নিম্নবর্ণের হিন্দুরা ইসলাম গ্রহণ করতে পারছে না যে কারনে....
লিখেছেন লিখেছেন ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৭:২২:৩৫ সন্ধ্যা
সনাতন ধর্মগ্রন্থে আছে- ভগবান নিজের মাথা থেকে সৃষ্টি করেছেন ব্রাক্ষণদেরকে, আর পা ঝাড়া দিয়ে সৃষ্টি করেছেন শূদ্রদেরকে! ভগবানের কথা শিরোধার্য্য। তাই ভারতের অনেক মন্দিরেই নিম্নবর্ণের হিন্দুদের প্রবেশাধিকার নেই এবং তাদেরকে ধর্মগ্রন্থগুলো স্পর্শ করতেও দেয়া হয় না। প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক, এত অপমান-লাঞ্ছনার পরও নিম্নবর্ণের হিন্দুরা কেন ইসলাম গ্রহণ করছে না? ইসলাম গ্রহণ করে তারা তো খুব সহজেই মুক্তি লাভ করতে পারে। ইসলামে তো বর্ণ কিংবা জাত বলে কিছু নেই, প্রত্যেক মুসলিমই ভাই-ভাই। যে মুহুর্তে কেউ ইসলাম গ্রহণ করবে সেই মুহুর্ত থেকেই সে মসজিদে ঢুকার প্রবেশাধিকার পাবে, অন্য মুসলিমদের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে নামাজ পড়তে পারবে। জীবনে কোনদিন বেদ কিংবা গীতা স্পর্শ করার সুযোগ যে পায়নি, ইসলাম গ্রহণ করার পর কুরআন পাঠ করতে তার কোন বাধা তো থাকবেই না, উল্টো অন্য মুসলিমরা তাকে উৎসাহিত করবে। কুরআন পাঠ করলে পুরস্কৃত করার গ্যারান্টি এসেছে স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকেও। এত মর্যাদা, এত সম্মান, এত মানবিকতা, এত গৌরব যে ধর্মে, কেন তারা সেই ধর্ম গ্রহণ করে মুক্তি লাভ করছে না? এর দু'টি কারন রয়েছে-
১। সমাজ ও ধর্ম থেকে ছোটবেলা থেকেই তাদেরকে এমন ধারনা দেয়া হয় যে, ব্রাক্ষণদের সেবা করার জন্যই তাদের জন্ম হয়েছে। ধর্মগ্রন্থগুলোও তাই বলছে। ব্রাক্ষণদের সন্তুষ্ট হলেই দেবতারা সন্তুষ্ট হন, আর ব্রাক্ষণ অসন্তুষ্ট হলে দেবতাদের অভিশাপ আসে। জীবনের শুরু থেকেই এমনভাবে তাদের মাইন্ড ওয়াশ করে দেয়া হয়, মানুষ হিসেবে যেসব মৌলিক অধিকার ও মর্যাদা পাওয়ার অধিকার তারা রাখে সেটাও একসময় তারা আর অনুধাবন করতে পারে না।
২। ধর্ম পরিবর্তন করলে বিভিন্ন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের রোষানলে পড়তে হবে। সহজভাবে বলতে গেলে, তাদেরকে বেঁচে থাকতে দেয়া হবে না, পিটিয়ে মেরে ফেলা হবে। সরকার তাদেরকে নিরাপত্তা তো দেবেই না উল্টো হামলাকারীদেরকে সর্বাত্মক সমর্থন দেবে। মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করায় কিছুদিন আগেও ভারতে একজন দলিত ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করে উচ্চবর্ণের হিন্দুরা। এই ঘটনার পর সরকারের উচ্চপদস্থ একজন ব্যক্তি বলেন- "রাস্তায় একটা কুকুর মারা গেলে সেটা দেখার দায়িত্ব সরকারের না"। এক কথায়, সনাতন ধর্মে একটা কুকুরের যে দাম আছে, নিম্নবর্ণের হিন্দুদের সেই দামটুকুও নেই। এই ধর্মে হনুমান-বানর-ইদুর ইত্যাদি নিকৃষ্ট প্রাণীকে পূজা করা হয়, সেজদা করা হয়, অথচ সৃষ্টির সেরা জীব হয়েও মানুষ পায় না তার প্রাপ্য সম্মান। নিম্নবর্ণের তকমা দিয়ে এক শ্রেণীর মানুষকে কুকুরের চেয়েও নিকৃষ্ট গণ্য করা হয়। এগুলো জেনে বুঝেও কেউ যদি স্বেচ্ছায়-সজ্ঞানে সনাতন ধর্ম পালন করে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় তার মধ্যে মানবতা বলতে কোন জিনিসই নেই।
বি.দ্র. সর্বপ্রথম আমার ফেসবুক আইডিতে প্রকাশিত, যার লিংক- এখানে
বিষয়: রাজনীতি
২১৩৯ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কারণ তখন আর উচ্চ বর্ণের হিন্দুদের কাব যাব খুব একটা কাজ করবে না ।
যেহেতু ভারত তার প্রতিবেশীদেরকে অশান্তি দিয়ে চলে তাই এ ব্যাপারে চীনকেই মুখ্য ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে ।
সকল ইতিহাস গবেষক এই বিষয়ে একমত যে উপমহাদেশে ইসলাম বিস্তৃত হওয়ার অন্যতম কারন হচ্ছে এই জাতপাত এর প্রথা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন