ দিতে পারে তত লাভ!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File