ভালবাসার বাগান
লিখেছেন লিখেছেন লেখার আকাশ ২০ জুন, ২০১৪, ০৯:১১:৩৫ সকাল
কি নেই তার বাগানে? আলু, কচু, পাটশাক, ভেন্ডি, লালশাক, ডাটা, করল্লা, পটল, চিচিংগা, শিম, লাউ, মিষ্টিকুমড়া, স্ট্রবেরী, পেয়ার, আপেল এসব সহ আরো যে কতকিছু। আর তার ফুলের বাগান? গাঁদা, সূর্যমূখি, নানা রংগের গোলাপ আরো যে কত নাম না জানা ফুল! ঘরের দরজায় দাড়ালেই মিষ্টি ফুলের ঘ্রান আর তাদের বাহারি রং মন ভরিয়ে দেয়। কোন কোন সূর্যমূখি গাছ এত্ত লম্বা যে ফুল দেখতে হলে আপনাকে গাছ সোজা আকাশের দিকে তাকাতে হবে। সে গাছে কি সাইজের ফুল তাতো বুঝতেই পারছেন।
তার বিশাল লাউ আর শিমের ঝাঁকা থেকে চোখ ফেরান যায় না। যখন ঝাঁকে ঝাঁকে লাউ ধরে আর মাচা থেকে ঝুলে পড়ে তখন তা দেখে যে কারো মন ভাল হয়ে যায়। থোকায় থোকায় ধরা শিমের গুচ্ছ দেখে বোঝা যায় না এই ফসলের পেছনে কতটা পরিশ্রম আছে।
কয়েক কাঠা জমির উপর তার বাগান। তাকে ফোন করলে ঘরে পাওয়া যায় না। পরিচিত আমরা জানি ফোন না ধরা মানে সে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। এমেরিকাতে এরকম চোখ জুড়ানো বাগান এর দেখা পাওয়া দুষ্কর। সবাই শখের বশে ছোট-খাট বাগান করে। কিন্ত এত বড় দেখা যায় না!
দেখলে মনে হবে রিদয়ের সমস্ত যন্ত্রনা, ব্যথা, কষ্ট, অভিমান, জ্বালা, না-পাওয়া দিয়ে ঐ বাগানটি করা। জানা, না-জানা সব কষ্ট থেকে এক নিমিষে মুক্ত পেতে দরকার শুধু ঐ নানা রংগের বাগানটিতে ছুটে যাওয়া। প্রতিটি গাছের স্বাস্থ্য-সাবলীলতা দেখলে মনে হয় ওগুলো তার সন্তান সমতুল্য।
কাজ থেকে ছুটির পর আমি মাঝে মাঝে সেখানে যাই। ভাললাগা, ভালবাসা, আর শান্তির এমন একটা অনুভুতি হয় সেখানে যেয়ে দাড়ালে যা শুধুই অনুভবের। খুব অল্প সময়ের জন্য গিয়েছিলাম একদিন। বাগানের মালিকের সাথে গল্পেই কেটে গেছে সময়টা। কিন্ত ফিরে আসার সময় যেই একা হলাম সাথে সাথে আনুভব করলাম সেই না বলা অনুভুতি।
যখন যাই তখন ঘরের বাইরে তার বাগানটিতে দাড়িয়েই কথা-বার্তা বলি। একদিন তার সাথে কথা বলছিলাম আর সে কিছু শাক তুলছিল আমাকে দিবে বলে। তার কাছ থেকে খালি হাতে আসা যায় না। কিছু না কিছু তুলে দিবেই। এমন সময় দেখলাম কিছু বোলতা উড়াউড়ি করছে। তাকে বল্লাম সতর্ক হতে। সে আমাকে বললো, চিন্তা করবেন না। ওরা কিছু করবে না। এই গরমের দিনে ওরা পানি কোথায় পাবে? তাই পানি খেতে এসেছে। এবার খেয়াল করে দেখলাম কচু পাতার উপর টলটল করছে পানি। বোধহয় গাছে পানি দেয়ার সময় কিছুটা জমে রয়েছিল সেখনে। বিষাক্ত প্রাণীর সাথে এমন মমতাময় আচরন সেদিন মনে দাগ কেটেছিল।
আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে তার উছিলাতে সুদুর এমেরিকাতে বসেও বাংলাদেশী শাক-সব্জি খেতে পারছি। মহান রাব্বুল আলামিন তাকে দুনিয়া ও আখেরাতে সুন্দর ও শান্তির বাগান দান করুন।
বিষয়: বিবিধ
২৪৩৩ বার পঠিত, ৩৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
@হারিকেন ভাই ডাটা হলো ডাটা শাক
এখানে দেখুন http://accessbd.com/images/127_207_24092011205.jpg
যাক বাগানটা এ যাত্রা বেচে গেল...।
আমিও এমন চিৎকার দিয়েছিলাম আশপাশের বাড়ির সবাই একসাথে দৌড়ে এসেছে .......... প্রায় ৪, ৫ ঘন্টা কান্না করছিলাম আমি তখন ক্লাস ৪ বা ৫ এ। ওইদিন খাওয়া নাওয়া আর স্কুলে যাওয়া সব বন্ধ.... শুধু কান্না আর কান্না
ভালো লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভালো লাগলো
অনেক ধন্যবাদ আপনেকেও।
কিন্তু কমেন্টস পড়ে কষ্ট লাগলো
আর বোলতার কামড় খেয়েছেন সেটা শুনে কষ্ট লেগেছে।
তবে পোষ্টটির মর্মার্থ অনেক। জাজাকাল্লাহ ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন