জন্ম দিনে মৃত্যুদিন বিতর্ক (১৫ আগষ্ট খালেদার জন্ম ও মুজিবের মৃত্যু দিন)
লিখেছেন লিখেছেন বঙ্গবীর ১৭ আগস্ট, ২০১৪, ১২:০৫:৫৮ দুপুর
জন্ম মৃত্যু একমাত্র আল্লাহর হাতে। তবে মৃত্যুর জন্য একিট উপলক্ষ কাজ করে। যেমন কেউ অসুখে, কেউ যুদ্ধে, কেউ দুর্ঘনায়, কেউ আততায়ীর হাতে মরে। প্রাণীর দুনিয়ার জীবন শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের উপলক্ষগুলো কাজ করে। এই যাত্রা তার সমগোত্রীয় নির্দিষ্ট কিছু প্রাণীর জন্য কঠিন বেদনাদায়ক। তাই একজনের মৃত্যুতে অন্য জনের (মিষ্টি বিতরণ / শালা মরছে ভালো হয়েছে বলে) উল্লাস প্রকাশ অমানবিক ও চরম ঘৃণ্য একটি কাজ। এমনকি মৃত্যুর এই দিনে (অন্য বছর ব্যতীত)কোনো আনন্দ অনুষ্ঠান উদযাপন মানবতা পরপন্থী। অন্য দিকে কারো এই মর্তে নতুন আগমনেও খুশির আমেজ বিরাজ করে সমগোত্রীয় কিছু লোকের কাছে। এখন এই নবীণ বরণে ও প্রবীণ হরণে যার আত্মীয়স্বজন তাকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবে এটাই স্বাভাবিক। একে অপরকে দোষারোপ করবে কোন যুক্তিতে ? একই গোষ্টী, একই সমাজ, একই বিল্ডিং এ যে বছর মৃত্যু হয়েছে, সে বছর হলে কোনো অনুষ্ঠান পালন এটা অবশ্যই অন্যায়।তিন যুগ আগে গত হওয়া এক ব্যক্তির জন্য কি আমরা বিয়ে-শাদি, আনন্দ অনুষ্ঠান, জন্মদিন উদযাপন ইত্যাদি বাদ দেব? এই শহরে একই বিল্ডিং এ একতলায় মুমূর্ষু রোগী নিয়ে সবাই অস্থির অন্যতলায় মেহেদী অনুষ্ঠানে সবাই মতোয়ারা দেখতেছি হররোজ। প্রায় ৭০০ কোটি মানুষের মধ্যে ১ কোটির কাছাকাছি মানুষের আসা-যাওয়া হচ্ছে প্রতিদিন। এখানে কার জন্য কার জীবন থেমে থাকবে। আজকাল মৃত্যু বার্ষীকি পালনে কোথাও আনুষ্ঠানিকভাবে শোকের প্রকাশ করে না শিয়ারা ছাড়া। বরং ঐ দিন মেজবানে নিকট আত্মীয়দের ভালমত খাওয়ায়, দোয়া-দরুদ পড়ায় এতটুকু। বড়জোড় মরহুমের একটু জীবনী আলোচনা করে তাও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হলে।এখন কেউ গাধার মতো যদি বলে, আমার পিতার মৃত্যুর দিনে তোমার জন্মদিন পালন করতে পারবে না। তবে শ্রোতা যদি এই উত্তর দিলে কি বেয়াদবী হবে ? যে, তোমার পিতাকে আমার জন্মদিনে মরতে আমি বলি নি।যেহেতু খালেদার জন্ম শেখ মুজিবের মৃত্যুর আগে। ফলে মুজিবের প্রতি তাচ্ছিল্য বা অবজ্ঞার প্রশ্ন অবান্তর।এই মৃত্যু নিয়েও আওয়ামীলীগ রাজনীতি করছে যে, তারা চাচ্ছে খালেদার জন্ম নিয়ে বিতর্ক উঠুক, তার দলে মানবিকতার প্রশ্ন সৃষ্টি হউক, তাকে, জন্মদিন পালন করতে না দেওয়ার মাধ্যমে আরএকটা আঘাত দিই।এ দেশে আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ করে এমন অনেক মানুষের ১৫ই আগষ্টে জন্ম হয়েছে, তারা কি জন্মদিন পালন করে না? অথবা সেইদিন দেশে কি কোথায় কোনো সন্তান জন্ম নেয়নি? নিলে তার জন্মদিন কি পালিত হবে না ?শুধু খালেদা একা দোষী কেন ? আসলে আওয়ামীলীগ চায় এদেশের মানুষ শিয়াদের মতো ছুরি নিয়ে হায় মুজিব! হায় মুজিব!! মুজিব চাচা, কাকা, দাদা, মামা, জেঠা বলে শরীর রক্তাক্ত করোক ও মুখে ফেনা তুলুক।আসলে এটা ভক্তির বিষয়, জোরের বিষয় নয়। জোর করলে ‘শেখ মুজিব’কে ‘চেং মুজিব’, ‘জাতির পিতা’কে ‘জোতার ফিতা’ উচ্চারণ করবে। উপরন্তো আপনাদের দাদা বাবুরা (ভারত) কি দেশের জন্ম দিন পালন না করে শোক প্রকাশ করে ? কোন কোন মন্ত্রী জন্মদিন পালন না করতে উদাত্ত আহ্বান ও মানবিক আবেদন জানিয়েছে (এই বছর ১৫ আগষ্টে বাস্তবিকে পালনে বাধা দান করেছে)।আমি গ্রহণ করতে পারি না এই জন্য যে, ক্ষমতার দাপট না দেখিয়ে মিনতি জানালে অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। তবে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে আদালতকে দিয়ে খালেদাজিয়ার জন্ম দিনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন।পালন করতে দেন নি জন্ম দিন। মানবিকতার প্রশ্ন যদি বড় হতো খালেদাকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছাড়তে হতো না। এদেশের প্রতিটি বিভাগীয় শান্তিপ্রিয় মানুষের ঘুম হারাম করে বিল্ডিং এর ছাদে প্যাকেজ, মেহেদী অনুষ্ঠান, ব্যান্ড সঙ্গীতানুষ্ঠান চলতে দেওয়া যেত না।আল্লামা সাঈদীর রায় ও শহীদ মোল্লা (রহঃ)উনাদের ফাসির দিনে মিষ্টি খেয়ে সারা দেশটাকে নাট্যশালা বানিয়ে ছিলেন কেন? বিরোধী দল বা জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মিছিলে ইসরাইলী ইহুদীদের মতো গুলি বর্ষণ করেন কেন ?তখন কি মানবতা ভূলন্টিত হয় না ?
বিষয়: রাজনীতি
১৫৯০ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন