সর্বদলীয় সিন্ডিকেটের অনৈতিক কর্মকান্ড। উত্তপ্ত রাঙ্গামাটি।

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ খোরশেদ আলম ০৮ জুন, ২০১৪, ১১:৫৭:৩২ সকাল

রাঙামাটি।

রাঙামাটিতে সর্বদলীয়

সিন্ডিকেটের

বেপরোয়া টেন্ডারবাজি চলছে।

রাজনীতির মাঠে এরা একে অপরের

প্রতিপক্ষ হলেও টেন্ডারবাজি আর

ভাগ বাটোয়াতে ঐক্যবদ্ধ।

রাজনীতিকে হাতিয়ার

হিসেবে ব্যবহার করে সাম্প্রতিক

সময়ে সরকারী বিভিন্ন

প্রতিষ্ঠানে এক শ্রেনীর দুর্নীতিবাজ

কর্মকর্তা কর্মচারীদের হাত

করে টেন্ডারবাজি চালিয়ে যাচ্ছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের

পিছিয়ে পড়া মানুষের

আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৭৮

সনে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড

প্রতিষ্ঠা করা হয়। বোর্ড

দেশী বিদেশী বিভিন্ন উন্নয়ন

সংস্থার সহযোগিতায় উন্নয়ন কার্যক্রম

পরিচালনা করছে। পার্বত্য

শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পর উন্নয়নের

ব্যাপ্তি আরো বৃদ্ধি পায়। চুক্তির আগ

মুর্হত পর্যন্ত কখনো চট্টগ্রামের ২৪

পদাতিক ডিভিশনের

জিওসি কখনো বা বিভাগীয়

কমিশনার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব

পালন করেন। পার্বত্য শান্তি চুক্তির

যখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে তখন

সে সরকারের নির্বাচিত

জনপ্রতিনিধিকে চেয়ারম্যানের

দায়িত্ব দেয়া হয়। বর্তমান সরকার ২০০৯

সনে দায়িত্ব গ্রহনের পর বর্তমান

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক

প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরকে উন্নয়ন

বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়। বর্তমান

সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব

গ্রহনের আগে সর্বদলীয় সরকারের সময়

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের

সচিব নব বিক্রম কিশোর

ত্রিপুরাকে পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন

বোর্ডের দায়িত্ব দেয়া হয়।

এখনো তিনি সে দায়িত্ব পালন

করছেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডসহ

পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য গঠিত

উন্নয়ন সংস্থাগুলোতে দেখা যায়

প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন

কাজ হয়। বিগত ৬

বছরে দেখা গেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম

উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশল শাখা লোক

দেখানো একটি বা দুইটি টেন্ডার

নোটিশ ওপেন করেছে বাকি সব

কয়টি এক শ্রেণীর রাজনৈতিক দলের

নেতাদের মাঝে দুর্নীতির

মাধ্যমে গোপন টেন্ডারে ভাগ

বাটোয়ারা করে দিয়েছে। ওপেন

টেন্ডার হলে সাধারন

ঠিকাদাররা অংশগ্রহন করতে পারত

এবং সরকারেরও ব্যাপক রাজস্ব আয়

হতো।

দেখা গেছে, একটি চক্র কখনো দলীয়

প্রভাব, কখনো মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী,

এমপির নাম

ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকার

কাজ হাতিয়ে নিচ্ছে ।

সুবিধাবাদী এই চক্রটি পার্বত্য

চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড,

রাঙামাটি জেলা পরিষদ,

ফ্যাসিলিটিজ, গনপূর্ত

বিভাগ ,পানি উন্নয়ন বোর্ড,সড়ক ও জনপথ

বিভাগসহ সকল সংস্থায় দাফটের

সাথে টেন্ডার নিয়ন্ত্রন করে চললেও

প্রশাসন নিরব নির্বিকার।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে কাজের

ভাগাভাগি নিয়ে যুবলীগ

এবং ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ হয়

এতে ৫জন আহত হয়। আজ তুমি ক্ষমতায়,

কাল আমরা ও আসতে পারি এই

শ্লোগান নিয়ে মুলত সরকারী উন্নয়ন

সংস্থার কাজগুলো লুটপাটে ব্যস্ত

সম্মিলিত এই সিন্ডিকেট।

গত এপ্রিল মাসে পার্বত্য চট্টগ্রাম

উন্নয়ন বোর্ডে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন

বিশেষ সহায়তা কোড ৫০১০ এবং ৭০২০

এর ৭৪ গ্রুপের ৮ কোটি টাকার কাজ

ভাগ

বাটোয়ারা করে নিয়েছে আওয়ামীলীগ,

বিএনপি, পিসিজেএসএস

এবং ইউপিডিএফ। টেন্ডার নোটিশ

ঢাকার অখ্যাত পত্রিকায়

দেয়া হয়েছে। গত অর্থ বছরের

অনেকগুলো কাজ টেন্ডার

না দিয়ে সেগুলো চলতি অর্থ বছরের

বাস্তবায়নাধীন কাজের

সাথে গোপন টেন্ডার দেয়া হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৭৪ গ্রুপের

মধ্যে আওয়ামীলীগ ৫৫টি,

বিএনপি ১১টি,

জনসংহতি সমিতি ৬টি এবং ইউপিডিএফকে ২টি কাজ

দেয়া হয়েছে। এগুলো ভাগ

বাটোয়ারা করেন

জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন

সম্পাদক হাজী মুছা মাতব্বর, স্বপন

মহাজন ও লঞ্চ মালিক সমিতির মাইন

উদ্দিন সেলিম । এছাড়া বিএনপির

কাজগুলো জেলা বিএনপির সাধারন

সম্পাদক শাহ আলম ভাগ

বাটোয়ারা করেছেন।

যদিওবা তারা ভাগ বাটোয়ারার

কথা অস্বীকার করেছেন।

সাধারন নেতা কর্মীরা অভিযোগ

করেছেন, বড় বড় কাজগুলো সিনিয়র

নেতারা ভাগিয়ে নিয়েছেন,

এছাড়া লঞ্চ মালিক সমিতির

নেতা মাইন উদ্দিন সেলিম একাই

বিভিন্নজনের নামে ৬/৭টি কাজ

ভাগিয়ে নিয়েছেন। এসব কাজ প্রায়ই

দেড় কোটি টাকার মত।

বিষয়টি নিয়ে আওয়ামীলীগের

সাধারন সম্পাদক

হাজী মুছা মাতব্বরের

কাছে জানতে চাইলে তিনি ভাগা ভাগির

কথা অস্বীকার করে বলেছেন

কারা কি কাজ

ভাগা ভাগি করেছে আমি জানি না।

জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক শাহ

আলম ভাগ বাটোয়ারার বিষয়ে কিছু

জানেন না জানিয়ে বলেন

তিনি তার ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত আছেন।

এদিকে কাজ ভাগ

বাটোয়ারা নিয়ে বিএনপির

মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এক

যুবদল নেতা দলীয়

কার্যালয়ে জেলা সাধারন

সম্পাদককে কাজের

বিষয়ে নিয়ে নাজেহাল করেন।

জেলা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম

শাকিল জানান, তারাও শুনেছেন

বিএনপিকে ১১টি কাজ দেয়া হয়েছে,

কিন্তু জেলা বিএনপির সাধারন

সম্পাদক শাহ আলম কাজের বিষয়

অস্বীকার করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে তারা নির্বাহী প্রকৌশলীর

সাথে কয়েকবার কথা বলতে চাইলেও

তিনি অফিস না করায়

তারা এখনো কথা বলতে পারেননি।

তবে ঘটনাটি সত্য।

লঞ্চ মালিক সমিতির নেতা মাঈন

উদ্দিন সেলিম জানান, পার্বত্য

চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে তার

নামে কোন লাইসেন্স নেই তাই

তিনি কোনো কাজ পাননি।

তিনি আরো বলেন, একটি সিন্ডিকেট

সব সময় বড় বড়

কাজগুলো কৌশুলে ভাগিয়ে নেয়

তারাই উল্টো আমাদের দোষারোপ

করে।

এদিকে টেন্ডারবাজির

বিষয়ে জানতে পার্বত্য চট্টগ্রাম

উন্নয়ন বোর্ডে কয়েকবার

গিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী সত্যজিত

চৌধুরীকে তার কক্ষে পাওয়া যায়নি।

অন্য কক্ষে পাওয়া গেলেও

তাকে মাতাল অবস্থায়

দেখা গেছে এবং তিনি প্রতিবেদকের

সাথে খারাপ আচরন করেন।

কর্মকর্তা কর্মচারীরা অভিযোগ

করেছেন,

নির্বাহী প্রকৌশলী সত্যজিত

চৌধুরী এবং উপ

সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মিহির

কান্তি চাকমা প্রায়শ মদ খেয়ে অফিস

করেন এবং ঠিকাদার, সাধারন মানুষ

এবং অফিস ষ্টাফদের সাথে খারাপ

আচরন করেন। এর মধ্যে মিহির

কান্তি চাকমার আত্বীয় একজন

সেনা কর্মকর্তা হওয়ায় কেউ কিছু

বললে তাকে হুমকি দেন।

অফিসে মদ খাওয়ার

কারনে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বোর্ডের

ভাইস চেয়ারম্যান একবার শোকজ

করেছেন।

কাজ ভাগ বাটোয়ারার

বিষয়ে জানতে চাইলে মাতাল

অবস্থায় নির্বাহী প্রকৌশলী সত্যজিত

চৌধুরী বলেন

“কি লিখবি লিখগা আমার কিছু

হবে না, কত সাংবাদিক দেখলাম”।

বিষয়টি জানতে চাইলে পার্বত্য

চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস

চেয়ারম্যান (যুগ্ন সচিব) তরুন

কান্তি ঘোষ বলেন, ভাগ

বাটোয়ারা ব্যাপারে আমি কিছু

জানি না, তবে কেউ অনৈতিক কাজ

করলে এবং সেটি যদি প্রমানিত হয়

তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন

করা হবে।

তিনি নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসে মদ

খাওয়ার বিষয়ে শোকজ করার

বিষয়টি স্বীকার করেন।

এদিকে সাধারন ঠিকাদাররা ভাগ

বাটোয়ারার প্রকল্পগুলো বাতিল

করে ওপেন টেন্ডার দিয়ে সকলের

অংশগ্রহন নিশ্চিত করার

দাবী জানিয়েছেন।

by: chttoday এর সৌজন্যে

বিষয়: রাজনীতি

৭৩৪ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

232248
০৮ জুন ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮
হতভাগা লিখেছেন : এইটা কি কোন আধুনিক কবিতা লিখছেন ? এত্ত লম্বা কবিতা !

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File