শহুরে ফোকলোর

লিখেছেন লিখেছেন বিবলোফিল ২৫ জুন, ২০১৪, ১১:২৪:০২ সকাল

পুরা বৃষ্টিটা গেল মাথার উপর দিয়ে । বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম শান্তি নগর । মগবাজার ফ্লাইওভারের কাজ চলছে রাস্তা যাচ্ছেতাই । যে বাসায় যাব তার বাসাটা একেবাড়ে শান্তিনগড় মোড়ে । বেইলি রোডে দেখি জ্যাম । এই শহরে বৃষ্টি হলে জ্যাম, না হলে জ্যাম, কড়া রোদে জ্যাম, ছায়া থাকলে জ্যাম । স্কুল খোলা থাকলে জ্যাম, না খোলা থাকলে জ্যাম । জ্যাম ছাড়া দিনের নাম হরতাল ।

জ্যাম দেখে হোন্ডা ফুটপাত দিয়ে উঠিয়ে একেবারে শান্তি নগর মোড়ে গেলাম । বৃষ্টির কারনে ফুটপাতে মানুষ কম । ফুটপাতে হোন্ডা চালাব এটা এখন দুধভাত, চার হাজার কোটি টাকা মারলে যদি কিছু না হয় তবে আমার অপরাধ নস্যি ।

শান্তি নগর মোড়ে জ্যাম থাকায় উল্টাযেতে পারলাম না । সোজা গিয়ে ইউটার্ন নিয়ে এলাম । ল এবাইডিং সিটিজেনের মত । সিকিউরিটি গার্ডের কাছে পরিচয় দিলাম । রেইন কোর্ট বেয়ে ছিপ ছিপ করে পানি পড়ছে । রেইন কোর্ট টা আমেরিকা যাবার আগে রকি দিয়ে গিয়েছিল । রকি কে আমেরিকা যাবার আগে রেইনকোর্ট টা দিয়ে ছিল আসিফ । এইভাবে হাত বদল । ব্যাপক কাজে দিচ্ছে এই বার্ষালি দিনে ।

সিকিউরিটি গার্ড লাইন পাচ্ছিল না ইন্টারকমে । আমি দাড়িয়ে আছি । গার্ডের সামনে অনেক চিঠি । মোবাইল এসে চিঠি পৌছে গেছে যাদুঘরে । বাতচিত সব মোবাইলে । এখনকার বেশির ভাগ চিঠি গুলো অফিসিয়াল টাইপের হয় । যা হোক একটা চিঠিতে চোখ আটকে গেল

হইতে

ঢাকা অফিসার্স ক্লাব

বাম্পার হাউজি ২০১৪

মেম্বার # ------

জনাব : -----(অব: ডিআইজি)

হাউজি শীতের খেলা । একজন সুন্দর করে মিলিয়ে লাইন বলে বাপ বেটা চোর নাম্বার ফোর । তখন ফোরে দাগ দিতে হয় । একটা কাগজের মধ্যে সংখ্যা গুলো কাটতে হয় । ছোটবেলায় এই দাগকাটা কাগজ গুলো জমাতাম । একবার খেলতে হবে । এই শহরে এসিরুমে শীতের অনুভুতি নিয়েই খেলাটা হয় । খারাপ না । সিকিউরিটি লাইন পেল বাসায় গেলাম । সব বুঝিয়ে দিয়ে আবার বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে গুলশান । ভালই লাগল বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে হোন্ডা চালাতে । গুলশানে নান্দুসের সামনে আটকালাম । কালরাতে এসেছিলাম এখানে । মেয়েকে কোলে নিয়ে ঘুরতেই দেখলাম বারিস্তার সামনে বিশাল প্রজেক্টর সামনে অনেক চেয়ার । বসে বসে খাও আর খেলা দেখ । কয়েকজন মিলে আসতে পারলে ব্যাপক মজা হত ।

গুলশানে কাজ সারতেই । আফজাল ভাইয়ের ম্যাসেজ । গেট ফখরুদ্দিন তেহারী ফর বোথ অফ আচ । সে আমার অফিসে । মনেই ছিলনা ফখরুদ্দিন এর কথা অনেকদিন খাওয়া হয়না । অফিসে আসবার পর কারেন্ট ওই যে গেল আসার নাম নাই । রামপাল, মাতার বাড়ী, রুপপুর, ত্রিপুরা এত কারেন্ট কিন্তু অনগ্রা্উন্ডে নেই । কাজীর গরু কিতাবে গোয়ালে নাই ।

রাস্তাটা শুনশান । ঝাড়ুওয়ালা শুকনো গলায় বলছে ঝাড়ু .............। ডাকলাম ! বাসার জন্য কিনি । দামদড় ঠিক করে দুটো ঝাড়ু খুলে একটা করতে বল্লাম । গামছাটা বিছিয়ে ও কাজ শুরু করল । বাড়ী টাংগাইল । আগে গরুর ব্যবসা করত । গরু সহ লোডেড ট্রাক বিডিআর ধরল । ও গরু ছেড়ে পালায় । গরু আনতে গেলে চৌদ্দ বছর জেলে যেতে হবে । সাড়ে ছয়লাখ টাকার গরু রেখে তাই পালায় । ছেলে মেয়ের বিয়ে দিয়েছে বউ মারা যাবার পর ও আবার বিয়ে করেছে । সে ঘরে একটা মেয়ে আছে । মেয়ের জন্য ব্যাংকে একটা ডিপিএস আছে চারশো চল্লিশ টাকার । ও না থাকলেও জমানো টাকায় মেয়ের একটা বিয়ে দিতে পারবে ।

রমজান শেষ হলেই ও আবার গরু ব্যবসায় যাবে । এখন আর পুন্জিপাট্টা নেই । অন্যের হয়ে কাজ করে । বউ বাচ্চারা টাংগাইলের যমুনার পাশে থাকে । ও থাকে ঢাকা উদ্যানে । এরাই কি বিএসএফএর গুলিতে মরে কি না জানা হলনা । আরও জানা হলনা নাম । কাজ শেষে মিলিয়ে গেল ।

ইকবাল রোড

২১/৬/২০১৪

বিষয়: বিবিধ

১২৬৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

238682
২৫ জুন ২০১৪ দুপুর ১২:১০
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
238695
২৫ জুন ২০১৪ দুপুর ১২:৩১
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : বর্ননাশৈলি ভালো বলেই এতো মধুর লেগেছে পাঠে। ভাল লাগা রেখে গেলাম।
238777
২৫ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:১৬
ভিশু লিখেছেন : খুব সুন্দর উপস্থাপনা!
Happy Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File