স্মৃতির দহন গল্প (তৃতীয় পর্ব)শেষপর্ব

লিখেছেন লিখেছেন এসো স্বপ্নবুনি ৩১ অক্টোবর, ২০১৫, ১১:২৬:৫৭ রাত



গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে যায় প্রায়ই। ছাড়া ছাড়া অর্থহীন স্বপ্ন দেখতে দেখতে হঠাৎ জেগে উঠে ওসামা।লক্ষ্যকরে পরিচিত বিছানায় শুয়ে আছে সে, গতদিনের ঘটনা তাকে বার যন্ত্রনা দেয়। প্রচন্ড জ্বর গা যেন পুড়ে যাচ্ছে।মাথার কাছের জানালা মনে হয় সরে গিয়েছে পায়ের কাছে। তৃষ্ণা বোধ হয়। টেবিলে ঢাকা দেওয়া পানির গ্লাস। হাত বাড়িয়ে টেনে নিলেই হয়, অথচ ইচ্ছে হয় না।ইচ্ছেহলেও শরীর সাথদেয়না।

আজ রাতে বাহিরে অপূর্ব জোছনা অথচ তার জীবনে গভির অন্ধকার স্থানকরে নিয়েছে। সারা ঘর নরম আলোয় ভাসছে । ওসামা ভাবে মেয়েরা সাধারনত নরম কোমল হৃদয়ের হয়ে থাকে। নাদিরা কেমন করে এত নিষ্ঠুর হতে পারলো!

আজ নাদিরা কাছে থাকলে বেশ হত।কিলাভ এসব ভেবে আবার চাদর মুড়ি দিয়ে নিজেকে গুটিয়ে ফেলে। যেন বাইরের উথাল পাতাল চাঁদের আলোর সঙ্গে তার কোন যোগ নেই।ঝিঝি পোকার একটানা শব্দ।একঘেয়ে কান্নার সুরের মত কানে বাজে।

বাতাসে জামগাছের পাতায় সরসর শব্দ হয়। সব মিলিয়ে হৃদয় হাহাকার করে ওঠে ওসামার। আদিগন্ত বিস্তৃত শূন্যতায় কী বিপুল বিষণ্নতাই না অনুভব হচ্ছে। চোখে কিঞ্চিত তনদ্রা এর মধ্যেই সে স্বপ্ন দেখছে’নাদিরার হাতের একটি চিঠি কে যেন তাকে দিয়ে গেল।চিঠি খোলে মনোযোগ সহকারের পড়ছে ওসামা।

প্রিয় ওসামা!যদি পার ক্ষমাকরে দিও।আমি জানি আমার অপরাধ ক্ষমার যোগ্যনয়।তুমি মহানুভব।তুমার স্মৃতি বুকে নিয়েই যতদিন বাচি বেচে থাকবো। আমার পাপের প্রায়স্চিত্য আমিকরে যাচ্ছি।তাহলো আত্মদংশন অনুসূচনা।তোমার মত একজন সত্স্বাধিনচেতা সুন্দরমনের মানুষকে জীবন সাথি পেয়েও অমর্যাদা করেছি।এখন সবকিছু থেকেও মনে হয় কিছুই নেই।বিষাদ সিন্ধুতে হাবু ডুবু খাচ্ছি।শুধু তোমার সন্তান দুটোই আমার বেচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।তুমি যদি চাও অদের নিয়ে যেতে পার। আমি বাধাদিবনা।এটাও আমার পাপের প্রায়স্চিত্য মনে করব। এ জিবন আর চলেনা বিশ্বাসকর।মনে চায় তোমার সান্নিধে থাকতে কিন্তু আল্লাহ আমাদের মাঝখানে যে দেয়াল দাড় করিয়ে দিয়েছন তা উপড়ে ফেলার কোন পথ নেই। ভাল থেকো ।ইতি তেমার অপরাধী। হঠাত তন্দ্রা কেটে গেলো। ওসামা বাস্তবেই যেন নাদিরার সামনে দন্ডায়মান আর সে আবেগভরা কন্ঠে যেন তাকে বলছে কথা গুলো।নিয়তির সামনে সবাই যেন অসহায়।

আজ নিদারুন নিঃসঙ্গতায় ডুবে আছে উভয়েপ্রান্তে দুজন মানব মানবী।এ নি:সঙ্গতাই যেন ওদের চীর সাথী।ওসামার জ্বরের সাথে প্রচন্ড মাথা বেথা। মাথায় পানি ঢালার কেউ নেই।বাথান বাড়িতে একা এমনীকরেই অজানার পথে পাড়িজমালো ওসামা।নাদিরা তুমাকে ক্ষমাকরে দিয়েছি অনেক আগই।তোমাকে যে আমি ভালবাসি যার মধ্যে কোন খাদ কোন কৃতিমতা ছিলনা।নাদিরা তোমার সাথে শেষ দেখাটা হলো না।আমার সন্তানদের আমার পরিচয়টা বলে দিও।আমি মরেও শান্তি পাবো আরো অনেককিছুই বলতে চায় সবকিছু যেন গুলিয়ে যায় বলতে পারেনা। একসময় তার চোখে রাজ্যের ঘুম নেমে এলো।কেউ দেখলো না কেউ শোনলো না।শুধু নাদিরার অন্তর আত্মাই বুঝতে পারলো ওসামা তাকে পরাজিতকরে বিজয়ীবেসে রবের সান্নিধ্যে চলে গেছে।তার মহানুভবতার কথা তার সন্তানদেরকে শোনায় এবং তারা যেন পিতার মত আত্মমর্যাদার অধিকারী হয় সেই উত্সাহ আর প্রেরনা যুগায় তাদের অন্তরে।

যবনিকা

বিষয়: বিবিধ

১৬০৮ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

348028
৩১ অক্টোবর ২০১৫ রাত ১১:৪৪
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
০১ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:১০
289008
এসো স্বপ্নবুনি লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যকরে উত্সাহিতকরার জন্য যাযাকাল্লাহ খায়ের
348033
০১ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১২:৩৬
আফরা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
০১ নভেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০৯
289007
এসো স্বপ্নবুনি লিখেছেন : আপনাকেও অনেকধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যকরে উত্সাহিতকরার জন্য

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File