হযরত আলী (আ.)’র কয়েকটি বিস্ময়কর মু’জিজা

লিখেছেন লিখেছেন মোশারোফ ২০ জুলাই, ২০১৪, ০১:০০:১১ রাত

ইসলাম ডেস্ক : শনিবার ইরানসহ বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে আমিরুল মু’মিনিন আলী (আ.)’র বেদনাবিধুর শাহাদত বার্ষিকী। ১৩৯৫ চন্দ্র বছর আগে ৪০ হিজরির এই এই দিনে (২১ রমজান) তিনি শাহাদত বরণ করেন। এ উপলক্ষে সবাইকে জানাচ্ছি গভীর শোক ও সমবেদনা এবং এই মহামানবের শানে পেশ করছি অসংখ্য সালাম ও দরুদ।

১৯ রমজান এক খারিজি (ইসলাম থেকে বিচ্যুত) সন্ত্রাসী কুফার মসজিদে ফজরের নামাজে ইমামতিরত অবস্থায় আলী (আ.)’র ওপর তরবারির আঘাত হানে। আর এই আঘাতের ফলেই আজ তিনি শহীদ হন। ফলে শেষ হয়ে যায় বিশ্বনবীর (সা.) পর ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে ন্যায়বিচারপূর্ণ শাসন।

উল্লেখ্য, বহু বছর আগে এক শাবান মাসের শেষ শুক্রবারে রমজানের ফজিলত সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিশ্বনবী (সা.) ভাষণের শেষ পর্যায়ে কাঁদতে থাকেন। তা দেখে হযরত আলী (আ.) এর কারণ জানতে চান। জবাবে মহানবী বহু বছর পর রমজান মাসে আলী (আ.)'র মর্মান্তিক শাহাদতের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা উল্লেখ করলেন। তিনি বললেন,"হে আলী, এই মাসে তোমার ওপর যা নেমে আসবে সে জন্য আমি কাঁদছি। (আমি নিজেকে কল্পনা করছি) তোমার স্থানে যখন তুমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছ এবং সামুদ জাতির কাছে পাঠানো (খোদায়ী) উটের পা কর্তনকারী লোকটির মতই মানব ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তিটি তোমার মাথার ওপর আঘাত হানবে এবং তোমার দাড়ি তাতে (রক্তে) রঞ্জিত হবে।"

মহানবীর জামাতা ও চাচাতো ভাই আলী (আ.) ছিলেন বীরত্ব, মহানুভবতা ও ন্যায়বিচারের প্রতীক। বেহেশতী নারীদের নেত্রী ফাতিমা (সালামুল্লাহি আলাইহা)-কে বিয়ে করার জন্য আবুবকর ও ওমরসহ অনেক সাহাবিই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে মহানবী (সা.) আল্লাহর নির্দেশে আলী (আ.)-কেই ফাতিমার সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ করেন।

আলী (আ.)’র জীবনের অনেক বিস্ময়কর অলৌকিক ঘটনা বা মু’জিজা রয়েছে। যেমন, জন্মের সময় পবিত্র কাবা ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে আবার তা মিলিয়ে যাওয়া যাতে তাঁর মা ফাতিমা বিনতে আসাদ তাঁকে জন্ম দিতে পারেন, রাসূলের (সা.) ওফাতের পর কুবা মসজিদে রাসূল (সা.)-কে জীবিত অবস্থায় দেখানো, সূর্যকে পেছনে ঘুরিয়ে দেয়া যাতে সঙ্গীরা নামাজ আদায় করতে পারেন সময়মত ইত্যাদি।

ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন: মক্কা বিজয়ের পর ফেরার পথে এক রাতে মহানবী (সা.) আলী (আ.)-কে বলেন যে, সূর্য যখন উদিত হবে তখন তুমি সূর্যের সঙ্গে কথা বলবে। আমি ফজলকে বললাম দেখবো আলী কিভাবে সূর্যের সঙ্গে কথা বলে। সূর্য ওঠার পর আলী (আ.) সূর্যকে লক্ষ্য করে বলেন: সালাম তোমায় হে সূর্য, তুমি আল্লাহর সৎ দাস ও আল্লাহর নির্দেশ পালনে অবিচল।

সূর্য জবাবে বলল: ওয়া আলাইকাসসালাম হে আল্লাহর রাসূলের ভাই!

আসমা বিনতে উমাইস বর্ণনা করেন হযরত ফাতিমা জাহরা (সা. আ.) বলেছেন: কোনো এক রাতে আলী (আ.) ঘরে প্রবেশ করলে আমি ভীত হয়ে পড়ি। আসমা বলেন: হে বিশ্বের নারীকুলের নেত্রী! কিভাবে ভয় পেয়েছিলেন আপনি! তিনি বলেন: আমি শুনলাম যে জমিন বা মাটি আলীর সঙ্গে কথা বলছে এবং আলীও জমিনের সঙ্গে কথা বলছেন!

একবার আলী (আ.) একদল সঙ্গীসহ কুফার মসজিদে উপস্থিত ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি ইমাম আলী (আ.) বলে: আমার বাবা-মা আপনার জন্য উৎসর্গ হোক, আমি বিস্মিত যে এই দুনিয়া এই গ্রুপের হাতে রয়েছে এবং আপনি এই দুনিয়া থেকে কিছুই পাচ্ছেন না! আলী (আ.) বললেন, তুমি কি মনে কর আমরা (বিশ্বনবীর-সা. আহলে বাইত) যদি দুনিয়াকে চাইতাম তাহলে কী আমাদের দেয়া হত না? এরপর তিনি এক মুঠো পাথরের কণা হাতে নিয়ে সেগুলোকে মূল্যবান পাথরে পরিণত করে প্রশ্ন করেন-এসব কি? লোকটি বলল: সবচেয়ে মূল্যবান পাথর। আমরা দুনিয়া চাইলে তা দেয়া হয়, কিন্তু আমরা তা চাই না-এ কথা বলে তিনি সেগুলো দূরে ফেলে দেন এবং সেগুলো আবারও সাধারণ পাথরের কণায় পরিণত হয়!

এ ছাড়াও একবার বেশ কিছু সময় ধরে ভূমিকম্প হতে থাকলে ও পাহাড়গুলো কাঁপতে থাকলে লোকজন ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে আলী (আ.)’র শরণাপন্ন হন। আলী (আ.) সে সময় খলিফা ছিলেন না। তিনি ভূমিকে লক্ষ্য করে বলেন: তোমার কি হলো? শান্ত হও। ফলে ভূমিকম্প বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিস্মিত লোকজনকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন: “আমি হচ্ছি সেই ব্যক্তি যার সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন: ্রاذا زلزلت زلزالها و اخرجت الارض اتقالها و قال الانسان مالهاগ্ধ

-যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে, যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে। এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ?

আমি হচ্ছি সেই ব্যক্তি যে কিয়ামতের দিন জমিনকে বলবো, তোমার কি হলো? (এরপর কুরআনে এসেছে) یومئذ تحدث اخبارها- সেদিন সে তার বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে, ফলে আমার জন্য খবরগুলো বর্ণনা করবে জমিন।”

আলী (আ.)’র একদল সঙ্গী তাঁকে বললেন: মুসা ও ঈসা নবী জনগণকে অনেক মু’জিজা দেখিয়েছেন। আপনিও যদি সে ধরণের কিছু দেখাতেন তাহলে আমাদের হৃদয় সুনিশ্চিত হত। আলী (আ.) বললেন: তোমরা এ জাতীয় নিদর্শন দেখা সহ্য করতে পারবে না। কিন্তু তারা বার বার একই অনুরোধ করতে থাকায় তিনি এক শুষ্ক উপত্যকায় একটি কবরস্থানের দিকে তাদের নিয়ে যান। সেখানে তিনি দোয়া পড়ে ধীর কণ্ঠে বললেন: তোমার পর্দা সরিয়ে ফেল। ফলে হঠাৎ কিছু বাগান ও নহর বা খাল দেখা গেল একদিকে এবং অন্যদিকে জাহান্নামের আগুন দেখা যাচ্ছিল। একদল বলে উঠলো: যাদু যাদু। কিন্তু অন্য একদল এই মু’জিজাকে বিশ্বাস করে বললেন: বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন: কবর হচ্ছে বেহেশতের বাগান অথবা জাহান্নামের গর্ত।

একবার জনগণ বৃষ্টির অভাবে আলী (আ.)’র কাছে গিয়ে নালিশ করায় তিনি দোয়া করলে সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি বর্ষণ শুরু হয়। এতো বৃষ্টি হলো যে এবার জনগণ বলতে লাগলো: খুব বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে তিনি আবারও দোয়া করায় বৃষ্টি কমে যায়। (সূত্র: বিহারুল আনোয়ার/তেহরান)

বিষয়: বিবিধ

১৩৪০ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

246187
২০ জুলাই ২০১৪ রাত ০৪:০৪
ইমরান ভাই লিখেছেন : আলী লেখার পর লিখতে হয় রাদিআল্লাহু আনহু বা সংখেপে (রা)। কিন্তু আপনি লিখছেন (আ)।

আপনি শিয়া নাকি?????
২০ জুলাই ২০১৪ রাত ০৪:২৬
191083
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এতক্ষন পর আপনার তা মনে হল ?? Happy যাইহোক, এসব নিয়ে মন্তব্য না করাই ভাল। আল্লাহই উত্তম জানেন
২০ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৭:৩৬
191084
ইমরান ভাই লিখেছেন : Happy Happy বুঝতে দেরি হইছে স্লেভ ভাই। দুঃখিত আর ভুল হবে না।Love Struck
246189
২০ জুলাই ২০১৪ রাত ০৪:৩৩
মোঃমাছুম বিল্লাহ লিখেছেন : ইনি শিয়া আমার ও তাই মনেহয়
২০ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:৫০
191181
মোশারোফ লিখেছেন : না বাই আমি সুননি
246218
২০ জুলাই ২০১৪ সকাল ১১:০৫
বেআক্কেল লিখেছেন : আলীকে লইয়া একটা সত্য ঘটনা লিখলেন বাকী দশটা মিছা কতা জুড়াইয়া দিলেন!

আলী রাসুলের একটি মাইয়া বিয়া কইরা (আঃ) হইল,
আর ওসমান দুইটা মাইয়া বিয়া কইরা (রাঃ) রইয়া গেল!

বাশের মাথায় লটকানো আমনেদের এইসব ইতিহাস পইড়া চিন্তা করছি, কেন স্কুল কলেজে লেহা পড়া কইরতে গেলাম না।
246391
২০ জুলাই ২০১৪ রাত ০৮:৪২
সজল আহমেদ লিখেছেন : মোজেজা একমাত্র নবী রাসুলগনের বেলায় হবে বাকি সব কেরামতি বলতে পারেন।
আলী রাঃ বেলায় মোজেজা হবেনা।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File