[b]একজন প্রবাসীর আত্মকথা[/b]
লিখেছেন লিখেছেন এসো স্বপ্নবুনি ০৮ জুন, ২০১৪, ০৩:৪০:২৯ রাত
পিতামাতার বড়ছেলে হওয়া যেন রীতিমত পাপ, বড় ছেলেটি ছোট থেকেই হাড় ভাংগা খাটনি খেটে ভাইবোনদের মানূষ করেন,পিতার পাশে খুটির মত শক্ত হয়ে দাড়িয়ে যান সকল ঝর ঝঞ্ঝার মুকাবেলায়,পিতাকে প্রান পনে সহযোগিতা করেন অথচ দেখা যায় নিজের ছেলে সন্তান হওয়ার সাথে সাথে ভাইবোনেরা লেখাপড়া শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ হতে না হতেই তারা পৃথক সংসারের সপ্ন দেখেন।ততো দিনে বড় ভাই সংসারের ভার বহন করতে করতে ক্লানশ্রান্ত হয়ে বার্ধক্যে উপনিত হোন,ভাইদের সাহায্য সহযোগিতা বেশিরভাগই ভাগ্যে জুটেনা।এই হলো আমাদের ত্রুটিপূর্ন সমাজ ব্যবস্থা কুফল।
পরিবার পরিজনদের মূখে একটু হাসি ফুটাতে সাত সমুদ্র পার হয়ে মানুষ চলে যায় দেশ থেকে দেশান্তরে।সূখ পাখিটার নাগাল পেতে মানুষের চেষ্টার কোন শেষনেই।আলেয়ার আলোর পিছনে হন্যে হয়ে ঘুরছে মানুষ যুগ থেকে যুগান্তরের ঘুর্ণিপাকে তবুও মানুষ থেমে নেই মধ্যপ্রাচ্যেসহ পৃথিবীর বহুদেশে মানুষ সুযোগ সন্ধানে ভাগ্যন্নেষনে ছুটে যায।ছোট ছোট ভাইবোনদের লেখাপড়াসহ সংসারের ঘানি টানতে নষ্ট করেদেয় জীবনে অমুল্য ষময়।
আমরা প্রবাসে যুগের পর যুগ কাটিয়ে দিয়েও স্বচ্ছলতার নাগাল পাইনা।দেশে গিয়ে শুধুই অবহেলা ছাড়া অন্যকিছু জুটেনা।আমাদের নিঃশব্দকান্না কেউ শুনতে পায়না। এজন্য জ্ঞানীজনেরা বলেন'জীবনে উন্নতি সেই করে যে অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেয়।আমরা প্রবাসীদের এহেন দুর্গতির কারন সজনদের প্রতি অন্ধ ভালবাসা শরিরের অদম্য শক্তি সামর্থ্য বিদেশবিভূয়ে স্বজনেদর মূখে হাসি ফুটাতেই শেষ করে থাকি।
টাকার জন্য আমরা কি না করি?রাস্তা ঝাড়ু থেকে শুরু করে গাড়ি ধুয়া বাতরুম পরিস্কারের মত ছোট কাজ পর্যন্ত করতে দীধা করিনা মোটেও।পাগল পাড়া থাকি কখন মাস শেষ হবে পঞ্চাশ হাজার টাকার ড্রাপ্ট করবে্া?
ব্ন্ধুরা পরামর্শ অনেক দিয়েছে, সব টাকা না পাঠিয়ে নিজের ভবিশ্যতের জন্য রেখে দিতে।একটা সংসার হবে নিজস্ব একটা পৃথিবী হবে সেই পৃথিবীকে সাজাতে হবে সুন্দর করে।কারো কথায আমরা কেউ কান দেইনা।অবশেষে সবার ভাগ্যে একই পরিনতি ঘটে।
আমরা অনেকেই প্রয়োজনের তাগীদে ভাইদেরকে হাজার হাজার রিয়াল খরচকরে বিদেশ এনে থাকি কিন্তু সেইভাই টাকাতো পরিশোধ করেইনা বরং হৃদয়ে রক্ত খরন হওয়ার মত কষ্ট দিয়ে থাকে।
যে সামোর্থ বোনটিকে বিয়ে দিতে লক্ষটাকার স্বর্নের অলংকার কিনে দিয়েছি সেই বোনটিও ঐ ছোট ভাইদের পক্ষনিয়ে কথাকয়।।নিজের বিয়ের কথাও ভাববার সময় থাকেনা আমাদের।সংসারে একটু স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পরিবারের সকলের মূখে হাসি ফুটাতে অক্লান্ত খাটুঁনি খেটে যাই প্রতি নিয়ত।নিজের সাস্থ্যের প্রতি করি অমার্জনিয় অবহেলা।অযত্নে অনিয়মে কাটাই প্রবাস জীবন।তাই দেখা যায় সবার মূখে হাসি ফুটে ঠিক কিন্তু নিজের জীবনের হাসি টুকুন হারিয়ে যায় চীরতরে, জীবনে নেমে আসেছে অমানিষার কালো অন্ধকার।পৌছে যাই ধ্বংসের মোহনায়-অনেকে ভুগে দুরারোগ্য ব্যাধিতে,যেমন কিডনিই চীরতরের জন্য অকেজুহয়ে যায় কারো প্রেসার ডায়োবেডিকের মত চীরসাথি বন্ধুজোটে,যে বন্ধুটি থাকে জীবন যতদিন থাকে।এসমস্ত কারনে কুম্পানি চিকিত্সার পরিবর্তে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।
পৃথিবী বড়ই জালেম!এখনাকার মানূষ গুলোও বড় স্বার্থপর।যাদের জন্যে এত কিছু করা হয় তারা কেউ ফিরেও তাকায়না।অর্ধাঙ্গীনী স্ত্রী, যে জীবন মরনের স্বাথী সেও একটি কিডনি দিয়ে সহযোগিতা করতে রাজি হয়না বিস্বাশকরুন এমন ভুক্তভোগী আমি বেশ ধেখেছি।নিয়তির এমন র্নিমমতায় অনেককেই মৃত্যু কেবলই হাতছানি দিয়ে ডাকে।আমরা নিজেরাই নিজেদের হন্তা বনে যাই।
এক একবার ভাবি-
দয়ার পস্রবন কি একেবারেই শুকিয়ে মরুভুমিতে রুপান্তরিত হয়ে গেছে?
প্রিয় পাঠক এ কোন গল্পকাহিনী বা উপন্যাস নয় এটি আমার আপনার মত অসহায় প্রবাসীদর বাস্তব প্রতিচ্ছবি।চিন্তা করে দেখুন এমন হাজারও প্রবাসীরা চোখের নুনাজলে ভাসছে।আমাদের সামাজিক নানা অনিয়ম আর অসংগতি এজন্য দায়ী।
অনেকে বলে প্রবাসী জীবন অভিসাপের!আষলেই তাই?হয়তবা কিছুলোকের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে!জীবনের আমি বাইশ বছর কাটিয়ে দিলাম সৌদি আরবের মরুপ্রান্তরে,বাইশ বছর বিশ বার ছুটিতে গিয়েছি অথচ লাগেজ খোলার পূর্বমুহুর্ত্য পর্যন্ত সবার মূখে হাসি দেখেছি।তারপর শুধূ কালোমূখের অন্ধকারই নজরে পরেছে।এজন্য সকল প্রবাসি বন্ধুদের জন্য আমার এই কবিতাঃ
ওহে আমার পরবাসী মন ! তুমি নির্বোধ স্বপ্ন বিলাসী !
কল্পনার অনাবিল সড়ক বেয়ে খুঁজে ফেরো আপন নিবাস
স্বপ্নিল স্বর্গে ।
কল্পনার ঘোড়া দাবড়িয়ে সমুদ্রের তরঙ্গ ভেঙ্গে
হতে চাও দ্বীগজয়ী বীর ?
অথচ !
জীবন যৌবন শৌর্য বীর্য খুঁইয়েছ সবই
বিদেশ বিভূয়েঁ জীবন যুদ্ধে তুমি ব্যর্থ।
বিদ্যুতের চমক তোমায় দিবালোকর স্বপ্ন দেখায়
মরীচিকার ভেলায় করে চলছো নিরুদ্দেশের পথে
যার শেষ প্রান্তে অবহেলা আর কেবলই করুনা ।
পরের কষ্ট ঘুচাতে মোহবিষ্ট তুমি
অবাঞ্চিতের অঘোষিত খেতাব তোমার হৃদয়ের ক্ষতকে
আরও দিগুন বাড়াবে ।
ভুল হিসেব কষে দিগ হারা নাবিকের মত
কেনার খুঁজে পাবেনা !
হে আমার পরবাসী মন !
সর্বনাশী আলেয়ার পিছনে কত দিন ছুটবে ?
দেশ মাতৃকার হাত ছানিতেও
তোমার মোহ কি কাটবে না !
সবুজে-ঘেরা মমতা মাখানো স্বদেশ আমার ;
যেখানে পাখির কলতানে ঘুম ভাঙ্গে
আজানের ধ্বনি শিঁশিশের শব্দ’
জানিয়ে দেয় ভোরের আগমন বার্তা ।
কুকিলের কুহুতান বহমান অসংখ্য নদী
ঝিলের জলে সদ্য ফোটা শাপলা
তোমাকে আকৃষ্ট করেনা !
পিতার অপত্য স্নেহ মায়ের মমতা মাখানো আদর
স্বজনের ভাল বাসা হীন জীবন
তোমাকে নিঃস্ব করেছে ”
তোমার অন্তর আত্মা যাকে তুমি শত চেষ্টা করেও
দেখতে পাওনা সে আজ পরিশ্রান্ত মৃত প্রায় ।
প্রেমহীন ব্যস্ততা আর এক ঘেয়েমী
নিত্য নৈমিত্তিক অনাকাক্ষিত অব্যক্ত অনিহায়
তোমার হৃদয় হয়েছে রূগাক্রান্ত ।
ঐ তো বৃদ্ধা মা জাদু-মাখা
আদুরে উচ্চারনে ডাকছে তোমায় !
হঠাৎ আঘাত পেয়ে তোমার ছোট্ট শিশুটি
আব্বু বলে কেঁদে উঠে তুমি কি শোনতে পাওনা ?
হে আমার পরবাসী মন
প্রবাসের একাকিত্বের নিষ্ঠুর থাবায়
ক্রমশই হারিয়ে ফেলছো রুচি,স্নিগ্ধতা,
মুনষ্যত্ব,মুল্যবোধ আর স্নেহ প্রীতি ।
বিষয়: বিবিধ
১৪৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন