খুঁজে ফিরি বিশ্বাসের আলো
লিখেছেন লিখেছেন লেখার আকাশ ০৪ আগস্ট, ২০১৪, ০৫:৪৩:৫৬ সকাল
দুনিয়ার জীবনে ছড়িয়ে আছে পরকালের জীবনটিকে বুঝে নেয়ার উপকরন, উদাহরন। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন দুনিয়ার জীবনের উদাহরন দিয়েছেন পরকালের জীবনকে বুঝাতে। যদিও সেগুলো ব্যবহৃত হয়েছে রুপক অর্থে। যেমন, দুনিয়াতে বিচার ব্যবস্থা আছে বলেই আমরা বুঝতে পারি আখেরাতের বিচার দিবসকে। দুনিয়াতে পুরস্কার এবং শাস্তি দেখে আখেরাতের পুরস্কার এবং শাস্তিকে যুক্তিযুক্ত মনে হয়। পবিত্র কুরআনে মহান রব উদাহরন দিয়েছেন কলা, আনার, খেজুর সহ নানারকম ফলের। অথচ আমরা জানি দেখতে একরকম হলেও চোখজুড়ানো ঐ ফলগুলোর স্বাদ আমাদের কল্পনাতিত।
আখেরাত যেহেতু আমাদের কল্পনা সীমার বাইরে তাই পৃথিবীর জীবানালোকেই তাকে বুঝতে চেষ্টা করি। বাস্তব আর কল্পনার জীবনকে পাশাপাশি রেখে তুলনা করি। মন বলে হ্যা, হতে পারে তো! আবার যুক্তি দিয়ে বিশ্বাসকে প্রমান এর চেষ্টা করি। এরপর মহানের দরবারে দু'হাত তুলে দু'আ করি দুনিয়ার ভাললাগা উত্তম উপহারগুলো পরকালেও পাওয়ার জন্য।
পৃথিবীকে দিয়ে আখেরাতকে জানা, বুঝা, অনুভব করতে চাওয়াটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তাই যখন বিচারকের আসনে বসে বাচ্চাদের বা ছাত্র-ছাত্রীদের শাসন করতে হয় তখন সবার আগে পরকালের কথা স্মরন হয়। যখন ওদের প্রতি কঠিন হতে হয় তখন আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। মনে মনে তার কাছে যুক্তি পেশ করি যে বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ কল্যান কামনায় তাদের প্রতি কঠোর হয়েছি। আবার ওদের কোন ব্যাপারে ছাড় দিলে অন্তর থেকে দু'আ আসে, ইয়া রহমানুর রাহিম, ওপারের জীবনে তুমিও আমার প্রতি দয়া করো।
ক'দিন আগের একটি ঘটনা মনে পড়ছে বিশ্বাসের আলো জ্বেলে যা বুঝতে চেষ্টা করেছি। ফার্স্ট গ্রেডের একটি ছোট বাচ্চা স্কুলে কয়েকটি টক ফল নিয়ে এসে সবাইকে একটু একটু করে ভাগ করে দিয়েছে। আমার হাতেও কয়েকটি দিয়েছে। খেয়ে বল্লাম খুব মজা তো! জানতে চাইলে বললো ওদের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে এনেছে। পরদিন আমার হাতে ছোট একটা পুটলি ধরিয়ে দিল। খুলে দেখি সেই টক ফল! এ যেন এক পোটলা নির্ভেজাল ভালবাসা!
ঐ দিন সবাইকে যখন ভাল ব্যবহারের জন্য পুরষ্কার দিলাম ওকে একটু বেশি করেই দিলাম। ওকে জানালাম যে ওর এই সুন্দর ব্যবহারে আমি মুগ্ধ। কিছুদিন পর সে একদিন এমন দুষ্টুমি করছিল নিষেধ মানছিল না। শেষ পর্যন্ত সেদিনের পুরষ্কার থেকে সে বন্চিত হলো। তখন ছুটির সময়। দেখলাম মাথা নিচু করে চুপচাপ লাইনে দাড়িয়ে আছে। বুঝলাম অপরাধবোধ। মনটা এত খারাপ লাগছিল। অন্তরে অনুভব করলাম ভাল কাজ শুধু একদিনের জন্য নয়, বরং প্রতিদিনের জন্য। প্রতিক্ষনের জন্য। প্রতিটি মুহুর্ত, ঘন্টা এবং দিনের হিসেব দিতে হবে তাঁর কাছে। মৃত্যু কার কখন কারো জানা নেই। তাই সর্বাবস্থায় ভাল আমল জারি রাখতে হবে। শেষ সময়ের আমলসমুহ এর উপরই নির্ধারিত হবে জান্নাত বা জাহান্নাম।
বিষয়: বিবিধ
১২৭০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মুহছিনা খাঁন আপুর কমেন্ট পড়ে আপনার নাম মনে পড়েছিলো, তাই নাম লিখে সার্চ দিয়ে আপনার লেখাটা পড়লাম।
প্রিয় আপু... আপনার এই পোস্ট লেখার কষ্ট স্বার্থক। অন্তত আমাকে ভাবনার জগতে ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। ডাঃ তৌফিকের জার্নি টু হিয়ারআফটার লেকচার সিরিজের কথাগুলোও মনে পড়তেছে আপনার পোস্ট পড়ে....... আপনার ঘটনার/পোস্টের বিষয় বস্তু নিয়ে নিজেকে মগ্ন রাখলাম অনেক্ষণ।
দোআ করবেন আমার জন্য যাতে সবসময় আল্লাহ্ সন্তুষ্ট হবেন এমন ধরনের ভালো আমল করতে পারার মতো যেন তৌফিক দেন আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতা’আলা।
প্রিয়দের আমন্ত্রন জানাই না কারন কারো উপর পড়তেই হবে এ বোঝা চাপিয়ে দিতে চাই না।
বারাকাল্লাহু ফি।
অনেক সময়, ব্লগের ১ম পাতা থেকে সরে গেলে লেখাগুলো চোখে পড়ে না, তাই প্রিয়দের অনেক ভালো মানের লেখাও পড়া হয়না, শুধু মাত্র না দেখার কারনে। তাই ..... যদি "প্রিয়দের আমন্ত্রন জানালে" লেখাটা চোখে পড়ার চান্স বেশি। দেরিতে হলেও পড়ার সুযোগ হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন