শহরে ফোকলোর ।
লিখেছেন লিখেছেন বিবলোফিল ২৬ মে, ২০১৪, ০২:৫৬:৫১ দুপুর
ক্রিকেট কিংবা ফুটবল খেলতে গিয়ে স্যান্ডেল হারিয়ে এসে আব্বার হাতের মার খাওয়া । মাগরীবের আযান দিয়েছে মাঠ থেকে দৌড় বাসায় । হঠাত বাসার গেটে গিয়ে দেখি পায়ে স্যান্ডেল নাই । আবার মাঠে দৌড় । এসে দেখি স্যান্ডেল নাই । আবার বাসায় দৌড় । বাসার কোন এক চিপা থেকে ছেড়া স্যান্ডেল বের করে তাড়াতাড়ি মুখ হাত ধুয়ে পড়তে বসা ।
সারাদিন দৌড় ঝাপ করে পড়তে বসা মাত্রই চোখে লাল পরী, নীল পরীদের আদরের ঘুম । মাথাটা বার বার একদিকে যায় ঘুমের ঘোরে ।
হঠাত ওয়ান টাইট স্লাপ ওন কান পট্টি (কষানো থাপ্পর কানের উপর) । লাল পরী, নীল পরী সব দৌড় ।
একবার পকেটে ছিল ২০ টা মার্বেল সব হারলাম । শুধু ডেগ টা । টান টান উত্তেজনায় যে আমার ২০ টা মার্বেল মারছে তার টা সই করছি । মারবো হঠাত পিঠের উপর পড়ল একটা পেয়ারার ডালের সপাং কষানো মার ।
আমার প্রিয় ডেগ টাও হারালাম । সপাং মারে । আর দৌড় । উসাইন বোল্ট এমন দৌড়াইছে কি না সন্দেহ আছে । সেসময়টায় এসএসসি পরীখ্খা চলছিল । একজন করে পরীখার্থীর সাথে চারজন করে থাকত নকল প্রদান কারী । সবাই হা করে তাকিয়ে আছে ছেলেটা দৌড়ায় কেন? আমি ঘুরে পেছনে দেখিনা । আব্বা আসছে কিনা ।
অনেকদুর দৌড়াবার পর পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি আব্বা নেই । তখন মনে হত দুর এম্নি দৌড়ালাম । কষ্ট করে । আমি জোড়ে জোড়ে নি:শ্বাস নেই । আশে পাশের এসএসসি পরীখ্খার লোকজন তাকিয়ে থাকে । মনে মনে বলি এমন পেয়ারার ডালের একটা বাড়ী খাইলে আর তাকাতেন না ।
এই এসএসসি পরীখ্খার সময় বিটু ভাইয়ের একটা করে প্রেম হত । প্রতিবার পরীখ্খায় তার প্রেমিকা বদলাতো । চিরসবুজ মানুষ । না বলতে পারতোনা ।
এমন এসএসসি পরীখ্খার সময় একবার সাগর রুপম কে দাবরানী দিল হাতে বন্দুক সহ । তোফা্জ্জল ওরফে তপু (এক্চ এমপি সাহেব) । পুরো এলাকায় দুটো বন্দুক ছিল একটা আব্বার আর একটা তোফাজ্জল সাহেবের । বংগবন্ধুর সময়ের সবচেয়ে কনিষ্ট এমপি ছিলেন তোফাজ্জল ।
দাবরানী দেবার বিষয় ছিল তাকে টাক বলেছে সাগর রুপম । তোফাজ্জল সাহেবের মাথায় টাক ছিল । বই পুস্তকে কানা কে কানা বলা যাবেনা । খোড়া কে খোড়া বলা যাবেনা লেখা ছিল । কিন্তু টাক কে টাক বলা যাবেনা এটা তো লেখা ছিলনা কোথাও লেখাও নাই ।
আর একবার রাজু ভাই, সাগর, রুপম তিনজন কে এক সাথে দাবরানী দিল এমপি সাহেব । হাতে বন্দুক সহ । বিষয় তাকে টাক বলেছে । রাজু, রুপম, সাগর ছিল আমাদের বস । যেহেতু মুখে টাক বল্লে এমপি সাহেব বুঝে যায় তাই ডিসিশন হল তাকে টাক বলা হবে শব্দে শব্দে । জিহবা তালুতে ঠেকিয়ে টাক টাক শব্দ করা । এমপি সাহেবের বাসার সামনে দিয়ে যাই শব্দ করি ।
এমপি সাহেব বুঝেনা দাবরানী দেয়না । ওনার ছেলে বিদ্যুত সে বিষয় টা ধরে ফেল্ল বাপকে বুঝালো আব্বা ওরা তোমাকে এখন শব্দ করে টাক টাক বলে । এই শব্দ করে টাক বলার প্রথম শিকার হল উজ্জল ও সুমিতাভ ।
সুমিতাভ, উজ্জল কে এমপি সাহেব ডাকলেন । টাক কার হয় জানিস ?
ওদের উত্তর না ।
তোদের গোষ্টিতে কারও টাক আছে ?
না !
তাহলে হারামজাদা আমাকে টাক ডাকিস কেন ?
আর জানিস টাক হয় ভাগ্যবানের ।
রুপম, সাগর, রাজু ভাইয়ের মাথায় ভাগ্যবান হিসেবে টাক পড়েনি । তবে হারিয়ে গেছে হিসেবের খেরোখাতা থেকে । রুপম মাঝখানে ভাবনার জগতে কিছুদিন আশ্রয় নিয়ে এখন হয়তোবা থিতু হয়েছে । সাগর এর খোজ মেলেনা ।
যেমন খোজ মেলেনা গুম হয়ে যাওয়া মানুষের । ঝড় বৃষ্টির তোড়ে যদি কাদা মাটি সরে গিয়ে বেরিয়ে আসে জীবিত মানুষ মৃত মানুষ হয়ে ।
সান্তনা শেষবার দেখতে পেল প্রিয় মানুষ রা ।
কবি বেচে থাকলে বলতেন জন্ম হোক যথা মৃত্যু হোক স্বাভাবিক ।
ইসকাটন, ঢাকা
৩/৫/২০১৪
বিষয়: বিবিধ
১২৪৪ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসলেই তাই
মন্তব্য করতে লগইন করুন