মায়েদের অপূর্ণ স্বপ্নের হাসি!
লিখেছেন লিখেছেন আবু জান্নাত ১৫ মে, ২০১৬, ১১:৫৫:৩৩ রাত
আমাদের মায়েরা সন্তানকে লালন করেন অপার স্নেহ আর মমতা দিয়ে। আগলে রাখেন সকল বিপদের হাত থেকে আদরের দুলাল /দুলালীকে।
গভীর রাতে, অশ্রুসজল চোখে, স্রষ্ঠার দরবারে প্রার্থনা করেন সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। কেটে যায় দিন। ছোট্ট শিশুটি মায়ের কোল ছেড়ে হাটতে শিখে। ধীরে ধীরে মিষ্টি কথাও। মায়ের স্বপ্ন বাড়ে। স্বপ্নের বিজগুলোতে ডালপালা গজায়। কল্পনায় মহিরূহ হয় স্বপ্নগুলি। তৃপ্তির ঢেকুর আসে মনের অজান্তে। আহ! আমার ছেলে/মেয়েটা আমার মুখ উজ্জ্বল করবে।
সময় পাল্টে যায়। পেড়িয়ে যায় বসন্তের পর বসন্ত । মায়ের স্বপ্নগুলি দানা বাঁধে নতুন করে। আদরের মেয়েকে চোখের জলে বিদায় দেন পরের ঘরে। দুঃখিনী মায়ের বয়স বাড়ে। আজীবন সেবা করে করে এখন সেবা পাবার মুখাপেক্ষি হয়ে পড়েন। সদা হাস্যজ্জ্বল মিষ্টি মুখটা অসুখের তীব্রতায় চুপশে যায় কখনো। সদা তৎপর কর্মঠ হাত পা বিদ্রোহি হয়ে উঠে। যেন বলে- আর কত খাটাবে আমাকে?
শরীরটা আর আগের মতো ভালো যায়না মায়ের। অজানা সব রোগ আঁকড়ে ধরে মায়েদের দুর্বল শরীরে। তবুও মায়েদের স্বপ্ন বোনা শেষ হয়না সন্তানকে ঘিরে। মেয়েটাকে পরের ঘরে পাঠিয়ে ছেলের টুকটুকে বউ দেখার স্বপ্নে হন বিভোর। জীবনের শেষ বসন্তে এসে একটু শান্তিতে ইবাদাতে নিমগ্ন হতে চান তারা। তীব্র ঠান্ডায় একটু গরম পানি। টুকটাক সহযোগিতা চান আগত অতিথিটার কাছে। যেমনটি তিনিও করেছিলেন এক সময় মনে-প্রাণে । কিন্তু বাস্তবে কী তারা তা পান?
ছোট্ট খোকাটা এখন অনেক বড়। যে কপালে চুমু খেয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিত মা। সন্তানের সেই কপাল ছুঁতে এখন জলচৌকি লাগবে মায়ের। আদরের দুলালটা এত্ত বড় হয়ে গেছে।
মায়ের স্বপ্নঃ আমার কালিজার টুকরা বাবাটা সারা জীবন আমার পাশে থাকবে। আমি যেমন করে তাকে আদর করেছিলাম। এর চেয়েও বেশি স্নেহ ভালবাসায় আমার খোকা আমাকে আগলে রাখবে। তার পাশে রাখবে। তার সাথে রাখবে। আমাকে রেখে দূরে কোথাও হারিয়ে যাবে না। মায়ের আঁচল ছেড়ে কাউকে নিয়ে দূর পরবাসে যাবে না। মায়ের পদতলেই খুঁজবে সুখের জান্নাত। আরামে থাকার নামে আমাকে এতিম করে ঘরের কোণে রেখে থাকবে না বউকে নিয়ে দূরের অট্টালিকায়। সেবা-ভালবাসায় ভরিয়ে রাখবে আমাকে।
আমাদের মায়েরা স্বপ্ন দেখেন। অনেক সুন্দর সে স্বপ্ন। স্বপ্নটা বেশি সুন্দর বলে সেটি কেউ বাস্তবায়ন করার সাহস পায়না, তাই সুন্দর সেসব স্বপ্নগুলি রয়ে যায় মায়েদের স্বপ্নকুটিরে, স্বপ্নময় চোখের তারায়। কখনোবা স্বপ্নগুলি একাকীত্বের ভার সইতে না পেড়ে ঝরে পরে। ভাসিয়ে দেয় গন্ডদেশ। চোখের স্বচ্ছ জলে ভেসে উঠে অপূর্ণ স্বপ্নের ক্রুর হাসি।
হে মালিক! এমন নাফরমান অকৃত্জ্ঞ সন্তান আমাদের বানিও না। মায়েদের স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়িত করার মত হিম্মত ও সৎসাহস আমাদের দান কর। আমাদের মায়েদের, আমাদের বাবাদের মাফ করে দাও। কবুল করে নাও। স্থান করে দাও তোমার প্রিয় ব্যক্তিদের কাতারে। আমীন।
(কয়েকদিনের অসুস্থতায় মাকে খুব মনে পড়ছে)
বিষয়: বিবিধ
১২৩১ বার পঠিত, ১৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অসাধারণ আবেগময় লেখা।। আল্লাহ্ আপনাকে সুস্থতা দান করুন। এখন কি অবস্থা .. সুস্থ হয়েছেন ভাইজান..
আল্লাহ তায়ালা আপনার দোয়া কবুল করুক। আমীন
কিছুটা সুস্থতার দিকে আছি।
জাযাকাল্লাহ খাইরান।
আপনার কী হয়েছে আংকেল? যদি বলতে আপত্তি না থাকে তো?
আপনার জন্য মহান রাব্বুল আলামীনের দরবারে প্রাণ খুলে দোয়া করি।
আপনার অন্তর আপ্লূত করা দোয়ায় আমীন। ছুম্মা আমীন।
বিপদে বা অসুস্থ হয়ে পড়লে আপনজনদের খুব মনে পড়ে, বিশেষ করে মাকে, প্রবাসীরা সত্যিই একা বড় একা।
প্রবাসীদের ছারপোকা মানে ছারপোকার প্রবাসী, এটি নিত্য রাতের সাথী। কিছু দিন আগে বড় কোন পোকা বাম দিকের বুকের উপরি অংশে কামড় দিয়েছে, ছারপোকা ভেবে তেমন কেয়ার করিনি, অতঃপর ব্যথা, জ্বর, আশপাশে আরো কয়েকটি ছোট ছোট ক্ষত তৈরী হয়। চিকিৎসা নিয়েছি, প্রায় ১০দিন পার হলো, এখনো পরিপূর্ণ সুস্থ হয়নি।
খাবার মজা লাগে না, তিতা লাগে, তবুও জীবন বাঁচাতে খাওয়া।
আপনার দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করুক, আমীন ইয়া আল্লাহ।
অনেক অনেক শুকরিয়া, জাযাকিল্লাহু খাইরান।
জান্নাতের সাথে সাক্ষাৎ হবে, আমার সাথে হবেনা? অবশ্য বিদেশিরা দেশে আসলে বিয়ের প্রথম সময়ে ফিরে যায়। ব্যস্ত হয়ে যায়।
আপনার মা বেচেঁ আছেন কিনা সেটাইতো জানালেন না।
ঈদ বাড়িতে করার ইচ্ছা, আপনার দাওয়াত রইল, ঈদে অবশ্যই বাড়িতে আসবেন, ফেনী শহর বেশী দূরে নয়, সময় মত কল দিবো। নাম্বারটা ফেবুতে দিবেন।
আলহামদু লিল্লাহ, মা, বাবা, নানা, নানি বেচে আছেন।
বিদেশিরা দেশে আসলে বিয়ের প্রথম সময়ে ফিরে যায়।
এটি বুঝলাম না।
মন্তব্য করতে লগইন করুন