রাজনীতির ভবিষ্যৎ ও মানবাধিকার : প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন শওকত শওকী ০৩ জুন, ২০১৬, ০২:২৭:৪৭ দুপুর
অনেক ত্যাগ তিতিক্ষা ও দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি জায়গা করে নেয়। যার লক্ষ্য ছিল, একটি অসাম্প্রদায়িক, সহিংসতামুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কিন্তু দেশটির অভ্যুদয়ের পর থেকেই রাজনীতিবিদদের অদূরদর্শী সিদ্ধান্তের খেসারত দিতে হয়েছে সাধারণ জনগণকে। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত দলের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার মানসিকতা দেশটিকে বার বার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষর দিকেই ধাবিত করেছে। ১৯৯১ এর জাতীয় নির্বাচনের পর আমরা সবাই আশান্বিত হয়েছিলাম; রাজনীতিতে নীতি হয়ত ফিরে আসবে। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবেই রাজনীতিবীদরা ভূমিকা রাখবে, কিন্তু আমাদের নিরাশ করল রাজনীতিবিদরা। আমরা দেখলাম, ক্ষমতা আকড়ে রাখার জন্যে ক্ষমতাশীল দল সব কিছুই করল। দীর্ঘ রক্তক্ষয়ের পর ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হল। ২০০১ এর নির্বাচন ঠিকভাবে হলেও ২০০৬ এ এসে ক্ষমতাশীল দল ১৯৯৬ এর মত যেকোনভাবে ক্ষমতায় থাকতে চাইল। এরা ১৯৯৬ এর ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয়নি। ফলাফল এবার ১৯৯৬ এর চেয়েও ভয়াবহ। দীর্ঘ ঘটনাপ্রবাহের পর ২০০৮ এর শেষে জাতীয় নির্বাচন হল। এবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ক্ষমতাশীল দল দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা শুরু করল। যার ফলাফল আমরা বিগত কয়েক বছর ধরে ভোগ করছি। ২০১৪ এর নির্বাচন নাটকের পর দেশে এখন গণতন্ত্র বলতে কিছু আছে কিনা, সেটা সন্দেহের বিষয়। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্যে সরকার শক্তি প্রয়োগের পথকেই বেচে নিয়েছেন। যদিও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নামে মামলা হামলার কাহিনী নতুন কিছু নয়; এটি বাংলাদেশের রাজনীতির সংস্কৃতিই হয়ে গেছে। তবে এইবার এই মামলা হামলার ঘটনা অতিতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। অসংখ্য গুম- খুনের ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতাও অতীতের যেকোন সরকারের আমলের চেয়ে বেশি হয়েছে। সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংঘর্ষ খুনের ঘটনা ঘটেছে অত্যধিক। নির্বাচন হারিয়েছে গ্রহণযোগ্যতা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম ভোট ডাকাতির নির্বাচন সম্ভবত আর হয়নি। মেম্বারের ভোট জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে দিতে পারলেও, পারেনি চেয়ারম্যান এর ভোট দিতে। ক্ষমতাশীল দলের থেকে প্রার্থী হওয়া মানে প্রায় নিশ্চিত চেয়ারম্যান হওয়া, কয়েকটি ব্যতিক্রম ছাড়া। এইসব অপরাজনীতি থেকে এখনি বেরিয়ে আসতে না পারলে, ভবিষ্যৎ এ আমাদের জন্যে আরো খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। ক্ষমতার পরিবর্তন হলে মামলা হামলার ঘটনা আরো বাড়তে পারে। বাড়তে পারে খুন-গুমের ঘটনাও। এখন তো মেম্বার প্রার্থীকে ভোট দেওয়া যায় ; তখন হয়ত ক্ষমতাশীলরা এটাও দিতেও দিবে না। তাই, এখনি আমাদের প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিত্যাগ করে, একটি সমৃদ্ধশীল , অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্যে একসাথে কাজ করতে হবে। সব কিছুর ঊর্ধ্ব স্থান দিতে হবে দেশের স্বার্থকে। আমাদের রাজনীতিবিদদের শুভ বুদ্ধি হবে কি!
বিষয়: রাজনীতি
১০৬৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রমাদানের প্রস্তুতি নিয়ে চলছে ব্লগ আয়োজন। ২ জুন সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৬ পর্বের ব্লগ আয়োজনের ১ম পর্ব। অংশ নিতে পারেন আপনিও। নিজে জানুন, অন্যকে জানান। বিস্তারিত জানতে-
Click this link
মন্তব্য করতে লগইন করুন