একটি অনিবার্য বিপ্লবের ইশতেহার

লিখেছেন লিখেছেন খায়রুল ইসলাম ০৫ জুলাই, ২০১৪, ০৪:৫৮:৩২ রাত



আসাদ বিন হাফিজ

==============

আমি আমার জনগণকে আরেকটি অনিবার্য বিপ্লবের জন্য

প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলছি

দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে যেভাবে রুখে দাঁড়ায় আক্রান্ত দুর্বল

বিধ্বস্ত জাহাজ যাত্রীরা আঁকড়ে ধরে ভাসমান পাটাতন

তেমনি একাগ্রতা নিয়ে

আমি আপনাদেরকে আসন্ন বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলছি।

বিপ্লব মানেই যুদ্ধ

বিপ্লব মানে তিল তিল বাঁচতে শেখা

বিপ্লব মানে ভাসমান রক্তপদ্ম, প্রস্ফুটিত কৃষ্ণচূড়া

বিপ্লব মানে জীবন

বিপ্লব মানে জীবনের জন্য আমরণ লড়াই।

আমি আপনাদেরকে আরেকটি অনিবার্য বিপ্লবের জন্য

প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলছি।

যে বিপ্লবে প্রতিটি নাগরিকের জীবন হয়

একেকজন যোদ্ধার জীবন

প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিটি মানুষ হয়

একেকজন আমূল বিপ্লবী

প্রতিটি যুবক

নারীর বাহুর পরিবর্তে স্বপ্ন দেখে উত্তপ্ত মেশিনগানের

আর রমণীরা

সুগন্ধি রুমালের পরিবর্তে পুরুষের হাতে তুলে দেয়

বুলেট, গ্রেনেড।

আমি আমার জনগণকে

আনিবার্য সেই বিপ্লবের জন্য

প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলছি।

বিপ্লব মানেই যুদ্ধ

বিপ্লব মানেই সংগ্রাম, সংঘাত

বিপ্লব মানে শিরায় শিরায় উদ্দাম ঝড়

ঝড়ো হাওয়া, টর্নেডো, সাইক্লোন

বিপ্লব মানে কল্লোলিত সমুদ্রের শোঁ শোঁ অশান্ত গর্জন

বিপ্লব মানে আশা, সফলতা ও বিজয়ের আমোঘ পুস্পমাল্য।

আমি আপনাদেরকে আরেকটি

অনিবার্য বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলছি।

যে বিপ্লব সাধিত হলে

মানুষের শরীর থেকে খসে পড়ে শয়তানের লেবাস

জল্লাদের অশান্ত চিত্তে জন্ম নেয় বসরাই গোলাপ

অর্ধ পৃথিবীর দুর্দান্ত শাসক

কেঁপে উঠে ফোরাত কূলের কোন

অনাহারী কুকুরের আহার্য চিন্তায়।

যে বিপ্লব সাধিত হলে

কন্যা হন্তারক অভাবী পিতাদের জন্য পরওয়ারদিগার

খুলে দেন রহমতের সব ক’টি বন্ধ দুয়ার।

তখন কোন অভাব আর অভাব থাকে না

উদ্বৃত্ত সম্পদ প্রদানের জন্য

পাওয়া যায় না কোন ক্ষুধাতুর বনি আদম।

অন্ধকার যত ঘনীভূত হয় ততই উজ্জ্বল হয় বিপ্লবের সম্ভাবনা

একটি কৃষ্ণ অন্ধকার মানেই

সামনে অপেক্ষমান একটি প্রস্ফুটিত সূর্যদয়

একটি আরক্ত সন্ধ্যা মানেই

বেগমান বোরাক চেপে ধেয়ে আসছে কোন কুসুম সকাল

একটি কৃষ্ণ মধ্যরাত মানেই

তার উল্টো পিঠে বসে আছে কোন মৌমাছি দুপুর

একটি মিথ্যা মানেই

তাকে ধাওয়া করছে কোন দ্রুতগামী সত্যাস্ত্র

একটি অবাধ্য সমাজ মানেই

সামনে নূহের প্লাবন, অনাগত ধ্বংস

আরেকটি নতুন সভ্যতার আমূল উদ্বোধন।

আমি আপনাদেরকে সেই

অনিবার্য বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলছি।

দিন রাত্রির প্রতিটি আবর্তনে

শোনা যায় যে বিপ্লবের অশ্বখুরধ্বনি

ঋতুচক্রের প্রতিটি আবর্তনে

শোনা যায় যে বিপ্লবের অশ্বখুরধ্বনি

মাস ও বছরের প্রতিটি ঘূর্ণিপাকে

শোনা যায় যে বিপ্লবের অশ্বখুরধ্বনি

যুগ ও কালের প্রতিটি ঘূর্ণিপাকে

শোনা যায় যে বিপ্লবের অশ্বখুরধ্বনি

শতাব্দীর প্রতিটি পরতে পরতে যে বিপ্লবের পলিময় মৃত্তিকা।

আমি আমার জনগনকে

সারাক্ষণ বুকের মধ্যে বিপ্লবের চাষ করতে বলছি।

যে বিপ্লবের চাষ করলে

প্রজ্জ্বলিত অগ্নি হয় জাফরান বীথি

যে বিপ্লবের চাষ করলে

নীল নদের আহার্য হয় অবাধ্য ফারাও

আবরাহার হাতি হয় পাখির খোরাক

চুরমার হয়ে যায় রোম ও পারস্যের

বিশাল সালতানাতের দাম্ভিক চূড়া

ব্যর্থ হয়ে যায় কারুনের ধন

কল্পিত স্বর্গদ্বারে হুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকে

অবাধ্য সাদ্দামের দশটি আঙ্গুল।

আর কারাগারের বন্ধি কয়েদী ইউসুফ

কুদরতের ইশারায় রাজমুকুট পড়ে হয়ে যান বাদশা কেনান।

আমি আমার জনগণকে

আসন্ন সেই বিপ্লবে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

যেখানে অন্ধকার

সেখানেই বিপ্লব

যেখানে ক্লেদাক্ত পাপ ও পঙ্কিলতার সয়লাব

সেখানেই বিপ্লব

যেখানে নগ্নতা ও বেহায়াপনার যুগল উল্লাস

সেখানেই বিপ্লব

যেখানে মিথ্যার ফানুস

সেখানেই বিপ্লব

বিপ্লব সকল জুলুম, অত্যাচার আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে

বিপ্লব অন্তরের প্রতিটি কুচিন্তা আর কুকর্মের বিরুদ্ধে।

আমি আপনাদের সকলকে

বিপ্লবের মৌসুমের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।

মৌসুম ছাড়া কোন বসন্ত আসে না

মৌসুম ছাড়া ফোটে না কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, শিমুল

সময়কে ধারণ করতে না পারলে গর্ভবতী হয় না কোন রমণী

ফলবতী হয় না সবুজ ধানের শীষ

সীম আর মটর দানা

সময়কে ধারণ করতে না পারলে সফল হয় না বিপ্লবের আরাধ্য কাজ।

কৃষ্ণ মধ্যরাত পেরিয়ে আজ বিংশ শতাব্দী ছুটছে প্রত্যুষের দিকে

সাইবেরিয়ার বরফ খন্ডে মুখ লুকাচ্ছে পাশবতন্ত্র

আ’দ ও সামুদ জাতির মত টেক্সাসের ঘোড়াগুলোকে

ঘিরে ফেলেছে আল্লাহর গজব

ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, বসনিয়া, কাশ্মীর,

পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তরে

লাউড স্পিকারের সামনে দাঁড়িয়ে গেছে যুগের মুয়াজ্জিন

আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে এখনি আজান হবে

সে আওয়াজের নিচে হারিয়ে যাবে

এটম ও কামানের ধ্বনি

গড়িয়ে যাওয়া অজুর পানিতে ভিজে অকেজো হয়ে পড়বে

সব ক’টি দূরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র।

আবাবিল পাখির ঝাক গিলে খাবে আকাশ ফড়িং

রাজহাঁসগুলো

শামুকের পরিবর্তে গিলে খাবে জীবন্ত টর্পেডো

সাদা কবুতরের পাখনায় আটকা পড়ে

থেমে যাবে আনবিক ঝড়

আর বেহেশত থেকে শহীদেরা

আপনাদের বিজয় অভিনন্দন জানানোর জন্য

মার্চপাষ্ট করতে করতে

এসে দাঁড়িয়ে যাবে রাস্তার দু’পাশে।

তাদের প্রত্যেকের হাতে থাকবে একটি করে রক্ত গোলাপ

সজীব ও তরতাজা

চিত্তহারী ঘ্রাণময়

আমি আপনাদেরকে সেই

অনিবার্য বিপ্লবের

পতাকা উত্তোলনের উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

বিষয়: বিবিধ

১২৯৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

241832
০৫ জুলাই ২০১৪ সকাল ০৯:১৭
ইবনে হাসেম লিখেছেন : পাঠ করলাম, অতি আবেগ দিয়ে, শরীরের রোম খাড়া হয়ে যায় পরতে পরতে, কেন জানি একস্থানে চোখজোড়াও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। মনে হয় যে বিপ্লবের আহবান জানিয়েছেন কবি, সেই বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে আমরা.......
241874
০৫ জুলাই ২০১৪ দুপুর ১২:০৭
সন্ধাতারা লিখেছেন : It is an excellent post for creating awareness and strength of the people. Jajakalla khairan.
241978
০৫ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো
কবি এখন খুব সমস্যায় আছেন। তার জন্য দুয়া করবেন।
242058
০৫ জুলাই ২০১৪ রাত ০৯:২৮
খায়রুল ইসলাম লিখেছেন : আললাহ উনাকে হেফাজতে রাখুক আমিন

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File