শহুরে ফোকলোর
লিখেছেন লিখেছেন বিবলোফিল ১০ জুন, ২০১৪, ০৭:১০:৩২ সন্ধ্যা
৫ জন মানুষের ব্রাজিলের ভিসা নিয়া দৌড়ের উপরে ছিলাম । বারবার মনে হচ্ছিল এ্ই ৫টা লোক ঢাকা ছাড়লে শান্তি পেতাম । এরা বিমানে উঠেনা কেন ? বিশ্বকাপ তুমি তাড়াতাড়ি শুরু হও । ভিসা প্রসেস করবার আগে একদিন গেলাম ব্রাজিল ইমবেসীতে । নুতন কোন নিয়ম চেন্জ হল কিনা এটা জানবার জন্য ।কারন প্রায় দুবছর আগে ব্রাজিলের ভিসা করেছিলাম একবার দিল্লী থেকে পরে ঢাকা থেকে ব্রাজিল এমবেসী ঢাকাতে আসবার পর ।
আগে যাদের ভিসা করেছিলাম সবার ইনভাইটেশন ছিল ব্রাজিল থেকে । একজন ছিলেন ব্যাংকার তিনি গিয়েছিলেন চিনি আনতে । সেবার চিনির দাম রোজার আগে ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা বা ৬৫ টাকা হয়েছিল । পরে জেনেছিলাম এ রকম অনেকের চিনি ভর্তি জাহাজ নাকি সাগর থেকে হারিয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল থেকে আসবার সময় । তাই দেশে চিনির দাম বেড়ে যায় । কোন একদিন শোনা যাবে জাহাজ না সাগর হারিয়ে গেছে । সবি সম্ভব এ দেশে ।
আর বাকীরা ছিলেন এনজিও একটিভিষ্ট । সো ঝামেলা হয়নি । শুধু সুমনা বৌদী আমাকে একটু দৌড়ের উপর রেখেছিল । সুলতানা (সুলতানা কামাল) আপার জন্য আর ইফতেখারুজ্জামান স্যারের জন্য ।
সেবার আমি সব করেছিলাম এমবেসী তে গিয়ে এপ্লিকেশন জমা দেবার কাজ । কারন সুলতানা আপা এমবেসী তে যেতে পারেনি এবং ইফতেখারুজ্জামান স্যার ও তাদের ব্যস্ততার কারনে । ওরা যায়নি বলে ২০০০ টাকা বেশি দিতে হয় । জন প্রতি । ভালো ভালোয় সব হয় ।
এবার এমবেসীতে ঢোকা মাত্রই ওয়েটিং রুমে চোখে পড়ল লিফলেট ।
ইংলিশের বাংলা মানে দাড়ায় এমন
শহরে আপনার জন্য সবচেয়ে পারফেক্ট রুম বরাদ্দ হবে যদি আপনি চাইল্ড সেকচ খোজেন ব্রাজিলে । পারফেক্ট রুমটা হল জেলখানা ।
এমবেসীর লোকাল ষ্টাফের সাথে কথা বল্লাম । মনে হয় একটা করে ইনফরমেশন বলার জন্য স্যারের এক কাপ করে কফি লাগে । কথা শুনলে মনে হয় স্যার সারারাত লাসভেগাসে ছিলেন । অফিসে আসতে হয় এই জন্য এসেছেন । মাঝে একদিন ফোন দিয়েছিলাম স্যার রা বলেন আমরা ফোনে ইনফরমেশন দেইনা ।
তারা অনেক আধুনীক ফিজিক্যালি গিয়ে ইনফরমেশন আনতে হয় । এই এক সমস্যা এসপির পিছনে বসে থাকা এস আই নিজেরে ডিআইজি ভাবে । এস আই এর হোন্ডার পেছনে বসে থাকা কনষ্টেবল নিজেরে ওসি ভাবে । আরে ব্যাটা ভাবার জন্য গওহর রিজভি, ফখরুল সাহেব রা বসে আছেন তোমারে এত ভাবতে হবে কেন?
এই একমাস অমি ভাই এর ফোন কিবরিয়া ভাই ভিসা দিব তো ? আমি বলি দেবেনা না মানে ওদের বাপ ভিসা দেবে । ভিসা না দিলে দেখেন না কেমনে কুসুম পুরের ঘটনা ঘটাই । অমি ভাই বলে কিবরিয়া ভাই ভিসা না দিলে ইমিরেট এর টিকিট কেটে ফেলছি ঢাকা সাওপাওলো । প্লাস ব্রাজিলে সাওপাওলো, মানাওস, রি ডি জেনারিও তে হোটেল বুক করছি এবং টাকা দিয়ে ফেলছি । সব মাটি হয়ে যাবে । আমি আশা দেই । আমেরিকা ভিসা দেয় ৫ দিনে আর ব্রাজিল কোথাকার কোন নবাব । দিয়ে দেবে । থার্ড ওয়ার্লড একটু ঝামেলা হবেই । আমি আবার বলি যদি ষ্টেডিয়ামে বাংলাদেশের পতাকা না থাকে আপনার খবর আছে ।
ওমি ভাই আশ্বাস দেয় থাকবে । পতাকা নিয়া ঢুকমু ।
এরপর ঢাকা ভার্সিটি থেকে হোম মিনিষ্টার ফোন দেয় । খোজ নিছ আব্বুর ব্রাজিলের ভিসার । শেষমেষ শ্বশুর সাহেবের সাথের যে টিচার যাচ্ছে তার কাছে এমবেসীর নাম্বার পাঠিয়ে দিলাম তিনি যেন ফোনে আপডেট নেন ।
প্রায় এক মাস পাসপোর্ট আটকে রাখবার পর ভিসা দিয়েছেন । মহামান্যরা । এই ব্রাজিল পার্টি দেশ থেকে গেলে বাচি ।
গতকাল আমার সব ক্লায়েন্টস চলে গেল ব্রাজিল । ওমি ভাই আগেই গিয়েছে । ফেসবুকে আপডেট দেখছি । এখন ভালয় ভালয় বাংলাদেশের পতাকা ষ্টেডিয়ামে দেখতে পেলেই হয় । না খেলি পতাকা টা যাবে তো ।
দুধের স্বাদ ঘোলে মিটলো আর কি ?
সো নবনীতার আম্মু
হাল ছেড় না ।
ইকবাল রোড, মোহাম্মদপুর
১০/৬/২০১৪
বিষয়: বিবিধ
১৬৬১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন