এমন সেলফি কি বদ অভ্যাস নাকি মানসিক রোগ?
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ৩০ জুলাই, ২০১৬, ০১:০৬:১৬ দুপুর
সেলফি জ্বরে আক্রান্ত গোটা দুনিয়া। আর এই সেলফি নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাও কম নয়। প্রায় রোজই জন্ম নিচ্ছে কোনো না কোনো ঘটনা। এমনকি সেলফি তুলতে গিয়ে মুত্যুও হচ্ছে।
ভাই তার ছোট বোনকে কবরে রেখে তুলছে সেলফি, ছেলে তার জন্মদাতা বাবার লাশ কাঁধে নিয়েও ইদানিং তোলা হচ্ছে সেলফি।
দাদার মৃত্যুর পর মন খারাপ হওয়ার পরিবর্তে একগাল হেসে লাশের সঙ্গে তোলা হচ্ছে সেলফি। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে যে কত কি চোখে পড়ে!
কিছুদিন আগে এক ছেলে নিজের বাবার লাশ কাঁধে নিয়ে কবরের দিকে যাচ্ছেন। সেই ছবি ফেসবুকে আপলোড দিয়েছেন লাশ কাঁধে রেখেই। আর সেই ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন- ‘আমি এবং আমার কাঁধে বাবার লাশ, কবরের দিকে যাচ্ছি। সবাই দোয়া করবেন।’
গত রমজানেই দেখা গেল তারাবির নামাজে সেজদারত এক মেয়ের সেলফি। আপনিই ভাবুন কতটা সেলফি রোগে আক্রান্ত হলে বা অসুস্থ হলে এমন কাজ করা যায়!
কিছুদিন আগেই এক ছেলে তার মায়ের জন্য খোড়া কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছে! হাসিমুখ। তার বন্ধুরা তখন কবর খুঁড়ছিলেন। তারাও তখন শোক ভুলে ক্যামেরার ফ্রেমে হাসি মুখে পোজ দিয়েছেন।
হজ্ব করতে গিয়ে কাবা ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলে আপলোড দিয়েছেন এক ব্যক্তি। আর ক্যাপশনে লিখেছেন- ‘it's imagine, I'm LOL’
নাতি তার দাদার লাশের সাথে নিচ্ছে সেলফি এবং ক্যাপশনে লিখছেন আমার দাদা এই মাত্র পরকালে চলে গেলেন! লাশের পাশে বসে কি সুন্দর করে হাসি মুখে সেলফি নিচ্ছেন!
সম্প্রতি ফেসবুকে এক ব্যক্তি ফেসবুকে তার মৃত বোনের কবর দেয়ার সময় তোলা সেলফি পোস্ট করে অনেক সমালোচনার মুখে পড়েছেন। কবর দেয়া অবস্থা সবার সাথে সেলফি তুলে ফেসবুকে আপলোড দিয়ে আবার দোয়া চেয়েছেন নিজের বোনের জন্য।
গেল বছরের শেষদিকে মৃত ব্যক্তির সাথে সেলফি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে তিন কিশোর।
ছবিতে দেখা যায়, মৃত নানা শুয়ে আছেন হাসপাতালের ট্রলিতে, তাকে ঘিরেই তার তিন নাতি সেলফি তুলছেন। সেই ছবি তারা আপলোড করে ফেসবুকে। ছবির ক্যাপশনে তারা লিখেছে, ‘যাকে নিয়ে এত মজা করতাম, যাকে ঘিরে ছিল আমাদের হাসিখুশি, যার সাথে কথা না বলে থাকতাম না; সে হল আমার নানা। তিনি আর নেই। চলে গেছেন না ফেরার দেশে। আমরা তোমায় ভুলবো না।
ফেবুতে এই পোষ্টটি পড়ার পর অনেকটা ভাবনায় পড়ে গেলাম, মৃত্যু থেকে আমাদের শিক্ষা ছিল অনেক কিছু, নিজেকে শুধরানো, ঈমান আমল ঠিক করে কবরের প্রস্তুতী নেয়া ইত্যাদি, কিন্তু বর্তমান যুগের অবস্থাগুলো দেখতে আখিরাত অর্জনের শিক্ষা তো দূরে থাক, শয়তানও হাসবে।
আচ্ছা! এরা কি বাস্তাবেই দোয়া চাচ্ছে! এরা কি দোয়া পাওয়ার উপযুক্ত! দোয়া করলেই বা এদের কোন কাজে আসবে?
যারা নিজেদের বদলানোর চেষ্টা করে না, আল্লাহ তায়ালাও তাদের বদল করেন না। মন চাহি জিন্দেগী গড়ছে, আর দোয়ার আহবান, নাপাক কূপে ডবি দিয়ে যেন পবিত্র হওয়ার বাসনা।
আল্লাহ তায়ালা এদের হেদায়েত দান করুন।
লিখাটির সারাংশ ফেবু ফ্রেন্ড থেকে নেয়া।
বিষয়: বিবিধ
২৩১৭ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নিশ্চিত এই ট্রেন্ড প্রত্যেক জানাশোনা মুসলমানকে বেদনায় মূক করে দিবে। তাদের প্রতি করূনার জন্ম নেবে, বলতে ইচ্ছা করবে আহা, যদি তোমরা জানতে ------ ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি, আপনি যদি একটা বাচ্চাকে ব্লেড দেন খেলতে তবে কিছু সময় পর আপনি হয়তো তার হাতে পায়ে এখানে সেখানে ৫/১০ কাটার দাগ দেখবেন, কিন্তু আপনি যদি ঘন্টা কয়েক পরে দেখেন - তবে হয়তো আপনি তাকে লাইফ থ্রেটেনিং অবস্থায় পাবেন।
অনুরূপভাবে দ্যা আল্টিমেইট ডিসিভার (যে কিনা আপনার কথা সমূহকে ধারন করে রাখার ক্যাপাসিটি রাখে) এর কোন ইনস্ট্রুমেন্ট যদি মুসলিম লিডারশীপ না জেনে না বুুঝে তার মুসলিম গণমানুষের হাতে এক্সেস দেয় - তবে তার পরিনতি এমনটাই তো হবে।
আল্লাহ ভাল জানেন।
সুন্দর বিশ্লেষণ করেছেন। অনেক অনেক শুকরিয়া।
ফাজলামির সব সীমা অতিক্রম করেছেl
একটা মানুষের সামাজিক অবস্থানকে রাস্তায় নামিয়ে দিচ্ছেl
I hate this.
ধন্যবাদ ভাই।
আপনিতো অনেক পুরাতন ব্লগার, কিন্তু উপস্থিতি একেবারে নেই বললেই চলে।
এবার নিয়মিত হবেন তো!
তারপর যাকে দোযখ দেখে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি ঘটবে। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়।
অনেক অনেক শুকরিয়া। জাযাকিল্লাহ আপি।
শরীফ ভাই কার নাম? কোথায় পেলেন?
ফেবুতে নিজের ছবি দিয়ে পোষ্ট না করে দর্শকের ভুমিকা পালন করাই ভালো মনে হয়।
ছবি দেখে আর ঘটনাগুলো পড়ে সত্যিই অবিশ্বাস্য লাগছে। আমার তো মনে হয় একজন পাগলের যে বোধ আছে তাও এই মানুষগুলোর মধ্যে নেই।
মহান রব এদের প্রতি সদয় হউন। এটাই প্রার্থনা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
নতুন প্রজন্ম যেন দিন দিন মনুষ্যত্ব হারাচ্ছে। বিবেক বুদ্ধি সবই বিসর্জন দিচ্ছে, ফ্রিতে কিছু লাইক পাওয়ার আসায় এমন দৃশ্যও ফেবুতে আপলোড দিচ্ছে।
আল্লাহ হেদায়াতের মালিক। শুকরিয়া।
এসব ছবির ম্যাক্সিমামই অহেতুক তোলা হয় ।
সেলফি তোলা রোগে এখন মানুষ এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে এখন শুধু বাকি আছে প্রাকৃতিক কাজ কর্ম ও সহবাসের ছবি তোলা ।
সহবাসেরটা আরম্ভ হয়ে গেছে, অনেকে নিজেদের ধর্ষণ কর্মের ভিডিও করে আপলোড দিচ্ছে।
প্রাকৃতিকটাও শুরু হওয়ার দেরি নেই মনে হচ্ছে।
হেতে কয়, আঁই কি শতান আঁত্তুন ব শতান দুনিয়াঁত অন আছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন