মানুষ নাস্তিক হয় যেসব কারনে... (পর্ব-১)
লিখেছেন লিখেছেন ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ ২১ নভেম্বর, ২০১৪, ০৮:১৫:১০ রাত
বিভিন্ন পরিবেশ-পরিস্থিতিই তাদেরকে নাস্তিকতার দিকে ঠেলে দেয়। সেরকম কিছু ঘটনা ও পরিস্থিতি নিয়েই আমার এই সিরিজ। আজ থাকছে প্রথম পর্ব-
নাস্তিক আরজ আলী মাতুব্বরের জীবনি থেকে একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক। আরজ আলীর নিজের ভাষায়- "আমার মা ছিলেন অতিশয় নামাজী-কালামী একজন ধার্মিক রমনী। তার নামাজ-রোজা বাদ পড়া তো দুরের কথা, কাজা হতেও দেখিনি কোনদিন। মাঘ মাসের দারুণ শীতের রাতেও তার তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া বাদ পড়েনি এবং তারই ছোঁয়াচ লেগেছিল আমার গায়েও। কিন্তু আমার জীবনের গতিপথ বেকে যায় মায়ের মৃত্যূকে কেন্দ্র করে একটি দূঃখ্যজনক ঘটনায়। আমার মা মারা গেলে আমি আমার মায়ের ফটো তুলেছিলাম। যে সমস্ত মুন্সী, মৌলভী ও মুসল্লীরা দাফন করার উদ্দেশ্যে এসেছিলেন 'ফটো তুলা হারাম' বলে তারা আমার মা'র নামাজে জানাজা ও দাফন না করেই চলে যান। আমি বিমুঢ় হয়ে মা'র শিয়রে দাঁড়িয়ে এই বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম- 'মা! আজীবন তুমি ছিলে ধর্মের একনিষ্ঠ সাধিকা। সেই তুমি আজ ধর্মের নামে হলে শেয়াল কুকুরের ভক্ষ্য। তুমি আমায় আশীর্বাদ কর, আমার জীবনের লক্ষ কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস দুরীকরণ অভিযান"
তার উদ্দেশ্য ছিল মহৎ। কিন্তু সে তার লক্ষ্যে অবিচল থাকতে পারেনি, সে বিভ্রান্ত হয়ে গিয়েছিল। ধর্মের কুসংস্কার দূর করতে যেয়ে একপর্যায়ে সে পুরো ধর্মটাকেই দূর করতে চেষ্টা চালিয়েছিল। আরজ আলী মনেপ্রাণে চেয়েছিল একজন মুসলমান হিসেবে তার মায়ের জানাজা পড়া হোক। কিন্তু ফটো তুলার অপরাধে গ্রামবাসী তার মায়ের জানাজা বয়কট করলো। আরজ আলী ভাবলো- যে ধর্ম তার মৃত মাকে শেষ সম্মানটুকু দেয়নি- সেই ধর্ম মানুষের জন্য কল্যাণকর হতে পারে না। রাগ এবং ক্ষোভ থেকে সে ইসলামের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমান সংগ্রহ করার জন্য লাইব্রেরীতে তৎকালীন বিভিন্ন নাস্তিকের লেখা বই-পুস্তক পড়তে আরম্ভ করলো। এক পর্যায়ে সে পুরোপুরি বিভ্রান্ত হয়ে গেল এবং নিজেকে নাস্তিক হিসেবে ঘোষনা করে ইসলামের বিরুদ্ধে লেখালেখি করতে আরম্ভ করলো। এখানে আরজ আলীর যতটা না দোষ, তারচেয়ে বেশি দোষ আরজ আলীর গ্রামের ঐ বক-ধার্মিকদের। ফটো তুললে জানাজা পড়া যাবে না- এরকম কোন বিধান ইসলামে আছে বলে আমার জানা নেই। এমনটা হলে আজকের যুগে একজন মানুষেরও জানাজা পড়া যাবে না। জানাজা নামক যে প্রথাটা ইসলামে আছে সেটাই উঠে যাবে। কারন জীবনে একটা ফটোও তুলেনি এরকম মানুষ আপনি সহজে খুজে পাবেন না। তাহলে দেখা যাচ্ছে, বাড়াবাড়ির ফলটা কখনো ভাল হয় না। এজন্যই আল্লাহ পাক কুরআনে সাবধান করে দিয়েছেন এই বলে যে, "তোমরা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কর না"।
বর্তমান সময়েও অনেকে ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন রকম বাড়াবাড়ি করে থাকে। উদাহরনস্বরুপ বলা যায়, জঙ্গী সংগঠন জেএমবির কথা। জিহাদের নামে ছিল নীরিহ মানুষের উপর বোমাবাজি করে, ৬৩ টা জেলায় বোমার বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে তারা কি দেশে ইসলাম কায়েম করতে পেরেছে? নাকি ইসলামের ভাবমূর্তিই কেবল নষ্ট করেছে? তারা ইসলামের ভূল ব্যাখ্যা দিয়ে সাধারন মানুষের উপর বোমাবাজি করলো। তাদের এই কাজের বিপরীত প্রতিক্রিয়া হিসেবে এদেশে অসংখ্য দূর্বল ঈমানের মুসলমান পরবর্তীতে নাস্তিকতার দিকে ধাবিত হয়েছে। ইসলামের শত্রুরা ইসলামের সমালোচনা করার একটা সুযোগ পেয়ে গেল। অসচেতন মানুষ ইসলামকেই ভূল বুঝলো। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির ফল কখনোই ভাল হয় না।
বি.দ্র. সর্বপ্রথম আমার ফেসবুক আইডিতে প্রকাশিত। ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠান/ফলো করুন- এখানে
বিষয়: বিবিধ
১৫৫৭ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 764
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 10348
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : আপনি আসলেই অতি শিক্ষিত আল্লা পূজারী! এজন্যই ১০০% হারাম একটি ছবি নিজের প্রপিকে ঝুলিয়ে রেখেছেন।স্বার্থবাদী মনোভাবই নাস্তিকতার পথে নিয়ে যায়! দুনিয়াবী সাফল্যের চিন্তায় মানুষ এমন করে! ওরা মোহনীয় অজুহাত সৃষ্টি করে মানুষের করুণা পেতে এমন গল্পের ফাঁদ তৈরী করে!
আপনার লেখার কিছুটা যুক্তিসংগতা থাকলেও পুরোটা নয়!!
যা ভয়াবহ আকারে দ্রুত ছড়ায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন