ইসলামের সাথে নাস্তিকতার বিরোধের তো কোন কারণ দেখিনা!!!!!
লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ রিগান ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৩:২৪:১৮ দুপুর
নাস্তিকতার ইতিহাস বুঝতে হলে আপনাকে খ্রিষ্টানদের ইতিহাস জানতে হবে। মুহাম্মদ(সঃ) এরও জন্মের প্রায় ৫০০ বছর আগে আরেকজন নবী পৃথিবীতে আসে, উনার নাম জেসাস(আঃ)।জেসাস(আঃ) জাতে ইহুদী ছিলেন। উনি যখন ইহুদীদের মাঝে এসেছেন তখন ইহুদীরা মুসা(আঃ) এর সময় প্রচলিত অনেক নিয়ম-নিতিরই পরিবর্তন করে ফেলেছে। জেসাস/ইশা (আঃ) এসেছিলেন শুধু ইহুদীদের জন্য যেন তারা নবী মুসা(আঃ) এর নিয়ম গুলো আবার পালন করা শুরু করে। (Matthew 15:24) এবং (Matthew 10:5-6) এই কথাই লেখা আছে। কিন্তু নবী ইসা(আঃ) পৃথিবী থেকে যাওয়ার পর তার প্রচারিত ধর্মকে বদলে ফেলে পল নামক ১ লোক। সে লোক মুসা আর ঈশা নবীর এক ঈশ্বরের ধারণাকে চ্যাঞ্জ করে ৩ ঈশ্বরের ধারণা ঢুকিয়ে দেয় আর ঈশা নবীর অনুসারীদের নাম দেয় খ্রিষ্টান। শুধু ইহুদীদের ধর্মকে সে অইহুদি ইউরোপে নিয়ে আসে। ইউরোপে তখন চলছে প্রকৃতির পূজা। পল এবং তার অনুসারীরা চলে বলে কৌশলে ইউরোপের শাসন ক্ষমতা নিয়ে নেয় আর সেখানের স্থায়ী বাসিন্দা প্রকৃতি পূজারীদের পুড়িয়ে মারতে থাকে। তারা পেগানদের সাথে নিজেদের ধর্ম কিছুটা ভাগাভাগি করে নেয় যেমন ক্রিসমাস ডে প্রচলন। ক্রিসমাস ডেতে গাছ পূজার মত করে ক্রিসমাস ট্রি সাজানো ইত্যাদি ইতাদি।এই সময়টাতে আরবে মুহাম্মদ(সঃ) নামক এক লোক নিজেকে আল্লাহর নবী বলে ১ ঈশ্বরের উপাহাসনা শুরু করেছে।শুরুর প্রায় ১০০/১৫০ বছরের মধ্যেই এই বেদুয়ীন আরবেরা পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক শাসন করা শুরু করে। প্রায় ১০০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে গাজী সালাউদ্দিন নামক এক শাসকের হাতে ইউরোপের সম্মলিত বাহিনি পরাজিত হয় এবং তারা এখনকার ইজরাইলের ক্ষমতা হারায়। ইউরোপের সম্মলিত বাহিনীর আহ্বায়ক ছিলো পোপ আরবান-২। মুসলিম আর খ্রিষ্টানদের এই যুদ্ধ “ক্রুসেড” নামে প্রচলিত।
ক্রুসেড যুদ্ধের পরে পোপের তথা খ্রিষ্টান ধর্মের প্রভাব ইউরোপে বাড়তে থাকে। ভিন্নভিন্ন ইউরোপিয়ান দেশে চার্চ গুলোর অবস্থান হলেও তারা চলতে লাগলো পোপের কথা অনুসারে আর অনেক দেশ ধর্মকে ভালবেসে চার্চকে অনেকটা স্বাধীন ভাবে চলার জন্য অনেক জমি দেয় ফলে চার্চ স্বাধীন এবং প্রভাবশালী এক সংস্থায় পরিণত হয়। অধিক টাকা-পয়সা পাওয়ার ফলে চার্চের নৈতিক স্থলন ঘটে। অনেক চার্চের ফাদারেরা টাকা-পয়সা মেরে দেওয়া শুরু করে। অনেকটা আমাদের দেশের অনেক মসজিদ কমিটির টাকা মেরে দেওয়ার মত। অনেক চার্চ যখন দেখলো সাধারণ মানুষ চার্চকে অনেক সম্মান করছে, ভয় করছে তখন তারা ঘোষণা করলো যে চার্চের সনদ ছাড়া কেউ স্বর্গে প্রবেশ করতে পারবেনা। ফলে সেই সময়ে স্বর্গের টিকেট কেনার ধুম পড়ে যায় ইউরোপে। ধর্মের এইরূপ অবস্থা দেখে কিছু জ্ঞানী মানুষ বলল “ ধর্ম তো দেখছি আফিমের মত”। মার্টিন লুথার নামক এক জার্মান অধ্যাপক এই অবস্থার চরম বিরোধিতা শুরু করেন। তার কিছু অনুসারীও জুটে যায়। তারা ক্যাথেলিকদের এই আচরণের বিরোধিতা করতো বলে তাদের নাম হয় “ প্রটেস্টান”।
বিরোধিতার ইংরেজি হচ্ছে “প্রটেস্ট”। ১৮ শতকে ইউরোপে শিল্পবিপ্লব শুরু হয়, শুরু হয় ইউরোপের পুনর্জাগরন। ইউরোপের জ্ঞানীগুণী মানুষ দেখলো তাদের সব সৃজনশীল কাজে বাধা দিচ্ছে ধর্ম। তারা বলছে পৃথিবী সুর্যের চারপাশে ঘুরে আর চার্চ বলল তথা বাইবেল বলল পৃথিবীর চারপাশে সুর্য ঘুরে। শুরু হল চার্চ আর বিজ্ঞানিদের লড়াই। চার্চ বল প্রয়োগ করলো, পুড়িয়ে মারলো অনেক বিজ্ঞানীকে। বিজ্ঞানিরা ভাবলো ঈশ্বর ভুল বলছে(বাইবেল)!!!! এই ঈশ্বর আসল ঈশ্বর নয়। কিন্তু তারা জানলো না যে বাইবেল পল দ্বারা প্রভাবিত বা পেগান্দের দ্বারা প্রভাবিত বা মানুষের লেখা। ফলে ইউরোপে ১ দল লোক বলল তারা এই মিথ্যা ঈশ্বরের উপাহাসনা আর করবেনা। তারা নিজেদের নাস্তিক বলে ঘোষণা করলো।
এই দিকে মুসলিম বিশ্ব তাদের মত করে এগুতে থাকলো। ইসলামের প্রাথমিক যুগেই অনেক বিজ্ঞানীর আবির্ভাব ঘটে। মজার ব্যাপার হচ্ছে ক্রুসেডের পরে মুসলিম বিশ্বে জ্ঞান চর্চা কমতে থাকে। ফলে ইউরোপে যখন রেনেসাঁ চলছে তখন মুসলিমরা পুরোপুরি অন্ধকারে তলিয়ে গেছে। সেই সুযোগে ইউরোপের মিলিত বাহিনীর কাছে তুরস্কের শেষ মুসলিম সালতানাতের পতন ঘটে। এই সময়টাতেই কামাল পাশা নামক ১ লোক মুসলিম তুরস্কে প্রথম বারের মত নাস্তিকতার আমদানী করে তার লক্ষ্য ছিলো মৃতপ্রায় মুসলিমদের ইউরোপীয় পানি খাইয়ে সুস্থ করা।
এরপর মুসলিম দেশ গুলো নানা ভাগে ভাগ হতে থাকে। ইসলামিক সংস্কৃতি নানা সংস্কৃতির সংস্পর্শে চলে আসে। ইসলামী রাষ্ট্র বেশির ভাগ মুসলিমের মাথায় রয়ে যায় বাস্তবে আর হয়না।মুসলিমরা ধর্ম-কর্ম গবেষণা ছেড়ে রূপকথার জগতে হারিয়ে যায়।
মুসলিমরা যখন ঘুমন্ত ,ইসলামিক সংস্কৃতি যখন মৃতপ্রায় তখন অনেক মুসলিম আশাহত হয়ে নাস্তিক হয়ে যায়। তারা মনে করে ইসলাম আর আধুনিক যুগের উপযোগী নয় বা মৃত। কিন্তু তারা বুঝতে পারেনা যে ইসলাম মৃত নয়, ঘুমন্ত। খ্রিষ্টানরা যখন দেখলো ইসলাম প্রায় ১০০-২০০ বছর যাবত ঘুমাচ্ছে তখন তারা ভাবলো , এই তো সুযোগ ইসলামকে শেষ করার। ফলে তারা আক্রমণ করা শুরু করলো মুসলিমদের উপর ইরাকে, আফগানিস্তানে বা সিরিয়াই। কিন্তু তারা জানলো না এর ফলেই জেগে যেতে থাকবে মুসলিমরা বা ইসলাম। ফলে শুরু হয়েছে ইসলাম নিয়ে নতুন করে গবেষণা। আধুনিক বিজ্ঞানের কাছে যেখানে অনেক ধর্মেই হেরে যাচ্ছে সেখানে ইসলাম উত্তর দিয়ে যাচ্ছে। অনেক ইসলামী স্কলার বিজ্ঞানের কষ্টি পাথরে ঘষে ইসলামকে পরীক্ষা করাকে শাপে বর ভাবছে। ফলে বিজ্ঞানের কষ্টি পাথরের ঘষায় প্রমান হচ্ছে বেশির ভাগ ধর্মেই প্রাচীন যুগের মানুষদের বানানো গল্প, ঈশ্বরের বানী নয়। ফলে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ইসলাম, এমন কি ইউরোপেও………
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন