পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে করনীয় মেজর ফারুক (অবঃ)

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ খোরশেদ আলম ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১১:০৭:০২ রাত

পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাস ও

ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে করনীয়

মেজর ফারুক (অবঃ)

সূচনা

পার্বত্য চট্টগ্রাম

বাংলাদেশের দক্ষিন-

পূর্বে অবস্থিত দেশের এক-

দশমাংশ এলাকা যার

জনসংখ্যা ৭ লক্ষ

বাঙ্গালীসহ চাকমা,

মারমা, ত্রিপুরা, মুরং,

পাংখু, বোম,

ইত্যাদি ১৩টি উপজাতি মিলে সর্বমোট

১২ লক্ষ মাত্র। ১৯৭৫ সাল

থেকে এ অঞ্চলে ভারতের

প্রত্যক্ষ সহযোগিতায়

চাকমা নেতৃত্বে বাংলাদেশ

বিরোধী সশস্ত্র সন্ত্রাস

চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম

জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)

এর সশস্ত্র শাখা তথাকথিত

শান্তিবাহিনীর

আক্রমনে এযাবত প্রায় ৩৫০০০

মানুষ মারা যায়।

মূলতঃ পার্বত্য

চট্টগ্রামে বিচ্চিন্নতাবাদ

এবং পার্বত্য

বাংগালীদের

বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূল

অভিযান পরিচালনার

লক্ষ্যেই স্বাধীন

বাংলাদেশে এ

মানবতা বিরোধী গনহত্যা পরিচালনা করা হয়।

মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ-

মাকে কুপিয়ে এবং শিশুকে পুড়িয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনী

১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর

তৎকালীন আওয়ামী লীগ

সরকার জেএসএস-এর

সাথে ‘পার্বত্য

শান্তি চুক্তি’ নামে এক

দেশবিরোধী চুক্তি স্বাক্ষর

করে যার মাধ্যমে পার্বত্য

চট্টগ্রামকে ‘উপজাতীয়

এলাকা’

হিসেবে ঘোষনা করে সেখানে উপজাতীয়

শাসন

ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়।

চুক্তি অনুযায়ী জেএসএস কিছু

সেকালে অস্ত্রসহ

আত্মসমর্পনের নাটক মঞ্চায়ন

করলেও চুক্তির পর এযাবত ৭০০-

এরও

বেশী মানুষকে হত্যা এবং ১৩০০-

এরও বেশী মানুষকে অস্ত্রের

মুখে অপহরন করা হয়।

জেএসএস প্রধান সন্তু

লারমা কর্তৃক পার্বত্য

চট্টগ্রাম থেকে ৭ লক্ষ

বাংগালী এবং সকল

নিরাপত্তা ক্যাম্প

প্রত্যাহারের

দাবী উত্থাপন নইলে পূনরায়

সশস্ত্র সংগ্রাম শুরুর

হুমকি এবং আন্তর্জাতিক

সিএইচটি কমিশন সহ বিভিন্ন

দেশী-

বিদেশী গোষ্ঠী কর্তৃক সন্তু

লারমার দাবীর

সমর্থনে জোর প্রচারণা ও

লবিং-এর

প্রেক্ষিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম

সংশ্লিষ্ট নিম্নোক্ত কিছু

বিষয়ের উপর

সংক্ষেপে আলোকপাত

করবোঃ

(ক) পার্বত্য চট্টগ্রামের

কৌশলগত গুরুত্ব, (খ)

ভারতে সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনীর

প্রশিক্ষন ও আশ্রয় শিবির, (গ)

জেএসএস-এর সশস্ত্র

আন্দোলনের কারন ও উদ্দেশ্য,

(ঘ) জেএসএস কর্তৃক সংঘটিত

সন্ত্রাসের ধরন, (ঙ)

শান্তিবাহিনী কর্তৃক

সংঘটিত কতিপয় গণহত্যা, (চ)

শান্তিবাহিনীর সশস্ত্র

তৎপরতার ফলাফল, (ছ)

শান্তি আলোচনা, (জ) ১৯৮৯

সালে পার্বত্য স্থানীয়

সরকার পরিষদ গঠন, (ঝ) পার্বত্য

শান্তিচুক্তি যে কারনে রাষ্ট্রের

নিরাপত্তা ও সার্বভৌম

বিরোধী, (ঞ) পার্বত্য

চট্টগ্রামে উপজাতীয় শাসন

ও বাঙ্গালীদের

প্রতিনিধিত্বহীনতা, (ট) সন্তু

লারমা পার্বত্যবাসীর বৈধ

জনপ্রতিনিধি নয়, (ঠ)

শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের

অর্থ কি ?, (ড) হাইকোর্টের

রায় –

পার্বত্যচুক্তি অসাংবিধানিক

ও দেশবিরোধী, (ঢ) রেসিস্ট

সন্তু লারমার

বাঙ্গালীবিদ্বেষ

ী প্রপাগান্ডা, (ণ)

চুক্তি পরবর্তী পার্বত্য

পরিস্থিতি, (ত)

আন্তর্জাতিক

সিএইচটি কমিশনের

বাংলাদেশ

বিরোধী তৎপরতা, (থ)

পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের

ফলাফল এবং (দ) পার্বত্য

চট্টগ্রামে টেকসই

নিরাপত্তা ও

শান্তি স্থাপনে করনীয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের কৌশলগত

গুরুত্ব

উত্তরে খাগড়াছড়ি,

মাঝখানে রাঙ্গামাটি এবং দক্ষিনে বান্দরবান-

এই ৩টি জেলার

সমন্বয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম। এর

পশ্চিমে ভারতের ত্রিপুরা,

উত্তর ও পুর্বে মিজোরাম

এবং দক্ষিনে মায়ানমারের

আরাকান প্রদেশ। পার্বত্য

চট্টগ্রামে জনবসতি অত্যন্ত কম

(১৩টি উপজাতি মিলে ৫ লক্ষ

এবং বাংগালী ৭ লক্ষ;

সর্বমোট প্রায় ১২ লক্ষ) হওয়ায়

এবং জঙ্গলাকীর্ন বিস্তীর্ন

পাহাড় থাকায় এ

অঞ্চলে সশস্ত্র ক্যাম্প স্থাপন

করে প্রশিক্ষন

পরিচালনা এবং সশস্ত্র

তৎপরতা পরিচালনা করা খুবই

সহজ। অন্যদিকে সীমান্ত

লাগোয়া হওয়ায় যে কোন

অপারেশন

পরিচালনা করে পার্শ্ববর্তী দেশে সটকে পড়া সুবিধাজনক।

জংগলাকীর্ণ

পাহাড়ী অঞ্চল এবং এঁকে-

বেঁকে চলা পাহাড়ী ঝর্ণার

কারনে এ

অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর

গতিবিধি অনেকটা সীমিত,

গেরিলা পদ্ধতিতে নিরাপত্তা বাহিনীর

উপর অতর্কিত হামলা (রেইড

বা এ্যাম্বুশ)

পরিচালনা করে পালিয়ে যাওয়া সহজ।

অন্যদিকে পাহাড়ী পাড়া এবং বাংগালীদের

গুচ্ছগ্রামসমূহে নিয়ন্ত্রণ

প্রতিষ্ঠা বা সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনা করা সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর

পক্ষে অত্যন্ত সুবিধাজনক।

পার্বত্য চট্টগ্রামে উৎপাদিত

বনজ, কৃষি ও মৎস্য সম্পদের উপর

এবং ব্যবসায়ীদেরকে অপহরণ

করে মোটা অংকের

চাঁদা আদায় করাটা সশস্ত্র

গ্রুপগুলোর জন্য বিরাট আয়ের

ব্যবস্থা। যেহেতু পার্বত্য

চট্টগ্রামে সশস্ত্র

গ্রুপগুলো শুধুমাত্র উপজাতীয়

সদস্যদের দ্বারাই গঠিত,

সে কারণে বিচ্ছিন্নতাবাদী

রেসিস্ট

প্রপাগান্ডা চালিয়ে এবং অস্ত্রের

হুমকীর মুখে স্বগোত্রীয়

উপজাতিদের কাছ

থেকে সমর্থন ও আনুগত্য আদায়

করা সহজ।

পার্বত্য চট্টগ্রামের

নিকটবর্তী ঢাকা-চট্টগ্রাম

মহাসড়ক-

যা বাংলাদেশের

আমদানী-রফতানীর লাইফ

লাইন। তাই, পার্বত্য

চট্টগ্রামে প্রভাব

বিস্তারের সুযোগ

পেলে চট্টগ্রাম বানিজ্য-

বন্দরকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব

এবং পার্বত্য

চট্টগ্রামকে আলাদা করতে পারলে বাংলাদেশের

অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টাই

অকার্যকর হয়ে পড়তে বাধ্য।

উপরোক্ত কৌশলগত অবস্থার

বিবেচনাতেই ভারত

পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র

বিচ্ছিন্নতাবাদী

তৎপরতা পরিচালনার

উদ্দেশ্যে ‘সশস্ত্র

শান্তিবাহিনী’ গঠন

করে বাংলাদেশের

বিরুদ্ধে এক অঘোষিত

প্রক্সি যুদ্ধ শুরু করে।

ভারতে সন্ত্রাসী শান্তিবাহিনীর

প্রশিক্ষন ও আশ্রয় শিবির

ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর

প্রশিক্ষন

কেন্দ্রে শান্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষন

দিয়ে তাদেরকে অস্ত্রসহ

ছোট ছোট

দলে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ

করানো হয়। ভারতীয়

সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-

এর ক্যাম্প সংলগ্ন

এলাকাতেই স্থাপিত হয়

কয়েক ডজন

শান্তিবাহিনী ক্যাম্প।

ভারতীয় লেখক অশোক

রায়নার ‘ইন্সাইড র’ বইতে এর

বিস্তারিত বিবরণ বর্ণিত

হয়েছে।

উল্লেক্ষ্য, ভারতের

ভূমিতে স্থাপিত

শান্তিবাহিনীর সদর

দপ্তরে সংঘটিত এক

অভ্যন্তরীণ দ্বন্দে ১৯৮৩

সালের ১০ নভেম্বর

তারিখে শান্তিবাহিনীর

প্রতিষ্ঠাতা এবং জনসংহতি সমিতির

প্রধান মানবেন্দ্র নারায়ন

লারমা বিক্ষুব্ধ

প্রীতি গ্রুপের হাতে নিহত

হয়। তারপর দলের প্রধান

হিসেবে দায়িত্ব নেয় -

মানবেন্দ্র লারমার ছোট

ভাই সন্তু লারমা।

মানবেন্দ্র নারায়ন

লারমা সন্তু লারমা

জেএসএস কর্তৃক সশস্ত্র

আন্দোলনের কারণ ও

উদ্দেশ্যাবলী

যেসব বিষয়কে সশস্ত্র

আন্দোলনের প্রধান কারণ

হিসেবে জেএসএস প্রচার

করেছিল- তা’ হলো-

কাপ্তাই বাঁধের

ফলে ক্ষতিগ্রস্থ

উপজাতিদের যথাযথ

পূণর্বাসন না করা,

উপজাতিদের

সংস্কৃতি রক্ষা করা,

অর্থনৈতিক উন্নয়ন ইত্যাদি।

তবে জেএসএস-এর মূল উদ্দেশ্য

ছিলঃ

(ক) পার্বত্য

চট্টগ্রামে স্বায়ত্ব-শাসন

প্রতিষ্ঠা করা,

(খ) পার্বত্য

চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন

করতে সক্ষম না হলেও

সেখানে বাংলাদেশ

সরকারের সার্বভৌম

ক্ষমতা বিলোপ করা,

(গ) পার্বত্য চট্টগ্রাম

থেকে বাংলাভাষা-

ভাষী নাগরিকদেরকে অস্ত্রের

মুখে উৎখাত করে পার্বত্য

চট্টগ্রামকে একমাত্র

উপজাতিদের আবাস

‘উপজাতীয় এলাকা’

বা ‘জুম্মল্যান্ড’

হিসেবে পরিণত করা।

এসব বাংলাদেশ

বিরোধী উদ্দেশ্য

বাস্তবায়নে জেএসএস

পরিচালনা করে বাংলাদেশের

ইতিহাসে বর্বরতম জাতিগত

নির্মূল অভিযান।

জেএসএস কর্তৃক সংঘটিত

সন্ত্রাসের ধরন

জেএসএস ভারত

থেকে প্রাপ্ত প্রশিক্ষন,

অস্ত্র, গোলাবারূদ ও আশ্রয়

ব্যবহার করে গোটা পার্বত্য

৩ জেলায় বাংগালী নিধন

শুরু করে। নিরস্ত্র ও নিরীহ

বাংগালীদের বিভিন্ন

পাড়ায় আক্রমন করে গ্রামের

সব বাড়ি-ঘরে আগুন

ধরিয়ে দেয়,

নির্বিচারে হত্যা করে গ্রামের

আবাল-বৃদ্ধ-বনিতাকে,

গর্ভবতী মায়েদের

পেটে বেয়োনেট

দিয়ে আঘাত করে সন্তানসহ

মাকে হত্যা করা হয়, ধর্ষনের

শিকার হয় অসংখ্য পার্বত্য

বাঙ্গালী নারী,

গুলি করে ও

কুপিয়ে হত্যা করে প্রায়

৩৫০০০ (পয়ত্রিশ হাজার)-এরও

বেশি মানুষ, আহত করে কয়েক

হাজার। অস্ত্রের মুখে শত-শত

বাংগালী কৃষক, কাঠুরিয়া,

জেলে ও

ব্যবসায়ীকে কিডন্যাপ

করে মুক্তিপণ আদায় করে, এসব

ভিকটিমদের অনেককেই

নির্যাতন করে ও

কুপিয়ে হত্যা করে। পার্বত্য

চট্টগ্রামের প্রায় সকল

দোকান মালিক, কৃষক,

জেলে, অফিস-আদালতের

কর্মচারী এবং ঠিকাদারদের

কাছ থেকে আদায়

করে চাঁদা ও মুক্তিপণ

হিসেবে শত-সহস্র

কোটি টাকা।

সন্ত্রাস-বিরোধী কয়েকশত

উপজাতি নাগরিকও

জেএসএস কর্তৃক হত্যা ও

নির্যাতনের শিকার হয়।

অস্ত্রের মুখে ত্রাস

সৃষ্টি করে তারা লক্ষাধিক

পার্বত্য

বাংগালীকে ভিটা-

মাটি ছেড়ে গুচ্ছ

গ্রামে আশ্রয় নিতে বাধ্য

করে, লক্ষাধিক

বাঙ্গালী পার্বত্য চট্টগ্রাম

ছেড়ে সমতলে এসে আশ্রয়

নিতে বাধ্য হয়।

এছাড়া প্রায় বিশ হাজার

উপজাতিকে বাধ্য

করে ভারতে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়

নিতে।

নিরাপত্তা বাহিনীর টহল

দলের উপর এ্যাম্বুশ করে কয়েক

শত সেনা সদস্যকে হতাহত

করে, বিডিআর-পুলিশ-আন

সার ও ভিডিপি (গ্রাম

প্রতিরক্ষা দল) ইত্যাদি দূর্বল

লক্ষ্যবস্তুর উপর

পরিচালনা করে অতর্কিতে হামলা বা এ্যাম্বুশ

– যাতে বহু সদস্য হতাহত হয়।

এভাবে ভারতীয়

সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ

তত্বাবধানে প্রশিক্ষিত

শান্তিবাহিনী নামধারী সন্ত্রাসীরা তাদের

প্রশিক্ষনের

পুরো দক্ষতা প্রয়োগ

করে বাংলাদেশের

হাজার হাজার নারী-পুরুষ-

শিশু ও

নিরাপত্তা বাহিনীর

সদস্যদের হত্যায়। স্বাধীন

বাংলাদেশে সশস্ত্র

উপজাতীয়

সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশের

কয়েক হাজার

নাগরিককে নিজ

ভূমি থেকে উৎখাত করার ঘৃন্য

উদ্দেশ্যে পাড়া ঘেড়াও

করে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে,

বেধরক কুপিয়ে এবং খড়ের

ঘরগুলোতে আগুন

ধরিয়ে দিয়ে জলন্ত ঘরের

মধ্যে শত-শত মা ও

শিশুকে জ্যান্ত

পুড়িয়ে অংগার

করে মানবতার

বিরুদ্ধে যে অপরাধ করেছে-

তার নজির ১৯৭১ সালেও

দেখা যায়নি।

স্বাধীন বাংলাদেশে সন্তু

লারমা পরিচালিত

জেএসএস কর্তৃক পার্বত্য

বাঙ্গালীদের উপর

মানবতা বিরোধী অপরাধের

কিছু সচিত্র উদাহরনঃ

সন্তু লারমার সন্ত্রাস-

পার্বত্য বাঙ্গালীদের

লাশের স্তুপ

বামেঃ বাঙ্গালী পাড়ায়

শান্তিবাহিনীর

পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ,

এভাবেই

শান্তিবাহিনী পুড়িয়ে মারে পার্বত্য

বাংগালীদেরকে;

ডানেঃ অন্যত্র পার্বত্য

বাঙ্গালীদের লাশ

এবং অঙ্গার

হওয়া দেহাবশেষ

শান্তিবাহিনী কর্তৃক

পরিচালিত কতিপয় গণহত্যা

পার্বত্য

চট্টগ্রামে বাংগালী অধ্যুষিত

অসংখ্য পাড়াতেই

শান্তিবাহিনী গণহত্যা চালায়।

(ক) শান্তিবাহিনীর

এরিয়া কমান্ডার তথাকথিত

মেজর রাজেশ এর

নেতৃত্বে পরিচালিত হয়

ভূষনছড়া হত্যাকান্ড

যেখানে একরাতেই ৪৫০

জনের অধিক

বাংগালীকে হত্যা করা হয়েছে।

তার আসল নাম- মনিস্বপন

দেওয়ান,

যাকে আওয়ামী লীগ চুক্তির

পরে রাংগামাটির এমপি ও

প্রতিমন্ত্রী বানিয়ে গণহত্যা পরিচালিনার

জন্য পুরস্কৃত করেছিল,

বর্তমানে সে গৌতম

দেওয়ানের

সভাপতিত্বে সিএইচটি নাগরিক

কমিটি গঠন করেছে।

(খ) রাংগামাটি জেলার

লংগদু থানার

পাকুয়াখালীতে ১৯৯৬

সালের ৬ সেপ্টেম্বর

তারিখে শান্তিবাহিনী ৩৫

জন

বাংগালী কাঠুরিয়াকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।

(গ) রাংগামাটি জেলার

জুরাছড়ি থানার

পাহাড়ি এলাকায়

শান্তিবাহিনীর

এরিয়া কমান্ডার তথাকথিত

মেজর পেলে (আসল নাম-

তাতিন্দ্র লাল চাকমা)

একটি সেনা টহলের উপর

এ্যাম্বুশ করে মেজর মহসীন সহ

৩০ জন

সেনা সদস্যকে হত্যা করে।

সন্ত্রাসীরা দা দিয়ে কুপিয়ে নিহতদের

পা কেটে পায়ের

বুটগুলো আলাদা করে নেয়েছিল।

বর্তমানে সে জেএসএস (এম

এন লারমা) গ্রুপের সাধারন

সম্পাদক।

অনুরূপ, কাশখালী,

কাউখালী, নানিয়ার চর

(এখানে এক রাতেই ৩০০

জনের অধিক পার্বত্য

বাংগালীকে হত্যা করা হয়েছে)

ইত্যাদি অগনিত

হত্যাকান্ডের

পরিচালনা করে এই

শান্তিবাহিনী- যাদের

প্রায় ৮৫০ জনকে চুক্তির পর

পুলিশ

বাহিনীতে চাকুরী দিয়ে পুরস্কৃত

করা হয়েছে- অথচ,

এদেশে দেশ

স্বাধীনকারী মুক্তিযোদ্ধারা এখনো রিক্শা চালায়।

এসব গণহত্যার কোন খবরই

দেশবাসীকে জানানো হয়নি এবং চুক্তি সই

করে সাধারন

ক্ষমা দিয়ে দেয়া হয়েছে,

যে সাধারন

ক্ষমাকে চিরস্থায়ী সাধারন

ক্ষমা মনে করে তারা চুক্তির

পরও একইরুপ হত্যাকান্ড ও অপহরন

চালিয়ে যাচ্ছে।

শান্তি বাহিনীর সশস্ত্র

তৎপরতার ফলাফল

শান্তি বাহিনী নির্বিচার

হত্যাযজ্ঞ, অপহরন, ধর্ষন,

নির্যাতন, চাঁদাবাজি,

ভীতিসঞ্চার,

অগ্নিসংযোগ, উৎখাতকরন

ইত্যাদি সন্ত্রাসের

মাধ্যমে পার্বত্যবাসী মানুষের

মনে এক ভীতিকর

অবস্থা তৈরী করতে সক্ষম

হলেও দীর্ঘ প্রায় ২ যুগ

ধরে সশস্ত্র সন্ত্রাস

পরিচালনা তাদের জন্য

উল্লেখযোগ্য কোন সাফল্য

বয়ে আনতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়।

বাংলাদেশের

নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর

সম্মিলিত প্রয়াসে কয়েকশত

শান্তিবাহিনী সদস্য হতাহত

হয় ও ধরা পড়ে। সশস্ত্র

তৎপরতা দ্বারা শান্তিবাহিনী পার্বত্য

চট্টগ্রামের

একটি পাড়াকেও দখল

করতে সক্ষম হয়নি, সবসময়

তারা জংগলে পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য

হয়।

বহিঃর্দেশের ক্রীড়ানক

হয়ে বাংলাদেশের

মানুষের

বিরুদ্ধে পরিচালিত সশস্ত্র

সন্ত্রাসের মাধ্যমে শত

বছরেও কিছু অর্জন করা সম্ভব

নয়- বুঝতে পেরে কয়েকশত

শান্তিবাহিনী সদস্য অস্ত্রসহ

নিরাপত্তা বাহিনীর

কাছে আত্মসমর্পন

করে স্বাভাবিক

জীবনে ফিরে আসে।

প্রীতিগ্রুপ পুরোটাই কয়েকশত

সদস্য সহ আত্মসমর্পন করে।

জেএসএস এর কেন্দ্রীয় অনেক

নেতাও

নিরাপত্তা বাহিনীর

কাছে আত্মসমর্পন করে।

পরিস্থিতি বেগতিক

দেখে ১৯৯২ সালে জেএসএস

একতরফা যুদ্ধ

বিরতি ঘোষনা দিতে বাধ্য

হয়।

তবে সেনাবাহিনীর তরফ

থেকে জেএসএস-এর এহেন

স্বঘোষিত

যুদ্ধবিরতিকে নাকচ

করে দেয়া হয়নি বিধায় এ

কৌশলগত ঘোষনার

মাধ্যমে জেএসএস যা অর্জন

করে- তা হলোঃ

(১)

এতে নিরাপত্তা বাহিনীর

মধ্যে অপারেশন তৎপরতায়

ভাটা পড়ে,

(২)

শান্তিবাহিনী জনবলে অত্যন্ত

নগন্য হওয়া সত্বেও

বাংলাদেশের

সেনাবাহিনীর

সাথে যুদ্ধবিরতি পালনরত

একটি সশস্ত্র

বাহিনী হিসেবে বিভিন্ন

মিডিয়াতে প্রচারনা লাভ

করে,

(৩) উপজাতীয়

পাড়াসমূহে জেএসএস

প্রচারনা কার্যক্রম

পরিচালনার সহজ সুযোগ পায়

এবং

(৪) জেএসএস মনোবলহীন

শান্তিবাহিনীকে পূনর্গঠনের

সুযোগ লাভ করে।

(৫) সন্ত্রাসের

বিরোধিতাকারী উপজাতীয়

নাগরিকরা এবং আত্মসমর্পনকারী শান্তিবাহিনী সদস্যরা নিরাপত্তাহীন

হয়ে পড়ে।

শান্তি আলোচনা

প্রতিবেশী দেশ কর্তৃক

মন্ত্রণা, প্রশিক্ষন, অস্ত্র-

গোলাবারুদ ও আশ্রয়প্রাপ্ত

শান্তিবাহিনীকে সন্ত্রাসের

পথ পরিহার করে সবাভিক

জীবনে ফিরিয়ে আনার

উদ্যোগ গ্রহন

করে বাংলাদেশ সরকার।

বিএনপি সরকারের

আমলে (১৯৯১-১৯৯৬) জেএসএস-

এর সাথে একাধিক

আলোচনা বৈঠক করেন

ততকালীন যোগাযোগ

মন্ত্রী কর্নেল অলি আহমদ।

কিন্তু জেএসএস-এর পক্ষ

থেকে অগ্রহনযোগ্য দাবী-

দাওয়া পেশের

কারনে সে আলোচনার

সমাপ্তি হয়নি।

পার্বত্য স্থানীয় সরকার

পরিষদ গঠন

১৯৮৯ সালে এরশাদ সরকার

পার্বত্য চট্টগ্রামের

৩টি জেলায় স্থানীয় সরকার

পরিষদ গঠনের

উদ্দেশ্যে নির্বাচনের

আয়োজন করে।

পুরো জাতিকে অন্ধকারে রেখে পার্বত্য

স্থানীয় সরকার পরিষদের

জন্য এমন মারাত্বক বিধান

আনা হয় যে-

(১) ৩টি জেলাতেই এমন

স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠন

করা হবে যার চেয়ারম্যান

হবে একমাত্র

উপজাতি ব্যক্তি; কোন

বাংগালী এ পদের জন্য

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতাই

করতে পারবেনা;

(২)

প্রতিটি জেলা পরিষদে ৩০

জন সদস্য হবে- যার মধ্যে মাত্র

১০ জন

হবে বাংগালী সম্প্রদায়

থেকে, আর বাকী ২০ জন

হবে উপজাতীয়;

(৩) উপজাতীয় হেডম্যান,

সার্কেল চীফ ও স্থানীয়

সরকার পরিষদের সনদ

না পেলে কোন

বাংগালী পার্বত্য

চট্টগ্রামের

বাসিন্দা হতে পারবেনা,

জমি-জমা খরিদ

করতে পারবে না এবং ভোটারও

হতে পারবেনা- অনুরূপ অনেক

অসাংবিধানিক ধারা।

এভাবে অন্যায় ও

অগণতান্ত্রিক বিধান

অন্তর্ভুক্ত করার ফলে পার্বত্য

বাঙ্গালীরা নিজ দেশেই

দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক

হিসেবে পরিণত হয়

এবং উপজাতীয়

শাসনাধীনে ন্যস্ত হয়।

বস্তুতঃ পার্বত্য স্থানীয়

সরকার পরিষদের এহেন

বিধানের উপর

ভিত্তি করেই ১৯৯৭

সালে পার্বত্য

চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

উল্লেখ্য যে, স্থানীয় সরকার

পরিষদ ব্যবস্থা প্রবর্তনের

ফলে জেএসএস-এর স্বায়ত্ব

শাসনের অযৌক্তিক

দাবী স্বীকৃতি পায়

এবং এটি তাদেরকে আরো ক্ষমতা ও

সুযোগ-

সুবিধা দাবী করতে উদ্বুদ্ধ

করে ।

পার্বত্য

শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর

যে কারনে রাষ্ট্রের

নিরাপত্তা ও সার্বভৌম

বিরোধী

স্থানীয় সরকার পরিষদের

নীতিমালার ভিত্তিতেই

১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর

আওয়ামীলীগ সরকার

জেএসএস–এর সাথে পার্বত্য

শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর

করে এবং জেএসএস-এর

ক্ষমতাকে আরো বৃদ্ধি করার

উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়- ৩

জেলা পরিষদের উপর

কর্তৃত্বকারী আঞ্চলিক পরিষদ

বা রিজিয়নাল কাউন্সিল।

চুক্তির পর থেকে সন্তু

লারমা রিজিয়নাল

কাউন্সিল চেয়ারম্যান

হিসেবে ক্ষমতা ভোগ

করে আসছে এবং এযাবত

সরকার পার্বত্য

চট্টগ্রামে কোন স্থানীয়

নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেনি।

বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন

সরকারগুলোর উপর

বিদেশী প্রভাব,

বিরোধী দলের

দায়িত্বহীনতা এবং সুশীল

সমাজ ও জনগনের মধ্যে এহেন

জাতীয় ইস্যুতে নিস্পৃহতার

সুযোগে জাতির অপূরনীয়

ক্ষতি হয়ে যাবার প্রকৃষ্ট

উদাহরন হলো - পার্বত্য

স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠন ও

পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর।

বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও

সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র

প্রহরী বলতে বাস্তবে যে কেঊ

নেই- এটাই প্রমানিত।

দীর্ঘ ২ যুগ ধরে সশস্ত্র

তৎপরতা চালিয়ে জেএসএস

যা অর্জন করতে পারেনি,

আওয়ামী সরকারের

বদৌলতে তারা চুক্তির

টেবিলে বসেই

বাংলাদেশের এক-দশমাংশ

এলাকার পূর্নাংগ কর্তৃত্ব

লাভ করেছে।

পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর

করে দেশের এক-দশমাংশ

এলাকার কর্তৃত্ব হস্তান্তর

করা হয়

পার্বত্য শান্তিচুক্তির

কয়েকটি সংবিধান

বিরোধী এবং রাষ্ট্রের

নিরাপত্তা ও

অখন্ডতা বিরোধী দিক

নিম্নরুপঃ

(১) এ

চুক্তিতে বাংলাদেশের

পার্বত্য

চট্টগ্রামকে ‘উপজাতীয়

এলাকা’

হিসেবে ঘোষনা দেয়া হয়েছে;

অর্থাৎ, এর

মাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী বিদেশী এজেন্টদের

দাবীকৃত তথাকথিত

‘জুম্মল্যান্ড’

প্রতিষ্ঠাকে এগিয়ে দেয়া হয়েছে,

সাথে সাথে পার্বত্য

চট্টগ্রামে বসবাসরত প্রায়

৫২% বাংগালী জনসমষ্টির

অস্তিত্বকে অস্বীকার

করা হয়েছে।

(২) ৩টি জেলা পরিষদের

৩টি চেয়ারম্যান পদ

এবং আঞ্চলিক পরিষদের

চেয়ারম্যান পদ-

এগুলো শুধুমাত্র উপজাতিদের

জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে,

বাঙ্গালীদেরকে এ

পদলোতে নির্বাচনের

অযোগ্য

ঘোষনা করে মূলতঃ পার্বত্য

চট্টগ্রামে উপজাতীয় শাসন

প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং বাঙ্গালীদের

মর্যাদা উপজাতিদের

‘প্রজার’

পর্যায়ে নামিয়ে আনা হয়েছে।

(৩) পার্বত্য চট্টগ্রামের

স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃ্তি পাবার

জন্য

বাঙ্গালীদেরকে উপজাতীয়

হেডম্যান, সার্কেল চীফ ও

রিজিয়ন কাউন্সিলের সনদ

প্রাপ্তির উপর

মুখাপেক্ষী করা হয়েছে।

উপজাতিদের কাছ

থেকে এসব সনদপত্র

না পেলে কোন

বাঙ্গালী পার্বত্য

চট্টগ্রামের

স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে থাকতে পারবেনা বিধায়

উচ্ছেদ হতে বাধ্য হবে।

অর্থাত, পার্বত্য

চট্টগ্রামকে বাঙ্গালী-শুন্য

করার জন্যই এমন ষড়যন্ত্রমূলক

বিধান করা হয়েছে।

(৪) বাংলাদেশের কোন

নাগরিক উপজাতীয় রিজিয়ন

কাউন্সিলের অনুমতি ব্যতিত

পার্বত্য

চট্টগ্রামে জমি কিনতে,

জমি বন্দোবস্তি নিতে বা বসতি স্থাপন

করতে পারবেনা। অথচ

বাংলাদেশের সংবিধান

নাগরিকদেরকে দেশের

যে কোন স্থানে ভূমি ক্রয় ও

বন্দোবস্তি নিয়ে বসবাস

করার অধিকার দিয়েছে।

এমনকি, বাংলাদেশের

সরকারও উপজাতীয় রিজিয়ন

কাউন্সিলের সম্মতি ব্যতীত

পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন

ভূমি অধিগ্রহন

করতে পারবেনা, অর্থাৎ,

সরকারের সার্বভৌম

অধিকারও

চুক্তিতে অস্বীকার

করা হয়েছে।

(৫) মাত্র

৫টি নিরাপত্তা ক্যাম্প

ছাড়া বাকী সকল

নিরাপত্তা ক্যাম্প

তুলে আনার শর্তে সরকার

চুক্তি করেছে।

নিরাপত্তা ক্যাম্প স্থাপন

করা রাষ্ট্রের সার্বভৌম

ক্ষমতার ব্যাপার, কোন সশস্র

গ্রুপ বা দলের সাথে সরকার

কী করে এ মর্মে চুক্তিবদ্ধ

হতে পারে ? বস্তুতঃ পার্বত্য

চট্টগ্রামকে নিরাপত্তা-শুন্য

করে পুরো এলাকাটিকে জেএসএস-

এর সশস্র ক্যাডারদের

নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয়ার

উদ্দেশ্যেই এ

শর্তটি লাগানো হয়েছে এবং সরকারও

তা মেনে নিয়েছে।

দেশের এক-দশমাংশ

কৌশলগত এলাকা সশস্র

সন্ত্রাসীদের

হাতে ছেড়ে দিয়ে এবং বাঙ্গালী ও

উপজাতি সহ প্রায় ১৪ লক্ষ

পার্বত্যবাসীকে জেএসএস-

এর

হাতে জিম্মী হতে দিয়ে নিরাপত্তা ক্যাম্প

তুলে নিয়ে আসার পরিণাম

যে কত ভয়াবহ হতে পারে-

তা নিরাপত্তা বোধ সম্পন্ন

পাঠক বুঝতেই পারছেন।

পার্বত্য

চট্টগ্রামে উপজাতীয় শাসন

ও বাঙ্গালীদের

প্রতিনিধিত্বহীনতা

চুক্তির ফলে ৩ পার্বত্য

জেলায় ৩ জন জেলা পরিষদ

চেয়ারম্যানই উপজাতি, ৯০

জন জেলা পরিষদ সদস্যের

মধ্যে মাত্র ৩০ জন (অর্থাৎ এক-

তৃ্তীয়াংশ) বাঙ্গালী সদস্য

(যারা মাইনরিটি), রিজিয়ন

কাউন্সিল চেয়ারম্যান পদ

যেটি সন্তু লারমার দখলে, ৩

জন সার্কেল চীফ উপজাতি,

প্রায় ৯৯ ভাগ ইউনিয়ন/

মৌজায় হেডম্যান

উপজাতি, পার্বত্য মন্ত্রী –

উপজাতি, পার্বত্য

মন্ত্রনালয়ের সচীব-

উপজাতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম

উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান

উপজাতি- ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ন

সকল পদেই

উপজাতিদেরকে বসানো হয়েছে।

বর্তমানে ৩ জেলাতে ৩ জন

সাংসদও উপজাতি। অর্থাৎ,

পার্বত্য

চট্টগ্রামে জনসংখ্যার প্রায়

৫২ শতাংশ হলেও ৭ লক্ষ

পার্বত্য

বাঙ্গালী প্রতিনিধিত্বহীন।

পার্বত্য

চট্টগ্রামে শান্তিবাহিনীর

উচ্ছেদের শিকার পার্বত্য

বাঙ্গালী সম্প্রদায়

একদিকে এবং অন্যদিকে আক্রমনের

ভূমিকায় সশস্র

শান্তিবাহিনী; সুতরাং,

প্রকৃত

শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে এ

উভয় গ্রুপেরই প্রতিনিধিত্ব

নিশ্চিত করে শান্তির

ফর্মূলা রচনা করা সমিচীন

ছিল। কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরের

সময় পার্বত্য

বাঙ্গালীদেরকে কোন

প্রকার প্রতিনিধিত্বের

সুযোগ না দিয়ে দেশের

অখন্ডতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের

অংশ

হিসেবে একপক্ষীয়ভাবে জেএসএস-

এর হাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম

তুলে দেয়া হয়েছে ।

সন্তু

লারমা পার্বত্যবাসীদের

বৈধ জনপ্রতিনিধি নয়

জেএসএস সভাপতি সন্তু

লারমা পার্বত্য

চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত কোন

প্রকার নির্বাচনে অংশগ্রহন

করে তার জনপ্রিয়তা যাচাই

করেনি, অর্থাৎ, সে কখনই

নির্বাচিত

জনপ্রতিনিধি নয়।

পার্বত্যবাসী ৭ লক্ষ

বাংগালীকে উৎখাৎ করাই

তার লক্ষ্য বিধায় উক্ত ৭ লক্ষ

বাংগালীর প্রতিনিধিও

সে নয়। অন্যদিকে পার্বত্য

চট্টগ্রামের

১৩টি উপজাতি গোষ্ঠির

মধ্যে শুধুমাত্র

চাকমা সম্প্রদায়ভূক্ত হবার

কারনে অন্য

১২টি উপজাতি গোষ্ঠিরও

প্রতিনিধি সে নয়। অধিকন্তু,

চাকমাদের

মধ্যে ইউপিডিএফ, জেএসএস

(এম এন লারমা) ইত্যাদি বেশ

কিছু দল সন্তু লারমার নেতৃত্ব

মানেনা বিধায় সন্তু

লারমা চাকমা সম্প্রদায়েরও

একক প্রতিনিধি নয়।

মূলতঃ ভারতের প্রশিক্ষিত

শান্তি বাহিনীর

নেতা হওয়া ছাড়া কোন

যৌক্তিক বিচারেই সন্তু

লারমা গোটা পার্বত্য

চট্টগ্রামের ১২ লক্ষ

অধিবাসীর বৈধ

প্রতিনিধি নয়। তাহলে প্রশ্ন

হলো- কোন্ যৌক্তিক

বিচারে সন্তু

লারমাকে পার্বত্য

চট্টগ্রামের

প্রতিনিধি হিসেবে তার

সাথে চুক্তি স্বাক্ষর

করা হয়েছে এবং গোটা পার্বত্য

চট্টগ্রামের

শাসনকর্তা হিসেবে তাকে ক্ষমতায়

বসানো হয়েছে ?

লক্ষনীয় যে, সমতল ভুমির

অধিকাংশ উপজেলাতেই ৭

থেকে ৮ লক্ষ লোক বসবাস

করে। সে হিসেবে ৩/৪ লক্ষ

ভোটারের

ভোটে নির্বাচিত একজন

উপজেলা চেয়ারম্যানের

সমকক্ষ ক্ষমতা পাওয়ার

যোগ্যও সন্তু লারমা নয়। তাই

কোন বিচারেই

তাকে ‘বিরাট নেতা’

ভাবার কোন

যৌক্তিকতা নাই

এবং চুক্তিতে ‘পার্বত্য

চট্টগ্রামের প্রতিনিধি’

হিসেবে উল্লেখিত তার

পরিচয়ও মিথ্যা।

শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের

অর্থ কি ?

পার্বত্য

শান্তি চুক্তিতে যেসব

ধারা-

উপধারা সন্নিবেশিত

করা হয়েছে তার পূর্ণাংগ

বাস্তবায়ন সম্পন্ন

হলে পার্বত্য

চট্টগ্রামে যেতে আমাদের

জন্য পাসপোর্ট ও ভিসার

দরকার হবে। পরিতাপের

বিষয় হলো এই যে,

বাংলাদেশ

সেনাবাহিনীর যে ২৪

পদাতিক ডিভিশন চট্টগ্রাম

অঞ্চলে মোতায়েন আছে,

তাদেরকে প্রধান মিশন

দেয়া হয়েছে- ‘পার্বত্য

চুক্তি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা’।

আর দুঃখনীয় ব্যাপার হলো-

বিএনপি পার্বত্য

চুক্তি বাতিলের

দাবীতে লং মার্চ করলেও

২০০১ সালে ক্ষমতায়

গিয়ে চুক্তির অনেক ধারাই

(যেগুলো আওয়ামী সরকার

বাস্তবায়ন করে যায়নি)

বাস্তবায়ন করে,

পার্বত্যবাসীদের কাছ

থেকে কর আদায়ের অধিকার

সহ বহু বিষয় হস্তান্তর করা হয়

রিজিয়নাল কাউন্সিলের

হাতে।

চুক্তির পূর্ণাংগ বাস্তবায়ন

সম্পন্ন হবে যখনঃ

(১) পার্বত্য চট্টগ্রাম

থেকে মাত্র

৫টি ছাড়া অন্যান্য সকল

নিরাপত্তা ক্যাম্প

প্রত্যাহার করা হলে অর্থাৎ-

পার্বত্য চট্টগ্রামের

নিরাপত্তা ছেড়ে দিলে;

(২) পার্বত্যবাসী ৭ লক্ষ

বাঙ্গালীকে সন্তু লারমার

দাবী মোতাবেক পার্বত্য

চট্টগ্রাম থেকে উৎখাত

করলে;

(৩) পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পদ

ও কর্তৃত্ব উপজাতিদের

হাতে ন্যাস্ত করলে (যার

৯৮% ইতিমধ্যে সম্পন্ন);

(৪) পার্বত্য

চট্টগ্রামে বাঙ্গালীদেরকে যেসব

খাস জমি লীজ

দেয়া হয়েছে-

সেগুলো প্রস্তাবিত

ভূমি জরীপ কমিটির সুপারিশ

অনুযায়ী উপজাতিদের

দখলে ছেড়ে দিয়ে ঐসব

বাঙ্গালী নাগরিকদেরকে উচ্ছেদ

করলে;

(৫) পার্বত্য চট্টগ্রাম

থেকে চুক্তি অনুযায়ী সরকারের

সকল সার্বভৌম ক্ষমতা লোপ

করে ভারতীয় অনুচর সশস্র

সন্ত্রাসী বাহিনীর লিডার

ও বাঙ্গালী বিদ্বেষী সন্তু

লারমার হাতে পার্বত্য

চট্টগ্রামের সকল

ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে ঐ

এলাকাকে চুক্তি মোতাবেক

বাস্তবেই একটি ‘উপজাতীয়

এলাকায়’ পরিণত করলে।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর

চুক্তি স্বাক্ষরের পর

তৎকালীন আওয়ামীলীগ

সরকার প্রায় সাড়ে তিন বছর

ক্ষমতায় থেকে বিদায়

নেয়ার সময় ঘোষণা করেছিল

যে, তারা চুক্তির ৯৮

শতাংশই বাস্তবায়ন

করেছে।

হাইকোর্টের রায়- পার্বত্য

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও

আঞ্চলিক পরিষদ আইন

বেআইনি ও অবৈধ

পৃথক দু’টি মামলার রুলের

চূড়ান্ত শুনানি গ্রহণ

করে বিচারপতি সৈয়দ

রেফাত আহমেদ ও

বিচারপতি মইনুল ইসলাম

চৌধুরীকে নিয়ে গঠিত

হাইকোর্টের ডিভিশন

বেঞ্চ ২০১০ সালের ১২ ও ১৩

এপ্রিল দুইদিনব্যাপী এক

ঐতিহাসিক রায় প্রদান

করেন। রিট আবেদন নম্বর

২৬৬৯/২০০০ইং এবং ৬৪৫১/২০০৭

ইং এর

প্রেক্ষিতে দেয়া হাইকোর্টের

রায়ে হাইকোর্ট দ্ব্যর্থহীন

ভাষায় পার্বত্য চট্টগ্রাম

আঞ্চলিক পরিষদ ও আঞ্চলিক

পরিষদ আইনকে বেআইনি ও

অবৈধ ঘোষণা করেছে।

চুক্তিটি পরবর্তীকালে ৪টি আইনে পরিবর্তিত

হয়েছে বিধায়

শান্তিচুক্তি স্বাভাবিক

কার্যকারিতা হারিয়েছে।

কারণ শান্তি চুক্তির

শর্তগুলো উক্ত ৪টি আইনের

মাধ্যমে কার্যকর হয়েছে।

ফলে আদালত শান্তিচুক্তির

পরিবর্তে চুক্তির শর্ত

মোতাবেক প্রণীত

আইনগুলো সম্পর্কে মতামত

ব্যক্ত করে রায় প্রদান করেন।

আঞ্চলিক পরিষদ আইন

সম্পর্কে আদালতের বক্তব্য

হচ্ছে, আঞ্চলিক পরিষদ

আইনের ধারা ৪১-এর

মাধ্যমে আইন প্রণেতাদের

ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়ার

উদ্দেশ্যকেই প্রকাশ করে।

রাষ্ট্রের একক সত্তাকে খর্ব

করার উদ্দেশ্যেই আঞ্চলিক

পরিষদ আইনের ধারা ৪০

এবং ৪১ ইচ্ছাকৃতভাবেই

অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়াও আঞ্চলিক পরিষদ

আইন সংবিধানের ১ নম্বর

অনুচ্ছেদে রক্ষিত রাষ্ট্রের

একক চরিত্র

হিসেবে সংবিধানের

মৌলিক কাঠামোকে বিনষ্ট

ও ধ্বংস করেছে ।

বাদি এবং বিবাদী পক্ষের

যুক্তিতর্ক ও সংবিধানের ৮ম

সংশোধনী মামলার মতামত

ও পর্যবেক্ষণ থেকে আদালত

সিদ্ধান্তে আসে যে,

আঞ্চলিক পরিষদ

আইনটি রাষ্ট্রের একক চরিত্র

ধ্বংস করেছে বিধায়

এটি অসাংবিধানিক। এ

ছাড়াও সংবিধানের ৫৯

অনুচ্ছেদ মোতাবেক এই

আঞ্চলিক পরিষদ কোন

স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নয়।

এর কারণ, পরিষদ

আইনে আঞ্চলিক

পরিষদকে প্রশাসনিক

কোনো ইউনিট

হিসাবে আখ্যা দেয়া হয়নি।

হাইকোর্টের

রায়ে আঞ্চলিক পরিষদ আইন

এবং আঞ্চলিক

পরিষদকে অবৈধ ও

বেআইনি ঘোষণার

পাশাপাশি পার্বত্য

তিনটি জেলা পরিষদ

আইনের বেশ কিছু

ধারাকে বেআইনি ও অবৈধ

ঘোষণা করা হয়েছে।

আদালত জেলা পরিষদ

আইনের ৬ নম্বর

ধারা বিবেচনা করে উল্লেখ

করেন, ওই ধারায় একজন

ব্যক্তি উপজাতীয় কি না,

তা গ্রামের হেডম্যান কর্তৃক

প্রদত্ত সনদের

দ্বারা নির্ধারিত

হবে বলে সার্কেল

চিফকে ক্ষমতা অর্পণ

করা হয়েছে। বস্তুত এই বিধান

এমন কোনো বস্তুনিষ্ঠ মানদণ্ড

নিশ্চিত করেনি যার

দ্বারা ওই সনদ প্রদান

করা হবে কিনা,

তা নিশ্চিত করা যায়। তাই

এটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ

২৭, ২৮(১), ২৯(১) এবং ৩১-এর

বিধানগুলোর লঙ্ঘন।

সংবিধানের একই

বিধানগুলো দ্বারা ১৯৮৯

সালের আইনের ১৭ নম্বর

ধারা (যা ১৯৯৮ সালের

আইনের ১১ নম্বর ধারার

সংশোধিত)- যার বিধান

অনুযায়ী ‘স্থানীয় সরকার

পরিষদ নির্বাচনে ভোট

প্রদান করতে হলে একজন

ব্যক্তিকে অবশ্যই

পাহাড়ি অঞ্চলে জমির

অধিকারী এবং ওই এলাকায়

স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে’

কে বাতিল করে। আদালত

মনে করেন যে, ওই

ধারা বাস্তবিকভাবে একজন

অ-উপজাতীয়

ব্যক্তিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম

অঞ্চলে যেকোনো নির্বাচনে ভোটাধিকার

প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত

করছে যদিও বাংলাদেশ

সংবিধানে সেই

অধিকারগুলো রক্ষিত আছে।

আদালত আরো উল্লেখ করেন

যে, ১৯৮৯ সালের আইনের

ধারা ৩২(২) এবং ৬২(১)

(যা ১৯৯৮ সালের আইনের

সংশোধিত) এর

দ্বারা পার্বত্য

জেলা পরিষদ এবং পুলিশ

বাহিনীতে নিয়োগের

ক্ষেত্রে উপজাতীয়দের

অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।

এই নিয়োগের

ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার

নীতির বিধান

পূর্ববর্তী আনুপাতিক

প্রতিনিধিত্বমূলক নিয়োগ

নীতির

পরিবর্তে আনা হয়েছে।

কোনো ব্যাক্তি কিভাবে এবং কিসের

ওপর ভিত্তি করে অন্য

ব্যাক্তির অধিরারকে লঙ্ঘন

করে এবং তাকে বাদ

দিয়ে অগ্রাধিকারের

ভিত্তিতে নিয়োগের

সুবিধা পাবে, এই

আইনে সে বিষয়ে কিছুই

উল্লেখ নেই। তাই আদালত

মনে করেন যে, এই

বিধানগুলো সংবিধানের

অনুচ্ছেদ ২৭, ২৮ (১), ২৯ (১)

এবং (২) এর পরিপন্থী। এই

পরিপ্রেক্ষিতে, বস্তুনিষ্ঠ

মানদন্ডের

অনুপস্থিতিতে এবং বর্ণ

বৈষম্যের ওপর

ভিত্তি করে অগ্রাধিকার

নীতি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায়

তা অসাংবিধানিক।

আঞ্চলিক পরিষদ আইন ও

আঞ্চলিক

পরিষদকে বেআইনি ও অবৈধ

এবং পার্বত্য জেলা পরিষদ

আইন সমুহের বিভিন্ন

বিতর্কিত ধারা বাতিল

করে হাইকোর্টের রায় পেশ

করার দিনই আদালত

প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত

এটর্নি জেনারেল

এডভোকেট মুরাদ

রেজা জানিয়েছিলেন

যে, রায় ঘোষণার পর এর

বিরুদ্ধে আপিল

না করা পর্যন্ত আঞ্চলিক

পরিষদের কোন অস্তিত্ব

নেই। আর এ কারণেই সরকার

দ্রুত সুপ্রীম কোর্টে আপিল

করে আঞ্চলিক পরিষদ

এবং সন্তু লারমার পদ আপাতত

রক্ষা করেছে।

আপীল বিভাগের সম্ভাব্য

রায় অনুমান করে সরকার

চাচ্ছে প্রয়োজনে চুক্তিকে সাংবিধানিক

সুরক্ষা দিয়ে হলেও

(আদালতের ভাষায়

রাষ্ট্রের একক চরিত্র

ধ্বংসকারী) আঞ্চলিক পরিষদ

আইন এবং আঞ্চলিক

পরিষদকে রক্ষা করতে। অপর

দিকে সন্তু

লারমা চুক্তি পূর্ণাংগভাবে বাস্তবায়নের

জন্য বারবার

সরকারকে তাগিদ দিচ্ছে।

তাদের সাথে যুক্ত

হয়েছে বামদলীয় তথাকথিত

সুশীল সমাজ এবং ইউরোপীয়

ইউনিয়ন, ইউএনডিপিসহ বেশ

কিছু দেশী-

বিদেশী এনজিও।

(রেফারেন্স- ইন্টারনেট

থেকে সংগৃহীত সংবাদ)

অবিমৃষ্যকারী চুক্তিকারীদের

হাতে দেশের সংবিধানও

এতটাই অবহেলিত

হয়েছে যে, চুক্তির একাধিক

জায়গায়

সংবিধানকে উদ্দেশ্য

করে লিখা হয়েছে –‘অন্য

কোথাও যাহাই

লেখা থাকুক না কেন-

চুক্তিতে বর্ণিত ধারাই বলবৎ

হবে’। সুতরাং, হাইকোর্টের

ঐতিহাসিক রায়ের

প্রেক্ষিতেই আমাদেরকে এ

রাষ্ট্রঘাতী চুক্তি ও

আঞ্চলিক পরিষদ

টিকিয়ে রাখার

সরকারী অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত

প্রতিহত করতে হবে।

রেসিষ্ট সন্তু লারমার

বাঙ্গালী বিদ্বেষী প্রপাগান্ডা

জেএসএস

এবং পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ

সহ জেএসএস সমর্থক অনেক

দেশী-

বিদেশী বুদ্ধিজীবি পার্বত্য

বাঙ্গালীদেরকে সেটেলার

বা বহিরাগত

বলে আক্ষায়িত করে থাকে।

এটি তাদের একটি কৌশলগত

প্রচারণা। তাদের ধারনা-

এমন প্রচারনার

মাধ্যমে তারা পার্বত্য

চট্টগ্রামকে উপজাতীয়

এলাকা বা জুম্মল্যান্ড

হিসেবে পরিচিত

করতে সক্ষম

হবে এবং আরাকান ও ভারত

থেকে আগত

চাকমাদেরকে পার্বত্য

চট্টগ্রামের

স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত

করতে পারবে।

উপরোক্ত

লক্ষ্যে তারা উপজাতিদেরকে ‘আদিবাসী’

হিসেবে প্রচার

করে থাকে। কিন্তু

বাংলাদেশে একমাত্র

বাংলাভাষী মানুষরাই

যে আদিবাসী এবং চাকমা বা কোন

উপজাতিই যে পার্বত্য

চট্টগ্রামে আদিবাসী নয়-

সেটি প্রখ্যাত লেখক ও

গভেষক এবনে গোলাম

সামাদ সহ বিভিন্ন গভেষকগণ

স্পষ্ট করে দেখিয়েছেন।

(রেফারেন্স-

বাংলাদেশে বাংলাভাষী মানুষই

আদিবাসী, এবনে গোলাম

সামাদ, http://www.sonarbanglad

esh.com/article.php?ID=5920 )

মুলতঃ পার্বত্য

চট্টগ্রামে চাকমারাই

ব্রিটিশ আমলে ভারতের

চম্পক

নগরী এবং মায়ানমারের

আরাকান থেকে বহিষ্কৃত

হয়ে এ

অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন

করেছিল।

চুক্তি-পরবর্তী পার্বত্য

পরিস্থিতি

১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর

আওয়ামী সরকার গঠিত

পার্বত্য বিষয়ক জাতীয়

কমিটির পক্ষে আবুল হাসনাত

আব্দুল্লাহ এবং পার্বত্য

জনগনের

পক্ষে জনসংহতি সমিতির

চেয়ারম্যান সন্তু

লারমা পার্বত্য

চুক্তি স্বাক্ষর করে। আগেই

বর্ণনা করেছি যে, সন্তু

লারমা পার্বত্য জনগনের

প্রতিনিধি সেজে তাদের

পক্ষে চুক্তিতে যে স্বাক্ষর

করেছেন- তার সে পরিচয়

ভিত্তিহীন।

চুক্তিতে সন্তু বাহিনী কর্তৃক

সংঘটিত গণহত্যা, ধর্ষন, অপহরন,

বসত-ভিটায় অগ্নিসংযোগ,

পুড়িয়ে ও কুপিয়ে মানুষ

হত্যা, দেশদ্রোহিতা –

ইত্যাদি সকল

মানবতাবিরোধী অপরাধের

জন্য সাধারন

ক্ষমা ঘোষনা করা হয়। এই

সাধারন

ক্ষমাকে আজীবনের জন্য

প্রদত্ত সাধারন

ক্ষমা হিসেবে সন্তু

লারমা ব্যবহার করছে। চুক্তির

পর এযাবত জেএসএস-এর

অস্ত্রধারীদের হাতে ৭০০-

এর অধিক মানুষ হত্যার শিকার

হয়েছে, অপহরনের শিকার

হয়েছে ১৩০০ জনেরও

বেশী পার্বত্য নাগরিক।

প্রতি সপ্তাহেই

সংবাদপত্রে পার্বত্য

চট্টগ্রামে সশস্ত্র তৎপরতার

খবর দেখা যায়। উপজাতি ও

পার্বত্য বাংগালীদের

মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সমান

অধিকারের স্বপক্ষে থাকার

কারনে এবং জেএসএস-র

অব্যহত সন্ত্রাসের

বিরোধিতা করায় ২০০৬

সালের

পহেলা ডিসেম্বরে রাংগামাটির

কুতুকছড়িতে কিনা মোহন

চাকমাকে নির্মম

ভাবে হত্যা করা হয়।

আধিপত্য বিস্তারের

লড়াইতে প্রায় প্রতিদিনই

গোলাগুলিতে মারা যায়

জেএসএস এবং ইউপিডিএফ-

এর সদস্য।

বামে থেকেঃ নিহত

নোয়াব আলী, আইয়ুব আলী,

কিনামোহন

চাকমা এবং ইউপিডিএফ

সদস্য (রাঙ্গামাটির শুভলং)।

চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন

না হলে আবারো সশস্র

সংগ্রাম শুরুর প্রকাশ্য

হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে সন্তু

লারমা। এভাবে, সন্তু

লারমা নিজেই চুক্তি ভংগ

করে চলেছে।

নিরাপত্তা বাহিনী যে সব

ক্যাম্প প্রত্যাহার করেছে-

সে সব এখন নিয়ন্ত্রন

করছে জেএসএস

এবং ইউপিডিএফ-এর

অস্ত্রধারী বিভিন্ন গ্রুপ। দুর্গম

পাহাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক

সশস্ত্র ক্যাম্প।

গহীন পাহাড়ে চলছে অস্ত্র

প্রশিক্ষন

পার্বত্য চট্টগ্রামে আগের মতই

চলছে অস্ত্র

দেখিয়ে চাঁদাবাজি;

প্রত্যেক ব্যবসায়ী,

ঠিকাদার, গাড়ির চালক,

দোকানদার এ চাঁদাবাজির

শিকার। অস্ত্রের

মুখে অপহৃতদের অধিকাংশই

জীবিত ফিরে আসেনা।

জেএসএস, ইউপিডিএফ

এবং পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ

প্রায়শঃই পার্বত্য

বাঙ্গালীদের উৎখাত করার

দাবী তোলে।

জেএসএস-এর বৈদেশিক

শাখাগুলো তৎপর

বাংলাদেশ

বিরোধী প্রচারনায়। সন্তু

গোষ্ঠীর একই দাবী- পার্বত্য

চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন

অর্থাৎ- পার্বত্য

বাঙ্গালীদের অপসারন

এবং নিরাপত্তা ক্যাম্পসমূহ

প্রত্যাহার। ভারতের

মাটিতে বসে প্রায়ই

অনুষ্ঠিত হয় জেএসএস-এর

বাংলাদেশ

বিরোধী সেমিনার।

সম্প্রতি জেএসএস

আমেরিকায় জাতিসংঘ সদর

দপ্তরের সামনে ব্যানার

নিয়ে দাবী তুলেছে-

পার্বত্য চট্টগ্রাম

থেকে সেনাবাহিনী তুলে না আনলে বাংলাদেশ

সেনাবাহিনীকে যেন

জাতিসংঘের

শান্তি মিশনে না নেয়া হয়।

খাগড়াছড়ির দিঘীনালা সহ

বিভিন্ন জাগায়

সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের

উস্কানী, অগ্নি সংযোগ,

হত্যা, অপহরন; এমনকি সশস্র

হামলায় একাধিক

সেনা অফিসার ও সৈনিক

নিহত হয়েছে।

সন্তু লারমার নূতন আবদার-

পার্বত্য ৩ জেলায়

৩টি সংসদীয় পদও

উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত

করে দিতে হবে। আর

উপজাতিদেরকে ‘আদিবাসী’

ঘোষনা দেয়ার

দাবীতে তারা কক্সবাজার

ও ঢাকাসহ পার্বত্য

চট্টগ্রামে প্রায়ই বিভিন্ন

অনুষ্ঠান আয়োজন

করে থাকে। আর এসবে হাত

মেলায় - চিহ্নিত কিছু

সংবাদপত্রের সম্পাদক,

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক

এবং মানবাধিকার

কর্মী নামধারী কিছু

বাংলাদেশ

বিরোধী বিদেশী এজেন্ট।

- এ হলো শান্তিচুক্তির

শান্তির স্বরূপ।

আন্তর্জাতিক

সিএইচটি কমিশনের

বাংলাদেশ

বিরোধী তৎপরতা

ব্রিটেনের লর্ড

এভেবুরী নেতৃত্বে বাংলাদেশের

সুলতানা কামাল,

ব্যারিষ্টার সারা কামাল

ইত্যাদি ব্যক্তিগন স্বঘোষিত

‘আন্তর্জাতিক

সিএইচটি কমিশন’ নাম

দিয়ে বাংলাদেশ

সরকারের মাথার উপর

ছড়ি ঘোরানোর

চেষ্টা করছে। পার্বত্য

চুক্তি বাস্তবায়নই যদি এ

কমিশনের উদ্দেশ্য

হয়ে থাকে তাহলে পক্ষপাতদুষ্ট

এ কমিশনের কোন

গ্রহনযোগ্যতা স্বীকৃত হবার

কথা নয়। এ কমিশন কর্তৃক

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ

বিষয়ে হস্তক্ষেপের দৃষ্টান্ত

এতটা প্রকট

এবং মানবাধিকার বিহীন

যে- গত বছর লর্ড

এভেবুরী বাংলাদেশে এসে সরকারকে এ-

ই বলে অছিহত করেছে যে,

যদি পার্বত্য চট্টগ্রাম

থেকে বাংগালী বাসিন্দারা সরে না আসে তাহলে সরকার

যেন

তাদেরকে খয়রাতি খাদ্য

সাহায্য বন্ধ করে দেয়। গুচ্ছ

গ্রামগুলো থেকে পার্বত্য

বাঙ্গালীদেরকে উৎখাত

করা এবং হাইকোর্ট ঘোষিত

দেশবিরোধী পার্বত্য

চুক্তি বাস্তবায়ন করাই

হলো এ কমিশনের আসল

উদ্দেশ্য।

পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের

ফলাফল

চুক্তিতে উল্লেখিত

বিভিন্ন অসাংবিধানিক

এবং দেশ-

জাতি বিরোধী ধারার

ফলে-

(১) বাংলাদেশের দশ-

ভাগের একভাগ

এলাকা পার্বত্য চট্টগ্রামের

কর্তৃত্ব একটি বিদেশী অনুচর

সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী ও

বাঙ্গালী বিদ্বেষী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর

হাতে ন্যস্ত হয়েছে।

(২) পার্বত্য

চট্টগ্রামে বাংলাদেশের

সকল নাগরিকের ভূমি ক্রয় ও

বসতি স্থাপনের নাগরিক

অধিকার অস্বীকৃত

হয়েছে এবং সেখানে বসবাসরত

৭ লক্ষ পার্বত্য

বাংগালী উৎখাত হবার

হুমকির সম্মুক্ষীণ।

(৩) সশস্ত্র সন্ত্রাস-উপদ্রুত

এলাকা থেকে নিরাপত্তা বাহিনী তুলে আনার

বিষয় চুক্তিতে অন্তর্ভূক্ত

করে সরকার পার্বত্য

চট্টগ্রামের অখন্ডতা রক্ষা ও

জননিরাপত্তা হুমকির

সম্মুক্ষীন

করেছে এবং সরকারের

সার্বভৌম অধিকার ক্ষুন্ন

হয়েছে।

(৪) চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য

চট্টগ্রামের সকল ক্ষমতা হস্তগত

করে সন্তু লারমা এখন পূনরায়

সশস্ত্র সংগ্রামের প্রকাশ্য

হুমকি অব্যহত রেখেছ;

পাশাপাশি হত্যা, অপহরন,

অস্ত্রের

মুখে চাঁদাবাজি আগের মতই

চলছে।

(৫) পার্বত্য চট্টগ্রাম

নিয়ে দেশী-

বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের

তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে,

উপজাতিদেরকে ব্যাপকভাবে ধর্মান্তরিত

করা হচ্ছে।

(৬) খোদ সরকার কর্তৃক

একটি ক্ষুদ্র সন্ত্রাসী গ্রুপের

হাতে দেশের এক-দশমাংশ

এলাকার কর্তৃত্ব

ছেড়ে দেয়ায়

নিরাপত্তা বাহিনীর

মনোবলে বিরূপ আঘাত

এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম

রক্ষায় দুই যুগ ধরে যারা জীবন

বিসর্জন ও অবিস্বরণীয় ত্যাগ

স্বীকার করেছে- তাদের

সকল ত্যাগ ও প্রচেষ্টা বৃথায়

পর্যবসিত হয়েছে।

(৭) প্রায় ৩৫০০০ পার্বত্য

বাঙ্গালী হত্যাকারীদেরকে সাধারন

ক্ষমা দিয়ে হত্যাকান্ডের

শিকার ঐসব হতভাগ্যদের

প্রতি সরকার চরম

অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছে।

স্বাধীন

বাংলাদেশে এতগূলো মানুষকে গুলি করে,

কুপিয়ে ও

পুড়িয়ে অমানবিকভাবে হত্যা করা হলেও

মানবতার

বিরুদ্ধে পরিচালিত এহেন

অপরাধ

অনৈতিকভাবে ক্ষমা করে দিয়ে সরকার

চরমভাবে মানবাধিকার

লংঘন করেছে।

(৮) পার্বত্য

বাঙ্গালীদেরকে নিজ

দেশেই নাগরিক অধিকার

বিহীন দ্বিতীয় শ্রেনীর

নাগরিকে পরিণত

করা হয়েছে।

(৯) সন্ত্রাসীদের প্রতি সমর্থন

প্রদান করেনি- এমন

উপজাতি সম্প্রদায়,

আত্মসমর্পণকারী সাবেক

শান্তিবাহিনী সদস্য

এবং শান্তিকামী পার্বত্য

নাগরিকরা এখন চরম

নিরাপত্তাহীনতায়

নিপতিত হয়েছে।

(১০) ভারতের

প্রতি আনুগত্যশীল

আওয়ামী লীগ সরকার

ভারতে প্রশিক্ষিত

শান্তিবাহিনীর

কাছে কৌশলগত দিক

থেকে দেশের

সবচেয়ে গুরুত্তপূর্ণ ও

ভালনারেবল ভূ-খন্ডটির

নিয়ন্ত্রন ছেড়ে দেয়ায়

তা পূনরুদ্ধার

করতে জাতিকে অনেক

ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।

(১১) সরকার পার্বত্য

চট্টগ্রামবাসীদেরকে একজন

অনির্বাচিত ও

ভুয়া জনপ্রতিনিধির

শাসনাধীনে ন্যাস্ত

করেছে। পার্বত্য আঞ্চলিক

পরিষদ আইনটি রাষ্ট্রের একক

চরিত্র ধ্বংস করেছে বিধায়

এটি অসাংবিধানিক হলেও

সরকার এ অসাংবিধানিক

ব্যবস্থাকেই বাস্তবায়ন

করে চলেছে,

এমনকি হাইকোর্টের রায়ের

বিরুদ্ধে রীট ঠুকে দিয়েছে।

(১২) দেশের সংবিধান ও

সার্বভৌমত্বের

প্রতি আস্থা রেখেই এ

চুক্তি করা হয়েছে মর্মে চুক্তির

ভূমিকায় প্রতারণামূলকভাব

ে উল্লেখ করা হলেও

বাস্তবে চুক্তির অধিকাংশ

ধারাতেই তা লংঘন

করা হয়েছে-

যা পরবর্তীতে হাইকোর্টের

রায়েই প্রমানিত।

পার্বত্য চট্টগ্রামে টেকসই

নিরাপত্তা ও

শান্তি স্থাপনে করনীয়

(১) পার্বত্য

চুক্তি অসাংবিধানিক

এবং দেশের অখন্ডতা ও

সার্বভৌমত্ব

বিরোধী বিধায়

হাইকোর্টের রায়

অনুসারে এ চুক্তি ও আঞ্চলিক

পরিষদ আইন বাতিল করা।

(২) পার্বত্য

চট্টগ্রামে উপজাতি এবং বাঙ্গালী নির্বিশেষে সকল

নাগরিকের সমান নাগরিক ও

মানবিক অধিকার নিশ্চিত

করা।

(৩) স্থানীয় সরকারের

বিভিন্ন পদগুলোতে উভয়

সম্প্রদায়ের সমসংখ্যক ও সম-

পদবীর প্রতিনিধিত্ব

নিশ্চিত করা।

(৪) পার্বত্য

চট্টগ্রামে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার

করে সীমান্তকে সুরক্ষিত

করা এবং বর্তমানে জেএসএস

ও ইউপিডিএফ-সহ অন্যান্য

যে-সব উপজাতীয় সশস্ত্র

সন্ত্রাসী গ্রুপ তৎপর রয়েছে –

তাদেরকে দমন করা ।

(৫) জেএসএস কর্তৃক সংঘটিত

সকল গণহত্যা, অপহরন ও

ঘরবাড়ী জ্বালিয়ে উচ্ছেদকরন

সহ মানবতার

বিরুদ্ধে পরিচালিত সকল

অপরাধের ক্ষেত্রে সুবিচার

নিশ্চিত করা।

(৬) ক্ষুদ্রায়তনের

বাংলাদেশ ১৬

কোটি মানুষের ঘনবসতিপূর্ণ

একটি দেশ হওয়ায় এ দেশের

এক-দশমাংশ পার্বত্য

চট্টগ্রামে দেশের মোট

জনসংখ্যার দশ ভাগের এক

ভাগকে বসতি গড়ার সুযোগ

অবাধ করে দেয়া।

(৭) সন্ত্রাসের

কারনে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্ত

সকল

গুচ্ছগ্রামবাসী বাঙ্গালী ও

উপজাতি নাগরিককে যথাযথভাবে পূনর্বাসন

করা ।

(৮) শিক্ষা,

চাকুরী ইত্যাদি ক্ষেত্রে উপজাতি কোটা বাতিলপূর্বক

পার্বত্য কোটা চালু

করে সকলের জন্য সমান সুযোগ-

সুবিধা নিশ্চিত করা।

বিভিন্ন ঊপজাতি সম্প্রদায়

ও বাঙ্গালীদের শিক্ষা ও

চাকুরীর হারে জনসংখ্যার

অনুপাতে সমতা আনয়ন করা।

(৯) সন্ত্রাসীদের

হাতে হত্যা, অপহরন ও

নির্যাতনের শিকার সকল

ক্ষতিগ্রস্থ বাঙ্গালী ও

উপজাতিকে যথাযথ

ভাবে ক্ষতিপূরন দান ও

পুনর্বাসিত করা ।

(১০) নিরাপত্তা বাহিনীর

(সেনা, বিডিআর/বিজিবি,

পুলিশ, আনসার, ভিডিপি)

যে-সব সদস্য

দেশরক্ষার্থে সন্ত্রাসীদের

হাতে হতাহত

হয়েছে এবং অপারেশন

এলাকায় দায়িত্ব পালন

করতে গিয়ে ম্যালেরিয়ায়

মৃত্যুবরন করেছে- তাদের

পরিবারকে ন্যুনতন ১০ লক্ষ

টাকা করে ক্ষতিপূরন দেয়া।

(১১) পার্বত্য

চট্টগ্রামে পার্শ্ববর্তী মায়ানমার

ও ভারত থেকে যে সব

বহিরাগত

উপজাতি অনুপ্রবেশ করেছে-

তাদেরকে সনাক্ত করে নিজ

দেশে ফেরত পাঠানো।

(১২) পার্বত্য

চট্টগ্রামে অসাংবিধানিক

চুক্তি বাস্তবায়নে এবং ষড়যন্ত্র

বাস্তবায়নে তৎপর দেশী-

বিদেশী সকল এনজিও

বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড

বন্ধ করা ।

(১৩) ব্রিটিশ আমলে প্রণীত

হিলট্রাক্টস ম্যানুয়েল-১৯০০

বর্তমান বাংলাদেশের

আর্থ-সামাজিক অবস্থার

বিবেচনায় অপ্রযোজ্য

বিধায় তা বাতিল করা ।

(১৪) স্থানীয় সরকারের কোন

পদেই অনির্বাচিত কোন

ব্যক্তিকে দায়িত্বে না রাখা।

(১৫) পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদ

বিষয়ে হাইকোর্টের রায়

বাস্তবায়ন করার পর প্রত্যেক

উপজাতি সম্প্রদায়ের

প্রতিনিধি, ৩ পার্বত্য

জেলার নির্বাচিত ৩

সাংসদ, ৩ উপজাতীয়

সার্কেল চীফ, ৩ জেলার

পার্বত্য বাঙ্গালীদের

প্রতিনিধি, ৩ জেলার

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের

প্রতিনিধি ইত্যাদি সকলের

অংশগ্রহন ও প্রতিনিধিত্বের

মাধ্যমে পার্বত্য

চট্টগ্রামে প্রয়োজনীয়

প্রশাসনিক সংস্কার আনয়ন

করে সকলের জন্য সম-নাগরিক

অধিকার ও মানবাধিকার

নিশ্চিত করা।

উপসংহার

ক্ষুদ্রায়তনের

বাংলাদেশে পৃথিবীর ৭ম

বৃহত্তম জনবসতি; তাই

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার এই

দেশে কোন যুক্তিতেই মাত্র

৫ লক্ষ উপজাতির জন্য দেশের

এক-দশমাংশ

এলাকা নির্দিষ্ট

করে ছেড়ে দেয়া যায়না।

দেশের প্রতি ইঞ্চি ভূমির

উপর প্রতিটি নাগরিকের

সংবিধান স্বীকৃত

সমানাধিকার নিশ্চিত

করতে হবে।

বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন

সরকারগুলোর উপর

বিদেশী প্রভাব,

বিরোধী দলের

দ্বায়িত্বহীনতা এবং সুশীল

সমাজ ও জনগনের মধ্যে এহেন

জাতীয় ইস্যুতে নিস্পৃহতার

সুযোগে জাতির অপূরনীয়

ক্ষতি হয়ে যাবার প্রকৃষ্ট

উদাহরন হলো - পার্বত্য

স্থানীয় সরকার পরিষদ গঠন ও

পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর। তাই

হাইকোর্ট প্রদত্ত রায়

বাস্তবায়ন করে সরকার

দেশের অখন্ডতা,

নিরাপত্তা এবং উপজাতি ও

বাঙ্গালী নির্বিশেষে পার্বত্য

সকল নাগরিকের সম নাগরিক ও

মানবাধিকার নিশ্চিত

করবে- এটাই প্রত্যাশা।

নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব

বিষয়ক

কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ

দেশের এক-দশমাংশ

এলাকায় বহিঃশক্তির

প্ররোচনায় সৃষ্ট সন্ত্রাস দমন ও

শান্তি প্রতিষ্ঠায়

প্রতিটি দেশপ্রেমিক

নাগরিকের এগিয়ে আসা-

এখন সময়ের দাবী।

https://m.facebook.com/profile.php?id=747988535213603&refid=52&__tn__=C

বিষয়: বিবিধ

১৭৩৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File