ইসলামীক মাইন্ডের যুব সমাজও যে দুটি কবিরাগুনাতে সব সময় লিপ্ত।
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ০৩:৩৭:৩৮ দুপুর
প্রথমত আমাদের বুঝতে হবে: ফিকহের পরিভাষায় কোন বিষয় সুন্নাত ও কোন বিষয় ওয়াজিব।
সুন্নাতঃ
আমল যোগ্য যে সকল বিষয় রাসূল সাঃ করেছেন এবং অন্যকে করতে উৎসাহিত করেছেন, বা সাহাবায়ে কেরাম রাসূল সাঃ এর সামনে করেছেন, আর তাতে রাসূল সাঃ এর সম্মতি ছিল, এগুলো সুন্নাত হিসেবে বিবেচিত।
ওয়াজিবঃ
আমল যোগ্য যে সকল বিষয় রাসূল সাঃ করেছেন এবং অন্যকে করতে উৎসাহিত করে ক্ষ্যন্ত হন নি, বরং বার বার আদেশ করেছেন, বা লঙ্ঘন কারীকে জাহান্নামের শাস্তির ব্যপারে সতর্ক করেছেন, এগুলো ওয়াজিব হিসেবে বিবেচিত।
এছাড়াও বিভিন্ন ফকীহদের ভাষায় বিভিন্ন ব্যাখ্যা আছে। এখানে আমল শব্দটি এ জন্য উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসূল সা: এর ব্যক্তি জীবনে এমন কিছু আমল আছে, যা উম্মতের উপর কর্তব্য বা পালনীয় নয়। যেমন ১১ বিয়ে, মেরাজে উর্ধ গমন সহ ইত্যাদি বিষয় উম্মতের জন্য পালনীয় বা আমল যোগ্য নয়।
মূল কথায় আসি:
দুটি বিষয়ে একটি হল: দাড়ি, اللحية / اللحى লম্বা করা, ছেড়ে দেওয়া।
দ্বিতীয়টি হল: টাখনুর নিছে কাপড় পরিধান না করা।
এই বিষয়ের উপরে রাসূল সাঃ এর যেমন লাগাতার আমল রয়েছে, তেমনি বার বার আদেশ রয়েছে এবং লঙ্গন করার উপর শাস্তির বর্ণনাও রয়েছে।
পোষ্ট লম্বা হয়ে যাওয়ার ভয়ে বিস্তারিত না লিখে ইসলামীক মাইন্ডের যুব সমাজের নিকট সমাধিত কয়েকজন ইসলামী স্কলারদের বক্তব্যের ভিড়িও লিংক শেয়ার করলাম।
আল্লাহ তায়ালা শুনে বুঝে আমল করার তাওফীক দান করুক।
দাঁড়ি ছোট রাখা কতটুকু সঠিক? সংক্ষেপে দেখতে পারেন।
টাখনুর নিচে কাপড়ের বিধান
বিষয়: বিবিধ
১৫২৯ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ ফরজ নামায যেখানে জিহাদের ভয়াবহ অবস্থার কারণে কাযা (মানে পরে আদায়) করা যায়, সেখানে ওয়াজিব ও সুন্নাহের প্রতি শিথিলতা করা যেতে পারে।
কিন্তু পার্থিব দুনিয়ার উন্নতি বা মনচাহি জিন্দেগীর জন্য এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধানে কখনো শিথিলতা প্রদর্শণ করা যাবে না।
কেউ হয়তো বিভিন্ন হেকমত ও যুক্তি দেখিয়ে সহীহ ও সরীহ হাদিসের বিরুদ্ধে অবস্থ নিবে, এটি তার উপর ছেড়ে দিন।
আল্লাহ তায়ালা তাওফীক দান করুন।
সহীহ হাদীসসমূহের বিপরীতে এদের আমলগুলো দ্বীনের প্রতি অনেকটা আঘাট করে, কারণ জেনারেল শিক্ষিত লোকেরা এদেরকে ফলো করে ও উপমা হিসেবে পেশ করে। আল্লাহ তায়ালা সঠিক বুঝ দান করুক।
আরো একটি কারণ আছে, অনেকের মাযহাব ফবিয়া আছে/থাকতে পারে, তাই ওদের কাছে গ্রহনযোগ্য আলেমদের বক্তব্যের লিংক দিলাম।
শুকরিয়া।
অনেকে খুব স্টাইল করে ছেঁটে দাঁড়ি রাখে ( হিন্দি সিরিয়ালের নায়কদের মত। এরকম মক্কাতে তাওয়াফের সময় দেখেছি , মদিনাতেও দেখেছি) - এরকম করা কতটুকু সঠিক শরিয়াহ মতে (দাঁড়ি তো রেখেছে !)?
টাখনুর উপরে কাপড় শুধু নামাজ পড়ার সময় উঠালে ঠিক হবে নাকি সবসময়ই থাকতে হবে (ওজু সবসময় না থাকলেও নামাজ ও ক্বুরআন তেলাওয়াতের সময় থাকতেই/করতেই হবে)? ওজন কমে গেলে সেটা আবার টাখনুর নিচে নেমে আসে ।
এরকম বেশ কিছু সুন্নাহের কথা আমরা জানতে পারি যেগুলো পালন না করলে কঠিন শাস্তি হতে পারে ।
উপরোক্ত দুটি বিষয়ে ক্বুরআনে আল্লাহ কি কঠিন কিছু বলেছেন? (আমার জানায় ঘাটতি থাকাটাই স্বাভাবিক , আল্লাহই ভাল জানেন)
আমরা মুসলমানেরা কি এরকম করছি না যে - সুন্নাহকে খুব শক্ত করে আঁকড়ে ধরছি আর ফরজগুলোর দিকে খেয়ালই করছি না ?
ফরজগুলো যথযথভাবে পালন করে যদি সুন্নাহগুলো মোটামুটি পালন করে তাহলেও কি পুলসেরাত পার হওয়া যাবে না ?
হজের সময় ফরয তো পালন করতেই হয় , ওয়াজিবগুলো পালন না করলে দম দিতে হয় । সুন্নাহগুলো পালন এতটা কি জরুরী সে সময়ে ? সুন্নাহ পালন করতে গিয়ে যদি ফরয/ওয়াজিব তরক হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে তখন কি হবে ?
মক্কা মদিনায় কোন ইমামের ছোট দাড়ি নেই। (আপনি যাদেরকে দেখেছেন, তারা হয়তো খাদেম ও সিকিউরিটি) কারণ দাড়ি ছাটা বা শেভকরার ব্যাপারে একই হুকুম, কারণ হাদিসে দাড়িকে ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে, ছোট করার প্রশ্নই আসে না, যারা এক মুষ্টির পর কাটার পক্ষে মত দিয়েছেন, তারা কিছু সাহাবায়ে কেরামের আমল ও কুরআন থেকে রিচার্জ করে দিয়েছেন। কিন্তু খোচা দাড়ির পক্ষে আজপর্যন্ত কোন একজন স্কলারও মতামত দেননি। তবে ছেড়ে দেওয়াটাই মূল বিধান।
সাধারণত বিনা অজুতে থাকলে গুনাহ হয় না, প্রয়োজনের সময় করলেই হয়, তবে সমসময় ওজু অবস্থায় থাকা মুস্তাহাব। কিন্তু না থাকলে কোন ধমকি বা আযাবের কথা উল্লেখ নেই। কিন্তু টাখনুর নিচে কাপড়ের ব্যপারে জাহান্নামের শাস্তির উল্লেখ আছে, এটি স্ব-জ্ঞানে যতক্ষণ থকাবেন ততক্ষই পালনীয় ওয়াজিব বিধান। শুধু নামাযের জন্য নয়, বরং পোষাক পরিধানের বিধান। ওজন কমার সময় উপরের দিকে উঠিয়ে নিলেই হয়।
যে সকল সুন্নাহ পালন না করলে শাস্তির বিধান আছে, সেগুলো পালন করা ওয়াজিব।
এ দুটি বিষয়ে কুরআনে স্পষ্ট কিছু বলা নেই, তবে রাসুল সাঃ এর আনুগত্যের কথা বার বার বলা হয়েছে।
ফরজের গুরুত্ব অব্যশই অনেকগুণ বেশি। যার যার আমল অনুযায়ী তার তার প্রাপ্য।
"সুন্নাত" হল ফরজের পরিপূরক, যদি ফরজের মধ্যে ঘাটতি থাকে তা সুন্নাত থেকে নেওয়া হবে, তবে বরাবরে নয়, অনেক গুন দিয়ে। পুলসিরাত পার হওয়া ঈমান ও আমলের উপরই নির্ভর করবে, সুন্নাতও আমলের অন্তর্ভূক্ত।
হজ্বের সময়ও যথাসম্ভব সুন্নাতের প্রতি যত্নবান হওয়া দরকার, একান্ত অপারগতায় আল্লাহ কারীম।
অবশ্যই ফরজ ওয়াজিব ঠিক রেখেই সুন্নাতের প্রতি যত্নবান হতে হবে।
আশা করি হজ্বের সময় উপরের দুটি বিষয়ের জন্য ফরজ ওয়াজিব তরক হবে না ইন শা আল্লাহ।
জাযাকাল্লাহ
আপনার বিভিন্ন মাসআলা জানতে চাওয়া পোষ্টগুলো মিস করছি।
টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান করলে কি সমস্যা হয় ? শুনেছি এটা নাকি বেয়াদপি - কি জন্য বেয়াদপি হয় ? টাখনুর উপরে হাটুর ৪ আঙ্গুল নিচে পড়লে কি বেয়াদপি হবে না তথা টাখনুর উপরে পায়জামা পড়ার বিধান রক্ষা হয় ?
আমার মনে হয় কিছু কিছু সুন্নাহ এমন কঠিনভাবেই বলা আছে যেটার ফলে স্ট্রিক্টভাবে ধর্মীয় কাজ পালনে মানুষ ভয় পায় , সঠিকভাবে পালন করা নিয়ে সংশয় থাকে বলে আর পালনই করে না।
আসলে মানুষ চেষ্টা করলে কি না পারে, সংশয়ের কিছু নেই, মনোবল নিয়ে শুরু করলেই আল্লাহ তায়ালা তাওফিক দিয়ে দেন।
শুকরিয়া, জাযাকাল্লাহ খাইর
"ইসলাম দাড়ি নয়" বিষয়টি এমন 'বৃষ্টি প্লাবণ নয়'।
রাসূল সা: এর জীবন চরিত্র বা আখলাকই যদি ইসলাম হয়, তবে জেনে রাখা ভালো রাসূল স: কখনো দাড়িহীন বা ছোট দাড়িওয়ালা ছিলেন না। যার ভিত্তিতে বলেছেন: خالفوا المشركين واعفوا اللحى
মুশরিকদের বিরোধ করাে দাড়ি লম্বা ও মোচ ছোট করার মাধ্যমে।
ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন