আমরা ফেসবুক বর্জন করবো না, কারন...

লিখেছেন লিখেছেন ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ ০২ আগস্ট, ২০১৪, ০৮:১৪:৩১ রাত

এতই যদি ইহুদীদের পণ্য বর্জন করার শখ তাহলে ফেসবুক কেন ইউজ করেন? একদিকে ইজরাঈলী পণ্য বর্জন করার আন্দোলন, আরেকদিকে ইহুদীদেরই তৈরি করা ফেসবুক ব্যবহার করেন- কেন এই দ্বিমুখী নীতি? প্রায়ই প্রশ্নটার মুখোমুখি হতে হয়। বিশেষ করে এদেশীয় নাস্তিকদের খুব প্রিয় ও কমন প্রশ্ন এটি।.

অস্বীকার করার কিছু নেই ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ ইহুদী পরিবারের সন্তান। কিন্তু জুকারবার্গ মোটেও ইহুদী নয়, বরং সে একজন স্বঘোষিত নাস্তিক। হয়তো বলবেন- ইহুদীদের পণ্য বর্জন করলে নাস্তিকের পণ্য কেন নয়?

কারনটা ব্যাখ্যা করছি-

আচ্ছা ইজরাঈল সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলো আমরা কেন বর্জন করছি? কারন ঐসব পণ্য ইজরাঈলের অর্থনীতির চালিকাশক্তি। ঐসব পণ্য বিক্রি করা লভ্যাংশের অংশ ব্যবহার করা হয় মুসলিম নিধনের কাজে। তাই এসব পণ্য বর্জন করা আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু ফেসবুকের ব্যাপারটা সেরকম নয়, ফেসবুকের লভ্যাংশ এভাবে সরাসরি ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয় না। আরেকটা ব্যাপার হল- সকল ইহুদীই মুসলমানদের শত্রু, তাই ইহুদীদের পণ্য বর্জন করা উচিত। কিন্তু সকল নাস্তিকের সাথে আমাদের শত্রুতা নেই, আমাদের শত্রুতা শুধু সেইসব নাস্তিকদের সাথে যারা ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষন করে। তাই নাস্তিক হলেই বর্জন করতে হবে এমন কোন কথা নেই। মার্ক জুকারবার্গ কখনোই ইসলাম বা অন্য কোন ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষ পোষন করেনি। অন্যান্য সাধারন নাস্তিকদের মত তারও ধর্ম নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। এরকম নাস্তিকদের পণ্য ব্যবহার করতে কোন সমস্যা আমি দেখি না। তবে এতক্ষণ যেসব যুক্তি দেখালাম সেগুলোই মূল কথা নয়।

ফেসবুক ব্যবহার করার স্বপক্ষে এরচেয়ে বড় যুক্তি রয়েছে। আমরা ফেসবুক ব্যবহার না করলেই বিধর্মী বা নাস্তিকদের বিশাল কোন ক্ষতি হয়ে যাবে এমনটি নয়। বরং ফেসবুক ব্যবহার না করলে আমরা নিজেরাই পিছিয়ে পড়বো। বর্তমান যুগে ফেসবুক হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী গনমাধ্যম। এমনিতেই ইসলামের পক্ষে পৃথিবীতে কোন মিডিয়া নেই বললেই চলে, এই অবস্থায় আমরা যদি ফেসবুক বর্জন করি তাহলে প্রকারান্তরে লাভবান হবে ইসলামের শত্রুরাই। আর তারা সেটাই চায়। তারা চায় আমরা যেন ফেসবুক বর্জন করি, যাতে তারা বিনা বাধায় ইসলামের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে যেতে পারে। ফেসবুক থেকে ইসলামপন্থীরা বিদায় নিলে ইসলামকে সারা দুনিয়ার মানুষের কাছে সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদী ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাটা তাদের জন্য পানির মত সহজ হয়ে যাবে। তাদের সেই মনোবাসনা ব্যর্থতায় পর্যবসিত করে দেয়ার জন্য আমাদের উচিত ফেসবুক নামক এই শক্তিশালী মাধ্যমটিকে সবোর্চ্চ কাজে লাগিয়ে ইসলামের প্রচার ও প্রসার চালানো।

তাই আমি আবারো বলছি, ইজরাঈল সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলো আপনারা বর্জন করুন, পেপসি-কোকাকোলা-নেসলে ইত্যাদি বর্জন করুন, কিন্তু ফেসবুক কখনোই নয়। অন্তত যতদিন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ইসলামের বিরুদ্ধে সরাসরি কোন কর্মকান্ড পরিচালনা না করছে ততদিন ততদিন পর্যন্ত ফেসবুক বর্জন করার কোন যৌক্তিকতা নেই।

ফেসবুকে আমি- এইখানে

বিষয়: আন্তর্জাতিক

১৮১৩ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

250227
০২ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:৫৯
হতভাগা লিখেছেন : কোন টা বাদ দিবেন আবার কোন টা ধরে রাখবেন - এ রকম দ্বিমুখী আচরণই আসলে আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে ।

পরনির্ভরশীলতা থেকে যদি বের হয়ে না আসতে পারি বা পরনির্ভরশীল যে - এটা বুঝেও না বোঝার চেষ্টা করি --- তাহলে আমাদেরকে তারা এক ঘাট থেকে কিনে ১০ ঘাটে বিক্রি করবে ।
250232
০২ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:০৩
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনার লেখাটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৬
210086
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : ধন্যবাদ।
250256
০২ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:০১
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : ফেইসবুকের উদ্ভাবকের জাতিগত পরিচয় নিয়ে এতো গ্যাঞ্জাম সৃষ্টি করার কি প্রয়োজন? জুকারবার্গের উদ্ভাবিত ফেবু চাড়াও আরো অনেক সামাজিক যোগাযোগের মিডিয়া আছে অনলাইন দুনিয়ায়। যে কোনো সময় ফেবুকে টপকিয়ে অন্য কোনো মিডিয়া দৃষ্টি আকৃস্ট করতে পারে। ইউজারদের প্রযোজনেই ফেবু। ফেবুর প্রযোজনে ইউজাররা নয়। কাজেই দেড়শো কোটি মানুষকে এভয়েট করার মত বোকামী মনোফলী ফেবুওয়ালারা হাতছাড়া করবে কোন যুক্তিতে? তাছাড়া ফেবু ডেভেলপ টিমে যে শুধু জায়নবাদীরাই জড়িত কে বললো? ওখানে তো বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন মেধার বিত্তিতে কাজ করছে বলে সুনেছি। তাহলে এখানে ইসলামকে ব্রেকেটবন্ধী করে কোন ধরনের গ্যাঞ্জাম বাধানোর মতলব তা তো বুইঝবার পালুম না!
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৬
210087
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : আপনার কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।
250289
০৩ আগস্ট ২০১৪ রাত ১২:১৮
খামচি বাবা লিখেছেন : কিছুদিন ধরেই একটা জোর আলোচনা উঠেছে,,, ইসরাইল পন্য হিসেবে আমরা যেগুলোকে গননা করি সেগুলো কি আসলেই ইসরাইলি পন্য??,, যদি না হয় তবে অন্যান্য পন্য যেগুলো বিধর্মিরা তৈরে করে সেগুলোর বয়কটের আহব্বান কেন জানানো হয়না....
আমার এক ফ্রেন্ড পেপসি সম্পর্কে কিছু তথ্য দেয়ার পর থেকেই খোজ নেয়ার চেষ্টা করলাম এই ব্যাপারে...

উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে পেপসিকো প্রথিস্টিত হয় ১৮৯৩ সালে,, আর ইসরাইল প্রথিস্টিত হয় ১৯৪৮ সালে,,,
তাহলে পেপসি কিভাবে ইসরাইলি পন্য হয়????
ইনফ্যাকট পেপসির বর্তমান চেয়ারম্যান ভারতীয় বংশদ্ভদ হিন্দু ধর্মালম্বী!!
দিত্বীয়ত ইসরাইলের সাথে আমাদের কোনো কুটনৈতিক সম্পর্ক নেই
. তাহলে তাদের পন্য আমাদের দেশে প্রবেশ করার কথা না..

প্রকৃত ব্যাপার হচ্ছে এসব পন্য ইসরাইলের নয়, পেপসিকো এবং কোকাকোলা আমেরিকার,,
যদি বয়কট করতে হয় তবে তো আমেরিকার সব পন্যই বর্জন করা উচিত,, শুধু পেপসি কেন?? বয়কটের লিস্টে থাকা পন্য সমুহ কোনোটা ফিনল্যান্ডের,কোনোটা
সুইজারল্যান্ডের.. সেগুলোও বা লিস্টে কেন??

উত্তর হচ্ছে এসব পন্য তাদের অর্জিত আয়ের বড় একটা অংশ ইসরাইলকে বাচাতে ব্যবহার করে থাকে.. কারন ইসরাইল কোনো স্বভাবিক দেশ নয়,,, উরে এসে জুরে বসা পরগাছার মত,যাদের কোনো শিকর নেই যে মাটি থেকে সরাসরি পানি শোষন করবে...

তাই প্রথিবীর সবচেয়ে আগ্রাসি দেশটার বিশাল অর্থবার বহন করে লালন পালন করে চলেছে কিছু বহুজাগতিক কোম্পানি... কোকাকোলা,পেপসিকো,নেসলে,ইন্টেল,ডিজনি,ABC ইত্যাদি তাদের মদ্ধে অন্যতম...

ইসরাইলকে সহযোহিতা করে একথা বলতে গিয়ে আমাদের দেশের হুজুররা এগুলোকেই ইসরাইলি পন্য বলে বসেন,, ভুলের উতপত্তি এখানেই..
০৩ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:০৯
194599
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ। আপনার সাথে একমত।
250403
০৩ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৪১
সজল আহমেদ লিখেছেন : তা ঠিক।
আপনাকে ফেসবুকে একটা ফেন্ডু রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছি ।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৬
210088
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : ধন্যবাদ। একটা মেসেজ দিবেন দয়া করে। তাহলে এক্সেপ্ট করার নিশ্চয়তা থাকবে।
250419
০৩ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:১০
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : ফেসবুক বয়কট করবো না, কারণ ইহুদিদের তৈরি প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের সমালোচনা করা ও চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া যে আমরা তাদের কেন ও কতটা ঘৃণা করি, এমন সুযোগ কে হাতছাড়া করবে!
পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে আমার মত, ভাই এই সব *লছাল না খাইলেই বা কি হয়! কোমল পানীয় কি খেতেই হবে? যদি খেতেই হয় ক্লেমন ইত্যাদি খাবো। শ্যাম্পু দিতে হলে সানসিল্ক, ক্লিয়ারের স্থলে কুমারিকা ইত্যাদি ব্যবহার করবো। হুইল নাই তো কি হইছে, চাকা আছে না! নিজের দেশের পণ্য। অন্যগুলোর ক্ষেত্রেও নিজের দেশের পণ্যই ব্যবহার করলাম। এক তীরে দৃই শিকার। ওদের এক ডলার হলেও ক্ষতির সম্মুখিন করলাম, আর নিজের দেশের পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে দেশকে সাবলম্বী হতে সাহায্য করলাম।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৭
210089
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : আপনার সুন্দর কমেন্টের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File