নাম ফাটানোর গল্প
লিখেছেন লিখেছেন বঙ্গবীর ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৭:৪৬:৪৫ সন্ধ্যা
কথায় আছে কর্ম মানুষের নাম বদলায়। সু-কর্ম হলে সুনাম বয়ে আনে। কু-কর্ম হলে কুনাম ডেকে আনে। ইতিহাসে এর ভুরিভুরি প্রমাণ বিদ্যমান। হযরত মুহাম্মদ (সঃ)কে আল আমীন (পরম বিশ্বস্ত), হযরত আবু বকর (রাঃ)কে সিদ্দিক (সত্যবাদী), হযরত উমার (রাঃ) কে ফারুক (সত্য-মিথ্যার) পার্থক্যকারী), হযরত আলী (রাঃ) কে আসাদুল্লাহ (আল্লাহর সিংহা / বাঘ), হযরত খালিদ (রাঃ) কে সাইফুল্লাহ (আল্লাহর তরবারী) এভাবে হাতেম তাঈ থেকে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন পর্যন্ত হাজার মহা মানবের নাম উল্লেখ করা যাবে যাদের সুকর্মের কারণে সুন্দুরতম নামে ভূষিত করেছেন।আবার বন্ধু আত্মীয় স্বজন আদর করে নাম ফাটায়। যেমন সোনামিয়া, লক্ষী, ময়না, টিয়া, বুলবুলি, পিন্টু, সিন্টু, ঝন্টু, বল্টু, বেবি, হ্যাপি, পপি, টকি, কালা, ধলা ইত্যাদি। চট্টগ্রামে হালা ফুতু, ধলা ফুতু, সুন্দর ফোয়া সহ লেডা, মোটা , বাইলা নাম দেখতে পাই। আবার লোকটি কালো অথচ তাকে লালমিয়া, ঝগড়াটে মেয়েকে শান্তিনী বলেও ডাকতে শুনেছি। তবে বদনা শাহ্, কাতালশাহ্, টাকশাহ্, ভোলা শাহ্, নান্না শাহ্, মিসকিন শাহ্, শিতালংশাহ, দুদ্দুশাহ, পাঞ্জুশাহ, খোন্দা ফকির, বোতল ফকির, ঘোড়া ফকির ডুরা ফকির, ল্যাংটা ফকির, মুজুবাবা, কেল্লা বাবা জিন্দাবাবা, মালেক বাবা, গরম পীর, সত্যপীর, জংলীপীর, ঘোড়াপীর, টেনাপীর, জুর্ম্মুপীর, কুম্ভীরপীর, মানিকপীর, পাঁচপীর, শাহ লংগর, বনবিবি, পাগলা কানাই নামে সম্বোধন করে এই মহান আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণকে সম্মানিত করছে না তাদের খাটো করছে সেই বিতর্কে না গিয়ে বলি অন্তত অন্য ধর্মের লোকও সভ্যজাতির কাছে আমাদের অবস্থানটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে সেইটা বিবেচনা্ করার অনুরোধ করছি। অন্যদিকে কুকর্মের জন্য মানুষ তার নাম এমনভাবে ফাটিয়েছে যে, আজকে শিক্ষার্থীরা সে সবকে বাগধারা হিসেবে প্রতিনিয়ত চর্চা করছে এবং ভবিষ্যতেও এর ধারা অব্যহত থাকবে। আমি এগুলো অতীত, বর্তমান দুভাগে ভাগ করেছি।
অতীতঃ
প্রকৃত নাম ফাটানো নাম / বাগধারা অর্থ
আমর বিন হিশাম আবু জেহেল গন্ড মূর্খ
মুহাম্মদ বিন তুঘলক তুঘলকী কান্ড পাগলামো কাজ
রাজা গৌর গোবিন্দ গোয়ার গোবিন্দ নিরবোধ
রাজা গনেশ গোবর গনেশ মূর্খ
গোপাল চন্দ্র সাক্ষী গোপাল নিস্ক্রিয় দর্শক
বর্তমানঃ
প্রকৃত নাম ফাটানো নাম / বাগধারা অর্থ
মন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর নাবালক মন্ত্রি অযোগ্য
মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত কাল বিড়াল চোর
সালমান এফ রহমান দরবেশ বাবা ভন্ড / প্রতারক
মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বাংলার নিরো,
নাহাদা কান্ড শিক্ষা ব্যবস্থার সর্বনাশকারী,
বিবেচনাহীন ও অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত
সুফী মিজানুর রহমান পুলুসী বাবা,
বেলায়েতে রুটি সম্পদের জন্য অস্থির,
বকধার্মিক
আখতারুজ্জামান বাবু ব্যাংক বাবা ব্যাংক ডাকাত
ইতিহাসে এরকমও আছে যে, ব্যক্তির নামটা অন্য একটি অর্থে পরিবর্তিত হয়েছে। যেমনঃ
নাম যে অর্থে নামটি ব্যবহৃত হয়
হাতেম তাই বিপদের বন্ধু (যে কোন সময় যে কোন কাজে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত ব্যক্তি।)
হাজী মুহাম্মদ মুহসীন দানবীর
মাদার তেরেসা দুস্থদের বন্ধু (রোগী, গরিব, ইয়াতিম, নিঃস্বদের)
মীর জাফর বিশ্বাসঘাতক
লেন্দুপদর্জী স্বার্থপর ও লোভী
ইয়াহিয়া জালিম ইত্যাদি।
বর্তমানেও এ ধরনের পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছি। যেমনঃ
নাম যে অর্থে নামটি ব্যবহৃত হয়
আওয়ামী লীগ অমানুষের দল
মন্ত্রি আবুল হোসেন দুর্নীতিবাজ
শাহরিয়ার কবির মুগী সাপ্লাইয়ার
মাও. ফরিদ উদ্দীন মাসউদ দালাল
হুমু এরশাদ ডিগবাজ / লুইচ্চা, লোফার
লাকী আক্তার বাইজী / নর্তকী
ফাতাহ সিসি ফিরাউন
ক্লিনটন কামুক
হামিদ কারজাই পুতুল
বুশ ধড়িবাজ / ধূর্ত
শেখ হাসিনা দাসী / সেবা দাসী
টনি ব্লেয়ার পোষা কুকুর
হাওয়া ভবন দুর্নীতির আখড়া
যমুনা ভবন ভারতের খামার
তসলিমা বেশ্যা
বাদল কান্তি রোবট
মতিয়া চৌধুরী (মন্ত্রি) দাজ্জাল বিবি
তোফায়েল আহমদ (মন্ত্রি) চাপাবাজ
ইমরান খান (ক্রিকেটার) বিয়ে পাগলা
ইয়াজ উদ্দিন (সাবেক প্রেসিডেন্ট) ইয়েস উদ্দিন
মখা আলমগীর (মন্ত্রি) পিলার দাদা
মোহাম্মদ নাসিম (মন্ত্রি) ফাটা বাঁশ
ছাত্রলীগ চাপাতি গ্রুপ
সাহারা খাতুন (মন্ত্রি) হিজড়া
সাকা চৌধুরী গলাবাজ
মহসীন আলী (মন্ত্রি) খবিস / বাঁশ ঢোকানে ওয়ালা
হাসান মাহমুদ (মন্ত্রি) বেয়াদব
সৈয়দ আশরাফ (মন্ত্রি) গাজাটী
শাহজান খান (মন্ত্রি) জুতাবাবা
আবুল মাল আবদুল মুহিত রাবিশ/ বুঘাস
আব্দুর রহিম মিড়া মিজ্জি
মকসুদুর রহমান মিড়া মউ
রঞ্জন রায় ভাইরাস
গোলজার বেগম ডাইনি
মাহমুদুল হাসান জ্বিন
আব্দুল্লাহ নোমান কচ্চপ
এম এ কাশেম কৃপণ
মুস্তাফিজুর রহমান ভিজা বিলাই
প্রভাকর বড়ুয়া নিরবঘাতক
বাদশাহ মিয়া কুচক্রী
ঘসেটি বেগম ষড়যন্ত্রকারী
মুহিবল্লাহ চামচা
নুর কাশেম বকলম
সাইফুল ইসলাম তেলবাজ
শহীদুল্লাহ কুতুবী সোফা
ইব্রাহিম উদ্দিন ইঁদুর
শারমিন জান্নাত টু মাচ
মাহমুদা খানম থুরথুরী
কামরুল ইসলাম (মন্ত্রি) গাদ্দার
মঈনুদ্দীন (সাবেক সেনা প্রধান) বিদেশী এজেন্ট
ফখুরুদ্দীন (প্রধান উপদেষ্টা) খয়েরখাঁ
হামজা রগচটা
উপরের অনেক নাম গ্রামগঞ্জে ফাটানো নাম। পাকিস্তান থেকে আগত তাহের শাহকে তাহের সওদাগর বলতে শুনেছি। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তির নাম না জানার কারণেও ভিন্ন নামে সম্বোধন করে। যেমনঃ এই রিক্সা/ রিসকা! এই খালি! এই ঝালমুড়ি! আরো অনেক। আমাদের গ্রামে এক ভিক্ষুককে দুইলাঠি নামে সম্বোধন করে ডাকতে দেখেছি। এভাবে আপনারাও খোজ নিলে অনেক বাগধারা, উপাধি, ডাকনামের খবর পাবেন। সেদিন কাজের লোক হালের গরুকে বেধড়ক পেটানোর জন্য মালিক মজুরকে বকা দিতে শুনলাম এইভাবে- তুই কি মানুষ না আওয়ামী লীগ? আমি হতবাক হলাম! বেলা বিস্কুট বলাতে আমাদের গ্রামের জ্যাঠাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে দেখেছি।লোহাগাড়ায় এক মৌলভীকে সালাম দেওয়াতে গালি দিয়ে লাঠি নিয়ে দৌঁড়াতে দেখলাম। অদ্ভুত ব্যাপার! আজব কান্ড! খুজ নিয়ে জানলাম তাবিজ তথা যাদু করে মানুষ মেরে ফেলাতে লোকে প্রথমে আসসালামু আলাইখুন বলতো; মৌলভী রেগে আগুন হতো। এখন সহিভাবে সালাম দিলেও গালি দেয়। এসবের কারণ মানুষ অপকর্ম, যুক্তি ও চিন্তাহীন সিদ্ধান্ত, বদ অভ্যাস, ঔদ্যোত স্বভাব, লাগামহীন কথা অহংকারী আচরণ পাগলামো কাজ সর্বোপরি মুদ্রাদোষ। এই জন্য বলি ভাবিয়া করিও কাজ; সাবধান খুলিও মুখ। একটুখানি ভুলের তরে অনেক বিপদ ঘটে। একবার যদি নাম ফাটে তবে আর বন্ধ করা যাবে না। এটা পরবর্তী বংশধরকে বেকায়দায় ফেলবে। এরকমও প্রমাণ আছে ডাক নাম মুছতে গিয়ে মেজবানের আয়োজন করে মাইকে ঘোষনা দিয়েও বিশ্রী নামটি মুছানো সম্ভব হয়নি। বরং যারা জানত তারা জেনে তারাও বলা আরম্ভ করল। যাকে আমরা হিতের বিপরীত বলি।
বিষয়: রাজনীতি
১৭০১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন