মক্কা মদীনার ইসলাম ও আহলে হাদীস মতবাদ
লিখেছেন লিখেছেন সবুজ বাংলার ডিজিটাল রাজাকার ০৬ জুন, ২০১৪, ০৮:৫৮:৪৬ রাত
লোকটি খুবই পেরেশান হয়ে গেলেন। বিপদের সময় মূল আলোচ্য বিষয় থেকে কথা অন্যদিকে ঘোরানোর ক্ষেত্রে এই ফেরকাটি উস্তাদ। তিনি বললেন,আমাদের দ্বীন মক্কা মদীনার। আপনারা কুফার দ্বীন পালন করেন। আমি বললাম,আপনাদের বড় ভাই আহলে কুরআনও একই কথা বলে। তারা বলে,আমাদের দ্বীন মক্কা মদীনার। কারণ কুরআনের কিছু সূরা মক্কী (মক্কায় অবতীর্ণ),কিছু মাদানী (মদীনায় অবতীর্ণ). আপনাদের বিরুদ্ধে আহলে কুরআনের যুক্তিটা বেশ শক্তিশালী মনে হচ্ছে। আমি আরও বললাম,আপনারা তো বিখ্যাত তাবে-তাবেয়ী মদীনার আলেম ইমাম মালেক (রহঃ) এর লেখা হাদীসের কিতাবকেও সিহাহ সিত্তাহ থেকে বের করে দিয়েছেন। অথচ আমাদের কুফার ইমাম উক্ত কিতাব ইমাম মালেক থেকে বর্ণনা করেছেন। আপনি ইমাম মুহাম্মদের (রহঃ) এর মুয়াত্তা দেখুন। বড় আশ্চর্যের বিষয়,যারা মদীনার ইসলাম বর্ণনা করে,তাদের দ্বীন মদীনার হয়না,অথচ যারা মদীনার কিতাবকে কোনো গুরুত্বই দেয় না,তাদের দ্বীন মক্কা-মদীনার হয়ে যায়।
মদীনাবাসীদের বিরোধিতাঃ
আসুন দেখি,আপনাদের মদীনার ইসলামের কী অবস্থা।
১. আপনাদের মতে শুধু পাগড়ির উপর মাসেহ করা জায়েয। অথচ মদীনার ইমাম মালেক রহঃ বলেন,শুধু পাগড়ির উপর মাসেহ করলে হবে না। এমনকে মালেকী মাযহাব অনুযায়ী শুধু পাগড়ির উপর মাসেহ করলে নামাজ হবে না। দেখুন মদীনাবাসী আপনাদের ওযুও মানে না,আপনাদের নামাজকেও বিশুদ্ধ বলে না।
২. ইমাম মালেক (রহঃ) তায়াম্মুমের পদ্ধতি বর্ণনা করে বলেছেন,একবার মাটিতে হাত লাগিয়ে মুখ মাসেহ করবে। দ্বিতীয়বার হাত লাগিয়ে উভয় হাত কনুই পর্যন্ত মাসেহ করবে। আপনারা মদীনার মাযহাব ছেড়ে বোখারার মাযহাব গ্রহণ করেছেন। আপনাদের নিকট হাতের কব্জি পর্যন্ত মাসেহ করা যথেষ্ট এবং একবার মাটিতে হাত লাগিয়ে একই সঙ্গে মুখ ও হাত মাসেহ করতে হবে।
৩. ইমাম মালেক (রহঃ) এর মাযহাব হল,মামাজে হাত ছেড়ে রাখবে। অথচ আপনারা দাবি করেন,রাসূল (সাঃ) সর্বদা কাঁধ বরাবর হাত উঠিয়ে ডান হাত দ্বারা বাম হাতের কনুই ধরে বুকের উপর রাখেন। এই মাযহাবটি কোনো হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। মদীনাবাসীর কারও আমল দ্বারাও প্রমাণিত নয়।
৪. আপনাদের মতে উচ্চ আওয়াজ বিশিষ্ট নামাজে মুসল্লী ইমামের পিছে সূরা ফাতিহা না পড়লে নামাজ হবে না। অথচ ইমাম মালেকের মাযহাব হল,উচ্চ আওয়াজ বিশিষ্ট মুক্তাদী সূরা ফাতিহা পড়বে না।
৫. ইমাম মালেক (রহঃ) বলেন,মুক্তাদী আমীন আস্তে বলবে। ইমাম আমীন বলবে না। একাকী নামাজে আমীন বলার অনুমতি রয়েছে। অথচ আপনাদের নিকট মুক্তাদী ও ইমাম উভয়ে উঁচু আওয়াজে আমীন বলবে। গুরাবায়ে আহলে হাদীসদের ইমাম মুফতী আব্দুস সাত্তার লিখেছে,যে অপরিণামদর্শী ও ফেতনাবাজ উঁচু আওয়াজে আমীন বলার প্রতি বিরূপ মনোভাব রাখে এবং যারা উঁচু আওয়াজে আমীন বলে,তাদের প্রতি হিংসা রাখে,সে নিঃসন্দেহে একজন ইহুদী।
৬. ইমাম মালেক (রহঃ) এর মাযহাব হল,মহিলার সঙ্কুচিত হয়ে নামাজে দাঁড়াবে। বাহু ও রান মিলিয়ে রাখবে। অথচ আপনারা বলেন,মহিলা-পুরুষের নামাজে কোনো পার্থক্য নেই। এরপরও কোন মুখে আপনারা দাবি করেন যে,আপনাদের ইসলাম মক্কা-মদীনার?
৭. মুয়াত্তায়ে ইমাম মালেক,পৃঃ ৭ ও পৃঃ ১৪৯ এ আছে,যে ব্যক্তি জামাতের নামাজে ইমামের সাথে রুকুতে শরীক হয়,সে ঐ রাকাত পাবে। অথচ আপনারা বলেন,সে রাকাত পাবে না।
(ক্রমশ ...)
বিষয়: রাজনীতি
১০৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন