স্ত্রী পিটানো :ইসলাম নারী নির্যাতন সমর্থন করে। / ?

লিখেছেন লিখেছেন মুকুল মনির ১৮ জুন, ২০১৪, ০৮:৫২:২২ সকাল



এই টপিকের বা কাছাকাছি টপিকের উপর প্রথম আলোর আনিসুল হক এবং আমার বউ কানিজ একটি আর্টিকেল লেখেছেন। এর উপর আমি একটুস খানি হাত ঘুরিয়েছি । ......................

"তোমরা যারা বউ পিটাও" তাদের উদ্দেশে আমার বউ একটি আর্টিকেল লিখেছে ৭ বছর আগে। গত মাসে প্রথম আলোর আনিসুল হক বউ পিটানোর এই রকম আরেকটি আর্টিকেল লিখেছিলেন। শুরু করেছিলেন একটি প্রশ্ন দিয়ে - " আপনি কি আগের মতো বউ পিটান ?"

এর উত্তর "না" বললেও ধরা ,"হাঁ"বললে তো মহাধরা (আগে মারতাম, হাড্ডি ভাংতাম , চামড়া ফাটাতাম ,এখনোও আগের মতই প্রাকটিস করি, বহুদিনের পুরনো অভ্যাস - ছাড়া কি যায় ?) আর চুপ থাকলে তো মৌনতা সম্মতির হাদীসের সূত্র অনুসারে মাঝে মাঝে মারি আর মাঝে মাঝে ছাড়ি। মহামুশকিল - কি বলবো ? ( এখন অনেকেরই আগ্রহ জানতে -আরে ভাই মনির আন্নে কোন পক্ষে ? ) এর উত্তর হুমায়ুন আহমেদের বই "হোটেল গ্রেভের ইন " এর শেষ লাইন "রহস্য ময় মুচিকি হাসি"।

এবার কানিজের আর্টিকেলটি নিজে পড়ুন, খবরদার !!! বউকে পড়তে দিবেন না।

স্ত্রী পিটানো কি ইসলাম সমর্থন করে?- এ প্রশ্নটি দীর্ঘকাল ধরে ধর্মপরায়ন শিক্ষিতা মুসলিম নারীদের মনে কাটা হয়ে বিঁধে ছিল। বিভিন্ন সময়ে সুরা নিসার ‘দরাবা’ সংক্রান্ত ৩৪ নং আয়াতটির বিভিন্ন ব্যাখ্যা এসেছে। কোন কোন ইসলামী চিন্তাবিদ একে ‘চল্লিশ ঘা’ আবার কেউ কেউ ‘মৃদু আঘাত’ বলেছেন। কিন্তু সবকটি ব্যাখ্যার সঙ্গেই শারীরীক আঘাত ব্যাপারটি জড়িত রয়ে গেছে। ফলে এর একটি সুস্পষ্ট প্রভাব আমাদের সমাজে দেখা যায়। কারণে অকারণে স্ত্রীকে আঘাত করা অনেক মুসলিম পুরুষই তাদের অধিকার মনে করেন। অনেকে আবার একটু আগ বাড়িয়ে স্ত্রীকে পিটিয়ে শাসন করাকে নিজ পবিত্র দায়িত্ব মনে করেন। শরীরের আঘাত শুধু শরীরের সঙ্গেই সম্পর্কিত থাকেনা, তা মনের সঙ্গেও গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। শারিরীক আঘাত কম হোক বা বেশি হোক তা আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন যেকোন নারীর মনেই কঠিন অপমানবোধ সৃষ্টি করে।। কাজেই বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ আব্দুল হামিদ আবু সুলেমান* সুরা নিসায় ব্যবহৃত ‘দরাবা’ শব্দটির অর্থ ‘পিটানো’, এমনকি ‘মৃদু আঘাত’ হিসাবে না নিয়ে, বরং অন্যরকম অর্থ গ্রহণের প্রতি জোর দিয়েছেন এবং এর কারণ হিসাবে পেশ করেছেন কঠিন যুক্তি। তিনি তার Marital Discord: Recapturing the Full Islamic Spirit of Human Dignity বইতে বোঝাতে চেয়েছেনÑ আরবী অভিধানে ‘দরাবা’ শব্দটির অনেক অর্থ রয়েছে; সেক্ষেত্রে অন্য সব অর্থ বাদ দিয়ে স্ত্রীর ক্ষেত্রে ‘পিটানো’ বা ‘আঘাত করা’ অর্থটি গ্রহণ করা কতটা যুক্তিযু তা ভেবে দেখতে হবে।

সূরা নিসার ৩৪ও ৩৫ নং আয়াতকে, যাতে এই শাস্তির ব্যাপারটি বিধৃত হয়েছে, বিচ্ছিন্নভাবে ব্যাখা করা যাবে না। এ আয়াতের ব্যাখার ভিত্তি হতে হবে সূরা রূমের ২১ নং আয়াত যেখানে আল্লাহ পারস্পরিক দয়া ও ভালবাসাকে বিবাহের উদ্দেশ্য হিসেবে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে। “ আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সংঙ্গী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছে। ” (আর রূম:২১)। শুধু বিবাহের ক্ষেত্রে নয় এমনকি বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের সময়ও নারীকে অসম্মান করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। “ আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও, অতঃপর তারা নির্ধারিত ইদ্দত সমাপ্ত করে নেয়, তখন তোমরা নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে রেখে দাও অথবা সহানুভূতির সাথে তাদেরকে মুক্ত করে দাও। আর তোমরা তাদেরকে জ্বালাতন ও বাড়াবাড়ি করার উদ্দেশ্য আটকে রেখো না । আর যারা এমন করবে, নিশ্চয়ই তারা নিজেদের ক্ষতি করবে।” (বাকারা:২৩১)। যেখানে বিবাহরে ভিত্তি সম্প্রীতি ও দয়া এবং এই বিবাহরে সমাপ্তিতেও নারীর প্রতি সহানুভূতি ও সম্মানের কথা বলা হয়েছে সেখানে বিবাহকালীন সময়ে সম্পর্ক ধরে রাখার মাধ্যম হিসাবে আঘাত ও মানসিক যন্ত্রণাকে ব্যবহার ঠিক সামঞ্জস্যশীল মনে হয় না।

অতীতে পরিবারে নারীদের ভূমিকা একরকম ছিল। তখন মহিলাদের সকল কার্যক্রম পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। অর্থনৈতিক কার্যক্রম থেকে তারা বিরত থাকতেন। অন্যদিকে পুরুষরা অর্থনৈতিক দায়িত্ব পালন করত। পুরুষদের এই অর্থনৈতিক শক্তি তাদেরকে বাড়তি ক্ষমতা প্রদান করত। অর্থনৈতিক ব্যাপারে পুরুষদের উপর নির্ভরশীলতা নারীদেরকে ক্ষমতাহীন করে রাখতো ফলে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও তারা পুরুষদের উপর নির্ভর করতো। কিন্তু বর্তমানে এ চিত্রের পরিবর্তন ঘটেছে। পরিবারে নারী ও পুরুষের এ ভূমিকায় আমূল পরিবর্তন এসেছে। পুরুষের উপর নারীর অসহায় নির্ভরশীলতা কমেছে, সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে; ফলে নারীদের উপর পুরষের একচ্ছত্র ক্ষমতা ব্যবহারের ক্ষেত্রও হ্রাস পেয়েছে। কাজেই বর্তমান সময়ে পরিবারের কোন সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বা স্বামী-স্ত্রীর কোন বিরোধ নিরসনে পরিবারের এই কাঠামোকে বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এখানে দরাবার অর্থ কি ‘ আঘাত করা’ ‘ শারীরিক শাস্তি প্রদান’ হবে যা কষ্ট, ব্যথা ও অপমানের জন্ম দেয়? শারীরিক আঘাত বা অপমানের মাধ্যমে দমন কি ভালবাসা বা আনুগত্য তৈরীতে সহায়ক হয়? বা এর মাধ্যমে কি একটি পারিবারিক সম্পর্ক ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করা যায়? ইসলাম যেখানে স্বামীর নির্যাতমূলক আচরণের ক্ষেত্রে স্ত্রীকে বৈবাহিক সম্পর্ক অবসানের সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার দিয়েছে সেখানে এরূপ দমন কি স্ত্রীকে আরও বেশি সেদিকে (তালাক বা খুলা) ঠেলে দিবে না? আর যদি তাই হয় তবে কি এক্ষেত্রে চাপপ্রয়োগ, দমন বা আঘাতের কোন সুযোগ রয়েছে যা পরিবারকে পুনঃগঠনের পরিবর্তে বরং ভাঙ্গার দিকে আরও ঠেলে দেবে?

কোরআনকে কোরআন দিয়েই ব্যাখ্যা করা সর্বাপেক্ষা উত্তম উপায়। কোরআনের সর্বোত্তম ব্যাখ্যা এই আল্লাহর বাণী কোরআন দিয়ে এবং শরীয়াহ্র সাধারণ মাকাসিদ বা উদ্দেশ্য দ্বারা এর সামঞ্জস্য বিধান সম্ভব। আল কোরআনে দরাবা শব্দটির বিবিধ ব্যবহার লক্ষ্য করলে এর প্রায় সতেরটি অর্থ পাওয়া যায়। কোরআনে নিম্নলিখিত আয়াতগুলোতে বিভিন্নভাবে দরাবা শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।

আল্লাহ আর একটি দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন (১৬:৭৬,১১২,৬৬:১১) দেখ তারা তোমার কি উপমা দেয়। তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং তারা পথ পাবে না। (১৭:৪৮) তাদের ওপর লাঞ্ছনা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে, (৩:১১২) তখন কি অবস্থা হবে যখন ফেরেশতাগন তাদের মুখমন্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করতে প্রাণ হরণ করবে? (৪৭:২৭)সুতরাং আল্লাহর কোন সাদৃশ্য স্থাপন করো না। আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না । (১৬:৭৪) তোমরা যখন যমীনে সফরে বের হতে ’’(৪:১০১)তখন আমরা তাদের শ্রবণশক্তির উপর পর্দা টেনে দিলাম.” (১৮:১১)“তোমরা সীমাতিক্রমকারী সম্প্রদায়Ñএ কারণে কি আমি তোমাদের কাছ থেকে কোরআন প্রত্যাহার করে নেব?” (৪৩:৫)“তারা নিজেদের বক্ষদেশের উপর চাদর টেনে রাখবে .... এবং তারা যমীনে সজোরে আঘাত করে চলাফেরা করবে না।” (২৪:৩১)“..... আমার বান্দাদেরকে নিয়ে রাত্রিযোগে বের হয়ে যাও এবং তাদের জন্য সমুদ্রে শুষ্ক পথ তৈরি কর....” (২০:৭৭)“আল্লাহ পাক নিঃসন্দেহে মশা বা তদুর্ধ্ব বস্তু দ্বারা উপমা পেশ করতে লজ্জাবোধ করেন না। ” (২:২৬) “হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর কর, তখন যাচাই করে নিও....”(৪:৯৪)“অত:পর সে প্রবল আঘাতে তাদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ল”। (৩৭:৯৩)

যদি আমরা কোরআনের এই আয়াতগুলো বিশ্লে¬ষন করি তবে দেখবো যে মূল ক্রিয়া ’দরাবা’ এর অনেকগুলো আক্ষরিক ও রূপক অর্থ রয়েছে। এর অর্থ হতে পাওে পৃথক করা, বিচ্ছিন্ন করা, আলাদা করা, প্রস্থান করা, ছেড়ে যাওয়া , দুরত্ব সৃষ্টি করা, বাদ দেওয়া ,দুরে সরে যাওয়া ইত্যাদি। কাজেই দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন বস্তুর সঙ্গে যুক্ত হলে দরাবা সেই অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে।

কাজেই প্রশ্ন হলো দরাবা যখন বৈবাহিক সমস্যা সমাধানের উপায় হিসাবে ব্যবহৃত হবে এবং বিচ্ছিন্ন স্বামী-স্ত্রীর পুনরায় মিলন ঘটানো ও ভালবাসা তৈরির পন্থা হিসাবে বিবেচিত হবে তখন এর কোন অর্থটি-সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত হতে পারে? “...যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশংকা কর, [প্রথমে] তাদের সদুপদেশ দাও, [তারপর] তাদের শষ্য ত্যাগ কর এবং ]শেষে] দরাবা কর; কিন্তু যদি তারা বাধ্যতায় ফিরে আসে তবে আর তাদের জন্য কোন পথ অনুসন্ধান করনা। নিশ্চয়ই আল¬াহ সবার উপরে শ্রেষ্ঠ।” (নিসা : ৩৪)। পটভূমি বিবেচনা করলে বোঝা যায় যে, এই আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে সম্মান জনক উপায়ে এবং কোনরকম চাপ প্রয়োগ বা ভয়ভীতি প্রর্দশন না করে স্বামী-স্ত্রীর মিলন ঘটানো। কেননা স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই এই সম্পর্ক অবসানের সুয়োগ ও অধিকার রয়েছে। কাজেই দরাবার অর্থ কখনো এমন হতে পারেনা যা দ্বারা মানুষ আহত হবে, কষ্ট পাবে বা অপমানিত হবে। চাপ প্রয়োগ করা বা শারীরিক আঘাত কখনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক তৈরি করতে ও বাজায় রাখতে সহায়ক হয় না। এটি তাদের সম্পর্কের গভীরতা বৃদ্ধিতে বা পারস্পরিক আস্থা তৈরিতে কোনভাবেই সহায়ক ভূমিকা রাখেনা।

দরাবা সম্পর্কিত উপরোক্ত বিশ্লেষণ রাসূল (সাঃ)-এর হাদিস ও তার আচরণের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ন। রাসূল (সাঃ)-এর স্ত্রীগন জীবনযাত্রার মান কিছুটা বাড়ানোর দাবি করেছিলেন রাসূল (সাঃ)-এর কাছে। জীবনযাত্রার মান উন্নতকরনের দাবী অস্বীকৃত হওয়ায় তারা যখন বিদ্রোহ প্রকাশ করেছিলেন তখন রাসূল (সাঃ) তার স্ত্রীদের থেকে দূরে সরে গিয়ে মসজিদে অবস্থান করেছিলেন]। এ পরিস্থিতিতে এক মাসের জন্য তিনি ’আল মাশরাবাহ’ (আলাদা থাকা) এর আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং তাদেরকে এ সুয়োগ দিয়েছিলেন যে, তারা ইচ্ছা করলে রাসূল (সাঃ)-এর যতটুকু সামর্থ রয়েছে সে অনুযায়ী জীবনযাত্রার মান মেনে নিয়ে থাকতে পারে অথবা তারা ইচ্ছে করলে বিবাহের সম্পর্ক থেকে মুক্তি নিতে পারে এবং সম্মানের সঙ্গে আলাদা হয়ে যেতে পারে। একটি হাদীসে উল্লেখ্য আছে যে, হযরত মুহাম্মদ(সা) একজন ব্যক্তিকে কঠিনভাবে ভৎসনা করেছিলেন কারণ সে তার স্ত্রীকে পিটিয়েছিল। “যে তার স্ত্রীকে ভৃত্যের মত পেটায় আবার তার সঙ্গে শুতে লজ্জাবোধ করেনা। ” (বুখারী)। মুসলিম শরীফে উল্লেখ আছে যে, আল্লাহর পথে জিহাদ ব্যতীত, হযরত(সা) কোন নারী , ভৃত্য অথবা কোন ব্যক্তির উপর কখনও হাত তোলেননি। [এমনটি যুদ্ধকালীন অবস্থায়ও শত্র“পক্ষের নিরীহ নারীদের প্রতি অঘাত করা নিষিদ্ধ ছিল।] রাসুল (সাঃ) আরও বলেছেন “ তোমাদের মধ্যে অনেক মহিলা তাদের স্বামীদের নির্যাতনের ব্যাপারে রাসুলের পরিবারের কাছে শোক প্রকাশ করতে আসে। এই নির্যাতনকারী স্বামীরা কখনওই উত্তমদের অন্তর্ভূক্ত নয়।” (আবু দাউদ)।তাছাড়া এটাও বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয় যে কোরআনে শারীরিক শাস্তি বোঝানের জন্য দরাবা শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি। বরঞ্চ কোরআন এক্ষেত্রে যে শব্দটি ব্যবহার করেছেন তা হল ‘জালাদা’ -কশাঘাত/বেত্রঘাত/প্রহার করা । যেমন সুরা আন্-নূরে বেত্রাঘাত বোঝাতে ‘জালাদা’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে- “ব্যাভিচারিনী নারী ব্যাভিাচারী পুরুষ, তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর করনে তাদের প্রতি তোমাদের মনে যেন দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।” (সুরা আন্-নুর ২)

উপসংহারে আমি বলতে চাই যে অবাধ্যতা বা বিবাদের ফলে বৈবাহিক সম্পর্কে সৃষ্ট সংকট নিরসনে কোরআন যে ‘দরাবা’র কথা বলেছে তার সঠিক অর্থ হবে স্ত্রী থেকে ‘দূরে সরে যাওয়া’ , স্ত্রী থেকে ‘দূরত্ব তৈরী করা’ এবং ঘর থেকে ‘চলে যাওয়া’, যাতে স্ত্রীর যুক্তিবোধ জাগ্রত হয় বা সে তার আচরনের অন্যায্যতা ও এর সম্ভাব্য পরিনাম উপলদ্ধি করতে পারে। দূরে সরে যাওয়া বা আলাদা হয়ে যাওয়া অর্থটি এক্ষেত্রে বেশি গ্রহনযোগ্য এবং দৈহিক আঘাত ও মানসিক যন্ত্রনা দান অপেক্ষা কোরআনের বাচনভঙ্গির সাথে অধিক সংগতিপূর্ণ। আব্দুল হামিদ আবু সুলেমানের এই ব্যাখ্যাটি একদিকে যেমন সুযোগ সন্ধানী কিছু পুরুষের নির্যাতনের সব পথ বন্ধ করে দেয় তেমনি ইসলামের ছিদ্রান্বেষীদের ‘ইসলাম নারী নির্যাতন সমর্থন করে’- এই চিরায়ত অপবাদের পথও রুদ্ধ করে।কাজেই এটা সময়ের দাবী যে মুসলিমরা ‘দরাবার’ এই ব্যাখ্যাটি জানবেন ও বিবেচনায় আনবেন।

বিষয়: বিবিধ

১২২৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File